#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_25
মুগ্ধকে রংয়ে ডুবানোর বুদ্ধি রুহির!রুহিই এদের পাঠিয়েছে কারন রুহির ভাষ্যমতে নিজের বিয়েতে নিজেই ইনজয় যদি না করি অযথা অনুষ্ঠান করে বিয়ের করার কোন মানেই হয় না।মুগ্ধ কিছু বলার আগেই সবাই মুগ্ধকে টানতে টানতে রুহির বাগানে নিয়ে গেল….
–
মুগ্ধকে দেখে সবাই আরো চেচাঁমেচি শুরু
করলো!মুগ্ধ চুল বেয়ে বেয়ে রংয়ের পানি পড়ছে বুকের দুইটা বোতাম খোলা।ভেজা শার্ট আর ভেজা চুলে মুগ্ধকে দারুন লাগছে দেখতে।রুহি মুগ্ধকে দেখে চোখ টিপ দিলো!আর ইশারায় শার্টের বোতাম লাগাতে বললো।কারন রুহি ছাড়া অনেক মেয়ে মুগ্ধর বুকের দিকে তাকাবে যেটা রুহি মোটেও সহ্য করবে না।
–
তারপর সবাই শুরু করলো রং মাখামাখি তবে পানি রং শুধু মুগ্ধকে দেওয়ার হয়েছে আর তাছাড়া সবাই আবির(গুড়ো রং) মাখামাখিতে বিজি।মুগ্ধ কে কেউ ছাড়ছে না ওকে নিয়ে টানাটানি।মুগ্ধ দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করছে শুধু।সবাইকে মিলে মুগ্ধ আর রুহিকে ইচ্ছেমত রং মাখিয়ে ভূত বানিয়ে দিলো….
–
তারপর মুগ্ধ বাসায় যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই সবাই মুগ্ধকে ঘিরে ধরলো।মুগ্ধ আর রুহির কাজিন সবাই ঠিক করলো বাগানেই ওদের গোসল টা করানো হবে!কারন রাত আটটার দিকে ওদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হবে। মুগ্ধ আড়চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে দেখলো রুহি চুপ করে মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে!রুহির আর মুগ্ধর বাবা মায়েরা এই ফাকে এখান থেকে কেটে পড়ছে!এখন যারা আছে তারা মুগ্ধ আর রুহির বন্ধু আর কাজিন আর কাজিনদের বউ।মুগ্ধ আবার উঠতে গেলে সবাই ওকে জোর করে আবার বসিয়ে দেয়।
–
বাগানের মাঝখানে মুগ্ধ আর রুহিকে পাশাপাশি বসতে বলে!মুগ্ধ যেহেতু জিন্স পড়ে আছে তাই বসতে একটু কষ্ট হচ্ছে তাই মুগ্ধর জন্য চেয়ার আনা হয়!ওদেরই একটা কাজিন ফট করে বলে…
মুনাঃ বর চেয়ারে বসবে আর বউ ঘাসের উপর এটা কেমন হয়ে গেলো না।
রাহাতঃ রুহি তুমি মুগ্ধর কোলে বসে পড়ো।এটাই বেটার হবে। (রুহির দিকে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃ রাহাত আশে পাশে বড়রা আছে! প্লিজ এসব করিস না।
সুমিঃবড়রা কেউ এখানে নেই আমরা আমরাই আছি সো কোন অজুহাত শুনবো না।
ভাবিঃ কি রে রুহি তুই না বলতি তোর লজ্জার ল ও নেই!তাহলে এখন লজ্জা পাচ্ছিস কেন???কালকে রাতে তাহলে কি করবি শুনি…??কালকে রাতে তো মুগ্ধ তোকে ছাড় দিবে না তখন …. (বএিশ পাটি দাঁত বের করে)
মুগ্ধঃ কেন সাজিদ ভাইয়া আপনাকে ছাড় দেয় নি বুঝি।এজন্য… (ভাবির দিকে তাকিয়ে)
ভাবিঃ সাজিদ না এখন তুমিও তোমার বউকে ছাড় দিবে না দেবর জি…হা হা হা
মুগ্ধঃসে তখন দেখা যাবে…
(তিনবার বিয়ে করা বউ ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।তাই না রে রুহি।মুগ্ধ রুহিকে বিরবির করে কথা বললো।)
–
তারপর ভাবি আর সুমি রুহি টেনে মুগ্ধর কোলে বসিয়ে দিলো!তারপর বাগানের পানির দেওয়ার জন্য যে ট্যাপটা ছিলো যেখান থেকে এক কলস পানি আনলো।তারপর ভাবি এসে ওদের দুজনের মাথা পানি ঢাললো!রুহির শরীর বেয়ে পানি মুগ্ধ শরীরে এসে পড়ছে।ট্যাপের পানি ঠান্ডা এজন্য রুহি কেঁপে উঠছে যেটা মুগ্ধ খুব ভালো করে বুঝতে পারছে।
এক কলস পানি ঢালতেই মুগ্ধ ওদের আর পানি দিতে না করলো!মুগ্ধ রুহিকে ওর কোল থেকে উঠে ভেতর চলে যেতে বললো।তখন সবাই মিলে ওদের ঘিরে ধরলো…
–
মুগ্ধঃ প্লিজ ভাবি এখন এসব আর না কারন অলরেডি ৫ঃ৩০ টা বাজে।একটু পর আজান দিবে আর এখানে খোলা জায়গা এভাবে গোসল করাটা ঠিক না তাই না।আপনারা মজা করতে চেয়েছেন আমিও তো এতসময় কোন বাঁধা দেয় নি! বাট এখন আর জোর করবেন না। আর রুহির অল্পতে ঠান্ডা লাগে সো….
ভাবিঃ বাহ্ বউয়ের প্রতি কি ভালবাসা!এখন না হয় ছেড়ে দিলাম পরশুদিন সকালে থেকে তখন কি করবে শুনি…হা হা হা
মুগ্ধঃ সে তখন দেখা যাবে। (দুষ্টু হেসে)
–
তারপর সবাই মুগ্ধর কথা মেনে নিলো! আর যে যার বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিলে।মুগ্ধ সাথে রাহাত, আবির আর আরিয়ানও গেল! রুহি ওর ওয়াশরুমে গিয়ে বাথটাবের মধ্যে বসে ভাবছে…
রুহিঃভাবি কি যেন বললো?কালকে মুগ্ধ আমাকে ছাড় দিবে না তাই তো ।ইসসস এসব কথা কেউ বলে নাকি?আমিই তো মুগ্ধ কে ছাড়বো না! তাহলে ও কি ছাড় দিবে শুনি???এরা না পারেও বটে…বাসর ঘরে ছাড়াছড়ি কথা আসছে কোথা থেকে!আর আমরা বাসর ঘরে কামড়াকামড়ি করবো নাকি জড়াংজড়িং করবো সেটা আমরা বুঝবো! আর আমরা যাই করি তাতে কার বাপের কি শুনি???
–
ওইদিকে মুগ্ধ ভেজা শার্ট নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকতে যাবে তখন আবির,রাহাত আর আরিয়ান ওয়াশরুমে হুড়মুড় করে ঢুকে গেল।মুগ্ধ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।বাট ওরা তিনজন মুগ্ধকে চেনে না ভাব করে যে যার মত গোসলের কাজে লেগে পড়ে!আবির মুগ্ধর বাথরুমে শুয়ে পড়ে তারপর বলে…
আবিরঃভাই এভাবে না তাকিয়ে এইদিকে আয় সুখ দুঃখের গল্প করি।
মুগ্ধঃ বাসায় তো আরো ওয়াশরুম আছে তাই না! তাহলে আমার ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লি কেন তোরা???(ভ্রু কুচকে)
রাহাতঃএক সাথে গোসল করাই মজাই আলাদা।একদিকে আয় ভাই…
আবিরঃ হ্যালো ফেন্ডস্! আমি কি শুধু শটস্ পড়ে গোসল করতে পারি!কারন…
মুগ্ধঃ আবির আর কয়েকদিন পর তুই বাবা হবি এবার তো মুখে লাগাম দে!এবার একটু লজ্জা তো কর…
রাহাতঃএই জন্মে ওর লজ্জা হবে কি না এটা নিয়ে সবার ডাউট আছে।
–
মুগ্ধ ওর শার্ট খুলে ফেলে আর চুলে শ্যাম্পু করছে!আর চুল দিয়ে লাল রং বের হচ্ছে!আবির মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে বলছে…
আবিরঃ মুগ্ধ বেবি তোমার বডি ফিগার দেখে আমি ক্রাস খেয়েছি! প্লিজ রুহিকে বিয়ে করো না আমাকে বিয়ে করো প্লিজ…
মুগ্ধঃকেন নই বেবি চলো এখুনি আমরা বিয়ের করে ফেলি..
.
আরিয়ানঃ এটাও দেখার বাকি ছিলো ভাই।
আবিরঃ মুগ্ধ বেবি এমন করে বলো না সোনা! আমি লজ্জা পাচ্ছি…
রাহাতঃ ওই শালা চুপ থাক!তোকে বিয়ে করলে মুগ্ধর বাবা ডাক আর শুনতে হবে না।
মুগ্ধঃ এই তোরা তারাতারি কর নইতো ঠান্ডা লেগে যাবে!
আবিরঃ মুগ্ধ একটা কথা বলবো ভাই…
মুগ্ধঃ হুমমমম!আমি বলতে না করলেও তুই কথাটা বলবি আমি জানি।তাই বণিতা না করে বলে ফেল…
আবিরঃ তুই আসলেই কি এখনো ভার্জিন আছিস তো ভাই!সত্যি কথা বলতো…
মুগ্ধঃ এসব কেমন কথা! এবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে আবির।
রাহাতঃ মার শালাকে!
আবিরঃ আমি আবার কি ভুল বলছি??মুগ্ধর গলায় বুকে, পেটে দেখ কেমন কামড়ের দাগে লাল হয়ে আছে!এজন্য তো জানতে চাইলাম…
আরিয়ানঃ হা হা হা!ওহহ হো তাই তো!ভাই তুমি কি বিয়ের আগেই বাসর সেরে ফেললে।
মুগ্ধঃ রুহি এভাবে কামড় দিয়ে ওর রাগ কমিয়েছে!আর তোরা ভুল ভাল ভাবা বন্ধ কর।
–
তারপর মুগ্ধ শ্যাম্পু করে রং তুলে ফেললো!আর রাহাত ওর মুখে ফেসওয়াশ দিচ্ছে আর আবির পুরো শরীর সাবান আর মাথা শ্যাম্পু করে ফেনা লাগিয়ে বসে আছে।মুগ্ধ তারাতারি সাওয়ার নিয়ে টাওয়াল পড়ে বের হয়ে যায়।আর বাকি তিন ওরা সাবান মাখামাখিকে বিজি….
–
মুগ্ধ রুমে এসে ড্রেস পড়ে নিলো!ভাল করে চুল মুছে নিলো!শার্ট আর প্যান্ট পড়ে পেছনে ঘুরতেই দেখলো রুহি ব্লাউজগুলো বেডে এখনো পড়ে আছে!মুগ্ধ সকালে এগুলো আনতেই বাইরে গিয়েছিলো।মুগ্ধ ব্যাগ হাতে নিয়ে নিচে নেমে মৌমি আর ওর আম্মুকে খুজলো বাট কাউকে না পেয়ে রুহির বাসায় দিকে হাটা ধরলো!মুগ্ধ রুহি বাসায় ডুকে আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো রুহির আম্মু! মুগ্ধ রুহির আম্মুর সামনে গিয়ে বললো…
–
মুগ্ধঃ মেজ আম্মু এইগুলো রুহির! আমি সকালে টেইলার্স থেকে এনেছিলাম বাট দিতে ভুলে গেছি…
রুহির আম্মুঃ আব্বু তুই আর একটু কষ্ট করে রুহির রুমে দিয়ে আয়! আমি রান্না ঘরে যাচ্ছি সেই কখন পায়েসের জন্য কিসমিস দিতে বলছে আমি ভুলেই গেছি…
–
রুহির আম্মু বাটিতে কিসমিস নিয়ে রান্না ঘরে চলে গেল!আর মুগ্ধ রুহির রুমের দিকে হাটা ধরলো!মুগ্ধ রুহির রুমে গিয়ে দেখলো রুহি রুমে নাই ওয়াশরুম থেকে পানির পরার শব্দ আসছে।মুগ্ধ ওয়াশরুমের দরজাতে নক করলো ঠিক তখনই রুহি বলে উঠলো।
রুহিঃ আম্মু আমাকে ডিস্টার্ব করো না তো!আজকে না আমার গায়ে হলুদ!আমাকে ভালো করে সাবান মেখে গোসল দিতে হবে।আর এমন ভাবে গোসল দিতে হবে যে চকচক করে।আম্মু আর ৫মিঃ সময় দাও হয়ে গেছে…..
মুগ্ধ রুহির কথাটা শুনে হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে আছে..
To be continue…..