#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_7
রুহিঃ তোমাকে ষাড় বলছি বলে কি তুমি রাগ করছো? আচ্ছা আর তোমাকে ষাড় বলবো না।তোমাকে বলবো রাম-পাঠা….(বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)
মুগ্ধঃ……
–
মুগ্ধ আর কিছু বললো না!রুহি বেডে ধপাস করে বসে পড়লো!আর এত জোরে বসলো যে মুগ্ধও নড়ে উঠলো!মুগ্ধ কিছু বলছে না দাতে দাত চেপে চুপ করে আছে!আর রুহি বকবক করেই যাচ্ছে। মুগ্ধ রুহিকে বই বের করে পড়তে দিলো!রুহি না পড়ে দাঁত দিয়ে নখ কামড়াচেছ!মুগ্ধ যে রুহির কি করবো রুহি কল্পনাও করে নি!রুহি ভুলে গেছে ঝড়ের আগের আবহাওয়া ঠিক কেমন হয়।মুগ্ধ শান্ত কন্ঠে আবার পড়তে বললো রুহিকে৷ মুগ্ধ রুহিকে ৫মিঃ সময় দিলো পড়তে! বাট রুহি না পড়ে মুগ্ধর রুমে রাখা এ্যাকুরিয়ামের মাছ দেখছিলো।
–
৫মিঃ পর মুগ্ধ রুহি পড়া ধরলো!বাট রুহি পড়ার আনসার না করে চুপচাপ বসে আছে!মুগ্ধ ঠাস্ করে একটা চড় বসিয়ে দিলো।এতদিন মুগ্ধ রুহিকে মারলেও হালকা ভাবে মারতো!বাট আজকেটা চড় টা অনেক জোরেই মেরেছে!রুহি গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে!মুগ্ধ চোখ লাল করে একবার রুহির দিকে তাকিয়ে আবার পড়া ধরলো।রুহি এবারও পারলো না!মুগ্ধ স্টিলের স্কেল টা ওর হাতে নিয়ে রুহিকে ডান হাত পাততে বললো!রুহি হাত এগিয়ে দিতেই মুগ্ধ ঠাস্ করে আবার মারলো…
–
মুগ্ধ রুহির হাতে এতজোরে মেরেছে যে রুহির চোখ দিয়ে সাথে সাথে পানি পড়তে থাকে!মুগ্ধ আবার রুহিকে পড়া ধরলো এবারও রুহি পড়া পারলো না!মুগ্ধ কিছু বলার আগেই রুহি ওর বাম হাত এগিয়ে দিলো!মুগ্ধ একই রকম ভাবে রুহিকে মারলো।রুহি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো…এত জোরে জোরে মারছে মনে হচ্ছে আজকে মুগ্ধর সব রাগ তুলছে এর মারের মধ্যে দিয়ে।রুহিকে কাঁদতে থেকে মুগ্ধ আবার মারলো ডান হাতে!তারপর মুগ্ধ রুহির দিকে এগিয়ে এসে দাঁতে দাঁত চেপে! রুহির গাল টিপে ধরে বলল।
–
মুগ্ধঃতুই জানিস আমি কলেজের ফাস্ট বয় ছিলাম!
তুই কি জানিস?? তুই আমার বোন হয়ে যখন ফেল করিস তখন আমাকে কতজন কত কথা শোনায়! তুই কি জানিস?? তোর দুষ্টুমির কারনে আমার কাছে কত ফোন আসে!তুই কি জানিস?? রাহাতকে ওই কথা গুলো বলাতে আমি কতটা অপমানিত হয়েছিলাম!তুই কি জানিস?? তোর কারনে আমি নিজের বাসাতেও একটু শান্তিতে থাকতে পারি না!কেন?বলবি কেন তুই আমার সাথে এমন করিস ??তোকে এত কিছু বলার পরও তোর কোন কথা কানে ঢুকে না… (গাল চেপে ধরে)
রুহিঃএভাবে বকছেন কেন??আমি কি করছি???
মুগ্ধঃবকা দিচ্ছি কেন তুই আবার আমাকে জিজ্ঞাসা করছিস???তুই কি এইরকমই থাকবি সারাজীবন?তোর করা এসব দুষ্টুমি করে কি জীবন চলবে?তোর করা দুষ্টুমির কারনে মানুষ মজা নিতে পারবে!বাট বিপদে পড়লে কেউ এগিয়ে আসবে না!তুই কি এটা জানিস যে তোর কিছু কিছু দুষ্টুমির কারনে তোকে অনেকে সহ্য করতে পারে না।এই অসভ্য মেয়ে !তোর
একবারো মনে হয় না নিজের পায়ে দাঁড়াবো,ওহ হো হাস্যকর কথা বলছি আমি তাই না?? যদিও নিজের পায়ে দাড়ানোর কথা তো মনে হবে না!কারণ টেনেটুনে পাশ করিস।ছিঃ!তোর জন্য অনেকে আমাকে আঙ্গুল তুলে বলে, মুগ্ধ তুমি এত ভাল ছাএ বাট তোমার বোন এমন কেন??জানিস আমি তখন কত লজ্জিত হয়?টেনেটুনে পরীক্ষায় পাশ করে নাচতে নাচতে বাসায় ফিরে আসিস!লজ্জা করে না তোর!ওহ আমি তো ভুলেই গেছিলাম তোর তো লজ্জায় নাই! (চোখ লাল করে)
রুহিঃ…..
মুগ্ধঃ তুই নিজেকে শুধরাবি না তাই তো!ইভা (খালাতো বোন)আসছে! আর আমি ওকে বিয়ে করে চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি।আমি আর কিছু বলবো না তোকে!তোর যা ইচ্ছা কর! আমি তোকে আর কিছু বলবোও না আর তোর কোন কথা শুনবোও না।তোকে বোঝানো জন্য আমার এত দায় পড়ে নি!ইডিয়েট গার্ল…. (রেগে দাঁতের সাথে দাঁত চেপে)
–
মুগ্ধ কথা গুলো বলে হনহন করতে করতে ওর রুমে থেকে চলে গেল!রুহি মাথা নিচু করে এতক্ষণ মুগ্ধর কথাগুলো শুনছিলো আর চোখের পানি ফেলছিলো!রুহির ওর হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর হাত একদম লাল হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এক্ষুনি রক্ত বের হবে। রুহি ওর বই গুছিয়ে সুন্দর করে মাথা নিচু করে মুগ্ধর বাসা থেকে বের হয়ে ওর বাসায় চলে গেল…
–
রুহি ওর বাসায় গিয়ে ওর রুমে ঢুকে বেডে শুয়ে বালিশে মুখ গুজে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো!রুহির আম্মু রুহিকে কয়েকবার ডাকলো কিন্তু রুহি বললো ওর খুব ঘুম পাচ্ছে তাই ঘুমাবে।রুহি মার খেয়ে কাঁদছে না!রুহি কাঁদছে মুগ্ধকে চিরতরে হারানোর ভয়ে,এত দিন এত দুষ্টুমি করলেও রুহি সেই ছোট থেকে মুগ্ধকে খুব ভালবাসে!আর ভালবাসে বলেই এত মার খেয়েও মুগ্ধর কাছে ছুটে যায়…..
–
পরেরদিন সকালে…
রুহির কলেজ থেকে ফিরে সাওয়ার নিয়ে একটু ঘুমায়!আজকে কোচিং নেই তাই বিকালে ছাদে বসে আকাশ দিকে উদাসীন ভাবে তাকিয়ে ছিলো!আজকে রুহির মন ভালো নেই!প্রতিদিনের মত আজকে মন বলছে না হাসতে!কি মনে করে রুহি হুট করে বলতে শুরু করলো.
–
চলতে চলতে এতটা পথ পেরিয়েও…
বলা হলো না!মনের গহীনে পুষে রাখা কিছু কথা..
বুঝেও অবুজের মত আড়াল করলে আমার ভালবাসা।..
দীর্ঘশ্বাসের মাঝে হারিয়ে ফেলেছি আমার সকল কথা
নাই বা প্রকাশ করলাম তোমার কাছে
আমার মনের গহীনের পুষে রাখা
❤❤অবুজ ভালবাসা❤❤
#আলোমনি___
–
রুহি ওই দুর আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভাবছিলো! আর পুরো ছাদ পায়চারী করছিলো!আজকে কিছুতেই মনকে শান্ত করতে পারছে না রুহি।আজকে সারাদিনে একবারো মুগ্ধদের বাসায় রুহি যায়নি!সন্ধ্যা আজান দিতেই রুহি নিচে গেল!বাসায় গিয়ে চুপচাপ বসে আছে…রুহির আম্মু বুঝলো রুহির মন খারাপ তাই কিছু বললো না!কারন রুহি এখন রুহিকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে হিতে বিপরীত হবে…
–
মুগ্ধ অফিস থেকে ফিরে ওর রুমে এসে বেডে মাথা নিচু করে বসে আছে!কালকে রুহির কথা গুলো বলার পর থেকে এক দন্ডের শান্তি পাচ্ছে না!মুগ্ধ কোন রকম ওর শার্ট টা খুলে বেডে ছুড়ে মেরে বেডে শুয়ে পড়ে চোখের উপর একহাত দিয়ে।বেডের উপর একপা ভাঁজ করা আর এক পা বেডের বাইরে।বেশকিছু সময় চোখ বন্ধ করে থাকতে থাকতে মুগ্ধ ওভাবেই ঘুমিয়ে পড়ে!….
–
রুহি মুগ্ধর রুমে এসে দেখে মুগ্ধ সাদা সেন্ডো গেঞ্জি
পরে চোখের উপর হাত রেখে শুয়ে আছে!রুহি আস্তে করে গিয়ে মুগ্ধর বসে মুগ্ধর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে!রুহির হুট করে চোখ যায় মুগ্ধর হাতের দিকে!মুগ্ধর হাতে ব্যান্ডেজ করা।রুহি কিছুক্ষণ মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে একবার ডাকলো।মুগ্ধর সাড়াশব্দ না পেয়ে রুহি আস্তে করে মুগ্ধর হাত টা নিয়ে কাটা হাতে ঠোট ছুইয়ে দিলো।তারপর আবার রুহি মুগ্ধকে ডাকলো আর এবার একটু জোরেই ডাকলো! মুগ্ধ কারো ডাক শুনে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে রুহি বেডের পাশে দাড়িয়ে আছে।মুগ্ধ রুহিকে দেখে হুড়মুড়িয়ে উঠে বসে বেডে।
–
মুগ্ধ বেড থেকে উঠে রুহিকে বসতে বলে টাওয়াল গলাতে জড়িয়ে ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।রুহিও তারাহুড়ো করে উঠে মুগ্ধর ঘামে ভেজা শার্টটা নিয়ে কিছু সময় জড়িয়ে ধরে ওর বুকের সাথে তারপর কয়েকবার ঘ্রাণ নেয়!আর শার্টটাতে বেশ কয়েকটা আদরও দেয়।আর শার্ট টাকে জড়িয়ে ধরে মনে মনে বলে…
রুহিঃ ভালবাসি মুগ্ধ তোমাকে! আমি অনেক ভালবাসি!হাজার কষ্ট সহ্য করতে পারবো বাট তোমাকে হারানো কষ্ট আমি সহ্য করতে পারবো না।আমি নিজেকে তোমার মনের মত করে গড়ে তুলবো তাও আমাকে দুরে সরিয়ে দিও না।আমি সত্যি মারা যাবো তোমাকে ছাড়া!আমি পারবো না তোমাকে না দেখে থাকতে,আমি পারবো না তোমার শরীরের ঘ্রাণ না নিয়ে থাকতে….(শার্ট জড়িয়ে ধরে কেদে কেঁদে)
–
মুগ্ধ ওয়াশরুমে থেকে বের হয়ে রুহির সামনে বসে! আর বই বের করে পড়াতে থাকে!আজকে রুহি অযথা বকবক করে নি!মুগ্ধ যা বলছে ঠিক তাই করছে!মুগ্ধ রুহিকে পড়া দেখিয়ে দিয়ে পড়তে বলে।রুহি মাথা নিচু করে পড়তে থাকে!মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে থেকে দেখে রুহির চোখ ফুলে আছে।মুগ্ধ রুহি পড়তে বলে নিচে চলে আর নিজে হাতে দুই মগ কফি করে আনে!মুগ্ধ জানে রুহি ওর হাতে কফি খেতে খুব ভালবাসে!
–
মুগ্ধ রুহিকে কফির একটা মগ এগিয়ে দেয়!রুহি মগটা নিয়ে পাশে রাখে!তারপর পড়াতে মন দেয়।মুগ্ধ রুহিকে কফিটা খেতে বললে।রুহি কোন কথা বলে নি।মুগ্ধ বুঝলো রুহির অভিমান হয়েছে।তাই আর কিছু বললো না!মুগ্ধ আজকে রুহিকে যা করছে রুহি শুধু ততটুকুই উওর দিচ্ছে। রুহি মুগ্ধকে সব পড়া করে দেয়। আর রুহি যখন পড়া শেষ করে চলে যাচ্ছিলো তখন মুগ্ধ রুহিকে বললো…
মুগ্ধঃ ড্রায়ারে চকলেট আছে নিয়ে যা…
রুহিঃভাইয়া ২৩ ঘন্টা আগেও আমি চকলেট খেতে পছন্দ করতাম! কিন্তু এখন আর করি না।তাই চকলেট গুলোও নিতে পারলাম না।তুমি বরং চকলেট গুলো অন্য কাউকে দিয়ে দিও।আমি বাসায় গেলাম..
To be continue…..
(আজকে চুপ না থেকে ভাল কিছু কমেন্ট আশা করছি!😊😊😊)