প্রেমপ্রলয় পর্ব-১৪

0
496

#তাসনিম_তামান্না
#প্রেমপ্রলয়
পর্ব-১৪

জিমি পিটপিট করে চোখ খুলে চারিদিকে চোখ বুলিয়ে শুভ্র রংয়ের বিছানা, জানালার পর্দা দেখে নিজ মনেই আওড়ালো ‘আমি কি মা’রা গেছি?’

পাশ ফিরতেই মাথায় ব্যাথা পেয়ে ‘আহ্’ বলে মৃদু চিৎকার করলো। পাশ থেকে চেনা পুরুষালী কন্ঠ ভেসে এলো।

-‘ অদ্ভুত তো আপনি মাথায় ব্যাথা যেনেও মাথা ওদিকে নিচ্ছেন’

জিমি চমকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো সামির দিকে সামি স্বাভাবিক চোখে তাকিয়ে আছে জিমির মুখপানে। জিমি তাকিয়ে থাকতে দেখে সামি গলা ঝেড়ে বলল

-‘ আই নোউ আ’ম লুকিং সো হ্যান্সাম তাই বলে এভাবে তাকিয়ে থাকবেন?’

জিমি অপ্রস্তুত হয়ে চোখ সরিয়ে নিয়ে মাথায় হাত দিলো। মাথায় হাত দিয়ে অনুভব করলো শুভ্র রংয়ের ব্যান্ডেজ করা। সাথে সাথে অনুভব করলো নিজের চুল গুলা বেডে ছড়িয়ে রাখা শুকনো ঢোক গিলে সামির দিকে তাকিয়ে বলল

-‘ এসব কি হ্যাঁ আমি এখানে কেনো? আমাকে এখানে কেনো নিয়ে আনছেন?’

সামি হেঁসে উঠে বলল

-‘ আরে আপনি ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আপনার চুলগুলো দেখে ফেলছি বলে’

জিমি চোখমুখ কুঁচকে বলল ‘আজব’

-‘ আজব টাজব রাখেন এখনি ডক্টর আসবে নার্স ডক্টরকে ইনফর্ম করতে গিয়েছে’

তখনি কেবিনের দরজা ঠেলে ডক্টর আর নার্স ডুকলো। চেকাপ করতে করতে ডক্টর জিমিকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতে লাগলো। যাওয়ার আগে বলল

-‘ নিজের দিকে খেয়াল রাখবেন মিস জিমি। দূর্বলতার জন্য আপনি মাথা ফা’টি’য়ে ফেললেন আরো বড় কিছু হতে পারতো।’

ডক্টর, নার্স চলে যেতেই। সামি জিমির বেডের দু-পাশে হাত রেখে মুখের কাছে গিয়ে বলল ‘হঠাৎ অনুভব করলাম আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি খুব গভীর ভাবে।’

জিমি চোখ বড়বড় করে সামির চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। সামির নিশ্বাস জিমির চোখ মুখে আছড়ে পড়ে। সামি ঠোট উল্টে বলল

-‘ জিমি নামক প্রেম রোগে ধরছে। কি করা যায় বলুন তো?’

জিমি তখন অবাক! বিষ্ময়! হতভম্ব দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। সামি সোজা হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল

-‘ বাসায় ইনফর্ম করে দিয়েছি আপনার জন্য খাবার আনছে ভাবি’

জিমি তখনো ঘোরের মধ্যে আছে। কি হলো বা হইছে সব যে মাথার উপর দিয়ে চলে গেলো। এটা স্বপ্ন? বাস্তব? না-কি কল্পনা? কিছু বুঝতে পারছে না জিমি। কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে থেকে ঘোর কাটিয়ে উঠে বলল

-‘ কি বললেন আপনি?’

সামি ভ্রু কুচকে মেডিসিন আর প্রেসক্রিপশন দেখতে দেখতে বলল

-‘ কই কি বললাম?’

-‘ কিছু বলেন নি?’

-‘ উহুম আপনি কি শুনেছেন?’

-‘ শুনলাম কিসব প্রেম ট্রেম’

-‘ ঠিক শুনেছেন?’

জিমি আঁ-ত-কে উঠে বলল

-‘ মানে?’

সামি স্বাভাবিক ভাবে জিমির চোখে চোখ রেখে বলল

-‘ যেটা শুনেছেন সেটাই। আমার আবার মনে ওতো প্যাচ ট্যাচ নাই তাই এস্টেট কার্ট সব বলতে পছন্দ করি’

জিমি কিছুক্ষণ নিরবতা থেকে বলল

-‘ হঠাৎ প্রেমে পড়ার কারণ কি?’

-‘ প্রেমে পড়ার বিশেষ রিজন থাকে বা আছে বলে আমার জানা নাই। কিন্তু আপনাকে আমার হঠাৎ ভালো লাগলো হুট করে প্রেমে পড়ে গেলাম। আপনার মুখে মায়া খুঁজতে গিয়ে আপনার মায়ায় আটকে গেলাম। আপনার সাথে আমার ঝ’গ’ড়া না করলে আজকাল আমার দিন ভালো যাচ্ছে না সব শূন্য লাগছে। প্রথম প্রথম বিষয়টাকে পাত্তা না দিলেও এখন বেশ উপলব্ধি করতে পারছি আপনাকে ছাড়া আমার একবিন্দু চলবে না! এবার আপনি বলতে-ই পারেন আমার অসুখ হয়েছে বা পা’গল হয়ে গেছি আমার ডক্টর দেখানো উচিত কিন্তু তার একমাত্র ঔষধ আপনি!’

জিমি সামির কথার প্রতিত্তোরে বলল

-‘ আপনার লজ্জা করলো না আমার সাথে মজা নিতে ফাইজলামি পাইছেন না-কি? আমি কিছু বুঝি না’

সামি হাসলো চমৎকার সেই হাসি। জিমি সেই হাসি আজ প্রথম দেখছে। প্রেমে পড়ার মতো সেই হাসি কিন্তু জিমি প্রেমে পড়লো না চোখ ফিরিয়ে নিলো। মনে মনে বলল ‘আগে কখনো তো এমন ভাবে হাসতে দেখি নি সব ভা’ন্ডা’মি আমাকে তার ম্যাজিকাল মায়ায় ফেলতে যতই যায় করুক আমি তার মায়ায় কখনোই পড়বো না কখনো না’

-‘ সে আপনি যা-ই ভাবেন না কেনো? আপনি আমার-ই হবেন। আপনার সাথে আমার আবার ঝগড়া লাগবে একটা সময় আপনি আমার ঠিকি প্রেমে পড়বেন ভালোবাসা বাড়বে’

জিমি বিরক্তি নিয়ে বলল

-‘ কি সব যাতা বলছেন আপনি?’

সামি বুকের পাশে হাত দিয়ে বলল

-‘হাই আপনার লুক গুলা যা বারবার আমার হার্ট বিট বাড়িয়ে দেয়’

জিমি বিরক্তির শেষ নাই মহা বিরক্তি নিয়ে বলল

-‘ এই আপনি আমার চোখের সামনে থেকে যান তো আপনাকে জাস্ট টলারেট করতে পারতেছি না আমি’

সামি এবার বাচ্চাদের মতো ইনোসেন্ট ফেস করে বলল

-‘ তুমি এমন করে বলো কেনো কষ্ট লাগে তো’

সামির কথায় জিমি আরেক দাফা অবাক হলো ‘তুমি’ সমদ্ধন করাই।

জিমিকে এমন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে মিলি আসলো। মিলি জিমির পাশে বসে বলল

-‘ কেমন আছিস এখন?’

-‘ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আম্মু কোথায়?’

-‘ আম্মু বাসায় সারারাত তোর পাশে বসে ছিলো কান্নাকাটি করছিলো। সকালে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি তা-ও যেতে চাই ছিলো না একটু পরেই আবার চলে আসবে’

-‘ ওহ’

-‘ হ্যাঁ। নিজের দিকে তো খেয়াল রাখিস না। একটা না একটা কিছু বাঁধানো লাগবেই তোর। নিজের দিকে খেয়াল রাখার জন্য তোর বিয়ে দেওয়া উচিত তখন বাঁদরামো পানা ছুটিয়ে যাবে’

সামি পাশ থেকে বলে উঠলো

-‘ গুড আইডিয়া ভাবি তাইলে তো আবার একটা বিয়ের দাওয়াত খেতে পারবো’

জিমি মিলি চোখ ছোট ছোট করে তাকালো মিলি বলল

-‘ ভাইটু তুমি খাদক হয়ে গেলে আজ টের পাইলাম’

-‘ ভাবি দুবোন আমার মজা নিতাছো কেনো?’

-‘ এমা ছিঃ ছিঃ কি যে বলো না? তোমার মজা নিবো আমরা আমাদের ঘাড়ে কটা মাথা আছে বলো’

-‘ নেও নেও যত ইচ্ছে মজা নাও আমার ও দিন আসবে মনে রেখো এক মাঘে শীত যায় না’

মিলি জিমিকে খাইয়ে দিলো জিমি বলল

-‘ বাসায় যাবো কবে?’

-‘ কেনো বাসায় কি কাজ তোর?’

-‘ আরে হসপিটালে থাকতে কার ভালো লাগে বলতো আমার নিজেই রুগী রুগী ফিল হচ্ছে।’

-‘ তার মানে তুই বলতে চাইছিস তুই রুগী আই মিন পেসেন্ট নস?’

-‘ অভিয়েসলি না’

-‘ তাইলে তুই কি?’

-‘ আমি একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ পারলে তোমার দেবরকে হসপিটালে ভর্তি করো পাগলের প্রলাপ করতে থাকে কানের কাছে’

-‘ এই আপনি আমাকে পাগল বললেন? ওকে আমি মাইন্ড করলাম না আপনি সুস্থ হয়ে নেন তারপর না হয় কোমড় বেঁধে ঝগড়া করবো’

-‘ আমি কেনো আপনার সাথে অযথা ঝগড়া করবো?’

-‘ আপনি তো আমার সাথে অযথায় ঝগড়া করেন’

-‘ মটেও না নিজে ঝগরুটে আবার আমাকে বলতে আসে’

-‘ স্টপ! স্টপ! তোরা না বললি ঝগড়া করবি না আবার দেখ এখন ঝগড়া করতেছিস? ব্যাপারটা কি তোদের তোদের ঝগড়া দেখে তো আমি পাগল হয়ে যাবো দেখছি’

-‘ কে ঝগড়া লাগাছে দেখতে পারতেছিস না?’

-‘ সেটাই ভাবি কে ঝগড়া লাগাছে দেখতে পারছো না?’

-‘ ওফ আবার শুরু করলি তোরা এবার দয়া করে থাম তোরা সামি যাও বাসায় যাও গিয়ে রেস্ট নাও অনেক ধকল গিয়েছে তোমার ওপর দিয়ে।

চলবে

এই পার্টটা অগোছালো হয়ে গেছে জানি তাও দিলাম। রিচেক করি নাই। গঠন মূলক কমেন্ট করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here