স্বপ্নের প্রেয়সী 💖 Part – 4

0
538

💖 স্বপ্নের প্রেয়সী 💖
Part – 4
_______________

আমি আমার ঘরে বসে ডোরেমন কার্টুন দেখছিলাম। ওমন সময় মাথায় থা প্প ড় মে রে হাত থেকে রিমোর্ট নিয়ে গেল রিফাত ভাইয়া। আমি তো ওকে দেখেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলাম। কারণ এই গন্ডারটা দুই মাস পর বাসায় ফিরেছে। কিল ঘু ষি দিয়ে রিফাত ভাইয়াকে বললাম, “তোমাকে আসতে বলেছে কে? আরও চার পাঁচ মাস থাকতেই পারতে, ঢং দেখাতে আসছ?”

কথা শেষ না করেই চোখ নাচিয়ে আবার বললাম,”ঢাকায় গেলে আর আসতে মন চায় না বুঝি? তা আসতে মন চাইবে কিভাবে মনিকা আপুকে ছাড়া। তা বিয়েটা করে নাও না বাবা। তাহলে আর দেখা করার জন্য কোনো ওসিলা লাগবে না।”

রিফাত ভাইয়া আমার মাথায় গাট্টা মে রে বলল, “চুপ চুপ আব্বু শুনতে পাবে।”

পর মুহুর্তেই একটু ভাব নিয়ে বলল, “আর এখনো আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমি হলাম পিচ্ছি বাচ্চা।”

ভাইয়ার থুতনিতে হাত দিয়ে বললাম, “ওরে আমার আদরের দুলাল। তুমি কবেই বা বড় ছিলা,বুড়ি তো আমি হয়ে গেছি। তুমি তো ২২ বছরের কচি খোকা।”

“বয়স বেশি হয়ে যাচ্ছে না রে? আচ্ছা তাহলে তো বিয়ে করা দরকার।”

আমার চুলে টান মে রে বলল, “তার আগে তোকে বিদেয় করে নিই। আজই আব্বু আর চাচ্চু কে বলব তোর বিয়ের জন্য ছেলে দেখতে।”

চুলে টান দেওয়ায় খানিকটা ব্যাথা পেলাম। তাই ভাইয়ার হাতে চিমটি দিয়ে বললাম, “অ্যাহ আসছে। আমি হলাম পিচ্ছি বাবু তুমি বিয়ে করো আগে তারপর আমারটা দেখা যাবে।”

ভাইয়া বলল ‘ তাই? ওয়েট কর তোকে দেখাচ্ছি মজা।’

এই বলেই আমার পেছনে দৌড়াতে শুরু করল। আমি ও দিলাম এক দৌড় সোজা বড় মায়ের পেছনে। বড় মা রান্না করছিলেন। “কিরে ফারাবি এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন!”

কাঁদো কাঁদো হয়ে বললাম, “দেখ না তোমার ছেলে আমাকে এসেই জ্বালানো শুরু করেছে।”

“আমি তোকে জ্বালাই নাকি তুই জ্বালাস।”
“তুমি ই তো জ্বালাও।”
“ফারাবি তোকে কিন্তু এবার।”
“আচ্ছা আমি তাহলে বড় মা কে সব বলেই দিচ্ছি। বড় মা “ফারাবি আজকে তোকে তো আমি দেখেই নিব। তুই বড্ড পেকে গেছিস।”

আবার দুজনের দৌড়া দৌড়ি শুরু। দৌড়াতে দৌড়াতে বাগানে চলে এসেছি হঠাৎ এক পাঠির সাথে ধাক্কা খেলাম।ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে রেখেছি। ভাবলাম আজকে আমার কোমর শেষ। হঠাৎ আবিষ্কার করলাম আমি তো ব্যাথা পাচ্ছি না এটা কিভাবে সম্ভব? দেখার জন্য চোখ খুললাম দেখলাম, আমি কারো বাহুর মাঝে অবস্থিত!মাথাটা উপর করতেই দেখলাম ফারহান ভাইয়া আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আছে। আমি বোধহয় বাক শক্তি হারিয়ে ফেলেছি, মুখ থেকে কোনো শব্দই বের হচ্ছে না।
হঠাৎ ফারহান ভাইয়ার কথায় চমকে উঠলাম, “কি রে। আজকে কি আর উঠবি না?আর এভাবে বানরের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো লাফাচ্ছিলি কেন?”

কি আমি বানরের তিন নাম্বার বাচ্চা ,বেটা হনুমান। মনে মনে আর ও চার পাঁচ টা গালি দিয়ে ওনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ওড়না টা ভালো করে জড়িয়ে মাথা নিচু করে দাড়ালাম। তখনই রিফাত ভাইয়ার আগমন, ” হে ফারহান ”
বলেই জড়িয়ে ধরল। ফারহান ভাইয়া রিফাত ভাইয়ার পিঠ চাপরে বলল, “তা আজকাল আমাকে মনে হয় ভুলেই যাচ্ছিস। দুই মাস পর ফিরতে ইচ্ছে হলো। কেমন আছিস মোটা হয়ে গেছিস বোধহয়। আমার ভাবিজানের আদরে তো মোটু হবিই।”

ভাইয়া একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল, “আরে তেমন কিছু না। অনেক দিন পর দেখছিস তাই এমন লাগছে।”

কথার মাঝে দুজনে গট গট করে বাসার ভেতর চলে গেল।
আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। বাগান থেকে একটা কালো গোলাপ ফুল নিয়ে চলে গেলাম। কালো গোলাপ আমার অনেক প্রিয় নয় তবে ভালো লাগে। বিরল প্রজাতির সব কিছুই আমার ভালো লাগে। এটি শুধুমাএ তুরেস্কর দক্ষিন পূর্ব দিকে সানলুরফা প্রদেশের হালফেতি নামক অঞ্চলে প্রাকৃতিক ভাবে ফুটে। কালো গোলাপ আমাকে ফারহান ভাইয়া জন্মদিনের গিফট হিসেবে দিয়েছিল। আমি সব সময় বায়না করতাম কালো গোলাপের জন্য কিন্তু এটা বিরল ফুল তাই সহজে পাওয়া যায় না। আমি যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি তখন ফারহান ভাইয়া আমাকে আমার ১৪তম জন্মদিনের গিফট হিসেবে দিয়েছিল আর বলেছিল, ” কালো গোলাপ তোকে দিলাম যাতে তোর জীবনের সব কালো ছায়া কালো গোলাপ সুষে নেয়। সম্পূর্ণ যন্তে রাখবি যদি কিছু হয় তাহলে তোর হাত পা বেঁধে রেখে দিব।” কি ভয়ঙ্কর কথা! যদি ও একটু ভয় পেয়েছিলাম কিন্তু আমি সব থেকে এই উপহারে খুশি হয়েছিলাম। সেই থেকেই এই কালো গোলাপ আমার সঙ্গী। দিন গুলো কতটা স্নিগ্ধ ছিল। অথচ দিনকে দিন মানুষটা গম্ভীর হয়ে উঠেছে। এই মনে হয় আপন, আবার মনে হয় শত্রু।
_______________

[ গল্প টি কেমন হচ্ছে জানাবেন। ভালো খারাপ মন্তব্য না করলে বুঝতে পারব না গল্প টি আদৌ আপনাদের ভালো লাগছে কি না। মতামত আশা করছি। আর আমাকে অনুপ্রেরণা দিতে আপনার বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন। ]

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন।

💜 হ্যাপি রিডিং 💜

ফাতেমা তুজ
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here