প্যারাময়_লাভ❤❤ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_24

0
308

#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_24

মুগ্ধঃআর মাএ একটা দিন! তাহলে আমি আমার দুষ্টু বউটাকে সারাজীবনের জন্য বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে পারবো।কেউ কিছু বলতেও পারবে না আর না থাকবে কোন ভয়।আমি তখন আমি মিষ্টি বউটাকে বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখবো…(মুচকি হেসে)

মুগ্ধ এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।ওইদিকে রুহি ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে আকাশ-পাতাল চিন্তা করছে।রুহি কিছু সময় নিজের গাল টেনেটুনে বোঝার চেষ্টা করলো মটু হয়েছে নাকি শুকিয়ে গেছে!তারপর আয়নার দিকে তাকিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে পেটে হাত দিয়ে পরীক্ষা করলো পেটে মেদ জমছে কি না??তার হাত -পা ছড়িয়ে দিয়ে দুম করে বেডে শুয়ে পড়লো।


রুহি বেড থেকে উঠে হাতে লিপস্টিক নিয়ে পড়া শুরু করলো!বাট লিপস্টিক দেওয়ার সময় এবরো থেবরো হয়ে যাচ্ছে। রুহি তিন বার মুছলো তারপর চার বারের বেলায় যখন একই অবস্থা তখন ওই লিপস্টিক টা হাতে নিয়ে ওর গোটা মুখে ঘষে দিলো!তারপর বিরক্তকর ভাব নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো…

রুহিঃনে নে আর দিবোই না লিপস্টিক। এবার খুশি বালের লিপস্টিকের মায়েরে বাপ… (লিপস্টিকটা ছুড়ে ফেলে)

তারপর রুহি ওয়াশরুমে গেল আর মুখটা সুন্দর করে ধুয়ে আসলো।তারপর আবারও চিন্তা করছে…


রুহিঃ কালকে বার বার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে!কালকে বাদে পরশু বিয়ে এখন নিজেকে পরিপাটি রাখতে হবে।আচ্ছা কালকে তো আমার গায়ে হলুদ বাট আমি তো শাড়ি পড়তে পারি না!আচ্ছা ওটা কোন সমস্যা না বেল্ট বুল্ট দিয়ে কোন রকম আটকে রাখলেই হলো।যাই হোক আচ্ছা কালকে তো অনেকে আমাকে হলুদ দিবে! আর মিষ্টিও খাওয়াবে! বাট আমি আগে কোন মিষ্টিটা খাবো।ধুরর তখন দেওয়া যাবে।আচ্ছা আমার তো বিয়ে হয়ে যাবে তখন তো মুগ্ধর সাথে এক রুমে থাকবো!একই বেডে তখন মুগ্ধ বুকের উপর পা তুলে দিলে কি মুগ্ধ রাগ করবে!ধুর রাগ করলে করবে তাতে আমার বাবার কি?ওহহ হো একটা কথা তো ভাবতে ভুলে গেছি!যাক বাবা মনে পড়লো তাহলে এখন আসল কথাটা ভাবি….
আচ্ছা তুমুল যেমন কুট্টুশকে পেগনেন্ট করে দিসে মুগ্ধও কি আমাকে পেগনেন্ট করে দিবে নাকি।না না এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না।বাট ওই ষাড় টাকে আটকাবো কি করে?? দিস ইজ অনেক বিগ চিন্তার বিষয়। আচ্ছা এসব এখন আইডিয়া গুলো বাসি করা যাবে না।যা করবো সব টাটকা আইডিয়া দিয়ে কাজ চালাবো।এখন ঘুমায়…

তারপর রুহি ওর আনকমন ইচ্ছে গুলো র কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লো।


পরেরদিন সকালে…

আজকে রুহি আর মুগ্ধ গায়ে হলুদ!মুগ্ধ খুব সকালে উঠে নামাজ পড়ে তারপর ব্রেক ফাস্ট করে কিছু কাজ সেরে নেয়!১০ দিকে মুগ্ধ অফিসে গিয়ে ওর স্যারের সাথে দেখা করে!মুগ্ধ যদিও স্যার সহ অফিসে ওর কলিগদের বিয়ের কার্ড দেয় তারপরে সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলে।তারপর হাসি মুখে বের হয়ে যায় অফিস থেকে…


দুই বাড়িতেই লোকজনের গমগম করছে!আর রুহি আরামশে ঘুমাচ্ছে। রুহির আম্মু চারবার ডেকেও রুহিকে উঠাতে পারে নি!রুহির বিয়ে বলে কথা এজন্য রুহি জান প্রান দিয়ে মনের সুখে ঘুমাচ্ছে। মুগ্ধর বড় মৌমি আর ওর হাজবেন্ডও চলে এসেছে!দুই বাড়িতে এখন মানুষে গিজগিজ করছে।মুগ্ধ ওর বাকি কাজ গুলো নিয়ে কেবল বাসায় ফিরলো!তারপর মৌমির সাথে কথা বলে ওর রুমে চলে গেল।মুগ্ধ ওর বারান্দায় গিয়ে রুহিকে দেখার চেষ্টা করলো বাট মহারানী যে কোন রাজকায্য তে বিজি আছে কে জানে?মুগ্ধ একেবারে সাওয়ার নিলো তারপর হালকা কিছু খেয়ে বেরিয়ে গেল…


দুপুর ১২ঃ৫৬ মিঃ রুহির ঘুম ভাঙে!রুহি মুগ্ধকে ফোন দেয়!মুগ্ধ তখন ড্রাইভ করছিলো এজন্য গাড়িটা সাইডে রেখে মুগ্ধ রুহির ফোন ধরে।মুগ্ধ কিছু বলার আগেই রুহি বলে উঠে…

রুহিঃ আমার কিউট হাবি টা কি করে??
মুগ্ধঃ আপনি কেবল ঘুম থেকে উঠলেন?? তা রাতে কি এমন কাজে করছিলেন যে লেট করে ঘুমিয়েছিলেন…
রুহিঃ ধুররর এসব বাদ দাও তো!আমার রুমে এসো তো..
মুগ্ধঃকেন??
রুহিঃ ঠোঁট খাবো!!!
মুগ্ধঃ…..
রুহিঃ এসো না একটু আদর দিয়ে যাও
মুগ্ধঃআমি এখন বাইরে বিজি আছি!বাই
রুহিঃতোমার বিজির মায়েরে বাপ! শালা আধকানা…


রুহি মুগ্ধকে কয়েক দফা গালি দিয়ে সাওয়ার নিতে গেল!মুগ্ধ ফোন কেটে দেয় তারপর মুচকি হাসে!মুগ্ধ মনে মনে ভাবছে…

মুগ্ধঃএভাবে নেশা ধরা কন্ঠে আদর চাই রে গাধী!ইসস মন চাচ্ছে এক দৌড় গিয়ে আমার বউটাকে এত এত আদর দিয়ে আসি।এই পাগলিটা বোঝে না কেন এমন ভাবে আদর চাইলে আমার বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। পাগলি একটা….


রুহি সাওয়ার নিয়ে মাথায় টাওয়াল পেচিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছে আর চিৎকার করে ওর আম্মুকে ডাকছে।রুহি ওর আম্মুকে তারাতারি খেতে দিতে বলে। রুহি খাচ্ছে আর ওর আম্মু ওর চুল মুছে দিচ্ছে। রুহির নানুর বাসায় সবাই চলে এসেছে! বাচ্চারা হাউকাও করে চেচাঁমেচি করছে! আর এক জায়গায় কয়েকজন মহিলা বসে বসে ৩২ পাটি দাঁত বের হাসছে, পুরো বাড়িটা সাজানোর জন্য লোকজন খুব বিজি,রুহি খাচ্ছিলো আর এসব দেখছিলো।তারপর খেয়ে রুহি ওর বাপির রুমে গেল!ওর বাপি তখন কিছু একটা হিসাব করছিলো।


রুহি কিছু না বলে কাগজ পএ হাজিবাজি সরিয়ে রেখে ওর বাপির কোলে শুয়ে পড়লো।রুহির বাপি মুচকি হেসে রুহি চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। রুহি কেন জানি খুব কান্না পাচ্ছে!রুহি ওর বাপিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো।রুহির বাপি মুচকি হেসে বললো…

বাপিঃপাগলি মেয়ে কাঁদছিস কেন??আমি তো খুব খুশি কারন আমি আমার কলিজার টুকরোকে যোগ্য পাএের হাতে তুলে দিতে পারছি!আমি জানি মুগ্ধ তোকে খুব ভাল রাখবে।আমার জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই মা…

রুহিঃ……

বাপিঃ আম্মু কাঁদে না!এই বাসা আর ওই বাসা দুরে তো যাচ্ছো না তাই না।


বাবা মেয়ের অনেক কথা বললো তারপর রুহি ওর রুমে চলে গেল!রুহি ওর বারান্দায় গিয়ে দেখছে মুগ্ধদের আর রুহিরদের পুরো বাড়িই খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে!মুগ্ধ আর রুহির গায়ে হলুদ হবে একসাথে! রুহি বারান্দায় দাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে কিছু একটা ভাবে!ঠিক তখনই হঠাৎ পেছন থেকে সুমি আর ইরা এসে রুহিকে জাপটে ধরে।তারপর তিন আড্ডা দিতে শুরু করে!


বিকাল ৩ঃ৫৯ টার দিকে…

রুহির মনে হলো বিয়ের বাড়ি গান ছাড়া জমছে না!এজন্য উরাধুরা গান বাজিয়ে নিজেই নাচ শুরু করলো।রুহিদের বাগানে সুমি,ইরা,রুহি,বাচ্চারা সাথে বড়রাও নাচতে শুরু করছে।বিয়ে মানেই তো খুশির দিন আনন্দ না করলে হয়।এত জোরে গান বাজছে যে কেউ কারো কথা শুনতে পারছে না!মুগ্ধর আম্মু, মৌমি আর ওর হাজবেন্ড দেখার জন্য বাসায় থেকে বের হয়েছে!যে কে এত জোরে গান বাজাচ্ছে। যখন দেখলো এটা মিসেস মুগ্ধর কাজ! তখন সবাই কয়েক দফা হাসতে শুরু করলো।


রুহি, মুগ্ধর আম্মু আর মৌমি কে দেখে ওদের হাত ধরে নাচতে শুরু করলো।ওদের নাচ দেখে রুহির বাবা মা থেকে শুরু করে মুগ্ধর বাবাও আরো যারা সবাই নাচতে শুরু করছে।মুগ্ধ গাড়ি নিয়ে বাসার আসছিলো তখন দেখে রুহিদের বাসায় ফুল ভলিউমে গান বাজছে!মুগ্ধ ওর বাসার গিয়ে গাড়িটা পার্ক করে ওর রুমে চলে গেল।মুগ্ধ ওর রুমে গিয়ে শার্টের দুইটা বোতাম খুলতে রুহির বাগানের দিকে চোখ পড়তেই মুগ্ধ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে….


মুগ্ধ রুম থেকে ওর বারান্দায় এসে তাকিয়ে বলছে…
মুগ্ধঃ আমার জীবনে এরকম একটা দৃশ্য দেখারও বাকি ছিলো?কোন মেয়ে যে তার বিয়ে এভাবে ইনজয় করতে পারে সেটা রুহিকে না দেখলে জানতাম না।রুহির কথা না হয় বাদ দিলাম!আমার বাবা-মা সাথে মেজ বাবা মেজ আম্মুকে দেখছি। আচ্ছা রুহির সাথে থেকে কি সবার মাথার তার ছিঁড়ে গেল নাকি???


রুহি মুগ্ধকে বারান্দায় দেখে একটু সাইডে এসে হাত নাড়িয়ে মুগ্ধর দৃষ্টি আকর্ষণ করলো।মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসলো।রুহি মুগ্ধকে একটা ফ্রাইং কিস ছুড়ে দিলো!মুগ্ধ কিছু বলতে যাবে তার আগে হঠাৎ পেছনে কেউ এসে এক বালতি রং মুগ্ধ মাথায় ঢেলে দিলো।মুগ্ধর সাদা শার্ট লাল রংয়ের লাল হয়ে গেল।মুগ্ধ পেছনে তাকিয়ে দেখে সুমি ইরা রাহাত,আবির,আর আরিয়ান দাঁত কেলিয়ে হাসছে।


মুগ্ধকে রংয়ে ডুবানোর বুদ্ধিটা রুহির!রুহিই এদের পাঠিয়েছে কারন রুহির ভাষ্যমতে নিজের বিয়েতে নিজেই যদি ইনজয় না করি অযথা অনুষ্ঠান করে বিয়ের করার কোন মানেই হয় না।মুগ্ধ কিছু বলার আগেই সবাই মুগ্ধকে টানতে টানতে রুহির বাগানে নিয়ে গেল….

To be continue….
(তোমাদের সবার দাওয়াত রইলো ওদের বিয়েতে……)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here