বন্ধ দরজায় তুমি🖤পর্ব-১১

0
828

#বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
#Part: 11…….

তুরের দিকে তাকিয়ে লাইট নিভিয়ে দিল তীব্র। তারপর তুরের সামনেই নিজের ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দেয়। বালিশ না থাকার কারনে তীব্র একহাত মাথায় দিয়ে চোখ বন্ধ করে….

বেশ কিছুক্ষন পর…..

তীব্র প্রায় ঘুমিয়ে পরেছিল এমন সময় তীব্র নিজের বুকের উপর ভারী কিছুর পরার অনুভব করে। বেশ ব্যাথা পায় তীব্র। ঘুমটাও ততক্ষনে চলে এসেছে…..

তীব্র নিজের বুকে হাত দিয়ে একগুচ্ছ চুলের ছোয়া পায়। বুঝতে পারে মেয়েটি ঘুমের ক্লান্তিতে ওর বুকের উপর পরেছে। এইটা ভেবে তীব্র তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে…..

— কি অদ্ভুত দুনিয়া। যাকে বিষের সাথে তুলনা করেছ তার বুকেই নিজের ক্লান্তির বিষ গুলো ঝরাচ্ছে……

তীব্র আবার লাইটটা জালিয়ে তুরকে বিছানায় শুইয়ে দেয়। তারপর ওই চাদর দিয়ে তুরকে মুড়িয়ে দেয়। তুর গুটিয়ে শুয়ে পরে। তীব্র ওকে ঠিক করে দিতেই তুর ওর হাত টেনে ধরে ওর হাতের উপর শুয়ে পরে। তীব্র অবাক চোখে তুরকে দেখে। তুরের চুল গুলো ওর ঠোঁটের উপর পরে…. তীব্র সেই চুল গুলো তুরের ঠোঁট থেকে সরিয়ে দেয়।

তারপর ওখান থেকে বেড়িয়ে যায়। নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়। তীব্র জানে তুরের অতিরিক্ত দুর্বলতার কারন হচ্ছে না খাওয়া। তুরের যেমন খাওয়া হয়নি তীব্রের ও তাই.… একটা চাপা কষ্টের মাঝে আছে তীব্র। মনের চাওয়া আর মতিষ্কের বিরোধ দুইটাই তীব্রের বিপক্ষে।

— আচ্ছা চাওয়াটা যখন অন্যের প্রাপ্তি থেকে আসে তখন তাকে কি বলে? সেটা কি নিজের প্রাপ্তি নাকি অপ্রাপ্তির দান….. দুইটাই তো অন্যায় তাই না…….

তারপর তলিয়ে যায় ঘুমের রাজ্যে…..

,
,
,
,
,

,

,
,
,সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে তীব্র তুরের রুমে যায়। তবে আগের দিনের মত নয়।

তীব্র রুমে ঢুকে দেখে তুর শুয়ে আছে। ও অন্যদিকে তাকিয়ে কাশির শব্দ করতেই তুর জেগে উঠে…. সকালে লোকটাকে দেখে কাল রাতের কথা মনে করে নিজেকে ঠিক করে গুটিয়ে নেয়।

তখনি তীব্র অন্যদিকে তাকিয়ে ওর দিকে একটা ব্যাগ ছুড়ে মেরে বেশ গম্ভীর গলায় তুরকে বলে ….

— এখানে তোমার জন্য কিছু ড্রেস আছে। যাও চেঞ্জ করে এসো।

এবার তুর ভালো করে লোকটির দিকে তাকায়। দেখতে বেশ লম্বা, মুখটা এতটাই ফর্সা যে ক্লিন সেভের পরেও কুড়ি কুড়ি দারি বোঝা যাচ্ছে। কালো শার্ট যার উপরের বোতাম গুলো খোলা বুকের অংশটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। হাতে ব্যান্ডের ঘড়ি চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা। পুরো ফ্রশ লাগছে লোকটাকে। এরকম লোক কম দেখেছে তুর। এরকম লোক যার যাই হোক কিডন্যাপার হতে পারে না। তাহলে কে লোকটা…..

তুর এসব ভাবতে ভাবতে বলে উঠল….

— আপনি কে? আর কেনই বা আমাকে এখানে আটকে রেখেছেন….

তীব্র বেশ গম্ভীর ভাবেই উত্তর দিল…

— আগে চেঞ্জ করে নেও। তাহলে আমার উত্তর দিতে আর তোমার উত্তর নিতে দুজনের সুবিধা…..

তুর আর কিছু বলল না। ও উঠে দাড়ালো চাদর গায়ে দিয়ে। প্রচন্ড কাপছে শরীর। তখন তীব্র তুরের কাছে যায়। এটা দেখে তুর ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু তুরকে অবাক করে দিয়ে তীব্র ওর গায়ের চাদরটা উঠিয়ে ওর বা কাধে ভাল করে দিয়ে দেয়। ওদিক টা ফাকা ছিল তা তুর খেয়াল করেনি।

-_ বাথরুমটা ওদিকে….

তুর আর কোন কথা না বলে ওদিকে পা বাড়ায়। কালকে রাতের সাথে আজকের লোকটার কোন মিল খুজে পাচ্ছে না তুর। কালকে লোকটাকে যতটা ভয়ংকর লেগেছে আজ ততটাই শান্ত মনে হচ্ছে….. কিন্তু কি চায় লোকটা?

শপিং ব্যাগ খুলতেই দেখে কিছু সফট কাপরের থ্রি-পিজ। কয়েকটা লং টপস সাথে ওড়না। ড্রেসগুলো দেখে ভরসা পেল তুর। সবই মার্জিত ড্রেস….. তুর একটা থ্রি-পিজ পরে বেড়িয়ে এলো…..

এসে দেখে লোকটি ওর জন্য ট্রেতে কিছু ফল আর জুস নিয়ে এসেছে। এই বাড়িতে কোন মেয়ে নেই। তাই তুরের রুমে বাইরের কেউ এলাও না। এমনকি তুরের সব কাজ তীব্র নিজের হাতে করে….. এই রুমের দিকে কেউ নজর দিবে না। এখানে যাই হোক এদিকে কেউ আসবে না তীব্রের কড়া নির্দেশ….

তুরকে ফিরতে দেখে তীব্র বলে উঠল…

— যেহেতু কয়েকদিন যাবত ভারী খাবার খাওনি তাই এই ফল গুলো আর জুস খেয়ে নেও। আমি এসে যেন দেখি সবটা কমপ্লিট……

তীব্র চলে যাওয়ার সময় তুর বলে উঠল….

— আমি খাব না।

কথাটা যেন তীব্রের পছন্দ হলো না। কিন্তু কিছু বলল না। শুধু তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে বলল….

— আমার দেওয়া বলে…

— যদি মনে করেন তাই….

তীব্র এবার তুরের দিকে তাকায়… তারপর বলে…

— আমার দেওয়া কাপর শরীরে জড়াতে পারলে কিন্তু আমার দেওয়া খাবার খেতে পাচ্ছ না।

তুর চুপ করে রইল এর কোন উত্তর নেই ওর কাছে…. ওর নিরবতায় তীব্র বলে উঠল…

— তুমি আমার কাছে যখন আছ তোমাকে খাবার দেওয়া আমার দায়িত্ব। কারন আমি কাউকে না খাইয়ে মারতে চাই না। এখন খাওয়া না খাওয়া তোমার ব্যাপার। আমি শুধু আমার কর্তব্য করেছি।

তীব্রের এমন কথায় তুর বেশ অবাক হয়। তুরকে অবাক হতে দেখে তীব্র বলে উঠে…

— অবাক হওয়ার কিছু নেই। তুমি বাচলেও আমার কিছু আসে যাবে না। আর মরলেও না। তাই খাবে কি খাবে না তোমার ব্যাপার…..

তীব্র চলে যেতে ধরলে আবার থমকে যায়। তুর চিতকার করে বলে উঠে….

— কে আপনি আর কেন আমাকে এখানে আটকে রেখেছেন?

তীব্র চুপ করে আছে…

— আপনি কি সেই লোক যে আমাকে সেই জঘন্য জায়গা থেকে টাকার বিনিময়ে কিনে এনেছেন? আমি পুরোপুরি হুশে না থাকলেও আবছাতে দেখেছি। আর আমার মনে হচ্ছে সেই লোকটা আপনি। কেন এনেছেন এখানে.……

কথাটা শুনে তীব্র একটা জোর করে হাসি দেয়। যা তুরের বোকামির ইঙ্গিত দিল। তারপর খুব শান্ত গলায় উত্তর দেয়….

— তুমি তো বলে দিলে কেন এনেছি তোমায়। ওখানে সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে তোমায় কিনেছি আমি। তাই তুমি আমার কাছে অনেক দামী কিছু। যা আমি হেলায় হারাতে চাই না। তাই খেয়ে নেও…..

— তারমানে কেন এনেছেন আমাকে….??

— ওরকম একটা জায়গা থেকে কেন তোমাকে এনেছি তা বোঝার জন্য তুমি যথেষ্ট বড়।

তীব্র আর কিছু না বলে বেড়িয়ে যায়। আর তুর ওখানেই বসে পরে। কি বলে গেল লোকটা। তাহলে…. সত্যি তো তুরের যতটা মনে পরছে রাস্তা থেকে যারা ওকে কিডনাপ করেছে তারাই হয়ত এই লোকটার কাছে ওকে বিক্রি করে দিছে। কিন্তু এই লোকটা ওর সাথে কি করতে চাইছি। যদি সত্যি ওমন কিছু করে কি করবে ও… কিছু ভেবে পায় না। শুধু একটাই কথা মনে পরে ওর পক্ষে এভাবে বেচে থাকা সম্ভব না। এর চেয়ে মৃত্যু ভালো। তাই তুর আশ পাশ দেখতে থাকে। কিন্তু তেমন কিছুই খুজে পায় না। তখন তীব্রের করা মনে পরে…. না খেয়ে মরে গেলে..…। হ্যা ও না খেয়েই দরকার হলে মরবে। কিন্তু কখনোই নিজেকে বস্তু হতে দেবে না।
,
,
,
,
,

,,

,
,
ওদিকে তীব্র হাসপাতালে গিয়ে তার সবচেয়ে কাছের মানুষের হাত ধরে বসে আছে। তখনি তীব্রের কাধে হাত দেয়…. তীব্র তাকিয়ে দেখে ওর ফ্রেন্ড তুষা…. তুষাই একমাত্র মেয়ে যে ওদের লাইফে আছে। তবে তুষা ছেলেদের মত থাকতেই বেশি পছন্দ করে। মেয়ের কোনো লক্ষন ওর মাঝে নেই। ওকে দেখে তীব্র নিজের চোখ মুছে নেয়।

— এত ভেঙে পরিস না। দেখবি ও একদম ঠিক হয়ে যাবে।

তীব্র উঠেই ওকে জড়িয়ে ধরে।

— কবে ঠিক হবে রে ও। দেখ এমন হাসি খুশি ছেলেটার কি হতে কি হয়ে গেল।

— ভেঙে পরিস না। দেখবি ঠিক হয়ে যাবে।

— কি ঠিক হবে এতদিন তো তাও আশা ছিল কিন্তু কাল রাতে ও কোমায় চলে গেছে কবে জ্ঞান ফিরবে তার কোনো ঠিক নেই। এমনকি ও বাচবে কিনা?

তুষা চুপ করে রয়েছে। উত্তরটা ওর অজানা নয়।

— ও কেন সব কথা লুকালো আমার থেকে? ও যদি একবার বলত ওই মেয়েটাকে ওর চাই ওর পায়ের কাছে এনে ফেলে দিতাম কিন্তু….

— তুই জানিস তো ও কত চাপা স্বভাবের ছেলে। কখনো নিজের কিছু চেয়েছে বল। ও খুব ভালো করেই জানত তোকে বললে তুই কিছু করবি তাই কিছু বলেনি যার জন্য…

— না তুষা আমি তখন করিনি তো কি হয়েছে? এখন করব…

— আচ্ছা সত্যি কি তায়্যিরাত মানে ওই মেয়েটার কোনো দোষ আছে। আমি ওই মেয়েটাকে দেখেছি ওকে দেখে তো এমন মনে হয় না।

— চেহারায় মানুষের আসল রুপ লুকিয়ে থাকে না তুষা। মানুষের মনেই সব। আর ওই মেয়েটা যেমন দোষী ওর বাবা ততটাই। তবে ওই মেয়েটার দোষ বেশি। কারন ওর কথায় ওর বাবা……

[ আর বলতে পারল না তীব্র। তুষা ও আর কিছু বলতে পারল না। কারন তীব্র ঠিক বলছে। যা হয়েছে সবটা তায়্যিরাতের কথায় ওর বাবা করেছে ]

— আর ওই মেয়েটার চেয়েও বড় দোষ ওর বাবার। আর তাই ওনার থেকে ওনার মেয়েটাকেই আমি কেড়ে নিতে চাই। কোনোদিন যাতে সে তার মেয়ের মুখটা দেখতে না পায় তার ব্যাবস্থা করব আমি
ওনার কাছে জিবনের চেয়েও সন্মান বড়। তাই ওনার মেয়েই হলো ওনার সন্মান নষ্টের কারন।

— মানে….

— কিছুনা। তুই ওর কাছে থাক। আমি আসছি..

[ তোকে আমি সবটা বলতে পারব না তুষা। ওই সবাই জানে মেয়েটা ওর বয়ফেন্ডের সাথে পালিয়েছে। আর তার জন্য ওর বাবাকে কতটা হেনস্তা করব আমি তা কল্পনার বাইরে। আর তায়্যিরাতকে তো আমি তিলে তিলে মারব। ওর জন্য আমি আমার সবচেয়ে কাছের মানুষকে হারাতে বসেছি। আমি ওর থেকে ওর দুনিয়াই কেড়ে নেব। নিঃস্ব করে ছাড়ব আমি ওকে…… ]

নিজের হসপিটালের সমস্ত কাজ শেষ করে দিকে বাড়ি ফেরে তীব্র। ও ফ্রেশ হয়ে তুরের রুমের দিকে যায়। রুমের দিকে গিয়েই দেখে ক্ষুদায় তৃষ্ণায় মাটিতে পরে আছে তুর। এতটাই জেদ ওর মরে যাবে অথচ কিছু খাবে না ও…. তীব্র দ্রুত ওর কাছে যায়। ওকে নিজের হাতের উপর নিতেই আধো আধো চোখ খোলে তুর… তীব্র ওর পালস চেক করে। তারপর ওকে রেখে ফাস্টেয়েইড বক্স নিয়ে আসে। তারপর ওর শরীরে একটা ইনজেকশন পুশ করতেই পালস স্বাভাবিক হয়ে আসে….

তুর অজ্ঞান নয় তবে পুরোপুরি সজ্ঞানে নেই। তীব্র দ্রুত ওর হাত পা ঘসতে থাকে। তারপর ওর গালে আলত করে থাপরাতে থাপরাতে পাগলের মত ওকে ডাকতে ডাকতে বলে…..

— তোমার এত সহজে কিছু হতে দেব না আমি তোমার। এখনো অনেকটা সময় বাচতে হবে তোমাকে…. তোমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য হলেও তোমাকে বাচতে হবে।

তারপর তীব্র ওর জন্য গরম স্যুপ আর কিছু ফল আর জুস নিয়ে আসে। যেহেতু কিছু পায় না তাই ওকে নিজের বুকের উপর শোয়ায়…. তারপর নিজের হাতে খাওয়াতে থাকে। ক্ষুদার্ত তুর আধো জ্ঞানে থাকা অবস্থায় সবটা খাবার খায় তীব্রের হাত থেকে। তীব্র ওকে প্রয়োজন মত খাইয়ে বাকিটা রেখে দেয়। বেশি খাওয়ালে পেটে সইবে না তাই। কারন তুর কয়েকদিন যাবত তেমন কিছুই খায়নি। ওকে খাইয়ে তীব্র উঠে পরতেই তুর ওকে আকড়ে ধরে। তীব্র চেয়েও ওকে ছাড়াতে পারে না। তুর একদম ওর বুকের ভিতর ঢুকে পরে……

তীব্র কিছু ভেবে না পেয়ে ওভাবেই বসে থাকে……
,
,
,
,

,
,
,

,
,
,
তীব্র বার বার নিজের ঘড়ি দেখছে চেয়ারে বসে। বিছানায় শুয়ে আছে তুর। দুপুর গড়িয়ে রাত। তুরকে যে ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে তাতে এতক্ষনে ওর ঘুম ভাঙার কথা। এসব ভাবতে ভাবতেই তুরের ঘুম ভেঙে যায়। ও আধো আধো চোখ খুলে তাকায়। আগের চেয়ে অনেকটা ভালো লাগছে ওর। ও পাশ ফিরতেই দেখে তখনকার লোকটা ওর দিকে তাকিয়ে আছে। তুর দ্রুত ওকে দেখে উঠে বসে….

— আমি তোমাকে খাবার খেতে বলেছিলাম তুমি খাওনি কেন?

তুর তীব্রের এমন কথায় বেশ কড়া গলায় উত্তর দেয়….

— আপনার দেওয়া খাবার খেয়ে আপনার ভোগের বস্তু হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।।এর চেয়ে না খেয়ে মরে যাওয়াই ভালো।

এবার তীব্রের চোখ মুখ শক্ত হয়ে আসে…..

— মৃত্যু টা কি খুব সহজ মনে হয় তোমার কাছে।

— কিছু যন্ত্রণা মৃত্যুর চেয়েও খারাপ। যা আমি চাইনা।

— তাই নাকি।

— ঠিক তাই……

— আমার উল্টো কথা একদম ভালো লাগে না। তাই যা বলছি তা চুপচাপ শোনো।

— আমি আপনার দাসী নই।

তীব্রের রাগটা যেন আরো বেড়ে যায়।

— এইটুকু মেয়ে আর তেজ এতটা। ছুট করল না।

— দেখুন আমি…

তুর কিছু বলার আগেই তীব্র ওর পিঠে ধরে ওকদম নিজের কাছে নিয়ে আসে…

— প্লিজ আমাকে ছোবেন না।

— মৃত্যু শুধু শুনেছ কখনো দেখনি আজ তা আমি তোমাকে দেখাব। তারপর ডিসিশন তুমি করবে বাচবে নাকি মরবে….

তারপর তুরের হাত ধরে বেড়িয়ে যায় তীব্র। বাড়িতে কেউ নেই আজ। তীব্র তুরকে ডায়নিকে নিয়ে মেঝেতে ছুড়ে মারে। তারপর একটা শিশি হাতে নিয়ে সোফায় বসে….

— মিস. তায়্যিরাত এইটা ধরুন।

[ শিশিটা তুরের দিকে ডিল মারল যা ওর কোলে গিয়ে পরল। ও শিশিটা তুলরেই দেখে সেটা বিষের শিশি। ও অবাক হয়ে তীব্রের দিকে তাকায় ]

— নিন খেয়ে নিন। তবে মনে রাখবেন এটা সত্যি কারের বিষ। মরার ইচ্ছে থাকলে খেয়ে নেও। নাহলে এসব বাচ্চামি ছাড়ও। অনেকটা বড় হয়ে গেছে তুমি।

তীব্রের কথায় তুরের কান্না চলে এলো। ও আর কোনো কথা না বলেই বিষের শিশিটা হাতে নিয়ে খেয়ে ফেলল। তবে তীব্র কোনো রিয়েক্ট করল না। বিশটা খেয়ে তুরের নিশ্বাস বেড়ে গেল।

— চিন্তা করো না এটা স্লো পয়েজন। একটু টাইম লাগবে তোমাকে গ্রাস করতে। তবে কথা দিচ্ছি মৃত্যু নিশ্চিত।

এদিকে তুরের কাশি উঠে গেল। এটা দেখে তীব্র বেশ বিরক্তি নিয়েই উঠে টেবিলে থাকা প্লাস্টিকের বোতলে অনেকটা পরিমান লবন ভরে নিল। সেটা ঝাকিয়ে তুরের কাছে গিয়ে ওকে ধাক্কা মেরে সোফায় ফেলে দিল। তারপর ওকে শক্ত করে ধরে বোতলের মুখটা চেপে ধরল….. পুরো পানিটা তুরকে খাইয়ে তবেই ছাড়ল। লবন পানি খেয়ে মুহুর্তেই তুর বমি করে পুরোটা উগড়ে দিল।

— মৃত্যু এতটা সহজলভ্য নয়। যে চাইলেই পাবে।

তুরের চোখের সামনে সব ঝাপসা হয়ে এলো। ও মাটিতে পরে যাবার আগেই তীব্র ওকে ধরে কোলে তুলে নিজের রুমের পথে পা বাড়ালো। ওকে নিজের বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বাকা ঠোঁটে হেসে উঠল….

— কি অদ্ভুত আমার কাছে তুমি হুশের চেয়েও বেহুশ ই বেশি থাক। কবে না আমি আমার হুশ হারিয়ে ফেলি। যাই হোক বিশ ছিল তবে মরার মত এতটা মারাত্মক না। তবুও লবন পানি খাওয়ালাম।
,
,
,
,

,
,
,,
,
,
,
[ বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন। ]

আশা করি ব্যাপারটা ক্লিয়ার। কালকে অতিত শেষ করা হবে। সো দয়া করে একটু লেশনস রাখুন। আর তুরের উপর সবটাই অতিরিক্ত হচ্ছে। যেটা কাহিনীর উপর বেস করে। গল্পটা পরলেই বুঝবেন।

Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr
#Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here