-‘এলোকেশী কন্যা’-
[২০]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)
রিমিরা হাসি মুখে বিদায় নিয়ে চলে গেল। তারপর মেঘ খুব বায়না ধরল সে নুডলস খাবে। মূলত এটা ওর দেরীতে পড়তে বসার বাহানা। এদিকে দেরী করে পড়তে বসলে একটু পড়ে ঘুমের বাহানা দেখিয়ে পার পেয়ে যাবে। কিন্তু সার্ভেন্ট পাঁচ মিনিটের মধ্যে নুডলস রান্না করে দিলো। একটু সময় নিয়ে করবে তা না! মেঘ বিরবির করে সার্ভেন্ট বকে চুপ করে খেতে বসল। রোদ ফোনে কথা বলতে বলতে এসে সামনের সোফায় বসল। মেঘ ততক্ষণে খাওয়া শুরু করছে। যত ধীরে গতিতে খাওয়া যায় সে খাচ্ছে। যেভাবেই হোক এই সময়টুকু পার করতেই হবে। নাহলে দাভাই ওকে পড়াতে বসাবে। আর পড়তে বসলে ওর পেটের ভেতর মোচড় দেয়, মাথা ঘুরে, বমি পায়, ওয়াশরুমেও যেতে হয়, সাথে বুকের মধ্যে ধড়াস ধড়াস ও করে। তাই পড়া থেকে বাঁচার জন্য এই তার মোক্ষম একটা পরিকল্পনা। এদিকে আলো মাথা নিচু করে হাত গুটিয়ে বসে আছে। সে বুঝতে অক্ষম, কাঁটা চামচ দিয়ে কীভাবে নুডলস খাবে? সে তো এই কাজে অভিজ্ঞ নয়! তবে পারে না শিখতে তো লজ্জা নেই। এটা ভেবে আলো সাহস করে হাতে চামচ তুলে নিলো। এবং বার দু’য়েক চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো। পারছে না দেখে আলো চামচ রেখে লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।
রোদ এতক্ষণ আলোর চেষ্টা দেখে উঠে আলোর পাশে বসল। আলো অস্বস্তি নিয়ে আড়চোখে রোদের দিকে তাকাতে গিয়ে ধরা খেলো। রোদ সুন্দর ভাবে কয়েকবার আলোকে দেখিয়ে দিলো। আর বলল আলোকে একা একা চেষ্টা করতে। এবার সে পারবে। আলো চামচ নিয়ে নুডলস তুললেও মুখ অবধি নিতে পারল না। তার আগেই চামচের নুডলসটুকু কামিজের উপর পড়ল। রোদ আলোর হাতের উপর হাত রেখে নুডুলস তুলে আলোর মুখের সামনে ধরল। খাবে না বললে ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু লাগত। তাই আলো রোদের দিকে একবার তাকিয়ে নুডলসটুকু মুখে নিলো। ওর পাশের দুষ্টুটা যে মাথা নিচু করে মিটিমিটি হাসছে। একথা সে খুব ভালো করেই জানে। তবে আলো পারছে না দেখে মেঘ হাসছে না, রোদ আলোকে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে দেখে হাসছে। রোদ মেঘকে হাসতে দেখে ধমক দিয়ে বলল,
“তাড়াতাড়ি খেয়ে পড়তে বসবে। আমি তোমার সব পড়া চেক করব।”
“আচ্ছা।”
মেঘ ধীরে সুস্থে খেয়ে হেলেদুলে ওর রুমে গিয়ে পড়তে বসল। আর যাওয়ার আগে আলোকে তাড়াতাড়ি রুমে যেতে ইশারা করল। আলো গেলে সে পড়া বাদ দিয়ে গল্প করতে পারবে। আহা, তখন এমনি এমনি পড়ার সময়টুকুও চলে যাবে। আর আলোও যেন রোদের সামনের থেকে পালাতে পারলে জানে বাঁচে। সে এই অবধি রোদকে ভুলেও হাসতে দেখেছে বলে মনে হচ্ছে না। সব সময় গম্ভীর ভাব। রোদ স্বাভাবিক ভাবে কথা বললেও ওর গলা শুকিয়ে যায়। কেন যে এমন হয় কে জানে! আলো এসব ভেবে উঠতে গেলে রোদ ওর হাত টেনে বসিয়ে দিয়ে বলল,
“আমি তোমাকে যেতে বলেছি?”
আলো দুইদিকে মাথা নাড়িয়ে না বোঝাল। পরক্ষনেই ওর মনে পড়ল রোদ মাথা নাড়াতে নিষেধ করেছিল। আলো চোখ তুলে তাকানোর সাহস না পেয়ে মাথা নিচু করে নিলো।আবার সেই একই ভুল! এখন এই মানুষটা আত্মা কাঁপানো ধমক না দিলেই হয়। কিন্তু রোদ তেমন কিছু না করে শান্ত কন্ঠে বলল,
“তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে। বসো, আর আমি যা জানতে চাচ্ছি উওর দাও।”
“জি।”
আলো নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করল। রোদ মনে হয় খুব জরুরি কিছু বললে। এজন্য হয়তো ওকে বসতে বলল। কিন্তু কী বলবে? এটা ভেবে ওর গলা শুকিয়ে মরুভূমি তে পরিণত হয়েছে। পানির অপর নাম জীবন সে উপলব্ধিও করতে পারছে৷ রোদ আলোর দিকে পানি এগিয়ে দিয়ে খেতে ইশারা করল। আলো পানি খেয়ে রোদের দিকে তাকিয়ে মৃদু স্বরে বলল,
“বলুন, কী বলবেন?”
“তুমি কোন ক্লাস অবধি লেখাপড়া করছো? আর এখন কী করবে কিছু ভেবেছো?”
রোদের করা পরের প্রশ্নের উত্তরটা আলোরও অজানা। যার মাথা গোছার ঠাঁই’ই নেই, সে আর জীবন নিয়ে নিয়ে ভাববে।
আত্মবিশ্বাস, জোর, চিন্তা, পরিকল্পনা শক্তিটুকু সে হারিয়ে ফেলেছে। নিঃসঙ্গতায় ওকে জীবনের সঠিক সূত্র ভুলতে বাধ্য করেছে। এখন তো শুধু দেখার অপেক্ষা জীবন ওকে নিয়ে আবার কোন খেলায় মেতে ওঠে। আদৌ কী সে এই অচেনা শহরে টিকবে পারবে? রোদকে তাকাতে দেখে আলো মলিন হেসে উত্তর দিলো,
“আমি মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছি। দাদীমার উদ্যোগে এতটুকু হয়েছে। যাদের তাঁতে কাপড় বুনে বিক্রি করলে খাবার জুটত।
তাদের কাছে পড়াশোনা’টা বিলাসিতা। ক্ষুধার জ্বালা মিটাতে আগে কর্ম করতে হয়। আর কর্ম করতে গেলে পড়াশোনাতে সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই যে কোনো একটা বেছে নিতে হয়, পড়াশোনা অথবা কর্ম! আমিও সবার মতো তাই করেছি।পাহাড়ি এলাকার খুব সাধারণ ঘরের মেয়ে আমি। সাদা মাটা জীবন যাপনে অভ্যস্ত! কাঁটা চামচে খাওয়া, এত গুছিয়ে কথা বলা, নজরকাড়া বেশভূষা, চাল-চলনেও আকৃষ্টতা, এসবের কিছুই পারি না আমি। আর পরবর্তী পরিকল্পনা আমার জানা নেই। সব ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছি। দেখা যাক এবারও ভাগ্য আমাকে কোথায় নিয়ে যায়। আর আমি শুধু এতটুকুই জানি এই পরিবেশে আমি বড্ড বেমানান!”
কথাগুলো বলে আলো চোখের পানি লুকাতে মাথা নিচু করে নিলো। তবে জীবন নেই ওর আফসোস নেই। হঠাৎ দাদীমার কথা মনে হওয়াতে চোখে পানি এসে গেছে। দাদীমা থাকলে ওকে জীবন নিয়ে ভাবতে হতো না। রোদ আলোর কথা শুনে মুচকি হেসে বলল,
“একটা মানুষ সবদিক থেকে পারফেক্ট হতে পারে না। তুমি পারো না, নিজ উদ্যোগে শিখে নাও। শিখতে লজ্জা কিসের? তবুও লজ্জার জন্য সবার থেকে পিছিয়ে পড়ো না। বর্তমানে তোমার অভিভাবক আমি। সেটা তুমি চাইলেও না চাইলেও। মূলত দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক বলেই তোমাকে সঙ্গে এনেছি। এনে যে তোমাকে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে দিবো, তাও কিন্তু নয়! এখন আমি চাচ্ছি, তুমি পড়াশোনা শুরু করো। একটা লক্ষ্য স্থির করো। হাত গুটিয়ে বসে থাকলে জীবন তোমাকে কিচ্ছু দিবে না। তাই বলছি, মনের জোরে কিছু একটা করে দেখাও। আর কাঁটা চামচে খেতে পারলেই কী সভ্য হয়? উহুম, মোটেও না। এটা অযৌক্তিক কথা! আর সভ্য একটা পরিবেশে চলতে গেলে সবাইকেই নিয়ম-কানুন, ভদ্রতা, শিষ্টাচার, জানতে হয়। তুমিও আস্তে ধীরে জেনে নিবা। পারি না, পারব না, হবে না, হচ্ছে না, এসব শুধু অজুহাত। মনে থেকে চেষ্টা করো অবশ্যই তুমিও পারবে। এগুলো কঠিন কিছু না। আর আমি খুব শীঘ্রই একটা সার্টিফিকেট বানিয়ে তোমাকে কলেজে ভর্তি করে দিবো। এখন সুযোগ পাচ্ছো কাজে লাগাও। বোকাদের মতো পিছিয়ে যেও না। শুধু মনে রেখো, মেয়েরা বিয়ে আর বাচ্চা পালা ছাড়াও আরো অনেক কিছু করতে পারে। সাহসী হও! আর কিছু করে দেখাও। যাতে সবাই তোমাকে তোমার নামে চিনে। কারো বউয়ের অথবা মায়ের পরিচয়ে নয়, বুঝলে?”
“জ জি!”
আলো মনোযোগ সহকারে রোদের কথাগুলো শুনে গেল। এই প্রথম রোদ ওর সঙ্গে এতগুলো কথা বলল। তবে কথাগুলোর মর্ম সে অবশ্যই দিবে। রোদের ফোনে কল আসাতে রোদ উঠে চলে গেল। মূলত জরুরি কল দেখে উঠতে হলো। আর আলো ছলছল চোখে রোদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। এই ঋণ সে কীভাবে শোধ করবে? আদৌ কী শোধ করা যাবে? আগে কোনটা শোধ করবে? অসহায় একটা মেয়েকে বাঁচানো, তার দায়িত্ব নেওয়া, নিরাপদ আশ্রয়, ভরসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া, নতুন স্বপ্ন বুনতে সাহায্য করা, নাকি বাঁচার জন্য অনুপ্রেরণা দেওয়া, কোনটা? এসব ঋণের মূল্য না সে দিতে পারবে। আর না সেই ঋণ শোধের সামর্থ্য ওর আছে। এসব ভেবে আলো দুই হাতে মুখ ডেকে নিরবে অশ্রু ঝরাতে লাগল। হঠাৎ মেঘের চিৎকারে আলোর ভাবনার ছেদ ঘটল। থামাথামির নাম নেই, সে বউমনি! বউমনি! করে ডেকেই যাচ্ছে। আলো চোখ মুছে চেঁচিয়ে বলল,
“আসছি!”
“দাভাইকে বলো পরে প্রেম করবা। আর এখন তাড়াতাড়ি এসো। নয়ত আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি।”
একথা শুনে আলো একপ্রকার দৌড়েই মেঘের রুমের দিকে গেল। আর রোদ ফোনে কথা বলে কল কেটে বাগানের দিকে পা বাড়াল। মেঘটাও না কখন যে কী বলে! কথাবার্তার ঠিক নেই। ওর লাগামহীন কথাবার্তার জন্য রোদ যে ঠিক কতবার লজ্জায় পড়েছে, তার হিসাব নেই। নিষেধ করলে তো দুষ্টুটা ওকেই উল্টো যুক্তি দেখায়। তারপর যথাসময়ে ওরা খেয়ে যে যার রুমে চলে গেল। মেঘ আলোর কাছে শুয়েই গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেল।
নিকষ কালো পুরো রাতকে বিদায় দিয়ে নতুন দিনের সূচনা হলো। কালকে মাঝ রাতে মতি আহত হয়ে বাড়িতে ফিরেছে।শিকারী হয়ে গিয়ে নিজেই কারো হাতে শিকার হতে যাচ্ছিল। কোনোমতে জান নিয়ে ফিরে এসেছে। এই নিয়েই চেচাঁমেচি করে পুরো বাড়ি মাথায় তুলেছে। শুয়ে থেকেই কাকে যেন বিশ্রী ভাষায় গালাগালি করছে। হাকিম রাতে এসে চিকিৎসা করে গেছেন। চিকিৎসার সময় সামান্য ব্যাথা পাওয়াতে মতি স্বজোরে হকিমকে লাথি মেরেছে। চেয়ার উল্টো পড়ে হাকিম প্রচন্ড ব্যাথা পেলেও কিছু বলতে পারে নি। মাতবরের ছেলে বলে কথা!
আর মাতবর গম্ভীর হয়ে উঠানের চেয়ারে বসে গভীর চিন্তায় মগ্ন। উনি ভয়ংকর বিপদের আশঙ্কা করছেন। যদি ভুলক্রমে
ও উনার ভাবনা সত্যি হয় তাহলে মতির মৃত্যু অনিবার্য। আর মতির এই একটা ভুলই সবার প্রাণনাশের জন্য যথেষ্ট। এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া সম্ভব না। তাছাড়া মৌচাকে ঢিল মেরে মৌমাছির কামড় খাবে না তা তো হবে না। উনার এই আশঙ্কা সত্যি হলে উনি নিজেই মতিকে মেরে ফেলবে। একটুও বুক কাঁপবে না আর খারাপ লাগা তো বহুদূর। ছেলে গেলে আবার ছেলে জন্ম দেওয়া যাবে। তাও নিজের প্রাণ খোয়ানো যাবে না।
পাখির কিচিরমিচির নয় বরং গাড়ির হর্ণের শব্দ আলোর ঘুম ভাঙ্গল। এখানকার সকাল মনে হয় এভাবেই শুরু হয়। আলো থম মেরে কিছুক্ষণ বসে ফ্রেশ হয়ে রুমের বাইরে গেল। পুরো বাড়িটা ওর এখনো ঘুরে দেখা হয়নি। আনমনে হাঁটতে হাঁটতে আলো একটা রুমের সামনে দাঁড়িয়ে গেল। মেঘ তখন দৌড়ে এসে আলোর পাশে দাঁড়িয়ে মিষ্টি হাসল। আলো ওই রুমটার ভেতরে ঢুকে দেখল বড় বড় মেশিন। এসব দিয়ে কী করে? আলো নিজে উত্তর না খুঁজে মেঘকে জিজ্ঞাসা করল,
“মেঘ এগুলো দিয়ে কী করে?”
মেঘ আশেপাশে তাকিয়ে দাঁত বের করে হেসে বলল,
“বউমনি, এগুলো দাভাইয়ের জিম করার জিনিসপত্র। জিম করলে শরীরে অনেক শক্তি হয়। আমিও ওই মেলাদিন আগে জিম করতাম। তারপর আমার শরীরে মেলা শক্তি হয়ে গেছে তাই আর করি না।”
“ওহ!”
আলো একটা বলের মতো জিনিস তুলে হাতে নিলো। তারপর নাড়াচাড়া করে ওজন পরীক্ষা করে রেখে দিলো। পাশ ফিরে একটা চেয়ারে বসে উপরের দিকে তাকিয়ে দেখল, একটা লম্বা লাঠির দুই মাথায় ভারি ভারি কী যেন লাগানো। এটা আবার কী? আলো অনেকটা কৌতুহলবশত ওটা তুলে আর নামাতে পারছে না। জিনিসটার ওজনে ওর প্রায় হাত ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম। মেঘও টেনেটুনে নামাতে পারল না। আলো ভয়ে কেঁদে মেঘকে বলল,
“মেঘবাবু, কিছু একটা করো। নাহলে আজ এটার নিচে পড়ে মরেই যাব।”
মেঘ নখ কামড়ে কী করবে বুঝতে পারছে না। সে আজ গর্ব করে ওর শক্তির কথা বউমনিকে বলল। বউমনিও কত খুশি হলো। অথচ এখন কোনো সাহায্য করতে পারছে না। ইস! কী লজ্জা! মেঘ আর কোনো উপায় না পেয়ে আমতা আমতা করে বলল,
“ইয়ে বউমনি, আজ সকালে কিছু খাই নি তো তাই শরীরে শক্তি পাচ্ছি না। দাঁড়াও, ব্যাপারটা আমি দেখছি।”
“তাড়াতাড়ি!”
মেঘ এবার দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে রোদের রুমে গেল।কিন্তু রোদ রুমে নেই! সার্ভেন্টের সাহায্য নিতে হবে ভেবে মেঘ দ্রুত সিঁড়ির কাছে চলে গেল। রোদ ভোরে উঠে নামাজ পড়ে মনিং ওয়াক সেরে কেবল বাসায় ফিরল। এভাবেই ওর সকাল শুরু হয়। রোদের ওর পুরো শরীর ঘেমে একাকার অবস্থা। ঘামের ভেজা টি-শার্ট’টা শরীরের সঙ্গে লেপ্টে আছে। কানের পাশ দিয়ে দরদর করে ঘাম ঝরে টি-শার্টের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে।রোদ
টাওয়াল দিয়ে ঘাম মুছে পানির গ্লাস হাতে নিতেই মেঘ সিঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বলল,
“দাভাই! তাড়াতাড়ি বউমনিকে বাঁচাও! বউমনি বড় ডাম্বেলের নিচে চাপা পড়ে গেছে। তুমি এসো, তাড়াতাড়ি!”
রোদ হাতের গ্লাসটা রেখে দ্রুত পায়ে জিম রুমে প্রবেশ করল। আলো ততক্ষণে ফুঁপিয়ে কেঁদে চোখ, নাক, ঠোঁট লাল করে ফেলেছে। মাঝে মাঝে হেঁচকিও তুলছে।আলোর অবস্থা দেখে রোদ দ্রুত ডাম্বেল সরিয়ে আলোকে টেনে তুলল। মেঘ পাশে দাঁড়িয়ে মুখ কাঁচুমাঁচু করছে। ইস! আর একটু শক্তি থাকলেই সে বউমনিকে উদ্ধার করতে পারত। রোদকে দেখে লজ্জায় আলো মাথা নিচু করে নিলো। এভাবে ফেঁসে যাবে জানলে সে এই রুমেই আসত না। এখন নিশ্চয়ই রোদ রেগে ওকে আস্ত গিলে খাবে। ওর লালবর্ণ ভয়ার্ত মুখ দেখে রোদ শান্ত কন্ঠে বলল,
“এই শরীর নিয়ে জিম, ভালোই! তা করা হয়েছে নাকি আমি সাহায্য করব?”
রোদের একথা শুনে আলো দিকবিদিক ভুলে ছুটে পালালো।
সে ভুলেও আর এই রুমে পা রাখবে না। ইস! কি লজ্জা! কি লজ্জা! আলোর দেখে মেঘও দৌড়। নাহলে দাভাইকে ওকে উত্তম-মাধ্যম দিতে পারে। আর ওদের দৌড় দেখে রোদ মুচকি হেসে ফ্রেশ হতে চলে গেল। দু’টোই ফাজিল না মহাফাজিল!
To be continue…….!!