এলোকেশী_কন্যা২__ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_5

0
767

#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_5
🍁🍁

________মেঘ আলোকে দেখেই বউমনি বলে চিৎকুর দিয়ে উঠলো!রোদ ভ্রু কুচকে সেইদিকেই তাকালো…..!!
.
.
.
আলো মেঘের দিকে তাকালো আর দেখে
মেঘের সাথে একটা সুদর্শন ছেলে দাড়িয়ে আছে!আর ছেলেটাকে দেখেই আলো সাথে সাথে ওর মাথার ওড়নাটা বড় করে দিয়ে দেয়!কারন ছোট মায়ের কড়া আদেশ কোন ছেলের সাথে কথা না বলতে!মেঘ রোদের হাত ধরে টানতে টানতে আলোর সামনে নিয়ে গেল।রোদ বিরক্ত হয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে!মেঘ ফট করে বলে উঠলো___!!
.
.
.

মেঘঃ বউমনি এটা আমার দাভাই!কথা বলো

আলোঃ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া…!!(রোদকে উদ্দেশ্য করে)

রোদঃ ওয়ালাইকুম সালাম..!!

মেঘঃ বউমনি তুমি কি দাভাইকে দেখে লজ্জা পাচ্ছো? (ভ্রু কুচকে)

আলোঃ না না মা আস আসলে

রোদঃমেঘ এবার চল আমরা বাসায় যায়।

মেঘঃ না না তুমি তো বউমনিকে দেখলেই না!বউমনি ওড়নাটা সরাও দাভাই তোমাকে দেখবে তো।আসলে দাভাই তোমাকে দেখার জন্য এখানে এসেছে।

রোদঃ….
(দিলো রে দিলো আমার ইজ্জতের ফালুদা করে দিলো!আমি কখন এই মেয়েকে দেখার জন্য আসলাম। মনে মনে)

আলোঃ আম আম আমি যায় মেঘ বাবু!
.
.
.
আলো মেঘের দিকে তাকিয়ে হাটতে শুরু করে আর সামনে একটা গর্ত থাকায় সেই গর্তে পা ঢুকে যায় আর ঠাস করে মাটিতে পড়ে যায়!আলো পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে মাথার ওড়নাটাও সরে যায় আর চুলের খোপাও খুলে যায়!মেঘ দৌড়ে গিয়ে আলোকে টেনে তোলার জন্য আলোর হাত ধরে টানতে থাকে আর রোদ হাবলার মত হা করে আলোর চুলের দিকে তাকিয়ে আছে কারন চুল গুলো মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে। বেচারা আলো লজ্জা আর ভয়ে কাঁদে দেওয়ার মত অবস্থা! আলোর পা মচকে গেছে এজন্য উঠতেও পারছে না!মেঘের টানাটানিতে কষ্ট করে উঠলো কিন্তু পা মচকে যাওয়ার জন্য একটা ধাপও ফেলতে পাচ্ছে না…!
.
.
.
রোদের চোখ আটকে গেছে অন্য কিছু তে!রোদ উজবুকের মত তাকিয়ে আছে আলোর ডান হাতের বাহুকে থাকা পর পর একসাথে থাকা সাতটা তিলের দিকে!ছোট হাতের জামার জন্যে তিল গুলো দেখা যাচ্ছে আর এই ফাঁকে রোদ তিল গুলো গুনেও নিয়েছে!রোদ অবাকের চরম শিখায় কারন এখন পর্যন্ত রোদ কোথাও শুনে নি বা দেখে কারো একসাথে পর পর সাতটা তিল হয়!আর ফর্সা হাত কালো তিল গুলো অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে।
আলো আড়চোখে একবার রোদের দিকে তাকায় আর মনে মনে বলে..!!
.
.
.
আলোঃ এই পোলা আমার দিকে এমন কুটুর কুটুর কইরা তাকায় আছে ক্যারে!সবাই ঠিকই কয় শহরের পোলাদের নজর ভালা না!ছেলেটা দেখতে সিনেমার হিরোই মতই বাট এত লুচু ক্যান!জীবনে কি মাইয়া মানুষ দেখেনি নাকি!(মনে মনে)
.
.
.
ওইদিকে মেঘের ঝাকুনি খেয়ে রোদের হুশ আসে!রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে দেখে আলোর উঠতে পারছে না আর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।রোদ আলোর দিকে এগিয়ে যায় আর আলোর পায়ের কাছে হাটু গেড়ে বসে!আলো হতভম্ব হয়ে রোদের দিকে তাকায়! রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে বলে..!!
.
.
.

রোদঃ সামান্য একটা বিষয় নিয়ে ছিচকাদুনীর মত কাঁদছেন কেন???

মেঘঃ দাভাই বউমনি ব্যাথা পেয়েছে তাই হাঁটতে পারছে না!দাভাই কিছু একটা করো।

রোদ আলোর বাম পা নিয়ে দেখে আলোর পায়ে রুপার চিকন একজোড়া নুপূর! ফর্সা পায়ের নূপুর গুলো দারুন মানিয়েছে!রোদ আলোর পা দেখে মুচকি হাসে আর মনে মনে ভাবে আলোর পা আর মুখের রং এক! তাহলে আসলেই আলো দেখতে অনেক সুন্দর!রোদের আরো একটা জিনিস চোখ এড়ালো না সেটা হলো আলোর বামপায়ের তিন নাম্বার আঙুলটা ছোট।
.
.
.

রোদ আলোকে জিজ্ঞাসা করে কোথায় ব্যাথা লাগছে!আলো দেখিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে রোদ একটা মোচর দেয় আর আলো মা গো বলে রোদের গেন্জী খামচে ধরে।মেঘ মনে করছে রোদ আলোকে ব্যাথা দিয়েছে তাই মেঘ রোদকে কিল,ঘুসি মারতে থাকে…!!রোদ মেঘকে থামাতে পারছে না।
.
.
.

আলো হা করে মেঘের কান্ড দেখছে!আলো কি বলবে এখন বুঝতে পারছে না।আলো মেঘকে থামতে বললো আর এটাও বললো যে আলো আর পায়ে ব্যাথা করছে না! তখন মেঘ থামলো!আলো রোদের দিকে তাকিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে বাসার দিকে হাটা ধরলো!আর মেঘ রোদের দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি দিয়ে বাসার দিকে হাটা ধরলো!আর রোদ দুইজনের দিকে তাকিয়ে নিজেও বাসায় যাওয়ার জন্য হাটা ধরলো..!!

.
.
.
ওই দিকে মেঘ দৌড়ে বাসায় ডুকে নিজ দায়িত্বে চিৎকার করে বলছে! রোদ আলোকে দেখে নাকি হা করে তাকিয়ে ছিলো।এই কথা শুনে সবাই মুখ টিপে টিপে হাসছে আর রোদ রাগে গজগজ করছে!ওইদিকে রোদ যে আলোর পা ধরে আলোর পা ঠিক করছিলো এটা গ্রামের কয়েকজন দেখে গোটা পাড়া ছড়িয়ে দিয়েছে!রোদের আম্মু রোদের মাথায় হাত রেখে বললো…!!

রোদের আম্মুঃ আলোর সাথে তোমার দেখা হয়েছিলো আব্বু (মুচকি হেসে)

রোদঃ হুমমম

রোদের আম্মুঃ কেমন লাগলো??পছন্দ হয়েছে..!!

রোদঃ আম্মু তুমি মেঘের কথা কান দিও না তো!ও কি বলে না বলে! এসব টপিক বাদ দাও

রোদের আম্মুঃ কি হলো বললে না তো আলোকে তোমার পছন্দ হয়েছে আব্বু (মুচকি হেসে)

রোদঃ আসলে আ আম্মু

রোদের আম্মুঃ আমি কি ওদের বাসায় বিয়ের কথা বলবো??

রোদঃউনাকে আমার ভালো লাগছে তার মানে এই না যে বিয়ে করতে হবে!আম্মু আমার কালকে হাতিরঝিল একটা প্রোগ্রাম আছে! আমাকে আজকেই যেতে হবে।

রোদের আম্মুঃ ওকে!
তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও!আমি এখুনি আসছি..??

রোদঃ কোথায় যাচ্ছো আম্মু? আম্মু আমি এখুনি বাসায় যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়বো।তোমরা আস্তে ধীরে এসো… আমার কিছু কাজ আছে।

রোদের আম্মুঃ ওকে!তাহলে তুমি নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়ো।আমি এখনই একটা কাজ সেরে আসছি..!!
.
.
.
রোদের আম্মু আর খালামনি দুইজন মিলে আলোর বাড়ি গেল!ছোট মা তখন আলোকে খুব মারছিলো আর গালি দিচ্ছিলো।রোদের আম্মু ওখানে গিয়ে শুনে রোদ নাকি মাঝ রাস্তায় আলোর পা ধরেছিলো।আর কে যেন এটা দেখেছে! তারপর আলোর বাড়ি এসে আলোর ছোটমাকে বলে দিয়েছে।তারপরেও আলোর ছোট মা এসে আলোকে মারতে শুরু করছে।
.
.
.

আলোর কান্না দেখে রোদের আম্মুর বুক কেঁপে ওঠে!আর রোদের আম্মু এটাও ভালো করে জানে কোন কারন ছাড়া হুট করে রোদ কিছু করে না!রোদের আম্মুকে দেখে আলোর ছোট মা আরো চেচাঁমেচি করতে থাকে…!!রোদের আম্মু আলোর ছোট মাকে বলে..
.
.
.
রোদের আম্মুঃ শুধু শুধু মেয়েটার গায়ে তুলবেন না!কি এমন করছে মেয়েটা যে আপনি ওকে এভাবে মারছেন।আপনি আসলেই খুব পাষাণ একটা মহিলা!আমার ছেলের জন্য মেয়েটাকে এভাবে মারছেন! ওকে আমি আলোকেই আমার ছেলের বউ করতে চাই! আমি আমার সাথে আলোকে নিয়ে যেতে চাই।আপনার মত মহিলার কাছে এই মেয়েটা আসলেই সেইভ না….(রেগে চিৎকার করে)
.
.
.

To be continue….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here