Selfish – (Part:13)

0
446

গল্প :- #Selfies
পর্ব :- ১৩
Writer :- Kabbo Ahammad
.
.
.
:-তুই তুই তো নিজেই শুনলি স্বর্না কি বলছে।
ওর গর্ভের সন্তানের বৈধতা দিতে ও ডিএনএ টেষ্ট করতেও ভয় পায় না। আমি যদি আইনের সহায়তাও নিতে চাই তখন, তখন কাব্যকে অপরাধির কাঠঘড়ায় দাঁড়াতে হবে। সবাই ওর নামে যা নয় তাই বলবে।
আর আমি তা শুনে বেচে থাকতে পারবো না।
তুই জানিস নীলা যারা প্রেমে ব্যার্থ হয়ে আত্যহত্যা করতো তাদের দেখলে আমার হাসি পেতো। ভাবতাম কি একটা তুচ্ছ কারনে তারা আত্যহত্যা করে।
কিন্তু আজ বুঝতে পারছি তারা কেন এ পথ বেচে নেয়।
(মিরা কাঁদতে কাঁদতে নীলাকে বলছে)

–মিরা দেখ আমি তাদের কথা জানি না।
তারা হয়তো তাদের ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাওয়ার কোন পথ খুঁজে পায় নাই। তাই এ পথ বেচে নিয়েছে।
কিন্তু তুই চাইলেই আমি তোকে পথ দেখাতে পারি যাতে করে তুই তোর ভালোবাসার মানুষকে চির জীবনের জন্য আপন করে নিতে পারিস। (নীলা)

–কিহ্ তুই সত্যি বলছিস তো।
তুই আমাকে আমার কাব্যকে এনে দিতে পারবি।

–হ্যাঁ পারবো।
কিন্তু সে জন্য তোকে একটা কাজ করতে হবে।
(নীলা)

–কি কাজ বল।
আমি কাব্যকে কাছে পাওয়ার জন্য সব করতে পারবো।তুই বল আমাকে কি করতে হবে।
(মিরা চোঁখের পানি মুছে বললো)

–তাহলে শোন…….…………………………
কি করতে পারবি তো??(নীলা)

–হ্যাঁ করতে পারবো। কিন্তু…

–কোন কিন্তু নয়।
যদি তুই তোর কাব্যকে কাছে পেতে চাস তাহলে তোকে এটা করতেই হবে। তা না হলে কোন দিনো তুই তুর কাব্যকে পাবি না।
একবার ভেবে দেখ মিরা কোন মেয়েই তার ভালোবাসার মানুষকে অন্য জনের সাথে সেয়ার করতে চায় না। এমন কি সে যদি তার অপন বোন হয়েও থাকে। এখন তুই বল তুই কি চাস কাব্যকে..(নীলা)

–না না কোন ভাবেই আমি তা হতে দিবো না।
কাব্য আমার শুধুই আমার। আমার ছারা কাব্য আর কারো নয় হতে পারে না।

–হুম এইতো বুদ্ধিমতি মেয়ে। চল কাজে লেগে পড়ি।(নীলা)

–হুম চল।
.
.
.
.
:- আর এদিকে আমি বাড়িতে এসে ভাবতে লাগলাম।
কি হচ্ছে এসব আমার সাথে। প্রথমে একজনকে ভালোবাসলাম সে আমার সাথে অভিনয় করলো।
এখন আবারও একজনকে ভালোবাসলাম….
আজ নিজের একটা ভুলের জন্যে তাকেও হারাতে হচ্ছে। এই উপর ওয়ালা তুই কি আমাকে খেলার পুতুল পেয়েছিস। যখন যেভাবে খুশি তখন সে ভাবে আমার জীবনটা নিয়ে খেলছিস।

এরমধ্যে হঠাৎ নীলার ফোনে আমার ভাবনার ছেদ ঘটলো। আমি ফোনটা রিছিব করে বললাম।

–হ্যালো নীলা বল। (আমি)

–হ্যালো কাব্য তুই এখন কোথায়।(নীলা)

–কেন আমি তো বাড়িতে। কি হয়েছে আর তোর গলা এমন লাগছে কেন?

–হ্যাঁ অনেক কিছুই হয়ে গেছে রে কাব্য।
তুই যত তাড়াতাড়ি পারিস মিরাকে আটকা।(নীলা)

–কেন কিকি কি হয়েছে মিরার আর ও এখন কোথায়।(হঠাৎ খুব ভয় পেয়ে বললাম)

–দেখ কাব্য এত কিছু বলার সময় সময় নেই।
তুই শুধু এটুকু শোন যে মিরা স্বর্নাকে কে মারার জন্য ওকে উঠিয়ে এনেছে।
আর তুই যত তারাতারি পারিস মিরাদের পুরাতন গোডায়োনে চলে আয়।(নীলা)

হঠাৎ আমি নীলার কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লাম।

–প্লিজ নীলা তুই যে ভাবেই পারিস মিরাকে একটু আটকা আমি আসছি। আমি বেঁচে থাকতে মিরাকে কোন অন্যায় করতে দিবো না।

একথা বলেই আমি মিরাদের পুরাতন গোডায়োনে যাওয়ার জন্য বের হলাম।
তারপর আমি যখন মিরাদের গোডায়োনে পৌঁছে যাই।তখন যা দেখলাম তা দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।

কারন আমি দেখলাম মিরাদের পুরাতন গোডায়োনে তালা ঝুলছে। কোথাও এমনটা নয় তো। আমার এখানে আসতে দেরি হয়ে গেছে। তাই সিয়র হওয়ার জন্য যখনি আমি নীলাকে ফোন দিতে যাবো। ঠিজ তখনি কে যেন আমার মাথায় শক্ত জাতিয় কিছু দিয়ে আঘাত করে।
ফলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আর যখন আমার জ্ঞান ফেরে তখন আমি যা দেখলাম তা দেখে দ্বিতীয় বারের মত অবাক হয়ে যাই।
কারন যখন আমার জ্ঞান ফেরে তখন আমি নিজেকে একটা রুমের মধ্যে শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পাই।আর রুমটাই সম্পূর্ণ ফুল দিয়ে সাজানো।
একটু পর হঠাৎ শুনতে পায় রুমের বাহিরে কে বা কারা যেন কথা বলছে।
তাই আমি বিছানা থেকে উঠে যাবো তখনি মাথা ঘুড়ে আবারো পড়ে যাই। মাথাটা কেন যেন ব্যাথা করছে।তবুও অনেক কষ্টে দরজা পর্যন্ত যাই।
তারপর রুমের দরজা খুলে আমি যা দেখলাম আর শুনলাম তাতে আমি যেন তৃতীয় বার আকাশ থেকে পড়লাম।

কারন আমি দরজ খুলে দেখলাম যে মিরা আর স্বর্নাকে কেউ খুব বাজে ভাবে মেরেছে।
ওরা মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে। আর ওদের এ অবস্থা দেখে একটা মেয়ে পাগলের মত হাসতেছে।
মিরা আর স্বর্নাকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে আমার দম যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
তারপর আমি যখনি দৌড়ে ওদের দুজনের কাছে যাবো। ঠিক তখনি মিরা মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে বললো……….

–নীলা তুই এসব কি করছিস আমাদের সাথে।
তুইতো আমাকে সাহায্য করতে চেইছিলি।(মিরা)

(আমি মিরার মুখে নীলার নামটা শুনে আমার সব কিছু যেন গুলিয়ে যাচ্ছে)

–হা হা তোকে আমি সাহায্য করতে চেয়েছি।
কই কখন? আমার তো মনে পড়ছেনা।
(নীলা খুব অবাক হয়ে বললো)

–কেন তুই আমাকে বলিস নাই যে তুই আজকে আমার সাথে আমার ভালবাসার মানুষের মিল করে দিবি।তাহল তুই কেন আমার উপর এত অত্যাচার করছিস।(মিরা)

–আচ্ছা এমনটা বলেছিলাম বুঝি। তাহলে তোকে হয়তো এটাও বলেছিলাম যে পৃথিবীর কোন মেয়েই তার ভালোবাসার মানুষকে অন্যের সাথে শেয়ার করতে চায় না। তাহলে একবার ভেবে দেখ আমি কি করে তোদের দুই বোনের সাথে আমার ভালোবাসা শেয়ার করবো। (নীলা)

(কিহ্ এটা আমি কি শুনছি মিরা আর স্বর্না দুই বোন।কিন্তু ওদের মাঝে কিসের এত শত্রুতা।
ওদের যখন এক সাথে দেখি তখন তো ওদের দেখলে মনে হয় যেন একজন আরেক জনের জীবন নিতে পারলেই খুশি হতো। আর নীলাই বা এসব বলছে কেন? আমার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে নীলা আবার বলতে লাগলো..)

–শুন মিরা যেখানে কোন মেয়ে তার ভালোবাসার মানুষকে তার আপন বোনের পাশেই থাকতে দেখতে পারে না। সেখানে তোরা দুই বোন কি না আমার ভালোবাসার মানুষেকে তোদের বিছানা পর্যন্ত নিয়ে গেছিস।(নীলা)

(নীলার কথা শুনে আমি যেন এবার ৪র্থ বারের মত একটা বড় ধরনের শক খেলাম।
কি বলছে এসব নীল। তার মানে কি ওরা আমাকে শুধু আজ পর্যন্ত ঠকিয়েই এলো। আর আমি বোকার মত ভালোবেসে গেছি)

–আর যেখানে আমার থাকার কথা ছিলো সেখানে তোরা ছিলি। আমি কি ভাবে একষ্ট সহ্য করবো বল তোরা।(নীলা)
(এতক্ষণ এসব কথাগুলো মিরা এবং স্বর্নাকে উদ্দেশ্য করে করে বললো নীলা)
.
.
.
.
–নীলা তুই এসব কি পাগলের মত কথা বলছিস।
তুই আবার কাকে ভালোবাসিস আর আমি কেনই তোর ভালোবাসার মানুষের কাছে যাবো।
(মিরা খুব অবাক হয়ে প্রশ্নটা করলো নীলাকে)

–হ্যাঁ হ্যাঁ আমি পাগল হয়ে গেছি।
যে কাব্যকে কাছে পাওয়ার জন্য আমি ছোট থেকেই ওকে পাগলের মত ভালোবেসে আসছি। আর তাকে? তাকে তোরা দুই বোন আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিবি তা আমি কি ভাবে হতে দেই।(নীলা)

হঠাৎ নীলার এমন কথা শুনে মিরা আর স্বর্না যেন আকাশ থেকে পড়লো। সাথে সাথেই ওরা একসাথে বলে উঠলো।

–কি বললে তুমি নীলা কাব্য তোমাকে ভালোবাসে মানে? আমি বিশ্বাস করি না। তুমি মিথ্যা বলছো। কাব্য তোমাকে ভালোবাসে না। (স্বর্না)

–আমি কি এটা বলেছি যে কাব্য আমাকে ভালোবাসে?
আমি তো এটা বলেছি যে আমি ওকে ভালোবাসি। তবে হ্যাঁ ও আমাকে ভালোবাসতো। কিন্তু…………
কিন্তু একমাত্র তোর কারনে ও আমাকে ভালোবাসে নাই। তুই আমাদের দুইজনের মাঝখানে কাটা হয়ে ছিলি। (নীলা)

–তুমি এসব কি বলছো নীলা আমিতো কিছুই বুঝতেছিনা।(স্বর্না)

–আচ্ছা তাহলে শুন তোর কি নীশা নামের কোন মেয়েক মনে আছে। যখন তুই(pgc)তে পড়তি।(নীলা)

–হ্যাঁ মনে আছে কিন্তু তুমি ওকে কি ভাবে চেনো।(স্বর্না)

–আমি ওকে চিনবো কেন? আর চেনারও কি প্রয়োজন হুম? কারন নীশা আর কেউ নয় আমি।
আর জানিস স্বর্না আমি আমার জীবনে সব চাইতে বড় কষ্টটা কখন পেয়েছিলাম?

:-যখন তুই এটা জানতি যে আমি কাব্যকে ভালোবাসি।তারপরেও তুই আমার বন্ধবী হয়ে তুই আমার ভালোবাসার মানুষকে কেড়ে নিয়েছিলি।
তুই একবারো কাব্যর প্রতি আমার ভালবাসাটা বুঝিস নাই।

তাই রাগে আমি আমার এই মুখে প্লাস্টিক সার্জারি করে তোর চিহারা নিয়ে তোকে ওর কাছে খারাপ বানাই।
আর ও যখন রাগ করে এখানে আসে। তখন আমি ওকে আমাদের কলেজে ভর্তি করানোর জন্য অনেক বড় একটা গেম খেলি।
কিন্তু আমি এটা জানতাম না এই কলেজে মিরার মত সুন্দরি মেয়ে আছে।
তখন মিরাকে দেখে আমি খুব ভয় পেয়ে যাই।
যদি কাব্য আবার ওকে ভালোবাসে। তাই আমি দ্বিতীয় বারের মত আবার প্লাস্টিক সাজারি করি। আর মিরার সাথে বন্ধুত্ব করি।
আর মিরাকে কাব্যর সাথে মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করে ওকে ছ্যাকা দেওয়া প্লান করি।

কারন কাব্য যখন একাকীত্ব অনুভব করবে আর তখন আমি আমার প্লান মত সেই সময় কাব্যর পাশে দাঁড়াতাম। যাতে কাব্যকে আমার প্রতি মেন্টালি এবং ফিজিক্যালি দূর্বল করতে পারি।
এরপর সব কিছুই আমার প্লান মতই চলছিলো। কিন্তু মাঝখান থেকে এ শালি কি না(মিরাকে উদ্দেশ্য করে) এক স্বপ্ন দেখে আমার সব পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে কাব্যকে ভালোবাসতে লাগলো।

তারপর আমি কাব্যকে ওর কাছ থেকে দুরে সরানোর জন্য কোন প্লান করবো। তার আগেই স্বর্না তুই যে কোথায় থেকে টপকিলি বুঝতেই পারলাম না।
তখন আমি ভাবতে লাগলাম কি করে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যায়।
তারপর অনেক কষ্টে যখন একটা প্লান করলাম। সেটাও তোদের দুই জনের কারনে ভেস্তে গেলো। যখন শুনলাম স্বর্না মা হতে চলেছে। আর মিরার সাথেও কাব্যর ফিজিক্যাল রিলেশন হয়েছে।
তখন আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। মাথায় শুধু একটা কথাই আসছিলো যে করেই হোক তোদের দুটোকে শেষ করবো।
আর যখন দেখলাম মিরা আত্যহত্যা করতে যাচ্ছে।তখন প্রথমে ভাবলাম একটা পথের কাটা নিজেই আমার পথ থেকে সরে যাচ্ছে। আর বাকি থাকলি তুই স্বর্না।

আর তোকে আমার পথ থেকে সরানোটা আমার বা হাতের কাজ ছিলো। কিন্তু আমার ধরা পরার ভয় ছিলো। তাই ঠিক তখনি মাথায় একটা আইডিয়া চলে আসে যাতে শাপও মরে আর লাঠিও না ভাজ্ঞে।
তাই আমি মিরাকে বাচিয়ে বিয়ের প্রলভন দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসি। আর তোকে এটা বলে এখানে নিয়ে আসি যে তোর কারনে মিরা কাব্যক মেরে ফেলতে চাচ্ছে। আর আমার জানটাকে মানে কাব্যকে এখানে এটা বলে ডাকি যে মিরা স্বর্নাকে মেরে ফেলতে এখানে নিয়ে আসছে। হা হা হা
এখন তোরা মরার জন্যে তৈরি হয়ে নে।(নীলা)

–ছিঃ তুই এতটা খারাপ। আমি ভাবতেও পারছি না তোর মত একটা মেয়েকে নিজের বান্ধবী ভাবতেও ঘৃনা লাগছে।(মিরা)

–হা হা সে তোরা যাই আমাকে বল। আমার তাতে কিছুই যায় আসে না। একটা কথা জানিস কি তোরা ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে everything is fair& love……….
যাইহোক আজকে খুব আফসোস লাগছে কারন তোরা আমার হাতে মরবি।
একথা বলেই মিরা আর স্বর্নার দিকে দুই হাতে দুইটা রিবালভার দিয়ে মারার জন্য রেডি হয়েছে।



চলবে………………………♥♥♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here