#হারাতে_চাই_না_তোমায়
#পর্ব-৪১,৪২
#লেখিকাঃ_উম্মে_বুশরা
৪১
মাঝে চলে গেছে একদিন।আজো আরু ঘুম থেকে উঠে দেখে ও আয়ানের রুমে।কিন্তু শুয়েছিলো গেস্ট রুমে।আর সকালল দেখে আয়ান ওর দিকে তাকিয়ে আছে।কিন্তু আরু আজ কিছু না বলে উঠে পরলো।আরুর দিনটা ভালোও যায়নি আবার খারাপ ও যায়নি।মায়ানের সাথে ভালোই সময় কাটিয়েছে।সাথে আয়ানাও ছিলো।আর আয়ানের মা
ওনারা আরুকে খুব সহজেই আপন করে নিয়েছে।মনে হয় কত যুগ ধরে উনাদের সাথে চেনা জানা আছে।কিন্তু এতোকিছুর ভিতরেও আরুর কেমন যেনো ফ্রি হতে পারছে না সবার সাথে।এতে অবশ্য আয়ানের মা বলেছে ‘তুমি সময় নেও।আস্তে ধীরে তুমি ফ্রী হও আমাদের সাথে।আমাদের কোনো জোর নেই।কিন্তু মা একটা কথা আমাদের ছেড়ে বিশেষ করে আমার ছেলেকে ছেড়ে চলে যেওনা।তোমাকে ও খুব ভালোবাসে।’এই কথা শুনে আর আর কিছু বলেনি।কী ই বা বলবে।তবে আয়ান ওকে অনেক জ্বালিয়েছে।সারাদিন আরুকে বউ কী করো,বউ তুমি তোমার স্বামীর সাথে না থেকে দূরে দূরে থাকছো কেনো?এতে কিন্তু তোমার গুনা হবে,বউ এটা করো,ওটা কোরো না,বউ এমন হবে,তেমন হবে।সারাদিন বউ বউ করে আরুর মাথর পোকা নাড়িয়ে ফেলেছে।আর আরুর বিরক্তিকর ফেইসটা যখন দেখতো তখন আয়ান মিটমিট হাসতো।কিন্তু আরু তাকলে হাসি বন্ধ করে দিতে।এমন করে সারাদিন যখন গেলো সন্ধ্যার একটু পর ড্রয়িং রুমে আরু আর আয়ান বসে ছিলো।এমন সময় আয়ান কি যেনো আরুকে বলতে চেয়েছিলো তাই ‘বউ’ উচ্চারণ করার সাথে সাথে আরু আয়ানের উপর সুনামি হয়ে এসে আয়ানের গলা টিপে ধরলো🤭।তারপর আয়ানের দিকে ঝুঁকে দাঁতেদাত বললো,
আরুঃ আর একবার বউ বলে ডাকলে এমন অবস্থা করবো যে কথা বলার জন্য আর কোনো দিন আওয়াজ বের হবে না😬।বুঝেছেন?
আয়ান এমন ডেঞ্জারাস থ্রেট শুনে শুধু ঘাড় কাত করে বুঝালো সে বুঝেছে।তারপর আরু ছেড়ে দিলো।
এদিকে আয়াম ছাড়া পেয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে নিজেকে ঠিক করছে।উফ!কী হলো একটু আগে।আরেএকটু হলে তো ও মরেই যেতো।আরু এখান থেকে চলে যেতে নিতেই আয়ান বিরবির করে বললো,
আয়ানঃ কী বউ রে বাবা?বিয়ের পরদিনই স্বামীকে মেরে বিধবা হতে চাইছে।কী ডেঞ্জারাস বাপ রে।আল্লাহ রক্ষা ভবিষ্যতে এই বউয়ের এমন রূপ দেখা থেকে।
আয়ান নিজ মনে কথাটা বলে পাশে তাকিয়ে দেখে আরু ক্ষেপা বাঘিনীর মতো আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।আরুর তাকানে দেখে আয়ান একটা বোকা হাসি দিকে সোফায় ছেড়ে আস্তে করে উঠে দাঁড়ালো।এখন উদ্দেশ্য পালানো।নাহলে ওর আজ রক্ষে নেই।আরু এক পা আগাতেই আয়ান ভৌ দোড়🏃♂️।আয়ানকে আর কে পায়।
আরু আয়ানকে ধরতে না পেরে রেগে ফেটে পরছে।তারপর রুমের উদ্দেশ্য যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই আবার আয়ানের গলা
আয়ানঃ কিন্তু বউ একটা কথা।বিয়ের পর এই ফাস্ট তোমার ছোয়া পেলাম🥰।নিজে থেকে দিলে😇।যদিও সেটা রোমান্টিক ভাবে না🙁।কিন্তু তা-ও দিলে তো।লাভ ইউ বউ।উম্মা…..হ😘(ফ্লাইং কিস)
আরু আবার আয়ানের দিকে তেড়ে যেতেই আয়ান আবার দৌড়🏃♂️
———-
আজ রাত ১১ টায় আরুর ফ্লাইট।আরুকে যেভাবেই হোক এই বাড়ি থেকে বের হতে হবে।আরু সেটার সুযোগ খুঁজছে।কিন্তু পাচ্ছে না।কারণ আয়ান সারাদিন ওর সাথে আঠার মতো লেগে থাকে।কিন্তু আজ একটু বেশিই মনে হয় লেগে আছে।ওয়াশরুমে গেলেও আয়ান সামনে দাড়িয়ে থাকে।কিন্তু আরকে তো আজ বের হতেই হবে।আগে ওই বাসায় গিয়ে কাগজ-পত্র নিয়ে তারপর এয়ারপোর্ট।কিন্তু ওই বাসায় যেতে হলেও আগে এই বাড়ির বাহিরে যেতে হবে।বাড়িতে সবার আর বাহিরে ২ জন গার্ড,দারোয়ান।ওদের চোখ নাহয় ফাঁকি দিয়ে বের হওয়া যাবে কিন্তু আয়ানের চোখ ফাঁকি দিবে কীভাবে সেই কাথা ভাবছে।এর মাঝে একবার চেষ্টাও করেছিলো কিন্তু নাভ হয়নি।
আসলে সকালে হয়েছে কী,ফজরের যখন আজান দেয় তখন আরু পা টিপে টিপে রুম থেকে বের হয়।কারণ ও জানে এই সময় কেউ উঠে না।আয়ানের বাবা মা উঠে নামাজ পরে আবার শুয়ে পরে।রুমের বাহিরে আর বের হতে হয় না।
তাই আরু সুযোগ বুঝে রুম থেকে বের হলো।কিন্তু আরুর মাথায় একবারো এলো না যে ও আজ গেস্ট রুমেই আছে।আরু যখন ড্রয়িং রুম পেরিয়ে মেইন দরজার কাছে গেলো তখন পেছন থেকে কে যেন আরুর হাত ধরে ফেলে।আরু তো ভয়ে শেষ।ধরা পরে গেলো।কিন্তু কে ওর হাত ধরেছে তা এখনো দেখেনি।আরুও ভাবেনি এটা আয়ান।তাই না দেখে ভয়ের চোটে মনে যা এসেছে বলে দিয়েছে।
আরুঃ যেই হও,প্লিজ ছেড়ে দাও।ওই খরুস,হিটলার টা দেখলে আমাকে যেতে দিবে না।আমার যাওয়া খুব দরকার।প্লিজ।
বলে পিছে ঘুরে দেখলো যার হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য এমন করতে যাচ্ছিলো তার হাতেই ধরা পরলো।একন কী হবে?এখন যাবে কিভাবে?আরু তো ভয়ে শেষ।বাড়ির বাহিরে গিয়ে ধরা পরলে কী হতো।না এখনই ধরা পরতে হলো।কিন্তু এ এতো সকালে কোথা থেকে টপকালো।ওর তো এখন ঘুমানোর কথা।তবে এখানে কেনো?
আরুর ভাবনার মাঝেই ওর হাতে টান পরলো।আয়ান ওকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।আরু এবার জোড়ে বললো,
আরুঃ আরে কি করছেন?ছাড়ুন আমার হাত।কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?আরে কী বলছি?
আরুর চিৎকারে বাড়ির সবাই উঠে পরবে।তাই আয়ান আরু দিকে ফিরে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললো,
আয়ানঃ আস্তে।বাড়ির সবাই জেগে যাবে।আরু তুমি যেখানে যেতে চেয়েছিলে সেখানেই নিয়ে যাবো।চলো।
বলেই আরুকে কোলে নিয়ে হাঁটা দিলে আয়ানের রুমের দিকে।আয়ানের এমন শান্ত গলা শুনে আরু আর কিছু বলতে পারলো না।আর আয়ানের চোখের চাহনি ও ছিলো শান্ত।আরু যে চলে যেতে চেয়েছিলো আয়ান এটা দেখেও আরুকে কিছু বললো না এটা আরুকে ভাবাচ্ছে।আয়ানের এমন চুপ দেখে আরু একটু না অনেকেই অবাক।
———-
রুম এনে আরুকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে দরজা লক করে দিলো।এর মাঝে কোনো কথা বললো না।আরু শুধু হা হয়ে দেখছে।আয়ান বিছানায় এসে নিজে শুয়ে একটানে আরুকে নিজের বুকের উপর ফেললো।আয়ানের এমন কাজে আরু পুরো থ হয়ে আছে।যখন বুঝলো ও আয়ানের বুকের উপর তখন উঠে যাওয়ার জন্য ছটপট করতেই আয়ান চোখ রাঙিয়ে আরুর দিকে তাকালো।
আরু আয়ানের চোখ রাঙানী দেখে ভয় পেলো।কারণ চোখ গুলো লাল হয়ে আছে।যেনে এখুনি আগুন বের হবে।আরু এমন দেখে কথা বলারও যেনো ভাষা খুঁজে পলো না।তাই চুপ করে আয়ানের বুকে মাথা রাখলো।আরুর জীবনে এই প্রথম কোনো পুরুষে এতো কাছে এসেছে(যদিও কাল শুয়েছিলো কিন্তু তা ঘুমের মধ্যে)।তার বুকের মাথা দিয়ে শুয়ে আছে।তার প্রতিটা নিশ্বাস আরুর মাথায় আছড়ে পরছে।এক অন্য রকম ভালো-লাগা মনের ভিতর ছুয়ে যাচ্ছে।সে কী তার স্বামী বলেই এমন সুখ অনুভব করছে না কী অন্য কিছু।ওরা একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে বলেই কী এই টান,ভালোলাগা হচ্ছে মনে?আরুর মনে হচ্ছে এটাই ওর নিরাপদ স্থান।এখানে থাকলে ওর কোনো বিপদ হবে না।আরু যে একটু আগে চলে যেতে চেয়েছিলো তা ওর মাথায় থেকে চলে গেলো।আয়ানের উপর ওর রাগ,অভিমান সব যেনো নিমিষেই ভুলে গেলো।
আরু চোখ প্রচন্ড ঘুম।তাই শোয়া মাত্র ঘুমিয়ে পরলো।
আরু আয়ানের বুকে মাথা রাখতেই আয়ানের মনে হলো ওই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সুখী।ওর থেকে এতো সুখী কেউ হতে পারে না।ওর জানপাখি আজ এতো গুলো দিন,এতোগুলো বছর পর ওর বুকে মাথা রেখেছে।এতোদিন বুকের ভিতরে জ্বলা আগুন যেনে আরু মাথা রাখার সাথে সাথেই নিভে গেলো।এটাকে কেমন সুখ বলা চলে আয়ান জানে না।আর জানতেও চায় না।শুধু চায় এই সময় যেনো থেমে যায়।এই সময়টা শুধু ওর হোক।শুধু ওর।আর কারো না।আয়ানের চোখ দুটি ছলছল করছে।এতোক্ষন যেই চোখ লাল হয়ে ছিলো সেই চোখ এখন পানিতে পরিনত হয়েছে।এটা দুঃখের কান্না নয়।এটা খুশির কান্না।আয়ান নিজের চোখের পানি মুছে ফেললো।ওর এই সুখ ধরে রাখতেই হবে।ওর জানপাখিকে ওর ধরে রাখতেই হবে।রাগ,অভিমান সব ভাঙ্গাতে হবে।আর আয়ানকে সেটা যে করেই হোক পারতে হবে।
আরুর নিশ্বাস যখন ঘন হয়ে এসেছে তখন আয়ান মাথা তুলে দেখে আরু ঘুমিয়ে গেছে।আয়ান একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে আরুর মাথায় অনেকটা সময় নিয়ে চুমু খেলো।আর মনে মনে ভাবছে,”সরি জান।তেমাকে আমি যেতে দিবো না।তোমার ইচ্ছে হলেও আমার সাথে থাকতে হবে না ইচ্ছে হলেও আমার সাথেই থাকতে হবে।আমি লোকটা বড্ড খারাপ কিন্তু এই খারাপ লোকটা যে তোমাকে অনেক ভালোভাসে।নিজের থেকে আলাদা করতে চায় না।একবার তো না জেনে না বুঝে তোমার থেকে নিজেকে আলাদা করেছি যার জন্য ৫ বছর আামর থেকে দূরে ছিলে।নিজে কষ্ট পেয়েছো আর আমাকেও কষ্ট দিয়েছো।কিন্তু আর না।আর তোমাকে দূরে যেতে দিবো না।আর এটাও জানি তুমি আমাকে এখনো ভালেবাসো।কিন্তু সেটা অভিমানে নিচে চাপা পরে আছে।আর সেই অভিমান আমি ভালোবাসায় রূপান্তর করবোই।”
বলেই আবার আরু মাথায় চুমু খেলো।আর ভাবছে একটু আগের কথা।
আয়ান জানতো আজ আরু ফ্লাইট।ও চলে যাওয়ার জন্য এ বাড়ি থেকে পালাতে পারে।তাই আয়ান আজ ইচ্ছে করেই আরুকে ওর রুমে আনেনি।ও দেখতে চেয়েছে আরু কী করে।সারারাত আয়ান সজাগ ছিলো।এমন করতে করতে ভোর বেলা যখন দেখলো আরু পা টিপে টিপে মেইন দরজার কাছে যাচ্ছে তা দেখেই আয়ান যা বুঝার বুঝে গেলো।আয়ান রেগেও গেলো।তাই তাড়াতাড়ি এসে আরুর হাত ধরে ফেললো।আর আরুর হাত ধরার পর আরু যা বললো তাতে যেনো আরো রাগ বাড়লো।যদিও চলে যওয়া নিয়ে বেশি রেগেছিলো।কিন্তু এখন কিছুতেই আরুর সামনে রাগ উঠাবে না তাই চুপ করে নিজেকে সংযত করছিলো।বর রাগের জন্য চোখ গুলো লাল হয়েছিলো।
—————–
সকাল ১০ টা,
আরু চোখ পিটপিট করে তাকচ্ছে।আস্তে করে চোখ ডলে ডলে চোখ পরিষ্কার করছে।হটাৎ ওর কানে ধুকপুক আওয়াজ আসছে।আরু তা কান পেতে শুনছে।আওয়াজটা খুব মিষ্টি লাগছ আরুর কাছে।মনে হচ্ছে সারাদিন এই আওয়াজ শুনে কাটিয়ে দিতে পারবে।অনেকক্ষন পর ওর মনে হলো ও কোথায়?তাড়াতাড়ি মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে ও আয়ানের বুকে ঘুমিয়ে ছিলো।আরু আয়ানের দিকে তাকালো।বাহিরের টুকরো টুকরো রোদ আয়ানের মুখে এসে পরছে।কপালের উপর চুল গুলো বাতাসে উড়ছে।কালচে লাল ঠোঁট গুলো দেখে মনে হচ্ছে মুচকি হেসে আছে।আরু সব ভুলে আয়ানের ঠোঁট ওর আঙুল দিয়ে স্পর্শ করলো।সাথে সাথে আরু কেঁপে উঠলো।আরু এবার মনে হলো এই চুল গুলো আয়ানের কপালে না ওর কাপালে তাই এগুলো বিরক্ত নিয়ে সরিয়ে দিলো।তারপর এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।এই লোকটা ওর স্বামী।ওর ভালোবাসার মানুষ।যতই রেগে থাকুক ভালো তো বাসে।কিন্তু সেটা স্বীকার করতে কেমন যেনো লাগে।কতোক্ষন ছিলো জানা নেই কিন্তু হটাৎ ওর পিঠে করো হাতের ছোয়া পেতেই ওর হুস এলো।তাড়াতাড়ি করে চোখ সরিয়ে উঠে যেতে নিলেই।আয়ানের কন্ঠ।
আয়ানঃ ঘুমের মাঝে একটা ছেলের ইজ্জত নষ্ট করতে তোমার একটুঔ বুক কাপলো না?আজকে আমার সব শেষ করে দিলে তুমি।আমি এখন এই মুখ কাকে দেখাবো।
আরু এবার বেশ মসিবতে পরেছে কি করবে এখন এদিকে আয়ানের চোখ এখনো বন্ধ।আয়ান যে এতোক্ষন জেগে ছিলো তা আরু বেশ বুঝতে পেরেছে এতে কিছুটা লজ্জাও লাগছে।কিন্তু শেষ লাইনটা শুনে আরুর মাথায় গরম হয়ে গেলো।কাকে মুখ দেখাবে মানে?কী করেছে আরু ওর সাথে যে মুখ দেখানো যাবে না?আরু এবার ক্ষেপে গিয়ে দু-হাত দিয়ে আয়ানের চুল টেনে ধরলো।এতোক্ষন যা যত্ন সহকারে গুছিয়ে দিয়েছিলো তা এখন ওর রাগ নিবারনের একমাত্র বস্তু বলে মনে হচ্ছে।
আয়ান চুলে টান পরায় আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারলো না চোখ খুলে আরুর হাত থেকে নিজের চুল ছাড়াতে ছাড়াতে বললো,
আয়ানঃ আহ!বউ কী করছো ছাড়ো।মরে গেলাম।উফ।বউ আমার কতো ভালো।প্লিজ ছাড়ো।জান আমার।প্লিজ…আ্য…..😫😫
আরুঃ বাহিরে মুখ দেখানো যাবে না তাি না😬
আয়ানঃ আরে মজা করছিলাম।মুখ দেখাবো না কেনো।আহ।সবাইকে বলে বলে দেখাবো যে আমার বউ আমার ঘুমের মাঝে লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে আদর করেছে।প্লিজ ছাড়ো এবার।😣😩
আরুঃ কী সবাইকে দেখানো হবে 😠
আয়ানঃ আরে ভুলে বলে ফেলেছি।আ…তুমিই তো দেখবে।আর কেউ না।তুমি যদি না দেখো তাহলে কী পাশের বাড়ির সখিনা এসে দেখবে না কী?প্লিজ বউ ছাড়ো😩এভাবল স্বামীকে অত্যাচার করতে নেই 😣
আরু একটু শান্ত হলো।আয়ানের থেকে সরে বসলো।ও এখনো রেগে আছে।এখন ওর মাথায় আরেকটা কথা এলো।
আর এদিকে আয়ান ছাড়া পেয়ে যেনো জান ফিরে পেয়েছে।ওর চুলের গোঁড়ায় গোড়ায় ব্যাথা হয়ে আছে।নিজেকে ঠিক করছে।এর মাঝেই আরু বললো,
আরুঃ সখিনা কে?
আয়ানঃ চিনি না।(নিজেকে ঠিক করতে করতে)
আরুঃ তাহলে যে একটু আগে বললেন🤨?
আয়ানঃ সে তো কথায় কথায় বলেছি।তোমার থেকে ছাড়া পেতে।(সত্যিটা বলেছে কিন্তু কে কেনো জিজ্ঞেস করছে সেদিকে খেয়াল নেই)
আরু কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো।যেতে ঠোঁটের কোনে একটু হাসি ফুটলো।যা আয়ান দেখলো না।দেখবে কী করে সে তো নিজের চুল নিয়ে পরে আছে😩।আরু গেলে আয়ান ভাবে,”কী বউ রে🙆♂️ ফাস্ট গলা টিপে ধরলো আর এখন চুল টেনে ধরলো।এই বউ আমার কপালে ছিলো🤦♂️😣।যাক দেখা যাক ভবিষ্যতে আর কী কী সয্য করতে হয়।দজ্জাল বউ”।
বলেই তাড়াতাড়ি মুখে হাত দিলো।শুনে ফেললেই ওর উপর দিয়ে সিডর বয়ে যাবে।
———
এখন প্রায় সন্ধ্যা।আরু এতোক্ষন বেলকনিতে বসে বসে সকালের কথা গুলো ভাবছিলো।একটু হেসেও দিলো।কারণ এই দুদিন আয়নকে জব্দ করতে পেরেছে একটু হলেও।সারাদিনে অনেক চেষ্টা করেছে বাড়ি থেকে বের হওয়ার।কিন্তু পারে নি।তবে এখনো সময় আছে।বের হওয়ার।কিন্তু সুযোগ পাচ্ছে না।
আয়ান রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।আর মাঝে মাঝে আরুকে দেখছে।ও কী করছে।এর মাঝে দু-তিন বার দু’জনের চোখাচোখি হতেই আরু ভেংচি কেটে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।আর আয়ান মুচকি হেসে আবার কাজে মন দেয়।
এর মাঝে হটাৎ চম্পা এলো(আয়ানদের বাসায় কাজ করে)।এসে আরুকে রুমে না পেয়ে আয়ানকে বললো,
চম্পাঃ ভাই ভাবি কই?
আয়ানঃ কেনো?(ফাইল দেখতে দেখতে)
চম্পাঃ খালাম্মা কইছে জাইতে।খুব দরকারি কাম বিলে আছে।
আয়ানঃ (কিছু ক্ষন চুপ থেকে)ওহহ।ও বেলকনিতে গিয়ে বল।
চম্পা মাথা নেড়ে চলে এলো আরুর কাছে।এসে বললো,
চম্পাঃ ভাবি আপনেরে খালাম্মা ডাকে।হের রুমে যাইতে কইছে।
আরুঃ আচ্ছা তুমি যাও।আমি আসছি।
চম্পা চলে গেলে আরু রুমে এসে নিজেকে আয়ানায় দেখে চলে গেলো।আয়ানের দিকে একবার তাকিয়ে দেখে কাজল মগ্ন।
————
আরু বসে আছে তার শাশুড়ী রুমে।মানে আয়ানের মা’য়ের রুমে।আরু বুঝেছে এই বাড়ির সবাই অনেক ভলো।আরু শুধু বসে আছে কিছু বলছে না।তাই আয়ানের মা বললো,
আফিয়া রাহমানঃ আমি জানি মা তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছো…আমাদেরও একটা মেয়ে আছে।আমরাও বুঝি কেমন লাগে
হয়তো তোমার মতো করে বুঝবো না
কারণ তোমার ঘাতের পরিমাণটা অনেক বেশি।আয়ানের হয়ে আমরা ক্ষমা…….
আরুঃ না আন্টি কী বলছেন আপনি এসব।এখানে আপনাদের কোনো দোষ নেই।
আফিয়া রাহমানঃ মা আমি চাইনা তোমার মনের বিরুদ্ধে গিয়ে তুমি আমার ছেলের সাথে থাকো।জোর ওর সাথে মানিয়ে নাও।….ছেলেটা যে এমন একটা কাজ করবে আমরা বুঝতে পারিনি।
আরুঃ (চুপ)
আফিয়া রাহমানঃ তুমি যদি চাও তাহলে তোমাদের বাসায় ফিরে যেতে পারো।আমরা আটকাবো না
আরুঃ আন্টি কী বলছেন….
আফিয়া রাহমানঃ দেখো মা আমার ছেলের খুশির জন্য আমরা তোমার উপর জোর খাটাতে পারি না।আমি চাই না তুমি আমাদের জন্য তোমার আর আয়ানের সম্পর্ক জোর করে ঠিক করো।তুমি আমার মেয়ের মতো তাি চাই তুমি খুশি থাকো।
আরুঃ (চুপ)
আফিয়া রাহমানঃ তোমার যদি এখানে থাকতে ইচ্ছে হয় তাহলে তুমি থাকো।তোমার উপর কেউ কোনো জোর খাটাবে না।এমনকি আয়ান ও না।ও তো শুধু তোমাকে ওর পাশে চায়।আর কিছু না।কিন্তু মা নিজের মধ্যে কিছু চেপে রেখে নিজেকে কষ্ট দিও না।এতে আমরা নিজেদের আপরাধী মনে হবে।
আরুঃ আন্টি আমার একটু সময় লাগবে।
আফিয়া রাহমানঃ বেশ😊
আরু কিছু না বলে উঠে এলো।ওর মন দোটানায় ভুগছে।কী করবে ও?
আরু কী করবে আপনারা বলে দিয়েন
চলবে……
#হারাতে_চাই_না_তোমায়
#পর্ন-৪২
#লেখিকাঃ_উম্মে_বুশরা
বেশ কয়েকদিন এভাবেই কেটে গেলো।আরু পারলো না এই বাড়ি থেকে বের হতে।চেষ্টা করেছিলো কিন্তু সফল হয়নি।আর সেই আয়ানের মা’র কথা শুনে ওর মনের কোথাও একটা কড়া নাড়ে।যে এই মানুষ গুলোর জন্য নাহয় থেকে যেতে পারে কিন্তু আয়ানের জন্য কোনো ভাবেই না।আরুর বাসায় ওর বাবা মা,তন্নি সবার সাথে প্রতিদিনই কথা হয়।ওরা প খুশি যে আরু এই বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।কিন্তু অনিম খুশি হতে পারে নি।শেষে তন্নি অনেক চেষ্টা করে অনিমকে মানিয়েছে।অবশ্য আয়ান একবার গিয়ে অনিমের সাথে কথা বলে সব ঠিক করেছ।আয়ান কথাও দিয়েছে ভবিষ্যতে কোনো দিন আরু গায়ে ফুলের টোকা ও লাগতে দিবে না।সারাজীবন আগলে রাখবে।এমন কথা শুনে অনিম আপত্তি করে নি।
ওদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি।আয়ান প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছে কিন্তু এতো পরেও আরুর মন গলাতে পারে নি।আরুও যেনো পন করেছে এতো আয়ামকে ক্ষমা করবে না।
আরু আর আয়ান এখন আয়ানের রুমেই থাকে।আয়ানের মা’ই বলেছিলো ওদের এক সাথে এক রুমে থাকতে।আরু প্রথমে আপত্তি জানিয়েছিলো কিন্তু আয়ানা অনেক বুজিয়ে শুনিয়ে রাজি করিয়েছে।আরুর প্রথম দিন ঘুমাতে একটু অস্বস্তি লাগছিলো আয়ান তা বুঝে ঘুমিয়ে গেলো।আয়ানকে গুমাতে দেখে আরু ও রিলেক্স ঘুমালো।আরু ঘুমিয়ে যেতে আয়ান উঠে আরুকে নিজের বুকে এনে ওর কপালে চুমু খেয়ে ঘুমের রাজ্যে পারি জমায়।আয়ানের এটা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
আরু প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে ও আয়ানের বুকে।কিন্তু শোয় বালিশে।আরু প্রথমে এটা নিয়ে আয়ানকে জিজ্ঞেস করলে আয়ান বলে,”তুমি ঘুমের ঘোরে আমার কাছে এসে আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাও।এতে আমার কী।ইশশ!তোমার ভারি মাথা আমার বুকে রাখো এখন আমার বুক ব্যাথা করছে🥺”।
আরুও এমন কথা শুনে আয়ানের দিকে তাকলে আয়ান ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ হওয়ার মতো ভান ধরে থাকে।কিন্তু এখন আর আরু কিছু বলে না।কারণ ও জানে আয়ানই ওকে নিয়ে টেনে নেয়।
——————
আজ শুক্রবার বার,
আয়ান বাসায়।আরু সকালে নাস্তা করে রান্নাঘরে গিয়েছিলো চম্পা আর আয়ানের মা’কে একটু হেল্প করতে।কিন্তু আয়ানের মা ধমক দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে।তাই আরু বাহিরে এসে আয়ানার সাথে আড্ডা দিলো।আয়ানার প্রবাস জীবন,সংসার জীবন,স্কুল,কলেজ ভার্সিটির জীবন এসব বিষয় নিয়ে টুকটাক কথা বলেতে বলতে কখন সময় চলে গেছে তা বুঝতে পারলো না।যখন আযান দিলো তখন টনক নড়লো দু’জনের।আরু উঠে চলে গেলো ফ্রেশ হয়ে নামাজ পরতে হবে আর আয়ানাও।
আরু রুমে এসে থমকে গেলো।আয়ান আজ কালো পাঞ্জাবি পরেছে সাথে সাদা প্যান্ট।মাথায় শুভ্র টুপি।আর কিছু নেই তারপরও যেনো অসাধারণ লাগছে।আয়ানকে দেখে আরু টুকুস করে ক্রাশ খেলো।
আরুকে এভাবে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আয়ান মুচকি হেসে বললো,
আয়ানঃ এভাবে তাকিয়ে থাকলে তো নজর লেগে যাবে।তখন আবার মেয়েরা পছন্দ করবে না।..তোমার কাজল টা কোথায়?(খুঁজতে খুজতে।যদিও মিথ্যে)
আয়ানের কথায় আরুর ঘোর কাটলো।কিন্তু ওর এমন কথা শুনে কভার্ডের কাছে যেতে যেতে বললো,
আরুঃ 🤨যেই না পদের ঢক,,নাম রাখছে আবদুল হক😏।
আরু ওয়াশরুমে চলে গেলো।কী বললো আরু এটা?মনে পরছে না।আর মনে করার চেষ্টা না করে ওয়াশরুমের দরজায় টোকা দিলে আরু ভিতর থেকে সাড়া দিলে আয়ান বলে,”আমি নামাজে গেলাম”।আরু ও “আচ্ছা” বললে আয়ান রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
———-
আরু আজ বড্ড ইচ্ছে করছে শাড়ি পরতে।তাই কভার্ডের সামনে গিয়ে শাড়ি দেখতে লাগলো।কোনটা পছন্দ হয়।অনেক দেখার পর একটা শাড়ি পছন্দ হলো।লাল পার কালো শাড়ি।আরু আয়নার সামনে এসে শাড়িটা দেখছে কেমন লাগছে।বেশ ভালোই লাগছে।হাফস্লিক এমব্রডারি শাড়ি।এগুলো সব আয়ানের আনা।আরু ঝটপট তৈরি হয়ে নিলো।চোখে কাজল,ঠোঁটে হালকা লাল লিপস্টিক আর চুল গুলো ছাড়া।কানে কালো পাথরের বড় বড় দুল।আলাদা মেকআপের দরকার পরে নি।কারণ আরু এমনিতেই ফর্সা।আর আরু মেকআপ বেশি পছন্দও করে না।ব্যাস আছে কিছু না।এতেই আরুকে খুব সুন্দর লাগছে।আরু শেষ আয়নায় নিজেকে দেখছে।এমন সময় শুনতে পেলো আয়ান আসছে।আরুর একটু লজ্জা লাগছে।আয়ানের সামনে যেতে।….কিন্তু পরক্ষনে আরুর মাথায় একটা বুদ্ধি এলো।যা এখনই আরুকে প্রয়োগ করতে হবে।নাহলে যে আয়ানকে আজ শিক্ষা দিতে পারবে না।আরু আজ আয়ানকে জ্বালাবে।আরু আয়ানকে জ্বালাতে জ্বালাতে ভাজা ভাজা করে ফেলবে তাহলে যদি আয়ানকে ছেড়ে দেয়।
আয়ান রুমে এলে ওর চোখ যেম থমকে গেলো।হার্টবিট একটা না কয়েকটদ মিস হয়ে গেলো।
আরু শাড়ির আচল একটা ভাজ করে উপরে তুলে রেখেছে।যার ফলে ওর ফর্সা মেদহীন পেট দেখা যাচ্ছে।
আরু চুল এক সাইডে এনে ঠিক করছে।(মূলত এটা ভান করছে)।যার ফলে ঘাড় ও আয়ানের কাছে দৃশ্যমান।আয়ান এক ধ্যানে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।আয়ানের শরীরের যেনো কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে আর সেই আগুন নিভাতে ওর আরুকে দরকার।যা আর কেউ পারবে না।আয়ান ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে আরুর দিকে।
আরু আড়চোখে তাকিয়ে দেখে আয়ান ওর দিকে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আরু নিজেই তো এই চোখের গভীরে চলে যাচ্ছে।আরু আয়ানকে শাস্তি দিবে কী ওই তো যেনো ঘোরে চলে যাচ্ছে।আরু বুঝতে পেরেছে আয়ানকে শাস্তি দিতে গিয়ে ও নিজেই ফেসে যাচ্ছে।(আসলে আরু চেয়েছিলো আয়ানকে ওর উপর ঘায়েল করে কেটে পরবে আয়ানকে ওর ধারে কাছেও আসতে দিবে না।আরু জানে ওর এই রূপ দেখে আয়ান ওর কাছে আসবেই)আরুর খুব ইচ্ছে করছে আয়ানের বুকে মাথা রেখতে কিন্তু না এমন করবে না কারণ আয়ানকে এখনো মেনে নিতে পারে নি।নিজের প্রতি হওয়া সব ঘটনা ভুলতে পারে নি।আর ভুলাটা তো সহজও নয়।আরু চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলে নিলো।আরু এসব ভাবতে ভাবতে হটাৎ টের পেলো কেউ ওকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরেছে।আরু আয়নায় তাকিয়ে দেকে আয়ান ওকে জরিয়ে ধরে ওর খোলা চুলে নাক ডুবিয়ে দিয়েছে।আয়ানের ছোঁয়ায় আরুর শরীর যেন বিদ্যুৎ এর মতো চিলিক মেরে উঠলো।আয়ানের দু হাত আরুর পেটের উপর।আরুর সারা শরীর কাঁপছে। ওর দু-হাত দিয়ে নিজের শাড়ি খামছে দরেছে।
অনেকক্ষন পর আরুর হুস আসে।কিন্তু আয়ান সে তো এখনো তার প্রিয়তমার চুলের ঘ্রান নিতে মগ্ন।তার আর কোনো দিকে হুস নেই।তাই আরু কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
আরুুঃ কী…কী করছেন?ছাড়ুন আ..আমাকে
আয়ানঃ….উম…. (সে তার কাজে ব্যাস্ত)
আরুঃ বলছিনা ছাড়ুন 😠(আয়ানের থেকে নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে)
আয়ানঃ একবার যখন ধরেছি সারাজীবনও ছাড়বো না জান।তাই ছাড়ার কথা বলো না।
বলেই আরুকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে ওর উন্মুক্ত ঘাড়ে চুমু খেলো।এবং লাগাতার ঠোঁটের স্পর্শ দিতে লাগলো আরুর ঘাড়ে।
আয়ানের এমন সাংঘাতিক স্পর্শে আরুর বার-বার কেঁপে উঠছে।আরু আয়নায় আয়ানকে দেখছে।আয়ান আরুর চুলে আবার নাক ডুবিয়ে দিয়ে বললো,
আয়ানঃ আরুপাখি।একবার যেহেতু তোমায় আমার খাঁচায় আটকাতে পেরেছি আর কোনোদিনও তোমাকে বের হতে দিবো না।
আরুঃ আমিও দেখবো কে কাকে ধরে রাখে।আমি চলে যাবো খুব তাড়াতাড়ি।
আরুর কথাটা বলতে দেরি আয়ান ওকে আরো শক্ত করে চেপে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে একটানে আরুকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজে আরুর উপর শুয়ে পরলো।আর আরুর হাত ওর হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলো।আর চোখ পুরো লাল হয়ে আছে।
আয়ানের এমন লাল চোখ আর এমন সাপের মতো পেঁচিয়ে ধরাতে আরুর মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না।
আয়ান দাতে দাঁত চেপে বললো,
আয়ানঃ এই জীবনে তো নয়ই।আমার জীবন থাকতে তোমাকে আমার থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না আর না তুমি আমার থেকে পালিয়ে যেতে পারবে।
আয়ানের এতো কাছে আসায় আরু বুকে মনে হয় ঢাক ডোল সব একসাথে বাজছে।আরুর নিশ্বাস ভারি হচ্ছে।কিন্তু আরু নিজেকে সামলে তেজি গলায় বললো,
আরুঃ এসব নাটক বন্ধ করুন।যখন শুনেছেন আপনি আমার সাথে না বুজে অন্যায় করেছন,ভুল বুঝেছেন,অবহেলা করেছেন তখন থেকে আপনার ভালোবাসা উতলে পরছে তাই না?😤
আরু কথা শুনে আয়ান ওর আরো কাছে এলো।এবার আয়ান এক হাত আরুর পেটে আরেকহাত আরুর মাথায় রেখে অসহায় গলায় বললো,
আয়ানঃ কী করলে তুমি বিশ্বাস করবে আমিও তোমাকে ছাড়া ভালো ছিলাম না।আমি ভালোবাসি এখনো তোমাকে।তোমাকে #হারাতে_চায়_না।
আরুঃ কাচ ভেঙলে যেমন জোড়া লাগানো যায় না তেমম বিশ্বাস ভাঙলেও জোড়া লাগানো যায় না।
আয়ানঃ এখন তোমার বিশ্বাসের জন্য কী করতে হবে?বলো।
আরুঃ আপনি আমাকে ডির্ভোস দিন।শেষ।
এই কথাটা শুনে আয়ান রেগে আরুর গাল চেপে ধরে চিল্লিয়ে বললো,
আয়ানঃ বিয়ে করেছি কী ডির্ভোস দেওয়ার জন?আর যেতে হলে আমাকে নিজের হাতে মেরে তারপর যাবে।এর আগে গেলে বা আমাদের মাঝে কেউ আসলে জানে মেরে ফেলবো।
তারপর আরুর কপালে একটা চুমু খেয়ে আয়ান উঠে চলে গেলো আর আরুর গা কাঁপছে রাগে।রেগে আয়ানকে ইচ্ছে মতো গালাগালি দিতে থাকলো।
——————–
৫ দিন পর।
এই কয়দিন আয়ান বা আরু কেউ করো সাথে কথা বলেনি।দু’জনেই রেগে আছে।আয়ান কথা না বললে আরুর কিছুই যায় আসে না কিন্তু আরু কথা না বলাতে আয়ানের যেনো সব দিকে হাহাকার।আয়ান ভাবছে কথা বলবে কিন্তু আবার আরুর ডির্ভোসের কথাটা মনে পরলে রাগ আরো বাড়ে।কিন্তু প্রতিদন রাতে আরুকে বুকে নিয়ে ঘুমানো আর আরু সকালে উঠে আয়ানের বুকে নিজেকে আবিষ্কার করা যেনো ওদের নিত্যদিনের রুটিন বলা চলে।
চলবে…..