প্যারাময়_লাভ❤❤ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_15

0
344

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_15

রুহিঃ আমি ফ্রি আছি! বড় আম্মু তুমি চাইলে আমি তোমার ছেলের বউ হতে পারি।(মাংসের হাড় চিবুতে চিবুতে)

মুগ্ধ এই কথাটা শুনে এমন ভীষম খেয়েছে যে ওর কাশতে কাশতে জান শেষ!মুগ্ধ চোখ দিয়ে পানি ঝরছে আর মুখটা লাল হয়ে গেছে।পানি খেয়েও কাশি কমছে না!রুহি উঠে মুগ্ধর মাথায় আর পিঠে ফু দিতে শুরু করলো!ফু দিয়ে কাশি যখন থামলো না তখন মুগ্ধর মাথায় আর পিঠে থাবড়ানো শুরু করলো!মুগ্ধর কাশি আর রুহির থাবড়ানোতে মুগ্ধর অবস্থা আরো খারাপ…. মুগ্ধর কাশি দেখে সবাই কি নিয়ে কথা বলছিলো সেটাই ভুলে গেছে।


রুহিঃবড় আম্মু কাশি কমছে কেন তুমি ঝাড়ুটা নিয়ে এসো!ঝাড়ু টা মারলে মে বি কাশি কমবে

মুগ্ধর আম্মুঃ আমার আদরের ছেলেকে কি না ঝাড়ু দিয়া মারবো!!!

রুহিঃ কাশি না কমলে ঝাড়ু কেন দরকার পড়লে বাঁশ দিয়াও মারা লাগবে।

মুগ্ধঃ লাগবে না! আমার কাশি কমে গেছে।আমি ঠিক আছি (কাশতে কাশতে)


মুগ্ধ অনেক কষ্টে কাশি থামিয়ে অল্প করে খাবার খেয়ে ওর রুমে চলে যায়!রুহিও তারাতারি করে খেয়ে ওর বাসায় চলে গেল।মুগ্ধ ওর রুমে গিয়ে ভাবছে…

মুগ্ধঃ তোর বিয়ে করার শখ তাই না!দাড়া তোর বিয়ের শখ মিটাচিছ!ফাজিল মেয়ে একটা! কোথায় ওর পরীক্ষা চলছে পরীক্ষা নিয়ে টেনশন করবে তা না।উনি বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।আর সব সময় আমাকে সবার সামনে লজ্জাতে না ফেললে হয় না।কোন মেয়ে যে নিজের বিয়ের জন্য এত লাফালাফি করে সেটা এই অসভ্য মেয়েটাকে না দেখলে বুঝতাম না।সবার সামনে দুম করে এটা কি বলে দিলো…


১মাস পর…..

রুহির সব পরীক্ষা শেষ! তাই এখন সে মুক্ত পাখির মত উঠে বেড়াচ্ছে।আগের তুলনায় রুহি ওর দুষ্টমির মাএা বাড়িয়ে দিয়েছে!সারাদিন সবাই কে জালিয়ে মারে কাউকে বাদ রাখে না।একদিন মুগ্ধ অফিস থেকে বাসায় এসে দেখে রুহির বাবা-মা কিছু একটা নিয়ে আলোচনা করছে।রুহির বাবা মুগ্ধকে বললো ফ্রেশ হয়ে নিচে আসতে জুরুরি কথা আছে!মুগ্ধ মুচকি হেসে জি আচ্ছা বলে উপরে ফ্রেশ হতে চলে গেল!মুগ্ধর কেন জানি মনে হচ্ছে! ওর আর রুহির বিয়ের কথা বলবে মনে হয়!মুগ্ধ ফ্রেশ নিচে নেমে আসে….


রুহির আব্বুঃ আমি চাচ্ছিলাম রুহির বিয়ে দিতে!কারন মেয়ে যখন জন্মেছে তখন বিয়ে তো দিতেই তাই না…

মুগ্ধর বাবাঃ তা তুমি কি রুহির জন্য ভাল কোন ছেলের খোঁজ পেয়েছো???

রুহির বাবাঃহুমমম! আমার বিজনেস পার্টনারের ছেলে আব্রাহাম পরশ! অনেক ভাল একটা ছেলে আমার মনে হয়েছে রুহির জন্য একদম পারফেক্ট..

মুগ্ধঃ এত তাড়াহুড়োর কি আছে??পড়াশোনা করছে করুক!আগে নিজের পায়ে দাড়াক।এত তারাতারি বিয়ে দেওয়ার কোন কারণই তো আমি দেখছি না।

রুহির বাবাঃ না আব্বু! আমি পরশ ছেলেটাকে হাতছাড়া করতে চাই না।তাই আমি ওদের এনগেজমেন্টটা করে রাখতে চাই।(মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে)

রুহিঃ ব ব ব বাপি!এসব কি বলছো???(পেছন থেকে)

রুহির আম্মুঃ তুই এখানে কি করিস??যা আমরা বড়রা কথা বলছি তো।(রুহিকে উদেশ্য করে)

রুহিঃ ওকে!আমার আর কিছু বলার নাই তবে তোমরা যা করবে ভেবে করবে!পরে যাতে আফসোস করে মরতে না হয়।জানোই তো আমি কি করতে পারি?? (মুগ্ধকে শুনিয়ে কথাটা বলে গেল)

রুহির বাপিঃ ওর কথা বাদ দাও!আমরা যা করবো তাই হবে।

মুগ্ধর বাবাঃহুমমম!কারন বাবা হিসেবে যোগ্য পাএ দেখে তোমার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার অধিকার আছে।এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই।

মুগ্ধঃমেজ বাবা আমাকে কি রুহির দায়িত্ব দেওয়া যায় না?যাকে ছোট থেকে ভালবেসে আগলে রেখেছি তাকে অন্য কারো হতে দেয় কি করে??আর আমি এতটাও দয়াবান না যে আপনারা বলবেন রুহি কে অন্য কারো বিয়ে দিবেন! আর আমি তা মেনে নিবো!কারন আমার জীবন কোন সিনেমা না যে, যাকে ভালবাসি তার বিয়ে হওয়া দেখবো,আড়ালে কাঁদবো, নিজে নিজে কষ্ট পাবো, আর সব শেষে উদর মনের পরিচয় দিতে গিয়ে আমার ভালবাসাটাকে হারাবো।তাহলে বলবো আপনারা ভুল জানেন! আর আমি এতদিন কাউকে কিছু বলিনি যাতে রুহির পড়াশোনা থেকে মনোযোগটা না সরে যায়! যেটা আমি চাই নি।এখন আপনারা ভেবে দেখেন আমাদের সাপোর্ট করবেন! নাকি অন্য পথ খুঁজবেন! যদি তাই করে থাকেন! তাহলে আমরাও অন্য পথ অবলম্বন করবো আর তখন বলতে পারবেন না যে! আমরা আপনাদের জানায় নি।তবে রুহি কেমন আর কি করতে পারে সেটা আপনাদেরও সবার জানা!আমার যা বলা আমি জানিয়ে দিলাম!আর এভাবে কথা বলার জন্য আমি দুঃখিত!মেজবাবা আমি এবার উঠলাম! এবার আপনারা বড়রা যা করবেন ভেবে করবেন।

রুহির বাবাঃতাহলে তুমি রুহিকে বিয়ে করতে চাচ্ছে তাই তো???

মুগ্ধঃহুমমম!আর আমি নিজে ভাল একটা জব করি।মেজবাবা আমি মনে করি আপনার মেয়ের দায়িত্বটা আমি নিতে সক্ষম।আর আমি ছেলে হিসেবে কেমন সেটা আপনাদের থেকে কেউ ভালো বলতে পারবে না।


মুগ্ধ উঠে হনহন করতে করতে ওর রুমে চলে যায়!মুগ্ধর বাবা-মা সাথে রুহির বাবা-মা মুগ্ধর কথা অবাক হয়ে শুনছিলো!যদিও দুই বাড়ির সবাই জানে যে ওরা দুজন দুজনকে প্রান দিয়ে ভালবাসে! রুহির বাবা আর মুগ্ধর বাবা দুই ভাই দুজনের দিকে তাকিয়ে হো হো হাসতে শুরু করে!কারন রুহির বাবা দেখতে চেয়েছিলো মুগ্ধ কি করে??যদিও রুহির বাবা জানতেন মুগ্ধ কিছুতেই এটা মেনে নিবে না তাও একটু পরীক্ষা করে নিলো! রুহির বাবা মুগ্ধর বাবার দিকে তাকিয়ে বলে…


রুহির বাবাঃভাইয়া তোমার ছেলে যেটা আমাকে এখন যেটা দিয়ে গেল বলো তো এটাকে কি বলো??

মুগ্ধর বাবাঃ কি বলে তুই বলতো???

রুহির বাবাঃইহাকে বলে ঠান্ডা মাথার বাঁশ দেওয়া !তোমার ছেলে আগে, পরে,বতমানে,আর ভবিষ্যাতে কি হতে পারে সব কিছু ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেল। হা হা হা হা

মুগ্ধর বাবাঃহুমম তাই তো দেখলাম!তবে আমার ছেলের বুকে সাহস আছে! তা না হলে বাবা মা আর হবু শশুড়-শাশুড়ির সামনে এভাবে কেউ এমন ভাবে কথা বলতে পারে!বুকে সাহস না থাকতে এতোক্ষণে
কাল ঘাম ছুটে যেত।

রুহির আম্মুঃহা হা হা! তোমরা মুগ্ধর কথার কাছে দুই ভাই কুপোকাত।


বড়রা আলোচনা শেষ করে যে যার বাসায় চলে যায়!ওদিকে রুহি ওর রুমে বসে পায়চারি করছে আর রাগে ফোঁস ফোঁস করছে।মুগ্ধ নিশ্চিত মনে অফিসের কাজ করছে!রুহি তো মুগ্ধর উপর রেগে বোম হয়ে আছে!আর রুহি ওর বিখ্যাত গালি গুলো দিচ্ছে!রুহি মুগ্ধকে ফোন দিলো আর বললো…


রুহিঃ ভাইয়া! কালকে আমার পরীক্ষা পর আমাকে একটু সময় দিতে পারবে??

মুগ্ধঃআগে ভাইয়া বলা বন্ধ তারপর কথা বল!আর কালকে কি সময় দিতেই হবে???

রুহিঃহুমম দিতেই হবে!আর না শব্দ টা শোনার মুডে আপাতত নাই।তাই না বলে মেজাজ গরম করে দিও না।

মুগ্ধঃবড় বড় কথা ছাড়েন আর ঘুমিয়ে পড়েন!আর .কি হয়েছে সেটা তো বলবি???

রুহিঃকিছু হয়নি তুমি আসবে ব্যস্!আমি কিছু জানিও না কিছু বুঝিও না।

মুগ্ধঃ কালকে আমার অনেক কাজ আছে! আমি যেতে পারবো না।

রুহিঃতোমাকে আসতে হবে!আচ্ছা বাপিরা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলছে???

মুগ্ধঃ মনে হয়!কারন আমি তুই যাওয়ার পর উপরে চলে এসেছি তাই নিচে মেজবাবারা কি করছে জানিনা???

রুহিঃতুমি কিছু বলো নি???

মুগ্ধঃকি বলবো??আর যেখানে বড়রা কথা বলছে তাহলে আমি আর কি বলবো?

রুহিঃহুমম তাই তো তুমি আর কি বলবো??তোমার তো কিছু বলার থাকতেই পারে না।

মুগ্ধঃআর কিছু বলবি???

রুহিঃহুমমমম!তাহলে কালকে আসবে তো??

মুগ্ধঃহুমম।


পরেরদিন সকালে রুহি রীতিমত পরীক্ষা দিয়ে মুগ্ধ কে নিয়ে একটা নদীর পাড়ে চলে গেল।নদীর পাড়টা মনোরম আর মন ভাল করার মত জায়গা! অনেক বড় কৃষ্ণচুড়া গাছের ডালপালা ছড়িয়েছে আছে! মাটিতে অনেক কৃষ্ণচুড়া ফুল পড়ে আছে!কৃষ্ণচুড়া ফুলের গাছে গোড়াতে সুন্দর করে বসার জায়গা করা!মুগ্ধ আর রুহি সেই বসার জায়গাতে বললো!ওরা বসতেই!হুট করে কয়েকজন এসে মুগ্ধর মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দিলো! আর হাতও বেঁধে দিলো।মুগ্ধ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কারন যারা মুখটা বাধছে তারা হলো সুমি,ইরা,রাহাত আর আরিয়ান….ওরা ওদের কাজ শেষ করে চলে গেল।


রুহি শান্ত দৃষ্টিতে নদী দেখছে!রুহি মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে এমন ভাবে একটা হাসি দিলো যেন এটা হওয়ারই ছিলো!মুগ্ধ চোখ বড় বড় করে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।রুহি মুচকি হেসে ওর ব্যাগ থেকে সিগারেট বের করলো!এগুলো সেই সিগারেট যে সিগারেট দিয়ে রাহাতকে শায়েস্তা করতে চেয়েছিলো!রুহি সিগারেট দুইটাতে আগুন জালিয়ে মুগ্ধর দিকে তাকায়! মুগ্ধ চোখে হাজারো প্রশ্ন দেখতে পাচ্ছে রুহি!


রুহি আবারো মুগ্ধর দিকে মুচকি হেসে ওর বাম হাতে সিগারেট টা চেপে ধরে!আর চোখ মুখ -কুচকে নেয়!আর সাথে সাথে রুহির চোখে জল দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে থাকে!সিগারেটের ছ্যাকা লাগাতে রুহির হাতে প্রচন্ড জ্বলতে শুরু করছে!আর মুগ্ধ মাথা নাড়িয়ে বার বার রুহিকে এসব করতে না করে!রুহি মুগ্ধর দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলতে থাকে…


রুহিঃ এই সামান্য ব্যাথা সহ্য করে নিতে পারবো!বাট তোমাকে হারানোর ব্যাথা আমার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নই মুগ্ধ!!!!!!!

মুগ্ধঃ…….

রুহিঃ আমি এত কিছু জানিও না বুঝিও না!আমাকে আজকে এখন এই মুহূর্তে যদি বিয়ে না করো তো! এর থেকে খারাপ কিছু দেখার জন্য নিজেকে প্রস্তুুত করো (আবার সিগারেট চেপে ধরে)

To be continue……

(বিজি ছিলাম তাই দেরি হয়েছে বকবে না প্লিজ….)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here