সুদর্শন শঙ্খচিল’ [২০]

0
345

সুদর্শন শঙ্খচিল’
[২০]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)

রনিতের আম্মু উঠানে বসে আঁচলে মুখ ডেকে শব্দ করে কাঁদছেন। রনিতকে ফোন দিলে ধরছেনা আর ধরলেও ভাল করে কথা বলছে না। বাড়ি ফিরতে বললে রনিত সরাসরি উনাকে না করে দিয়েছি। ছেলের এমন ব্যবহারে উনি কষ্ট পেয়ে কাঁদছেন। কয়েকজন মহিলা উনার কান্না শুনে স্বান্ত্বণা দিতে এসেছেন। দিশা একবার উনাদের দিকে তাকিয়ে বিরক্ত হয়ে উঠে চলে গেল। এসব প্যানপ্যানি ওর মোটেও সহ্য হয়না, মনে হয় শাশুড়িতে কড়া কয়েকটা কথা শুনিয়ে দিতে। শুধু স্বামীর ভয়ে কিছু বলতে পারেনা। দিশা রুমে যেতে যেতে বিরবির করে বলল, “এই বুড়ি মরেও না ঘাটাও ছাড়ে না।”

শাশুড়ি বলেই সে হয়তো এমন কথাটা মুখে বলতে পারল। নিজের মা হলে বলার আগে ওর বুক কেঁপে উঠত। স্বামী মা তার তো আর নয়। মনের রাগ মনে রেখে দিশা আঙ্গুর নিয়ে রুমে চলে গেল।পৃথিবী উচ্ছন্নে গেলে যাক সে এখন মুভি দেখতে বসবে, পুরো মুভি দেখে তবেই রুম থেকে বের হবে। শাশুড়ির নাকে কান্না দেখার সময় ওর নেই। রনিতের আম্মুর পাশে বসা মহিলারা উনাকে স্বান্ত্বণা দিচ্ছেন। একটুপরে রনিতের আম্মু কান্না থামিয়ে চোখ মুছে বললেন, ” মাকে পর করে ছেলের কাছে বউই আপন হল।”

কথাটা শুনে পাশে বসা দাদী দাঁতে দাঁত চেপে বললেন, “তোর খচ্চর ছেড়া ওই ছেড়ির মধ্যে কি পাইছে কে জানে? দ্যাশে কি ছেড়ির অভাব পড়ছে নি?”

উপস্থিত একজন চাচী পানের পিক ফেলে বললেন, “বাবারে বাবা, এতটুকুই মাইয়ার প্যাটে এত শয়তানি বুদ্ধি দেইখা বুছার উপায়ই নাই।”

আর একজন খালা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আফসোসের সুরে বললেন,” বিয়ার পর পোলা পর হইয়া যায় রে বুবু। তখন মাকে লাগে তিতা আর বউকে লাগে মিঠা। আমার প্যাটের ছেড়াডাও তো ওই ঘাটেরই মাঝি। এত কষ্ট কইরা পোলা মানুষ কইরা বউ আসার পর মা হয় পর।”

চাচীরা একে একে উনাদের মনগড়া যুক্তি দিয়ে অভিযোগ জাহির করতে লাগলেন। পরের ঘরে মেয়ে অর্থাৎ ছেলের বউদের নিয়ে উনাদের অভিযোগের অন্ত নেই। কিন্তু উনারা হয়তো ভুলে গেছেন উনারাও পরের ঘরের মেয়ে। উনারাও পূর্বে বউ থেকে এখন শাশুড়ি হয়েছেন। আর শাশুড়ি হয়ে উনাদের পূর্বের অবস্থান ভুলে এখন ছেলের বউয়ের বদগুন খুঁজে জাহির করছেন।

রনিত ওর বাবার থেকে বাড়ির সবার খোঁজ খবর নিয়েছে। সেও চেয়েছিল সুখের সংসার গড়তে, কিন্তু পলককে নিয়ে বাড়ির সবার খুব সমস্যা। তাকে কেউ সহ্য করতেই পারেনা ছোট হিসেবে একটুও ছাড়ও দেয় না। রনিত শুরু থেকে ব্যাপারটা সহজ ভাবে নিলেও পরিস্থিতি এখন উল্টো দিকে ঘুরেছে। এজন্য আর সহ্য করতে না পেরে সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রনিততে যে বাড়ি ছাড়তে কষ্ট হয়নি তা কিন্তু নয়। বাড়ি ছেড়ে ঠিকই কিন্তু বাবার থেকে সব খবর সময় মতো ঠিকই নিচ্ছে।

রনিতের আম্মুর উচিত ছিল পলক ছোট মেয়ে হিসেবে ওকে মানিয়ে গুছিয়ে নেওয়া। সামান্য একটা শাড়ির জন্য অশান্তি সৃষ্টি না করা। কিন্তু হিংসার কবলে পড়ে বিবেকহীন হয়ে ছেলের দিকে আঙ্গুল তুললেন। একবারও ভাবলেন না একথা গুলো শুনলে উনার ছেলেই কষ্ট পাবে। বউকে শখ করে কিছু দিলে, সেটা নিয়ে বাড়িতে অশান্তি সৃষ্টি হলে ব্যাপারটা খুব দৃষ্টিকটু দেখায়। বাইরের মানুষ শুনলে তো অবশ্যই ভাববে, ‘মাকে কিছু দেয়ই না বউয়ের কথায় চলে।’ আর এই অপবাদটা একটা ছেলের জন্য খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার।

তবে আমাদের সমাজে মা আর বউয়ের দ্বর্ন্দের মাঝে প্রায় ছেলেদের পড়তে হয়। এই দ্বর্ন্দের মাঝে ছেলেকে পরীক্ষা দিতে হয় ,”মা আগে নাকি বউ আগে?” তাকে যে কোনো একজনকে বেছে নিতে বলা হয়। আর পরিস্থিতি অনুযায়ী ছেলেটা বউ অথবা মাকে বেছে নেয়। আর এর ফলস্বরূপ সংসার আলাদা হয় নয়তো সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এই সমস্যার একটা উদাহরণ হচ্ছে রনিতের পরিবার।

**!!

সকালে প্রত্যয়ের আব্বু তুয়া আর চাঁদকে নিয়ে আশেপাশে ঘুরতে বের হয়েছেন। কেউ ওদের কথা জিজ্ঞাসা করলে উনি হাসি মুখে বলছেন, “এরা আমার লক্ষী পূত্রবধূ।”

শশুড় বউরা মিলে আশেপাশে ঘুরছে আর এটা ওটা কিনে খাচ্ছে। ওদের কেউ দেখে মনে হচ্ছে বাবা উনার দুই মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছেন। ঘুরতে ঘুরতে উনারা তিনজনে বাজি ধরে আঁখের রস খাওয়ার প্রতিযোগিতা করলেন। এবং প্রত্যয়ের আব্বু বিজয়ী হলেন এখন ওদের দু’জনকে উনাকে উপহার দিতে হবে। পূত্রবধূদের গোমড়া মুখ দেখে প্রত্যয়ের আব্বু মাঝে মাঝে শব্দ করে হাসছেন আবার হাসি থামিয়ে আফসোসের সুরে বলছেন, “আহারে আমার মায়েরা।”

প্রিয়ম কালকে রাত থেকে বাসায় ফিরেনি। তবে জানিয়েছে এক বন্ধুর বাসায় আড্ডা দিচ্ছে, রাতে ওখানেই থাকবে। তুয়ারা বেড়িয়ে এখনও বাসায় ফিরেনি। তাই প্রত্যয়ের আম্মু উনার কাজ সেরে চাচী সঙ্গে গল্প করছেন।

প্রত্যয়ের আম্মু প্রত্যয়কে নিয়ে চিন্তামুক্ত আছেন। উনার জানামতে প্রত্যয় ব্যস্ত তবে সময় মত ঠিকই ফোন করবে। আর ডাক্তারদের ব্যস্ততার শেষ নেই একথাটাও মাথায় রাখতে হবে। উনি ছেলেকে চিনেন এবং তার দায়িত্ববোধ সম্পর্কে অবগত। তাই উনি অকারণে চিন্তা করে কেঁদে আবেগে গা ভাসাননি। তবে প্রত্যয় আজ সকালে উনাকে মেসেজ করেছে, “আম্মু, আমি ঠিক আছি আর সবাইকে নিয়ে সাবধানে থেকো।”

ছোট্ট একটা মেসেজে সে বেশ কয়েকটা কথা বুঝিয়েছে। আলাদা ভাবে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা বা বলার প্রয়োজন হয়নি। তবে প্রত্যয়ের মেসেজের কথা উনি তুয়াকে বলতে ভুলে গেছেন। আর তুয়া প্রত্যয়ের প্রতি অভিমানের পাহাড় জমিয়ে কাল সারারাত কেঁদে কাটিয়েছে। প্রিয়ম অনেক চেষ্টা করে প্রত্যয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। সে অজানা একটা ভয়ে কুঁকড়ে আছে।

ওইদিকে প্রত্যয়ের স্যারের বাইপাস সার্জারি করা হয়েছিল এবং সব ঠিকই ছিল। কিন্তু অপারেশনের আটচল্লিশ ঘন্টা পর উনি সাইলেন্ট হার্ট এ্যার্টাক করেন। তখন থেকেই উনার বেঁচে থাকাটা আরো বিপদজনক হয়ে উঠে। ওই মুহূর্ত থেকে প্রত্যয় ঠান্ডা মস্তিষ্কে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। সেও জানেনা এর ফল কি হবে? তবে ওর সর্বচ্চো চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছেনা। প্রত্যয়ের কথা অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে ডক্টররা আলোচনায় বসেছেন। সবার সিদ্ধান্তেই স্যারের পরবর্তী চিকিৎসা ধাপ প্রয়োগ করা হবে।

প্রত্যয় আধঘণ্টা জন্য ওর কেবিনে ফ্রেশ হতে এসেছে। কোনো রকমে ফ্রেশ হতে না হতেই কল আসে স্যার হার্ট এ্যার্টাক করেছেন। প্রত্যয় তখন ক্ষুধার্থ থাকলেও খাওয়ার সময়টুকু পেল না বরং টাওজার আর টির্শার্ট পড়েই দৌড়ে বের হল। আইসি ইউ এর বাইরে স্যারের সহধর্মিণী কাঁদতে কাঁদতে প্রত্যয়ের পায়ের কাছে বসে পড়লেন। প্রত্যয় ওই মুহূর্তে উনাকে দাঁড় করিয়ে,”ম্যাম, দোয়া করুন” বলে দ্রুত পায়ে আই সি ইউ রুমে ঢুকে পড়ল।

বাইপাস সার্জারি তার উপরে হার্ট এ্যার্টাক উনি ভাগ্যক্রমে কোনোমতে সামলে উঠেছেন, তবে এখনও বিপদমুক্ত নন। এসব ব্যস্ততা নিয়ে প্রত্যয় তুয়া সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। শুধু ওর আম্মুকে মেসেজ করে সবাইকে চিন্তামুক্ত করেছে। ওটিতে কিংবা আইসি ইউ রুমে উচ্চ শব্দে ফোনের রিংটোন রাখা নিষিদ্ধ। ওটি আর আইসি ইউতে থাকার ফলে ফোনটাও ওর কাছে রাখছেনা।

তবে সত্যি বলতে প্রত্যয় ইচ্ছে করে তুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করছেনা। কারণ কল করলেই তুয়া মন খারাপ করবে অথবা সে কাঁদবে। তুয়ার কান্না শুনে প্রত্যয় ওর মনটাকে শান্ত রেখে কাজ সারতে পারবেনা। তাই সে ভেবেছে ফিরে তুয়ার একেবারে অভিমান ভাঙ্গাবে।

**!!

বিকালে তুয়ার আব্বু আম্মু বসে ছাদে বসে গল্প করছেন। উনারা প্রত্যয়ের খোঁজ নেওয়া জন্য কল করেলেন কিন্তু ফোন বন্ধ পেল। উনারা তুয়ার সঙ্গে কথা বললেন এবং মেয়ে ওখানে ভাল আছে শুনে খুশি হলেন। তুয়া কষ্ট পেলেও হাসি মুখেই মা বাবার সঙ্গে কথা বলল। তারপর প্রত্যয়ের ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনাকে লাটিমের মত না ঘুরাতে পারলে, আমিও তুয়া নই।”

কথাটা বলে তুয়া মন ভার করে জানালার পাশে বসল। চাঁদ আমসত্ত্ব খেতে খেতে তুয়ার পাশে বসে গান ধরল, “কোথায় গেলেন, কোথায় গেলেন ওহ্ ভাসুর গো? আপনার বউটা কেঁদে চোখ দু’টো বন্যা বানাইছে।”

তুয়া চাঁদের বেসুরে গুনে শুনে ফিক করে হেসে দিল। চাঁদ ওর হাতের আমসত্ত্ব মুখে পুরে তুয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, “প্রিয়মকে কেবল জ্বালিয়ে আসলাম। যদিও থাপ্পড়ও দিল তবুও সেই শান্তি লাগছে।”

কথাটা বলে চাঁদ নিজেই হাসল তুয়াও চাঁদের সঙ্গে তাল মিলালো। তারপর দু’জন ছাদে গেল প্রত্যয়ের আম্মু তেল নিয়ে ওদের পেছনে গেলেন। পাশের বিল্ডিংয়ের কয়েকটা ভাবি গল্প করছিলেন। প্রত্যয়ের আম্মু উনার সঙ্গে কথা বলতে বলতে চাঁদ তুয়ার চুলে তেল দিয়ে বিনুণী করে দিল। তুয়া চাঁদ মিটিমিটি হেসে প্রত্যয়ের আম্মুর চুলে তেল দিয়ে বিনুণী করছে। একটুপরে, প্রত্যয়ের আব্বু এসে প্রত্যয়ের আম্মুকে দেখে উচ্চশব্দে হেসে দিলেন। উনাকে হাসতে দেখে প্রত্যয়ের আম্মু হাসির কারণ জানতে চাইলেন। তুয়া চাঁদ সহ ভাবিটাও শব্দ করে হাসছে। প্রিয়ম ছাদের দরজায় দাঁড়িয়ে এসব দেখে ওর আম্মুর ছবি তুলে উনাকে দেখালেন। চাঁদ আর তুয়া উনাকে দুই পাশে দু’টো বিনুণী করে দিয়েছে, গল্পের তালে ব্যাপারটা উনি খেয়ালই করেন নি। উনি পেছনে ঘুরে কাউকে পেলেন ততক্ষণে ওরা দৌড়ে পালিয়েছে।

**!!

ইচ্ছে আজকে আবারও প্রত্যয়দের ফ্ল্যাটে এসেছে। বেশ কিছুক্ষণ দরজার দিকে তাকিয়ে মন খারাপ করে নিচে চলে গেল। ঠোঁট ফুলিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ওর আম্মুকে গিয়ে বলল, “ওলা কুথায়, কবে আছবে?”

ইচ্ছের আম্মু ইচ্ছের চোখ মুছে দিয়ে বললেন, “ওরা চলে আসবে মা।”

ইচ্ছে উপুড় হয়ে শুয়ে মুখ ডেকে কাঁদতে লাগল। ইচ্ছের আম্মু খাওয়াতে গেলে ইচ্ছে জেদ করে সব ভাত মেঝেতে ফেলে দিল। এতটুকুন মেয়ের এত জেদ উনারও আর সহ্য হচ্ছে না। প্রত্যয়রা যাওয়ার পর থেকে ইচ্ছে উনাকে একটু বেশিই জ্বালাচ্ছে। কালকে রাতেও একটুও ঘুমাতে দেয়নি। চোখ বন্ধ করলেই চোখে গুঁতো মেরে বলেছে,”আম্মু, ধুমাচ্ছে?”

ইচ্ছে এত জ্বালাতন সহ্য করতে না পেরে ইচ্ছের আম্মু রেগে ইচ্ছেকে কয়েকটা মারলেন। মার খেয়েও চিৎকার করে কেঁদে বলছে, “প্রত্তুয়! প্রিউুম দাব।”

মার খেয়ে ইচ্ছের ঠোঁট কেটে রক্ত বেরিয়ে গেল। তবুও তার একটাই কথা সে প্রত্যয় আর প্রিয়মের কাছে যাবে। মেয়েকে মেরে ইচ্ছের আম্মু নিজেই কেঁদে দিলেন। রেগে মারতে গিয়ে ঠোঁটে লেগে গেছে উনিও ইচ্ছে করে মারেনি। একটুপরে, রনিত এসে ইচ্ছেকে কোলে তুলে ইচ্ছের ঠোঁটে ওয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিয়ে রেগে বলল, “আর একবার বাচ্চাটাকে এভাবে মারলে তোর খবর আছে।”

ইচ্ছের আম্মু কেঁদে বলল, “সারাটাদিন জ্বালিয়ে মারে, আমাকে ভাতটুকু শান্তিতে খেতে দেয় না। ওর জ্বালা আমার আর সহ্য হচ্ছেনা।”

রনিত দাঁতে দাঁত চেপে বলল, “সহ্য না করলে বনবাসে যা তবুও মারবি না। দাঁত আছে তাই দাঁতের মর্ম বুঝছ না।”

কথাটা বলে রনিত ইচ্ছেকে নিয়ে ওদের ফ্ল্যাটে চলে গেল। মার খেয়ে কেঁদে ক্লান্ত হয়ে ইচ্ছে রনিতের কোলেই ঘুমিয়ে গেল। ইচ্ছের ঠোঁট ফুলেও লাল হয়ে আছে এজন্য রনিত রেগে কথাটা বলল। সে আবার কোনো বাচ্চার কান্না সহ্য করতে পারেনা। আর প্রত্যয় আর প্রিয়মের অজানা থেকে গেল, ওদের জন্য ছোট্র একটা প্রান ব্যাকুল হয়ে কাঁদছে।

**!!

ভিডিও কলের মাধ্যমে দুই ভাই মুখোমুখি বসে আছে। প্রিয়মকে মাথা নিচু করে থাকতে দেখে প্রত্যয় বলল,” প্রিয়ম কাঁদছ কেন?”

প্রিয়ম বাহুর শার্টে চোখ মুছে কান্নারত গলায় বলল, “আমি চাঁদকে একটা সুযোগ দিতে চাই। তুমি ফিরে এসে কথা সবাইকে জানাও।”

কথাটা শুনে প্রত্যয় প্রিয়মকে সরাসরি বলল, “আমার ভালোর জন্য এই সিদ্ধান্তটা নিলে? তবে জেনে রেখো, তোমার ভাই এতটাও সুবিধাবাদী নয়।”

প্রিয়ম ধরা পড়ে কান্নারত গলায় মুচকি হেসে বলল, “কবে ফিরবে ভাইয়া? তুমিহীন তোমার তুয়া ভাল নেই। আর আমিও নতুন করে আবার শুরু করতে চাই। তুমি এসে আমাকে আরেকটা পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করো।”

প্রত্যয় শান্ত হয়ে প্রিয়মকে বুঝিয়ে বলল,” ভেবে সিদ্ধান্ত নাও। জীবনটা খুব সুন্দর, তাড়াহুড়োই ভুল পদক্ষেপ নিয়ে পরে আফসোস করো না।”

প্রিয়ম কম্পিত কণ্ঠে অকপটে বলল, “না, তুমি ফিরে এসো আর ব্যাপারটা সবাইকে জানাও।” প্রত্যয় প্রিয়মের কথা শুনে মৃদু হেসে বললে,” হুম, আমি যথাশীঘ্রই ফিরছি।”

দুই ভাই বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে কল কাটল। প্রিয়ম মাথার চুল মুঠো করে ধরে অশ্রু ঝরিয়ে বলল, “শুধু ভালবাসার দাফন নয়, তোমার জন্য মরতেও দুইবার ভাববো না, ভাইয়া।”

ওইদিকে প্রত্যয় রেডি হয়ে ওর ট্রলি নিয়ে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গেল। ওর এখানকার কাজ আপাতত শেষ সে এখন যাচ্ছে নতুন আরেকটা পদক্ষেপ নিতে।

To be continue…..!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here