প্যারাময়_লাভ❤❤ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_23

0
366

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_23

পরেরদিন সকালে মুগ্ধ আর রুহিকে পাঠানো হয় ওদের বিয়ে শপিং করতে!আর ওখানে গিয়ে রুহি আরেক কান্ড বাধিয়ে বসে থাকে!মুগ্ধ শুধু পারছে রুহিকে তুলে আছাড় দিতে!রুহি ওর কাজ করে যাচ্ছে আর মুগ্ধ দাঁতে দাঁত চেপে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে….


মুগ্ধ আর রুহি শপিংমলে এসে হেটে হেটে ভেতরে যাচ্ছে! আর রুহি মুগ্ধর হাত ধরে তিরিং বিরিং করে লাফাতে লাফাতে যাচ্ছে কারন রুহির বিয়ে বলে কথা এজন্য রুহির খুশির অন্ত নেই!রুহি গল্প করতে করতে পাশে তাকিয়ে দেখে অনেক গুলো পুতুলকে জামা পড়িয়ে রাখা আছে!হাস্যকর কথা হলো রুহি ছোট বেলা থেকেই এই পুতুল গুলোকে কেন জানি খুব ভয় পায়!রুহি হুট করে পুতুল গুলোর দিকে চোখ পড়তেই গগন ফাটানো একটা চিৎকুর দিয়ে এক লাফে মুগ্ধর কোলে উঠে পড়ে।হুট করে এমন করাতে মুগ্ধও আবুল সেজে হা করে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।


মুগ্ধও তখন রুহির চিৎকুরে ভয় পেয়ে যায়!আশে পাশে লোক দাড়িয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ রুহির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়!মুগ্ধ যদি পারতো তাহলে এখনি রুহি গিলে খেয়ে ফেলতো।রুহি মুগ্ধর তাকানো দেখে সুড়সুড় করে কোল থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করে আর এমন ভাব করে যেন কিছুই হয় নি!তারপর ওরা একটা শাড়ির দোকানে যায়।মুগ্ধ পাশে বসে আছে আর রুহি শাড়ি দেখছে! এই পযন্ত রুহি ২২ টা শাড়ি দেখছে বাট একটাও চুজ করে পারে নি।মুগ্ধ বুঝে গেছে যা করার ওর নিজেরই করতে হবে তা না হলে ৬ মাসেও রুহির শপিং শেষ হবে কি না সন্দেহ!দোকানদার বেচারা রুহির দিকে তাকিয়ে বলছে…


দোকানদারঃম্যম আপনি তো দেখেই যাচ্ছেন এবার একটা তো চয়েজ করুন!আমার দোকানের এগুলো বেস্ট শাড়ি…

রুহিঃ পছন্দ না হলে কি করবো?? বকবক কম হবে! আর বিশ টা শাড়ি দেখান।আর বিশটা দেখলে একটা পছন্দ হবে সিওর..

দোকানদারঃআপনি কি কালারের মধ্যে নিতে চাচ্ছেন বলুন তো…আমি ওই কালারের শাড়ি দেখায় আপনাকে।

রুহিঃ পান্তা ভাতের মধ্যে গরুর মাংস ঢেলে দিয়ে! তার মধ্যে শসার পেষ্ট দিতে হবে।তারপর হলুদ ছাড়া পাস্তা মিশাতে হবে! তারপর হালকা পিংক কালার মেশাতে হবে!এবার একটু বাঙ্গি কালার একটু লাল আর একটু হালকা নীল কালার মেশাতে হবে।তারপর আমার রুমে যে বেডশীট আছে ওমন কালার টা মেশানো পর যে কালার আসে আমি ওই কালারের শাড়ি চাচ্ছি…. (অনেক খুশি হয়ে)


মুগ্ধ, সহ দোকানের উপস্থিত সবাই রুহির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে!আর দোকানদার হয়তো ভাবছে এই পাগলিটা কোন পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে ভুল করে মনে হয় এখানে ঢুকে পড়ছে!মুগ্ধ রুহি দিকে না তাকিয়ে রুহির বাপি_আম্মু, মুগ্ধর বাবা-আম্মু, ইভার জন্য ড্রেস পছন্দ করে প্যাক করতে বললো!তারপর রুহির জন্য চারটা শাড়ি কিনলো একটা কালো,একটা ব্লু,একটা মেরুন আর একটা গোলাপি….মুগ্ধ নিজের পছন্দ মত রুহির শাড়ি চয়েজ করছে!মুগ্ধ রুহির দিকে না তাকিয়ে দোকানদার বলছে ওর আর যা লাগবে! মুগ্ধর কথা অনুযায়ী তেমন ড্রেস বের করে দিচ্ছে! আর মুগ্ধ পছন্দ করে বলছে আর দোকানদার মুগ্ধর কথা অনুয়ায়ী সেগুলো প্যাক করছে!


মুগ্ধ ওই দোকানের বিল পেমেন্ট করে শপিং ব্যাগগুলো গাড়িতে রেখে গাড়ি লকটা করে আসলো।তারপর রুহিকে নিয়ে মুগ্ধর কিছু ড্রেস,কিনে নিলো।গয়না কেনার দায়িত্ব মুগ্ধর আম্মুর তাই গয়না বাদে যতকিছু লাগে রুহি মুগ্ধকে দিয়ে সব কিনে নিয়েছে।মুগ্ধ আর রুহির বিয়ের আর রিসিপশনের ড্রেস মুগ্ধ আগের অর্ডার করে রাখছে…


মুগ্ধর জানা ছিলো না মেয়েদের এত কিছু লাগে। রুহির আজকে মুগ্ধ নাকানিচুবানি খাইয়েছে ছেড়েছে!সাজগোজ এর জিনিস থেকে শুরু করে পায়ের জুতা পযন্ত রুহি মুগ্ধর পছন্দ মত কিনেছে!মুগ্ধর জানা মতে রুহি সাজগোজ খুব একটা করে না!তারপরেও এত কিছু কেনার কি দরকার মুগ্ধর জানা নেই।রুহি তো বেশ খুশি কারন যা যা বলছে সব মুগ্ধ ওকে কিনে দিয়েছে!মুগ্ধ বেচারা রুহির দিকে তাকিয়ে বলছে…

মুগ্ধঃ রুহি আমার মাথা ঘুরছে!চল বাকিটা শপিং পরে এসে করবো।এখন চল বাসায় যায়!

রুহিঃ আর কিছু কেনার বাকি নেয় তো!ফুলের অর্ডার দিবো আর ব্লাউজের মাপ দিয়ে বাসায় যাবো।

মুগ্ধঃ আজকে না দিলে কি হবে??

রুহিঃ না না আজকেই দিতে হবে।

মুগ্ধঃ উফফ! তোকে নিয়ে আর পারি না।সব কাজ একসাথে করতে হবে।

রুহিঃ যেহেতু এই কাজটা আমাকে করতেই হবে তাহলে ফেলে রেখে কি হবে শুনি..??

মুগ্ধঃচল! চল…


মুগ্ধ আরো এক গাদা শপিং ব্যাগ এনে গাড়ির পেছনের সিটের উপর পালা দেয়!তারপর গাড়ি স্টাট করে!একটা টেইলার্সে এসে রুহি ওর কাপড় গুলো দেয় আর তারাতারি বানাতে বলে।দোকানদার রুহিকে মাপ দিতে বললে রুহি বলে কোন জামার মাপ তো আনেনি !এখন যেন নতুন করে মাপ টা নিয়ে নেয়।একটা ছেলে এসে যখনি রুহি শরীরে ফিতা ধরতে যাবে মুগ্ধ সাথে সাথে ছেলেটির হাত ধরে ফেলে!তারপর মুগ্ধ ওই ছেলেটিকে ডেকে বলে…


মুগ্ধঃএখানে কোন মেয়ে নেই??তুমি কেন ওর মাপ নিতে আসলে…

দোকানদারঃ মেয়ে আছে বাট এখন নেই ??আমি তো সবার মাপ নেই আর আমি তো আছি সমস্যা নেই ??

মুগ্ধঃ আপনার সমস্যা না থাকলেও আমার আছে..??

দোকানদারঃ….

মুগ্ধঃআপনি ওই পর্দার আড়ালে গিয়ে দাড়ান আমি আপনাকে মাপ লিখে দিচ্ছি।

রুহিঃ এসবের মানে কি.???

মুগ্ধঃসব মানে তোকে বোঝাতে পারবো না।চুপ থাক.


তারপর মুগ্ধ নিজে পর্দা টেনে দেয়!তারপর ফিতা দিয়ে রুহির মাপ নিচেছ আর সেটা লিখছে।রুহি অবাক হয়ে মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে!মুগ্ধ রুহিকে কিছু জিজ্ঞাসা করছে না বরং নিজের মনমত করে মাপ নিয়ে সেই মাপটা দোকানদারের হাত ধরিয়ে দেয়।আর কালকেই লাগবে বলে মুগ্ধ তারাতারি ওগুলো দিতে বলে।মুগ্ধ রুহির হাত ধরে নিয়ে ওরা ওখান থেকে বেরিয়ে যায়…মুগ্ধ গাড়ি ড্রাইভ করছে আর বলছে।


মুগ্ধঃ এবার থেকে মেয়ে টেইলার্সে গিয়ে ড্রেস বানাতে দিবি!এমন ভুল যেন না হয়…

রুহিঃআমি তো জামার মাপ দিয়ে দেয় বাট আজকে তো কোন মাপ অনুযায়ী ড্রেস আনতে ভুলো গেছি।তাই আমার থেকে মাপ নিতে বলছি..

মুগ্ধঃএর আগে এটা হয়তো খেয়াল করি নি বাট এবার থেকে খুব এই ভুল যেন না হয়!

রুহিঃ কেন কি এমন হবে ন করে মাপ নিলে শুনি??একটু বেশি বুঝো কেন তুমি??সবাই তো এভাবে মাপ দেয়।


মুগ্ধ রুহির কথা শুনে সাথে সাথে গাড়ি ব্রেক করে। আর রাগী চোখে রুহির দিকে তাকায়।মুগ্ধ রুহি গাল চেপে ধরে বলে…

মুগ্ধঃ আমার বউকে আমি কাউকে টার্চ করতে দিবো না।আর আমি তো নিজেই তোকে এমন ভাবে টার্চ করিনি আর ওই ছেলেটাকে টার্চ করতে দিবো ভাবলি কি করে???

রুহিঃ….

মুগ্ধঃ তোকে জড়িয়ে ধরছি! বাট এমন ভাবে তোকে টার্চ করিনি যে তোর বুকের আর কোমরের মাপ আমি জানতে পারবো।আমি তো তোকে কোনদিন খারাপ ভাবেও তোকে টার্চ কথা চিন্তাও করিনি! তাহলে অন্য কাউকে তোর শরীরে মাপ নিতে দিবো ভাবলি কি করে???

রুহিঃ সবাই তো এই ভাবেই মাপ দেয়!

মুগ্ধঃকে কি করে আমি জানিও না আর বুঝিও না!মুগ্ধ মুগ্ধর মত চলতে পছন্দ করে।আমি এসব পছন্দ করি না…মাইন্ড ইট

রুহিঃহুমমম

মুগ্ধঃ আসলে তোরা মেয়েরা বড্ড বোকা জানিস তো!

রুহিঃ মানে??

মুগ্ধঃ কিছু না!


তারপর দুই রেস্টুরেন্ট খেয়ে একেবারে বাসায় ফেরে!রুহি ওর বাসায় চলে যায় আর মুগ্ধ দারোয়ানকে গাড়ির চাবি দিয়ে শপিং ব্যাগ গুলো ড্রয়িং রুমে রাখতে বলে আর নিজের রুমে চলে যায়।মুগ্ধ ওর রুমে গিয়ে ধপাস করে বেড়ে শুয়ে পড়ে ঠিক তখনই ওর ফোনের রিংটোন বেজে ওঠে!মুগ্ধ ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে অফিসের স্যার ওকে ফোন দিয়েছে…


মুগ্ধঃআসসালামু আলাইকুম স্যার!কেমন আছেন??

স্যারঃওয়ালাইকুম সালাম!আমি ভালো আছি তা তুমি কেমন আছো??

মুগ্ধঃ আলহামদুলিল্লাহ স্যার আমিও ভালো আছি।

স্যারঃ তোমার তো কালকে গায়ে হলুদ আর পরশু বিয়ে তাই না

মুগ্ধঃ জি স্যার!

স্যারঃহা হা হা! বিয়ের আগে অসুস্থ হয়ে পড়লে চলবে!আজকে রফিক আমাকে জানালো তুমি নাকি দুই দিনের ছুটি নিয়েছো অসুস্থ তাই…

মুগ্ধঃ জি স্যার..

স্যারঃএখন তুমি অসুস্থ তার উপরে আবার তোমার বিয়ে! তুমি কালকে অফিসে এসে আমার সাথে দেখা করো কেমন!কারন কয়েকদিন রেস্ট দরকার তোমার!

মুগ্ধঃ ধন্যবাদ স্যার!আমি কালকে আপনার সাথে দেখা করবো।

স্যারঃ ওকে!আল্লাহ হাফেজ..

মুগ্ধঃ আল্লাহ হাফেজ…


ওই স্যারের সাথে মুগ্ধ সম্পকটাও ভালো!আর মুগ্ধ খুব মিশুক তাই সবাই ওকে খুব ভালবাসে।ফোন রাখার পর মুগ্ধ হাফ ছেড়ে যেন বাঁচলো!তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পড়লো।মুগ্ধ ওর বেডে শুয়ে শুয়ে ভাবছে…

মুগ্ধঃআর মাএ একটা দিন! তাহলে আমি আমার দুষ্টু বউটাকে সারাজীবনের জন্য বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে পারবো।কেউ কিছু বলতেও পারবে না আর না থাকবে কোন ভয়।আমি তখন আমি মিষ্টি বউটাকে জড়িয়ে ধরে বুকের মধ্য লুকিয়ে রাখবো…(মুচকি হেসে)


তারপর মুগ্ধ এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।ওইদিকে রুহি ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে আকাশ-পাতাল চিন্তা করছে।রুহি কিছু সময় নিজের গাল টেনেটুনে বোঝার চেষ্টা করলো মটু হয়েছে নাকি শুকিয়ে গেছে!তারপর আয়নার দিকে তাকিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে পেটে হাত দিয়ে পরীক্ষা করলো পেটে মেদ জমছে কি না??তার হাত -পা ছড়িয়ে দিয়ে দুম করে বেডে শুয়ে পড়লো।

To be continue….
( ইয়ে মানে গল্প তোমাদের কেমন লাগছে 🙄🙄🙄….)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here