#তোমার_পিছু_পিছুপর্ব- ১১
তামান্না কাচের দেয়াল বেধ করে আরো একবার নিজের স্যারের দিকে তাকালো….. আজ ১৭ দিন হতে চলছে তামান্না অফিস জয়েন করেছে…. এই ১৭ দিনে কাজ ব্যাতিত অন্য কোন ব্যাপার নিয়ে এই নিমচা স্যারের সাথে কথা হয়নি….তাছাড়া তামান্নাও খুব সাবধানে বর্নকে এড়িয়ে চলে….. যেনো সেই ভয়াবহ ঘটনা নিয়ে বর্ন আর কোন খোচা মারতে না পারে……
২৫ মিনিটের মধ্যে মিটিং শুরু হবে….. তামান্না চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো…বর্নর অফিস রুমের দরজায় দুইবার নক করতেই ভিতর থেকে সাড়া পেয়ে তামান্না ভিতরে প্রবেশ করল…
-কেমন আছেন মিস তামান্না?
-জ্বী স্যার ভালো..… ধন্যবাদ আবার জিজ্ঞেস করার জন্য….
-ইউ আর ওলেয়কাম।
-স্যার, মোস্তফা গ্রুপস এর সাথে দুপুর ২টায় মিটিং,,, ২৫ মিনিটের মধ্যেই শুরু হবে…..
-হুম…. এখনো আমাদের হাতে ১৯ মিনিট সময় আছে….মিস তামান্না আপনি কি ইনস্ট্যান্ট কফি করতে পারেন?
কফির ব্যাপারে তামান্নার ধারনা খুবই কম। নেই বললেই চলে…. গ্রামে কখনো চায়ের প্রতিও ওর ধারনা বা আগ্রহ ছিলো না…. আর কফি তো দূরেই থাক….
তামান্না হালকা করে মাথা নাড়ল,
-নেই স্যার….
-আচ্ছা সমস্যা নেই…
বলেই বর্ন টেবিলের উপরের বেল প্রেস করল। একটু পরেই একজন ১৩/১৪ বছরের ছেলে বর্নর রুমে প্রবেশ করল,,, ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বর্ন হালকা হেসে বলল,
-হ্যালো মি. কিং…… আমাদের তোমার একটু সাহায্যের প্রয়োজন….
-কইন স্যার…. কি করতাম হইতো….
বর্ন বয়টাকে দুই প্যাকেট ইনস্ট্যান্ট কফি আর তামান্নাকে এক মগ গরম পানি আনতে বলল,,,, সাথে চিনি আর দুধ।
বর্ন খুব যত্ন করে তামান্নাকে ইন্সট্যান্ট কফি বানানো শিখালো…. এবং এক কাপ কফি নিজে নিয়ে এক কাপ কফি তামান্নাকে দিলো…..
-মিস তামান্না,,, কফিটা দারুন হয়েছে না!??
বর্ন উৎসাহিত চোখে তামান্নার দিকে তাকালো….
এই তিতকুটে পানীয়টা তামান্নার কাছে একদম বিষাদ লাগলেও তামান্না হালকা মাথা ঝাকালো
-জ্বী স্যার ভালো হয়েছে…..
-আমি একটা ইনস্ট্যান্ট কফি মেশিন বসিয়ে দিবো…. তখন আপনার জন্য আরো সুবিধা হবে…..
মিটিং শুরু হলো ঠিক ২টায়….. তামান্না সম্পুর্ণ মিটিং-এ মাঝে মাঝে আড়চোখে বর্নর দিকে তাকালো….. কোন এক্সট্রা পয়েন্ট যদি নোট করতে হয়….. কিন্তু বর্নর কাছ থেকে তেমন কোন ইংগিতই পাওয়া গেলো না…. বর্ন মুখে খুব ছোট্ট একটা হাসি ঝুলিয়ে রেখে সম্পূর্ণ মিটিং পর্যবেক্ষণ করল,,,,,, এবং খুব মনোযোগ দিয়ে ডিলের প্রতিটা ডিটেইলস শুনলো……. তামান্না যদিও খুব অবাক হলো…. কারন ওর মনে হয়,,,,, ওর এই নিমচা স্যারটা নিজের ব্যবসা নিয়ে পুরোই উদাসীন….. সারাদিন মাথা গুজে রাখে ইয়া মোটা মোটা বইয়ের ভিতর।
মিটিং শেষে বর্ন, তামান্না আর জনাব আকিজ বর্নর অফিস রুমে প্রবেশ করলেন। বর্ন নিজের চেয়ারে বসল,,,,আকিজ সাহেব বসলেন বর্নর সামনের চেয়ারে….জনাব আকিজ,, মিলন সাহেবের খুবই বিশ্বস্ত একজন কর্মচারী…. উনি মিলন সাহেবের সাথে গত ২৭ বছর যাবৎ কাজ করে আসছেন….. এবং সেই ভরসায়ই মিলন সাহেব উনাকে ছেলের কোম্পানিতে এপয়েন্ট করিয়েছেন….. যেনো আকিজ সাহেব বর্নকে হাতেকলমে ব্যবসায় ধরিয়ে দিতে পারে এবং সাহায্য করতে পারে…..
-সো বর্ন,,,,কি মনে হয় তোমার… …?
-মিস তামান্না….
-জ্বী স্যার…
-আপনি কালকেই উনাদের ফোন করে জানিয়ে দিবেন…. আমরা এই ডিলে আগ্রহী নই…. ওই আর নট ইন্টারেস্টেড….
-ভেবেচিন্তে বলো বর্ন….. কোম্পানিটা ছোটখাটো হলেও কিন্তু আমাদের ৬৫% শেয়ার দিচ্ছে…… অর্থাৎ দিন শেষে আমরাই লাভবান হচ্ছি…… সুতরাং…..
-মি. ইমতেয়াজ…. ইউ আর ফায়ারড….
(আসছে)