আলো_আধারের_খেলা
পর্ব_১১
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
আপনার চোখে অশ্রু কেনো জান্নাত?বাড়ির কথা ভেবে মন খারাপ হচ্ছে?
রুয়েলের কথা শুনে জান্নাত তাড়াতাড়ি করে চোখের পানি মুছিয়ে নিলো।রুয়েল তখন জান্নাতকে তার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বললো,আমি বুঝতে পারছি আপনার খুব কষ্ট হচ্ছে।জাহান আর দাদীকে মিস করছেন।কিন্তু কিছুই করার নাই।মেয়েদের জীবনটাই এমন।কেউ সারাবছর বাবার বাড়ি থাকে না।সবাইকে একদিন না একদিন স্বামীর বাড়ি যেতে হয়।আর নিজের আপনজনকে ছেড়ে এভাবেই বছরের পর পর কাটিয়ে দিতে হয়।
জান্নাত কোনো কথা বললো না।রুয়েলকে সে নিজেও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।আর তার বুকে মাথা দিয়ে কেমন যেনো অন্যরকম এক শান্তি অনুভব করলো।
তবে সত্যি তার বাড়ির কথা ভীষণ মনে পড়ছে।জাহান আর দাদীকে দেখার জন্য মনটা একদম ছটফট করছে।একদিনেই সে এমন মিস করছে তাদের,না জানি সারাজীবন সে কিভাবে থাকবে?সবার কথা মনে হতেই আবার চোখে জল এলো জান্নাতের।
রুয়েল তখন বললো,আবার কাঁদছেন! দাঁড়ান এক্ষুনি আপনার মন ভালো করে দিচ্ছি।এই বলে রুয়েল জান্নাতের বাড়িতে ফোন দিলো।আর জান্নাতের হাতে ফোনটা দিয়ে বললো,ধরুন দাদীর সাথে কথা বলুন।যা মন চায় বলুন।শুধু দাদী না।সবার সাথে কথা বলুন।সবার সাথে কথা বললে দেখবেন অনেকটা হালকা লাগছে।এই বলে রুয়েল ফোনটা জান্নাতের হাতে দিয়ে বাহিরে চলে গেলো।
জান্নাত চোখের পানি মুছে স্বাভাবিক হলো।সে ভালোভাবে এক এক করে সবার সাথে কথা বললো।দাদি,জাহান,তার আম্মু আব্বু সবার সাথে।জান্নাতের হাসি মাখা কন্ঠ শুনে তার বাবা মাও ভীষণ খুশি হলো।এদিকে কখন যে এক ঘন্টা পার হয়ে গেছে জান্নাত বুঝতেও পারলো না।সে কথা বলতে বলতে ঘর থেকে বেলকুনিতে চলে গেলো।আবার বেলকুনি থেকে ঘরে আসলো।বাড়ির সবার সাথে কথা বলে মনে হলো তার ভেতরকার সব কষ্ট নিমিষেই দূর হয়েছে।নিজেকে ভীষণ হালকাও লাগছে।মনে হচ্ছে সে তাদের কে ছেড়ে দূরে কোথাও যায় নি,তাদের কাছাকাছিই আছে।
কিছুক্ষন পর রুয়েল প্রবেশ করলো রুমে।সে এসে দেখে জান্নাত এখনো কথা বলছে।সেজন্য সে আবার রুম থেকে চলে যেতে ধরলো।কারণ সে থাকলে হয় তো ভালোভাবে কথা বলতে পারবে না জান্নাত।কিন্তু জান্নাত রুয়েলকে যাওয়া দেখে বললো, এই যে শুনছেন আপনি?আপনার ফোনটা নিন।আমার কথা বলা শেষ হয়েছে।
রুয়েল জান্নাতের মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।এই কিছুক্ষন আগেই কেমন মলিন ছিলো মুখটা।মনে হচ্ছিলো সমস্ত মেঘেরা এসে ভীড় জমিয়েছে জান্নাতের মনের গহীনে।আর অভিমানের বরফগুলো গলে অশ্রু হয়ে তার চোখ দিয়ে নামছে।আর এখন এক গাল হেসে হেসে কথা বলছে।জান্নাতের হাসিটা দেখলেই রুয়েলের বুকটা আনন্দে ভরে ওঠে।এ কোন মায়ায় বাঁধলো জান্নাত সত্যি সে বুঝতে পারছে না।
রুয়েল হঠাৎ জান্নাতের কাছে এগিয়ে গেলো।আর তাকে তার বুকের মাঝে টেনে নিলো।রুয়েল কোনো কথা বলছে না।তবে সে মনে মনে ভাবছে জান্নাত!কি মায়ায় জড়ালেন আমায়?আপনাকে ছাড়া আমাকে আর কিছুই ভালো লাগছে না।বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দেওয়া,সবাই মিলে দূরদূরান্তে ভ্রমনে যাওয়া সব ভুলে গেছি আমি।আপনাকে রেখে আমি আবার বিদেশ যাবো কি করে? এই চিন্তা এখন সারাক্ষণ ভাবাচ্ছে আমায়।আমি পারবো না আর বিদেশ যেতে।আপনাকে না দেখে আমি কিছুতেই আর থাকতে পারবো না।
হঠাৎ বাহিরে থেকে ঊর্মির কন্ঠ শোনা গেলো।ঊর্মি জোরে জোরে জান্নাতের নাম ধরে ডাকছে।জান্নাত তার নাম শোনামাত্র রুয়েলকে বললো,ছাড়ুন আমাকে। ভাবি ডাকছে।
–আমিও শুনেছি।ডাকুক।ডাকতে দাও।
–কি বলছেন এসব?ছাড়ুন বলছি।
–ছাড়তে ইচ্ছা করছে না।আর কিছুক্ষন একটু জড়িয়ে ধরে থাকি।
–না না।আর থাকা যাবে না।
রুয়েল তখন বললো,এই তো কিছুক্ষন আগেই একদম কেঁদে কেঁদে শেষ হচ্ছিলেন।এই আমি আপনার মন ভালো করে দিলাম।তার বিনিময়ে কি একটু জড়িয়ে ধরে থাকতে পারি না?
জান্নাত তখন নিজেই রুয়েলের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো।আর মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো আপনি ভীষণ দুষ্টু একটা মানুষ। সবসময় কেমন কেমন করেন।এই বলে জান্নাত আয়নার সামনে গিয়ে ভালো করে ওড়না টা গায়ে মাথায় দিলো।
রুয়েল তখন নিজেও জান্নাতের পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো।আর তার ঘাড় ধরে বললো, আমি কেমন কেমন করি?
–জানি না।বলেই জান্নাত পালাতে ধরলো।কিন্তু রুয়েল জান্নাতের ওড়না টেনে ধরে বললো, বলেন আগে।
–কি বলবো?
–এই যে বললেন যে আমি নাকি আপনার সাথে কেমন কেমন করি।
ওদিকে ভাবি আবার ডাক দিলো।জান্নাত কি শুনতে পারছো না?তাড়াতাড়ি বাহিরে এসো একটু।
রুয়েল এবার নিজেই তাড়াতাড়ি করে ওড়না টা ভালো করে গায়ে মাথায় দিয়ে দিলো জান্নাতের।তারপর হঠাৎ জান্নাতের ঠোঁটে একটা আলতো করে চুমু খেলো।
জান্নাত হা করে তাকিয়ে থাকলো।রুয়েল তখন ওড়না দিয়ে জান্নাতের মুখ টা ঢেকে দিলো।আর বললো,যান তাড়াতাড়ি। ভাবি ডাকছে তো।
জান্নাত নিজেও আর সময় নষ্ট করলো না।তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
জান্নাতকে দেখামাত্র ভাবি বললো,জান্নাত তুমি কি কানে কম শোনো?কখন থেকে ডাকছি তোমাকে?
জান্নাত তখন বললো না মানে আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম।এজন্য শুনতে পারি নি।
এদিকে পাশের ফ্লাটের এক ভাবি এগিয়ে এসে বললো,তা নতুন বউ কিসের এতো ব্যস্ততা?
জান্নাত ওনাকে দেখামাত্র সালাম দিলো।তখন ঊর্মি বললো ইনি আমাদের পাশের ফ্লাটেই থাকেন।তোমাকে দেখতে এসেছে।সকালেও একবার দেখতে এসেছিলেন।কিন্তু তুমি তো তখন ঘুমে ছিলে।এজন্য আবার এসেছেন।
জান্নাত ঊর্মির কথা শুনে ভীষণ লজ্জাবোধ করলো।সে মনে মনে ভাবতে লাগলো যে জান্নাতকে বাড়ির সবাই ভোরের পাখি বলতো আজ সেই জান্নাতকে বার বার এই কথা টা শুনতে হচ্ছে যে সে নাকি দেরীতে ঘুম থেকে ওঠে।তারা কেনো যে বার বার এই কথা টা বলছে সত্যি জান্নাত বুঝতে পারছে না।একদিন একটু লেট হয়েছে তার জন্য বার বার এভাবে বলতে হবে?
জান্নাত তার বাড়িতে রোজ পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠতো।তারপর ফজরের নামায পড়ে আর ঘুমাতো না।কিছুক্ষন তসবিহ তেলায়ত করতো।কয়েক পাতা কোরান শরীফ পড়তো।তারপর আঙ্গিনায় কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতো।যখন ক্লাসের পড়া থাকতো সেটা সে এই ভোরবেলাতেই কম্পিলিট করে রাখতো।
হঠাৎ আরো কয়েকজন মহিলা এগিয়ে এলো জান্নাতের কাছে।তারা সবাই রুয়েলদের বাসার ভাড়াটিয়া।নতুন বউ দেখার জন্য এসেছে।তাদের সবাইকে দেখে জান্নাত আরেকবার সালাম দিলো।তখন সবাই বললো,তা নতুন বউ এর কি ঘুম ভেংগেছে এখন?না আরো ঘুমাবে?
জান্নাত ভাবিদের কথা শুনে নিচ মুখ হলো।
তখন একজন ভাবি বললো, আমরা এমনিতেই ঠাট্টা করছি।তুমি আমাদের অনেক ছোটো।এজন্য মজা করছি একটু। কিছু মনে করো না তুমি।দেখি একটু তোমার মুখটা।এভাবে বাসার মধ্যেও এতোবড় ঘোমটা দিয়ে আছো কেনো?
জান্নাত সেই কথা শুনে এদিক ওদিক তাকিয়ে মুখের উপর থেকে কাপড় টা সরিয়ে নিলো।কিন্তু জান্নাতের মুখ টি পুরোপুরি দেখা যাচ্ছিলো না।তার আগেই জান্নাত আবার মুখ টা ঢেকে রাখলো তখন একজন ভাবি বললো,লজ্জার কি আছে?ভালো করে দেখি একটু।এই বলে তিনি নিজেই হাত দিয়ে জান্নাতের মাথার কাপড় টা খুলে ফেললো।আরেকজন চুলগুলো বুলিয়ে বুলিয়ে দেখতে লাগলো।
কিন্তু জান্নাত কিছুতেই এভাবে খোলামেলা থাকতে পারছিলো না।আবার কিছু বলতেও পারছিলো না।যেহেতু সবাই গুরুজন হয়।
রুয়েল দূর থেকে সব দেখছিলো।তার কেনো জানি খুব খারাপ লাগলো।ভাবি রা এমন ভাবে দেখছে কেনো জান্নাতকে?জান্নাত খোলামেলা ভাবে থাকতে মোটেও অভ্যস্ত না।ভাবিরা তো সেটা জানে না।ভাবিরা না জানলো ঊর্মি আর মা তো জানে।তারাও কিছু বলছে না কেনো?
হঠাৎ জান্নাতের শাশুড়ী বললো,জান্নাত রান্নাঘরে যাও।সবার জন্য একটু নাস্তা রেডি করে আনো।হেনা আছে।ও তোমাকে সাহায্য করবে।
এই বলে জান্নাতের শাশুড়ী সবাইকে নিয়ে গেস্ট রুমে চলে গেলো।
জান্নাত সেই কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে ওড়না টা আবার ভালো করে দিয়ে নিলো আর রান্নাঘরে চলে গেলো।
জান্নাত রান্নাঘরে গিয়ে দেখে হেনা কাজ করছে।জান্নাত তখন বললো, হেনা মেহমানদের কি নাস্তা দেবো?মা বললো তোমাকে বললেই তুমি বলে দেবে।
হেনা সেই কথা শুনে বললো,ভাবি তুমি এটাও জানো না।মেহমানদের কি নাস্তা দিতে হয়?আপনাদের বাসায় কি মেহমান যেতো না।আপনার মতো বোকা মেয়ে আমি জীবনেও দেখি নি।
জান্নাত সেই কথা শুনে বললো,আসলে আমি বুঝতে পারছি না মেহমানদের দেওয়ার মতো বাসায় কি কি নাস্তা আছে?
হেনা তখন বললো,কি কি আছে মানে?সবকিছু আছে।এটা কি ফকির মিসকিনদের বাড়ি?
হেনার কথা শুনে জান্নাত মনে মনে ভীষণ কষ্ট পেলো।সে আর কোনো কথা না বলে বোকার মতো দাঁড়িয়ে রইলো।
হেনা তখন বললো ওভাবে বোকার মতো দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?ফ্রিজ খুললেই সব জিনিস পাবেন।এই বলে হেনা আবার তার কাজে মন দিলো।
জান্নাত হেনার কথা শুনে ফ্রিজ খুলে মিষ্টি আর ফলমূল বের করতেই রুয়েল এসে দাঁড়ালো সামনে। সে জান্নাতের হাত থেকে মিষ্টির প্যাকেট আর ফলমূল গুলো কেড়ে নিয়ে আবার ফ্রিজে রাখলো তারপর জান্নাতের হাত ধরে হেনার কাছে নিয়ে গেলো।
হেনা রুয়েলকে দেখে বললো,ভাই কিছু লাগবে আপনার?
রুয়েল হেনার কথা শুনে রাগান্বিত কন্ঠে বললো,জান্নাতকে তুই কি বললি তখন?
–কই কি বললাম ভাই?
–আমি তো শুনলাম তুই জান্নাতকে কি যেনো বললি?
হেনা সেই কথা শুনে বললো ভাবি নাস্তার কথা জিজ্ঞেস করছে।তাই আমি বললাম ফ্রিজে ফল আর মিষ্টি রাখা আছে।
রুয়েল তখন বললো জান্নাত এ বাড়ির বউ হয়।ওর সাথে বুঝেশুনে কথা বলবি।আর যদি দ্বিতীয় দিন ওর সাথে বড় গলায় কথা বলতে দেখছি তখন আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না।
হেনা সেই কথা শুনে বললো, ভাই আমি তো কিছুই বলি নি।এই বলে হেনা জান্নাতকে বললো,ভাবি খারাপ কি বললাম তোমাকে?
রুয়েল তখন বললো,চুপ কর।তুই বয়সে জান্নাতের সমবয়সী।কিন্তু কথাবার্তা বলিস বড়দের মতো।তুই এতোবড় সাহস কই পেলি?জান্নাত কে কোন শাসনে তুই অপমান করে কথা বলিস?
হেনা রুয়েলের কথা শুনে কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,আমার ভুল হয়ে গেছে ভাই।আর বলবো না।
রুয়েল তখন বললো, আমি আর কথা বাড়াতে চাচ্ছি না।শুধু হুশিয়ার করে দিলাম দ্বিতীয়বার যেনো জান্নাতকে আবোলতাবোল কথা না বলতে শুনি।
জান্নাত রুয়েলের এমন রাগ থেকে ভীষণ ভয় পেয়ে গেলো।কারণ রুয়েল তো সবসময় জান্নাতের সাথে খুব নম্র আর ভদ্রভাবেই কথা বলে।
সেজন্য জান্নাত জানে রুয়েল খুব ভদ্র আর শান্তশিষ্ট ছেলে কিন্তু তার যে এতো রাগ সত্যি তার জানা ছিলো না।
রুয়েল এবার হেনাকে বললো,আর যেনো কোনোদিন জান্নাতকে হুকুমদারি করতেও না শুনি।যা ফ্রিজ থেকে ফলমূল আর মিষ্টি নিয়ে আয়।আর তাড়াতাড়ি রেডি করে দে জান্নাতকে।
হেনা সেই কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে নিজেই ফ্রিজ থেকে কিছু মিষ্টি আর ফলমূল বের করে আনলো।আর সেগুলো তাড়াতাড়ি করে একটা ট্রে তে সাজিয়ে দিলো।
রুয়েল তখন নাস্তার ট্রে টি জান্নাতের হাতে দিয়ে বললো,জান্নাত এগুলো নিয়ে তাড়াতাড়ি গেস্ট রুমে যান।
জান্নাত রুয়েলের দিকে অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে।সে শুধু ভাবছে এক দিনেই রুয়েল তার কত আপনজন হয়ে গেছে।তার কত কেয়ার করছে।
–কি হলো জান্নাত।ট্রে টি নিয়ে তাড়াতাড়ি যান।
জান্নাত রুয়েলের ধমক শুনে ট্রে টি নিয়ে গেস্ট রুমে চলে গেলো।
জান্নাতকে এতোক্ষনে আসা দেখে তার শাশুড়ী বললো,এতো দেরী হলো কেনো জান্নাত?হেনা ছিলো না রান্নাঘরে।
–জ্বি মা।হেনাই রেডি করে দিয়েছে এসব।
ভাবিরা তখন বললো, নতুন মানুষ তো।সেজন্য এরকম লেট হলো।ধীরে ধীরে এমনিতেই সব শিখে নেবে।এই বলে ভাবিরা নাস্তা খেতে লাগলো।তারা জান্নাতকেও খেতে বললো।
এদিকে হেনা ঊর্মির কাছে চলে গেলো।সে সবকথা ঊর্মিকে বলে দিলো।
–দেখছেন ভাবী রুয়েল ভাই এর কান্ড।এক দিনেই বউ ভক্ত হয়ে গেছে।আমি জান্নাত কে কি যেনো বলেছি আর উনি কি বুঝি শুনেছো,সাথে সাথে আমাকে এসে ধমকানো শুরু করেছে।কি রাগ টাই না দেখালো আজ।আমি তো চিন্তা করছি আপনাকে নিয়ে।কোন দিন বুঝি আপনাকেও এভাবে ধমকায়।
–মানে কি বলছিস এসব পাগলের মতো।আমি ওর ভাবি হই।আমাকে ধমকানোর সাহস আছে নাকি ওর?
হেনা সেই কথা শুনে বললো, আমার কথা মিলিয়ে নিয়েন ভাবি,যেদিন বউ এর হয়ে আপনাকে অপমান করবে সেদিন বুঝবেন।আপনাকে এখুনি সেজন্য সতর্ক করে গেলাম।
–যাবি এখান থেকে তুই।তোর মাথা পাগল হয়ে গেছে।সেজন্য এসব ভুলভাল বকছিস।
ঊর্মি হেনার কথার গুরুত্ব না দিলেও সে বুঝতে পারছে রুয়েল জান্নাতকে খুব বেশি ভালোবাসে।আর জান্নাতকে যে অপমান করবে,বড় বড় কথা শোনাবে তাকে রুয়েল ছেড়ে কথা বলবে না।তবে ঊর্মির মনে ভয় ঢুকে গেলো রুয়েল যদি জান্নাতকে এভাবে মাথায় তুলে রাখে তাহলে তো ভবিষ্যতে সে জান্নাতের কথামতো উঠবে আর বসবে।তখন কি রুয়েল তাদের আবার মাসে মাসে আগের মতো টাকা দিবে?রুয়েল বউ কে পেয়ে তাদের আবার না জানি ভুলে যায়?
#চলবে,