এলোকেশী_কন্যা২__ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_14 🍁🍁

0
733

#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_14
🍁🍁

________ রোদের আম্মু আলোর রুম থেকে বের হয়ে রোদের রুমে চলে গেল!রোদের বেডের পাশে বসতেই রোদ উঠে ওর আম্মুর কোলে মাথা রাখলো!রোদের আম্মু মুচকি হেসে রোদের চুল টেনে দিতে শুরু করলো।রোদের আম্মু বলতে শুরু করলো…!!

রোদের আম্মুঃআব্বু আমার উপর তোমার বিশ্বাস আছে তো (মুচকি হেসে)

রোদঃ আম্মু এসব কি বলো?তোমার উপর যদি বিশ্বাস না করি! তাহলে পৃথিবীর কারো উপরেই বিশ্বাস করার প্রশ্নই আসে না।আম্মু আমার বিশ্বাস, ভরসা,আস্থা সব তুমি!

রোদের আম্মুঃ কথাটা শুনে খুশি হলাম!তাহলে আমি যা বলবো তাই করতে হবে।কি করতে পারবে তো আব্বু??

রোদঃ ওকে বিয়ে করার ছাড়া! যা করতে বলবে আমি সব করতে রাজি আছি।

আম্মুঃ কেন আব্বু আলোকে বিয়ে করতে সমস্যা কোথায় তোমার??আমি জানি তুমি কোন কারণ ছাড়া কিছু করো না।তবে এখন আমাকে যদি একটা সত্যি কথা বলো! তাহলে আমি তোমাকে আপাতত আর বিয়ের কথা বলবো না…!!

রোদঃ কি কথা বলো??

আম্মুঃ আলোকে তোমার কেমন লাগে?আমি সোজাসাপ্টা উওর আশা করছি আব্বু…!!

রোদঃ আম্মু এসব কথা থাক না!অন্য কথা বলো।

আম্মুঃ না আমি যেটা জানতে চাচ্ছি সেই উওরটা আগে দাও!তুমি কি আলোকে পছন্দ করো???

রোদঃওকে আমার ভালো লাগে বাট বিয়ে করার মত ভালো লাগে না!আর ভাল লাগারও তো প্রকারভেদ আছে তাই না আম্মু..!!

আম্মুঃ হা হা হা!আমি জানতাম তুমি স্মার্টলি একটা আনসার করে কথাটা এড়িয়ে যাবে।তবে সমস্যা নেই আব্বু! তোমাকে মুখে বলতে হবে না আমি তোমার চোখের ভাষা পড়তে পারি!কারন আমি তোমার আম্মু…..!!

রোদঃ আম্মু রাগ করো না প্লিজ! তুমি সময় মত এই কথাটার আনসার পেয়ে যাবে!আমাকে কিছু দিন সময় দাও।অনেকে রিলেশন করবো বলে যার তার সাথে রিলেশনে জড়িয়ে পড়ে!দেখা নেই, জানা নেই, পরে তারা আপসোস করে!আর বিয়ে তো এক দুইদিনের ব্যাপার না তাই আমি কোন রিস্ক নিতে চাই না!আমি পড়াশোনা শেষ করে জব করতে চাই…তারপর বিয়ে।

আম্মুঃ জব না করলে কি তোমার বউ না খেয়ে মরবে?তোমার বাবার যা আছে তোমাদের দুইভাইয়ের ছেলে মেয়েদেরও কিছু না করলেও চলবে!আর নিজেদের বিসনেজ থাকতে অন্য কোথাও জব করার কি দরকার??? (রেগে গিয়ে)

রোদঃ নিজের যোগ্যতায় আমি কিছু করতে চাই…!!

রোদের আম্মুঃ প্রথমত আমি তোমাকে বাইরে জব করতে দিতে রাজি না!কারন আমি আমার ছেলেকে বাইরের কারো কাছে কথা শুনতে দিবো না।আর কিছু করতে চাইলো নিজেদের বিসনেসের হাল ধরো! আর তা না হলে ঘরে বসে থাকো!আর তুমি কিছু না করলেও তোমার বউ বাচ্চা না খেয়ে থাকবে না।

রোদঃ আচ্ছা এখন এসব কথা বাদ দাও!আমার মাথা ব্যাথা করছে ! এখন তুমি আমার মাথা টিপে দাও তো।

আম্মুঃপারবো না!তুই কি আমার কথা শুনিস যে আমি তোর কথা শুনবো।তোরা কেউ আমার সাথে কথা বলবি না (রেগে গিয়ে)

রোদঃ আরো আম্মু রাগ করছো কেন?আমার কথাটা তো শুনে যাও…!!

রোদের আম্মু রোদের কোন কথা না শুনে হনহন করতে করতে চলে গেল!রোদ জানে এখন ওর আম্মু ওর আব্বু ফোন দিয়ে কয়েক দফা ঝাড়বে! বেচারা রোদের আব্বু কিছু বুঝতে না পেরে চুপ থাকবে।তার ৩০ মিঃ পর রোদের আম্মু নিজেই রোদের আব্বুকে ফোন দিয়ে সরি বলবে।রোদ বা মেঘ যদি কথা না শুনে তাহলে রোদের আম্মু ছেলেদের কিছু বলে না। ছেলেদের বাবার উপরে উনার সব রাগ তুলে।আজকেও সেইম কাজ হয়েছে!রোদের আম্মু রোদের আব্বু ধুমাইয়া কয়েকদফা ঝেড়ে দিলো আর বেচারা রোদের আব্বু কিছু তো বুঝলোই না শুধু শুধু বকা গুলো পানি ছাড়াই গিলে নিলো….!!

রোদের আম্মু আলোর রুমে গিয়ে দেখে আলো ঘুম থেকে উঠে বসে আছে!রোদের আম্মু আলোর কাছে গিয়ে বললো…

রোদের আম্মুঃএই মেয়ে শোন! বড় গাধাটা আমার মাথা গরম করে দিসে!তুই তারাতারি এখন আমাকে তোর হাতে সেই স্পেশাল চা টা খাওয়া তো।

আলোঃ বড় গাধা আবার কে আম্মু?? (অবাক হয়ে)

রোদের আম্মুঃ যার বউ করার জন্য তোকে এই বাড়িতে এনেছি সেই বড় গাধা। (রেগে চিৎকার করে)

আলোঃ …..(অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে)

রোদের আম্মুঃ চা করলে রোদের জন্যও করবি ওর নাকি মাথা ব্যাথা করছে।তবে চা করে প্রথমে আমাকে দিয়ে তারপর রোদকে দিবি!আমি আমার রুমে গেলাম আইস ব্যাগ টা নিয়ে। আপাতত আমার মাথাটা খুব গরম…!!

আলোঃ জি…!!

রোদের আম্মু চলে গেলো আর আলো অবাকের পালা শেষ করে!ওয়াশরুমে গিয়ে মুখটা ধুয়ে
রান্না ঘরের দিকে হাটা ধরলো!তারপর আলো ওর হাতে চা বানিয়ে আগে রোদের আম্মুকে দিয়ে এলো!এবার আলো পড়ছে আরেক বিপদে! আলোর এখন মনে হয় রোদের সামনে যাওয়া আর বাঘের সামনে যাওয়া দুটোই সমান।এখন আলোর আবার বাঘের সামনে পড়তে হবে এটন ভাবলেই আলোর দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আলো চায়ের কাপ হাতে নিয়ে গুটি গুটি পায়ে এগুলো রোদের রুমের দিকে!আলোর রোদের রুমের দরজাতে নক করলো বাট কারো সাড়া শব্দ না পেয়ে রুমের দরজাতে হাত দিতেই দরজা খুলে গেল।আলোর গুটি পায়ে রোদের রুমে ঢুকলো…!!

আলো রোদের রুমের চারপাশটা ঘুরে দেখছে!রুমটা অত্যাধুনিক আসবাবপএ দিয়ে সাজানো। রুমের প্রতিটা আসবাবপত্রই অানকমন ডিজিইনের তৈরী!বড় বড় ফুলদানী, শোপিস, এ্যাকুরিয়ামও আছে। আলো দাড়িয়ে দাড়িয়ে এসব দেখছিলো ঠিক তখন ওয়াশরুমের দরজা খোলার শব্দ শুনতেই আলো পেছনে ঘুরে তাকায়। রোদও আলোকে দেখে একটু অবাক হয় বাট নিজেকে সামলে নেয় আর ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করে….!!

রোদঃ আমার রুমে কি চাই তোমার??

আলোঃ ম ম মা মানে ভ ভ ভাই ভাইয়া চ চ চা দিতে এসেছিলাম। (তোতলাতে তোতলাতে)

রোদঃ আমাকে তুমি কি বললে??(রাগী চোখে তাকিয়ে)

আলোঃ ওহহ স স সরি মাম ম মামা।

রোদঃ তুমি আমাকে মামা ডাকলে! তোমার সাহস তো কম না!এখুনি আমার রুম থেকে তুমি বেরিয়ে যাবে এখুনি….!! (চিৎকার করে)

আলোঃ ত ত তাহলে কি ডাকবো??আপনি তো কালকে বললেন মামা বা আংকেল ডাকতে।তাহলে এখন আ আপনি এত রেগে যাচ্ছেন কেন?(কাঁপতে কাঁপতে)

রোদঃ আমি কেন রেগে যাবো!আমার তো এখন খুশিতে ধেই ধেই করে নাচতে ইচ্ছে করছে।(দাঁতে দাঁত চেপে)

রোদ রাগী চোখে আলোর দিকে তাকিয়ে আছে!আর আলো অলরেডি ভয়ে কাঁপতে শুরু করছে!আলো এত পরিমাণ কাঁপছে যে হাতে থাকা চায়ের কাপটাও ঠকঠক করে শব্দ হচ্ছে। আলোর এখন পানি খাওয়ার খুব দরকার!রোদের চিৎকারে আলো এত পরিমাণ ভয় পেয়েছে যে আলোর গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে!আলো অনেক সাহস করে আলোর পাশে থাকা সেন্টার টেবিলের উপর চায়ের কাপটা রেখে আশেপাশে না তাকিয়ে উল্টো ঘুরে ভৌ-দৌড় দিসে!আর রোদ আলোর যাওয়ার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে….!!!

রোদঃ অসভ্য মেয়ে একটা! এতদিন ভাইয়া ডাকতো এখন আবার সরাসরি মামা ডাকছে ভাবা যায়!মন চাচ্ছে তুলে আছাড় দিতে (দাঁতে দাঁত চেপে)

আলোর রোদের রুম থেকে এসে ওর বেডে ধপ করে বসে পড়ে!মেঘ তখন ঘুম থেকে উঠে আড়মোড়া ভেঙ্গে কুটুরকুটুর করে সামনে তাকিয়ে ছিলো।মেঘ আলোকে দেখে মুচকি হাসি দিলো! বাট আলো তখনও কাঁপছিলো মেঘ তারাতারি উঠে আলোর গায়ে কম্বল দিয়ে দেয়!মেঘ মনে করছে আলোর শীত করছে এজন্য…!! মেঘের কথার আলোর আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়…!!!

পরেরদিন সকালে ___________!!

আলো সকালে উঠে নামাজ পড়ে তারপর ব্রেক ফাস্ট বানিয়ে মেঘকে ঘুম থেকে টেনে তুলে ফ্রেশ হতে পাঠিয়ে দেয়।মেঘ ফ্রেশ হয়ে আসলে আলো মেঘকে খাইয়ে দিয়ে এক্কেবারে স্কুলে জন্য রেডি করে নিচে যায়।তারপর আলো মেঘের কপালে আদর দিয়ে দেয় আর মেঘও আলোকে আদর দিয়ে টাটা দিয়ে স্কুলে চলে যায়।

মেঘ স্কুলে পৌছে ওর ক্লাসে চলে যায়! আর পাশের জনের ব্যাগ দিয়ে নিজের বসার জায়গা মুছে ব্যাগটা আগের জায়গাতে রেখে দেয়!মেঘ নিজের জায়গায় বসতেই ক্লাস টিচার চলে আসে!টিচার রোল কল করছে তখন মেঘ খাতাতে ডোরেমন আঁকাতে বিজি! মেঘের রোল পাস হওয়ার পর মেঘের মনে হয় ওর রোল মিস হয়ে গেছে।মেঘ যেহেতু পেজেন্ট দিতে পারেনি তাই মেঘ ওর পাশের জনেরও মুখ চেপে ধরে! যাতে সেও পেজেন্ট দিতে না পারে!মেঘ যার মুখ চেপে ধরে ছিলো সে টিচারকে বলে দেওয়া উঠে দাড়ায় আর বলে…

সাবিদঃমেঘ আমি টিচার কে বলে দিবো! তুই আমাকে পেজেন্ট দিতে দিস নি…

মেঘঃ বলে দেখ!আমিও টিফিন পিরিয়ডে সব মেয়ের সামনে তোর প্যান্ট খুলে দিবো। (দুষ্টু হেসে)

বেচারা সাবিদ ভয়ে টিচারকে আর না বলে আবার বসে পড়লো!মেঘদের প্রথম ক্লাস ম্যাথ এজন্য টিচার সবাইকে নামতা পড়ে আসতে বলেছিলো !টিচার সবাইকে পড়া ধরতে ধরতে মেঘের কাছে আসলো।মেঘও বীরের উঠে দাঁড়ালো….!!

টিচারঃ মেঘ ৪ এর ঘরে নামতা বলো…!!
মেঘঃ ওকে স্যার…!!
টিচারঃকি হলো বলো???
মেঘঃ লা লা লা! হুম হুমম হুমম………!!!
টিচারঃ তোমাকে নামতা বলতে বলছি তুমি লা লা করছো কেন?? (ভ্রু কুচকে তাকিয়ে)
মেঘঃ লা লা লা!(মুখ কাচুমাচু করে)

টিচারঃ তুমি কি আমার সাথে ফাজলামি করছো??আজকেও পড়া না পারলে তোমাকে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখবো কিন্তু.. (দাঁতে দাঁত চেপে)

মেঘঃ ইয়ে মানে স্যার আসলে নামতার সুর টা আমার মনে আছে! কিন্তু নামতাটা মনে নাই!আপনি চাইলে আমি আপনাকে পাগলু গানটা গেয়ে শোনাতে পারি…(বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)

To be continue….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here