#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-১৯
.
.
🍁
ফারহার কথা শুনে তিন্নি ভয়ে অন্য গাল টা হাত দিয়ে ঢেকে ফেলে ..তা দেখে ফারহা মুচকি হেসে তিন্নির হাত ধরে সামনে এগিয়ে যায়….কিন্তু ক্যানটিনের সামনে কৃষ্ণচূড়া গাছটার কাছে ছাত্রীদের জটলা দেখে ফারহা তিন্নি আফিফ রাব্বি হাসান ইভা এগিয়ে গিয়ে যা দেখলো তা দেখার জন্য ওরা কেউ মটেও প্রস্তুত ছিলো না কারন কিছুক্ষণ আগে যে সিনিয়র ভাই ফারহা কে প্রপোজ করেছিলো সে সিনিয়র কে কেউ মারাত্মক ভাবে পিটিয়ে হাত পা উলটো করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে ….সিনিয়র কে দেখে সবাই জর হয়ে দারিয়ে কানা ঘুশা করছে কিন্তু ফারহা কে দেখতে পেয়ে সবাই ফারহার থেকে বেশ অনেকটা দুরে সরে দারালো……..
সিনিয়রের এমন অবস্তা দেখে ফারহার রাগে চোখে মুখ দিয়ে যেনো আগুন বের হচ্ছে …..তিন্নি ফারহার হাত ধরে টেনে ক্যানটিনে নিয়ে যায় …..ফারহা রাগে চেয়ার তুলে দুরে ছুড়ে মারে …..
—” ফারু মাথা ঠান্ডা কর আমি জানি তুই কি ভাবছিস ৷ কিন্তু বিশ্বাস তুই আমি চাইলেও কিছু করতে পারবো না ৷ পারবো না ওই ভয়ঙ্কর লোক টাকে আটকাতে….”(তিন্নি)
—” আমি জানি তিন্নি তোর আমার কোন ক্ষমতা নেই এই লোকটাকে আটকানোর কিন্তু আমি যদি একে বারে দুরে চলে চাই তাহলে…..?”(ফারহা)
—“কি বলতে চাইছিস তুই ? কোথায় যাবি..? “(ইভা)
—” ফারু তোর কি মাথা খারাপ হলো নাকি ?? কি বলছিস এই সব..??”(আফিফ)
—” উফফফ চুপ করবি তোরা ,,,, আমাকে বলতে দে ….”
ফারহার কথায় সবাই চুপ হয়ে যায়..তখন ফারহা বলতে শুরু করলো……
— আমি আমার মামার সাথে ইউএস চলে যাবো ৷ ওখান থেকে বাকি স্টাডি শেষ করবো ৷
— “এটা তোর প্লান ফারু???”(তিন্নি)
—” নাহ তিন্নি শুধু এই টুকু না আমি ভেবে নিয়েছি বিদেশে কোন ছেলে দেখে ওখানে বিয়ে করে সেটেল হয়ে যাবো আর বাংলাদেশে ফিরবো না ..”(ফারহা)
—” তাই নাকি তা তুমি কাকে বিয়ে করবে প্রেয়শী …….”(মেঘ)
প্রেয়শী নাম টা শুনে ফারহা ঘুড়ে তাকিয়ে দেখে মেঘ দাতেঁ দাঁত চেপে দারিয়ে আছে ৷ পিছুনে কালো সুট বুট পরা গার্ড ৷ মেঘ হাতের ইশারা করা মাত্র গার্ড গুলো বাহিরে চলে গেলো ৷
—” কি হলো জান তুমি কন্টিনিউ করো বিদেশে গিয়ে ছেলে দেখে বিয়ে করে সেটেল হবে তাই না ..??”
মেঘ কে দেখে রাব্বি হাসান তিন্নি আফিফ ইভা চেয়ারে বসা থেকে দারিয়ে যায় শুধু ফারহা ছাড়া কারন ফারহা মেঘ কে এভাবে ক্যানটিনে দেখবে তা আশা করেনি৷ মেঘ কে দেখে ভয়ে ফারহা যেন চেয়ারে জমে গেছে …মেঘ কথা বলতে বলতে ফারহার পাশের চেয়ারে পরে ……
— ” এভাবে চুপ আছো কেন Answer me কি হলো প্রেয়শী Answer me damn it ….টেবিলে ঘুশি মেরে …..
টেবিলের যেখানে মেঘ ঘুশি টা মারলো সেখান টা ভেঙে পরায় আফিফ ইভা তিন্নি হাসান রাব্বি ভয়ে থর থর করে কাপতে থাকে এদিকে ফারহা স্তব্ধ হয়ে বসে আছে মুখে কোন ভাষা নেই ৷ ফারহা যতোই সাহসি হোক না কেন মেঘের সামনে নেতিয়ে যায় যেন মেঘ কোন বাঘ আর ও অসহায় কোন হরিন…….তিন্নি আফিফের কানে কানে বলে…..
— ” আফিফ দেখলি জিজুর পান্চ একটা পান্চে টেবিলের এই অবস্তা ,,,তাহলে ওই পান্চ যদি আমাকে দে তাহলে নিশ্চয় ওই টেবিলের মতো আমার অবস্তা হবে..??(তিন্নি)
তিন্নির কথা শুনে আফিফ বিরক্তি ভরা কন্ঠে বলে ওঠে ….
— ” তিনু বেবি তুমি সত্যি যদি মেঘ জিজুর হাতে পান্চ না খেতে চাও তাহলে মুখে আঙ্গুল দিয়ে দারিয়ে থাকো…”
—” ওই আফিফফা তুই জিজু কে নকল করছিস ক্যান??”
আফিফ কিছু বলতে যাবে তার আগে মেঘ আরেক টা পান্চ মারে টেবিলে সাথে সাথে টেবিল টা ভেঙ্গে পরে আর তা দেখে ফারহার বুকের ভিতর হাজার কিলোমিটার স্পিডে বুক ধক ধক করতে লাগলো মনে হয় এখুনি হার্ড টা বেরিয়ে আসবে ভয়ে …….
—“তিনু বেবি বাকি সালাদের নিয়ে বাইরে চলে যাও ..”(মেঘ)
—” ও…ওকে জিজু.”….তিন্নি সবাইকে নিয়ে যেতে নিবে তখনি ফারহা বলে ওঠে …..
—” তিন্নি কোথাও যাবে না , আপনার দরকার হলে আপনি চলে যান …”(ফারহা)
” ফারহার কথা শুনে দাঁত কটমট করতে করতে মেঘ তিন্নি কে যাবার জন্য ইরাশা করতে তিন্নি সাথে বাকি রা এক ছুট লাগায় বাইরের দিকে….তা দেখে অসহায় দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকে ফারহা ….”
— ” তো জানু কি বলছিলে যেনো ইউএস যাবে ছেলে বিয়ে সেটেল আর কি যেন বলছিলে বল ..( ফারহার চুলের মুঠি ধরে )
—” আহা আমার ব্যাথা লাগছে কি করছেন কি ছাড়ুন আমাকে …… ফারহা মেঘের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটপট করতে থাকে …
—” ছাড়বো তো জানু তার আগে বলো তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করবে..??”(মেঘ)
ফারহা রেগে মেঘ কে উওর দেয় ….হ্যা করবো বিয়ে অন্য কাউকে করবো যে আপনার মতো খুনি না .. তার কাছে প্রানের মূল্য আছে …কথায় কথায় কারো রক্ত ঝরায় না… এমন কাউ কে বিয়ে করবো আমি শুনতে পেয়েছেন আপনি ..!!!
ফারহা একপ্রকার জোড়ে চিৎকার করে কথা গুলো বললো কিন্তু ফারহা রাগের মাথায় কথা গুলো বলার সময় মেঘের দিকে না তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে বললো কারন মেঘের ওই রক্ত চক্ষু দেখে কথার বলার সাহস ফারহার নেই…..ফারহা কথা শেষ করে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে মেঘের চোখ মুখ রাগে লাল হয়ে আছে চোখ গুলো দিয়ে যেনো এখুনি রুক্ত ছিটকে বেরিয়ে আসবে ….মেঘের এমন রুপ দেখে ফারহা চুপসে যায় ….. কিন্তু মেঘ একটা কথা ও না বলে ফারহা কে কাধে তুলে নিয়ে ক্যানটিন থেকে বেরিয়ে আসে……….
—” এই রাক্ষস আমাকে নামান বলছি ..কি করছেন কি নামান বলছি ……..আমি কিন্তু চিৎকার করবো ….”
ফারহার কোন চিৎকারে কেউ এগিয়ে আসেনি মেঘের ভয়ে …মেঘ ফারহা কে ওর কারে বসিয়ে নিজে ও ড্রাইবিং সিটে বসে পরে…..অন্য দিকে তিন্নি কিছু বলতে গিয়ে ও সাহসের অভাবে কিছু বলতে পারলো না ৷ মেঘের ফারহা কে নিয়ে বের হয়ে গেলে মেঘের গার্ড রা তিন্নি আর বাকিদের গাড়িতে বসতে বলে ওরা ও বিনা প্রশ্নে গাড়িতে উঠে বসে………………
.
.
🍁
.
.
—” হ্যালো রাহুল বাবা কেমন আছিস…?”(ফাহিম)
—” আ’ম গুড ড্যাড ,হঠাৎ ফোন করলে..??”(রাহুল)
—” বাবা আমি বাংলাদেশে আছি ৷ তোকে ও আসতে হবে তোর ফুফু তোকে দেখতে চেয়েছে…”(ফাহিম)
—” ওহ ড্যাড তুমি জানো তো আমি বিজনেসের কাজে কতোটা বিজি এখন কি করে হুট করে বি ডি তে আসি..!”(রাহুল)
—” নো রাহুল আমি তোমার কোন Excuse শুনতে চাই না.. তুমি যতো দ্রুত সম্ভব বি ডি তে আসবে আমি তোমার টিকিট কেটে কনফর্ম করে দিচ্ছি..”(ফাহিম)
— ” বাট ড্যাড …”
— “নো মোর ওয়ার্ড রাহুল ..”
ফাহিম তার কথা বলে কল ডিসকানেক্ট করে দিলো……
—” তাহলে রাহুল আসছে….??”(মোহনা)
—” একদম তোর ভাই যা বলে তাই করে দেখায় বুজলি ..”( ফাহিম)
—” তা ঠিক আছে কিন্তু আশিকের কোন খবর নিলা ভাই ,,,মানুষ টা কতোদিন হলো বাইরে শত্রুদের মাঝে ওর যদি কিছু হয়ে যায়….”(মোহনা)
মোহনার কথা শুনে ফাহিমের বুকটা ধক করে উঠলো ….ফাহিম জানে আশিকুর যেখানে আছে বিপদে আছে ৷ কারন সে দিন ফাহাদ কে আনতে যেয়ে নিজে আর ফিরে আসে নি তার থেকে ধারনা করে নিলো যে আশিকুর তাদের শত্রুদের হাতে ধরা পরে গেছে ৷ কিন্তু এই খবর টা কোন ভাবে তার বোনের কানে পৌছাতে দিতে চায় না কারন কোন ভাবে কথাটা মোহনার কানে পৌছালে মোহনা প্যানিক হয়ে পরবে তাতে ফারহা আর রাহুলের বিয়ে টা আটকে যেতে পারে ৷ কিন্তু ফাহিম চায় না কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি উত্তরসরি ফারহা কে হারাতে তাতে যে ফাহিমের করা এতো দিনের প্লানে জলে যাবে……
— ” আমার সাথে আশিকের কথা হয়েছে বোন ৷ ও এখন ভেরি কন্ফিডেন্টশিয়াল কাজে আটকা আছে তাই তোকে ফোন করতে পারছে না..”(ফাহিম)
—” ও যে ঠিক আছে এটা জেনেই মন শান্ত হলো … ভাই চল খেতে যাবি আমি খাবার সার্ব করছি …”(মোহনা)
—” হুম তুই যা আমি আসছি ফ্রেস হয়ে…”(ফাহিম)
মোহনা চলে যেতে ফাহিম ফোন বের করে কাকে যেন কল করলো…….
.
.
🍁
.
.
—” ড্যাড প্লিজ আমি এখন বি ডি তে ফিরতে চাই৷ আমি এখন পুরো পুরি সুস্থ যাষ্ট সি ..”(আগুন)
—” মাই স্যান আমি জানি তুমি এখন সুস্থ কিন্তু তুমি এখন দেশে ফিরতে পারবে না …”(আরিয়ান খান)
—” কারন টা কি জানতে পারি ড্যাড …??”(আগুন)
—” অফকোর্স মাই স্যান ,,, আমার বিজনেস পার্টনার সাইমুনের একমাত্র মেয়ে সামিরার সাথে তোমার বিয়ে আমি ফিক্সট করেছি আগুন..”(আরিয়ান চৌধুরি)
আরিয়ান চৌধুরীর কথা শুনে আগুন যেন আকাশ থেকে পরলো ৷ আগুন তার নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছে না…ওর ড্যাড ওকে এভাবে চিট করতে পারে ভেবে …….
—” ইউ নো ড্যাড আই লাভ ফারহা তুমি এটা জেনে ও…..বাকিটা বলতে না দিয়ে আরিয়ান খান বলে উঠলো …” লিসেন আগুন আমি যখন আমার বন্ধু কে কথা দিয়েছি তার মেয়ে সামিরার সাথে তোমার বিয়ে হবে তো সেই বিয়ে হবে তুমি ভালো করেই জানো আমার কথার কোন নরচর হয় না ৷ তাই বলছি মাথা থেকে ওই থার্ডক্লাস মেয়েটিকে ঝেড়ে ফেলো এটাই তোমার জন্য ভালো হবে ……”
আরিয়ান খান আগুনের রুম থেকে বের হতেই আগুন স্বজোড়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে ……..অন্যদিকে আরিয়ান খান চোখের কোন থেকে পানি মুছে বির বির করে বলে….”আ’ম সরি মাই স্যান ,,তোমার ভালোর জন্য তোমাকে তোমার ভালোবাসা থেকে দুরে সরাতে বাধ্য হচ্ছি পারলে তোমার এই অসহায় বাবা কে ক্ষমা করে দিও..”
.
.
🍁
.
.
দু-ঘন্টা যাবত বসে আছি রাক্ষস টার বেড রুমে পাশে তিন্নি আফিফ রাব্বি হাসান ইভা পাশে বসা …হঠাৎ করে মেঘ নামের রাক্ষস টা সামনে একটা কাগজ রেখে আমাকে আমাকে সাইন করতে বলছে ……
—” প্রেয়শী পেপারস টায় সিগনেচার করো দ্রুত …”(মেঘ)
— ” এটা কিসের কাগজ ? আর আপনি বলবেন আর আমি সাইন করে দিবো এটা আপনি ভাবলেন কি করে মিস্টার চৌধুরি .???”(ফারহা)
—” প্রেয়শী এতোদিনে আমার রাগ সম্পর্কে তোমার ধারনা নিশ্চয় হয়েছে !! তাই বলছি যা বলছি তাই করো নয় তো তোমার বন্ধুদের সাথে আমি কি করতে পারি তা বোধ হয় তুমি কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছো..???”(চোখ মুখ শক্ত করে বললো মেঘ)
আমি আর কথা বাড়ালাম না কাগজ টা তুলে হাতে নিয়ে দেখতে লাগলাম কি লেখা আছে কাগজ টায়…….
.
.
.
#চলবে…………………🍁🍁🍁