হিংস্র_ভালোবাসা🌹 #Season_2 #Writter_Farhana_Chobi #পর্ব-২১

0
569

#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-২১
.
.
🍁
— “সারপ্রাইজ মামুনি ৷ এখন বললে তো আর সারপ্রাইজ থাকবে না ৷ তাই যা জানতে চাও তা তুমি কাল জানতে পারবে ৷ তার আগে নয়…এখন ফ্রেস হয়ে এসো আমি টেবিলে খাবার দিচ্ছি …”

—” মামুনি আমি কিছু খাবো না ৷ বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি..”

—” তাহলে রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে রেস্ট করো মামুনি..”

ফারহা আর কথা না বাড়িয়ে নিজের রুমের দিকে চলে যায় … ফারহা রুমে ঢুকে তার পুরো রুম টা দেখে চমকে যায় ….ওহ মাই আল্লাহ এটা কি আমার রুম নাকি ভুল করে অন্য কারোর রুমে এসে পরলাম….রুমের প্রত্যেক টা জিনিস চেন্জ করা হয়েছে ইভেন দেয়ালের প্রিন্ট টাও চেন্জ করে পুরো রুমটার ভোল পাল্টে ফেল্লো ….ফারহা চোখ বন্ধ করে মামুনি বলে জোড়ে চিৎকার করে ওঠে ..মোহনা ফারহা চিৎকার শুনে দৌড়ে ফারহার রুমে আসে……

—” কি কি হয়েছে ফারহা এভাবে চিৎকার করলে কেন..?”(মোহনা)

—” মামুনি আমার রুমের এই হাল কেন কে চেন্জ করেছে সব কিছু..?”(ফারহা)

—” ফারহা তোমাকে বলা হয়নি কাল রাহুল আসছে ..”(মোহনা)

—” রাহুল কে রাহুল আর আসছে তো … তাই বলে আমার রুমের ভোল পাল্টে ফেল্লে ..??”(ফারহা)

—” ফারহা মামুনি আমার মাথা ঠান্ডা করে আমার কথাটা মন দিয়ে শোন ..তোমার ফাহিম মামার একমাত্র ছেলে রাহুল ও লন্ডনের পড়াশুনা শেষ করে ওখানে বিজনেস করছে ৷ আমরা চাই ওর সাথে তোমার বিয়ে ঠিক করেছি৷”(মোহনা)

ফারহা মোহনার কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলো আসলে মোহনার কথা গুলো সব যেন ফারহার মাথার উপর দিয়ে চলে গেলো হ্যা করে মোহনার দিকে তাকিয়ে আছে …..

—” মামুনি এই সব কি বলছো আমার এখনো স্টাডি শেষ হয়নি তার থেকে বড় কথা তোমরা আমার মতামত না জানতে চেয়ে নিজেরা ডিসিশন নিয়ে নিলে…??”(ফারহা)

—” নাহ ফারহা কে রাগানো যাবে না অন্য ভাব হ্যান্ডেল করতে হবে যাতে সাপ ও না মরে আর লাঠি ও না ভাঙ্গে …” মামুনি আমি তোমার মা আর মা হয়ে নিজের সন্তানের ভালো মন্দ দেখার অধিকার নিশ্চয় আমার আছে ? আর কোন বাবা মা তার সন্তানের খারাপ চায়বে না..”(মোহনা)

ফারহা মোহনার কথায় সায় দিয়ে মাথা নারায় ….

—” তাহলে আমি আশা করবো তুমি এই বিয়ে নিয়ে কোন আপত্তি করবে না ৷ তোমার মামুনির ডিসিশন মেনে নিবে…”(মোহনা)

ফারহা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না একদিকে কলেজে চিপকুর পেরা অন্যদিকে রাক্ষস টার ভয়ঙ্কর ভালোবাসার অর্তাচার আর এখন উদয় হলো রাহুল না ফাউল ….কোন দিকে যাবে এটা ভেবে ফারহার মাথা ঘুড়ে গেলো ফারহা ধপাস করে বেডের উপর বসে পরে …..তা দেখে মোহনা ফারহার দিকে এগিয়ে আসে…..

— ” কিরে মামুনি তোর কি শরীল খারাপ লাগছে..??” (মোহনা)

—” নাহ মামুনি এখন আমার কেমন ফিল হচ্ছে যানো …………….আমি যেন অথৈ সাগরে ডুবে যাচ্ছি ..”

—” মানে কি বলতে চাইছিস তুই ..?? আমি কিছু বুজতে পারছি না..!(মোহনা)

—” মামুনি তুমি বুজবে না ৷ এখন বলো আমার রুম টা কি তোমার ভাইয়ের ছেলের জন্য বুক করেছো না মানে এতো আয়োজন …..”.

—” হ্যা ফারহা বাড়ির অন্য গেস্ট রুম গুলো খুব ছোট আর তেমন বাইরের হাওয়া প্রবেশ করে না ৷ রাহুলের তো এভাবে থাকার অভ্যাস নেই…”

—” আর তাই আমার রুম টা দিচ্ছো তাই তো..?? বাহ খুব ভালো তা এখন কি আমি গেস্ট রুমে যাবো .??”( রেগে বললো ফারহা)

—” নাহ এখুনি না আজ এই রুমে থাক কাল না হয় গেস্ট রুমে যাস…যা এখন ফ্রেস হয়ে নে. আমি তোর মামু কে কফি দিয়ে আসি..”(মোহনা)

—” হ্যা যাও পারলে কফির সাথে একটু ইদুর মারার বিষ ও মিশিয়ে দিও বা*** মামু আসতে না আসতে আমাকে বাস দেওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে..” (বির বির করে)

—” কিছু বললি ..??”

—” নাহ কি বলবো কিছু বলি নি তুমি যাও গিয়ে তোমার ভাই কে কফি গিলাও…” ফারহা রেগে মেগে ব্যাগ ছুড়ে মেরে ওয়াসরুমে ঢুকে শাওয়ার অন করে দারিয়ে পরলো তার নিচে……”সালা জীবনডা আমার ত্যানা ত্যানাহয়ে গেলো চিপকু আর রাক্ষস টা কি কম ছিলো এখন আবার রাম ছাগল কে আসতে হলো … সব হয়েছে এই মামু নামের অসহ্য লোকটার জন্য ..দারাও মামু আমাকে বিয়ে দেওয়ার শখ যদি না মিটাই তোমাদের তো আমার নাম ফারহা না ফালটে অন্য নাম রাখবো হু……”

ফারহা রেগে ওয়াসরুমে ঢুকে পরতে মোহনা হাসতে হাসতে তার ভাই ফাহিমের রুমে যায় ……ফাহিম মোহনার মুখে হাসি দেখে জ্বিগাসা করে…..”কিরে মোহনা এতো খুশি খুশি লাগছে কেন তোকে..??”

—” ভাইয়া ফারহা বিয়ের জন্য রাজি ..”(মোহনা)

—” ওয়াট সত্যি বলছিস ..??” (ফাহিম)

—” হ্যা ভাইয়া আমাদের প্লান এতো সহজে সাকসেসফুল হবে ভাবতে পারি নি … ভাইয়া কালই যদি ওদের এঙ্গেজমেন্ট টা সেরে ফেলা যায় তাহলে কেমন হয় ..??”(মোহনা)

—” দারুন কিন্তু রাহুল ও কে রাজি করাতে হবে ”

—” ভাইয়া আমি আমার ভাগের কাজ টা করে ফেলেছি এখন তোমার দায়িত্ব কি করে রাহুল কে রাজি করাবে..”(মোহনা)

—” হুম কি আর করবো ইমোশনাল ব্লাকমেইল ছাড়া ,যাই হোক আদিল কোথায় ..?? আজ কাল ওকে দেখতে পাই না..”

—” ও সারাক্ষন পড়াশুনা খেলাধুলা নিয়ে ব্যাস্ত থাকে তাই হয়তো দেখতে পাও না..”(মোহনা)

—” নাহ মোহনা বিষয় টা একদম সেরকম না তুই যে রকমটা ভাবছিস. আমার কেন যেনো আদিল কে সন্ধেহ হচ্ছে .”(মনে মনে)

—” কি বেপার ভাইয়া চুপ করে আছো কেনো…?”

—” মোহনা রাহুলের সাথে আমার কথা হয়েছে ও কাল সকালের ফ্লাইট ধরবে ..”

— “বাহ এতো ভালো কথা ওর প্রিয় খাবার কি কি বলে দিও আমি নিজ হাতে ওর জন্য রান্না করবো ..”

—” তা না হয় বললাম কিন্তু আমাকে একটা কথা বল ফারহার বাইশ বছরে পা দিতে আর কয় মাস বাকি আছে…??”

—” সাত মাস দশ দিন ভাইয়া ..”

—” তাহলে আর এই কয়দিন পর ফারহা শেষ ..হা হা হা ”
.
🍁
.
— “”ইয়েস ডক্টর টেল মি ..?”(মেঘ)

—” মিঃ চৌধুরী আপনার স্ত্রীর রিপোর্ট আমি খুব ভালো করে দেখেছি ৷ ইভেন বিদেশের ডক্টরদের সাথে এই নিয়ে আলোচনা করেছি ৷ আপনার কথা অনুযায়ি আপনার মিসেস য়ের এক্সিডেন্টের জন্য ওনার পুরনো স্বৃতি ভুলে গেছে ৷ তবে তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব যদি ঠিক সেই উপায় ওনার চোখের সামনে এমন এক্সিডেন্ট ঘটে বা পুরনো কোন জায়গায় যেখানে ওনার পুরনো স্বৃতি জরিয়ে আছে সেখানে নিয়ে কথা গুলো মনে করানো …”

—” ডক্টর এতে লাইফ রিক্স নেই তো..?””(মেঘ)

—” মিঃ চৌধুরী আমি আপনাকে মিথ্যে সান্তনা দিবো না সত্যি টা হলো মিসেস চৌধুরীর স্বৃতি ফিরে আসার ফিফটি পার্সেন চান্স আছে ৷ তবে আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন..”(ডক্টর)

ডক্টেরের মুখে ফিফটি পার্সেন চান্স আছে শুনে মেঘের বুকে মোচর দিয়ে উঠল কারন মেঘ ভালো করেই বুজতে পারছে এই চেষ্টায় হয় ওর প্রেয়শীর স্মৃতি ফিরে আসবে নয় তো চিরদিনের জন্য ওর সাথে জরিয়ে থাকা ভালোবাসাময় স্বৃতি গুলো হারিয়ে ফেলবে চিরদিনের মতো….

—” থ্যাংকস ডক্টর ….” মেঘ আর কথা বাড়ালো না কল ডিসকানেক্ট করে কানে হেড ফোন লাগিয়ে দিয়ে ল্যাপটব ওপেন করে ফারহা কে দেখার জন্য কিন্তু ভিডিও ওপেন হতে মোহনার সাথে ফারহার বিয়ে নিয়ে কথা গুলো স্পষ্ট মেঘ শুনতে পেলো ….মেঘ ওর রাগ সংবরণ করতে না পেরে ল্যাপটপ টা তুলে আচার মারে মুহূর্তে ল্যাপটপ টা ভেঙ্গে
খন্ড খন্ড হয়ে যায় ……….এদিকে ভাঙ্গার শব্দ পেয়ে এরিক আসলাম দৌড়ে রুমে এসে দেখে রুমের উপর যেন টর্নেডো সাইক্লোন বয়ে গেছে পুরো তছনছ হয়ে আছে রুম টা… এরিক এদিক ওদিক তাকিয়ে মেঘ কে খুজতে লাগলো কিন্তু কোথায় মেঘ কে না দেখতে পেয়ে মেঘের রমের সাথে এটার্চ মিনি ছাঁদ টাতে উকি মারে এরিক …. মেঘ নিজের রাগ নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য পুলে নেমে যায় ……. এরিক মেঘের রুমে কয়েক বার আসলেও মেঘের এই মিনি ছাদে কখনো আসা হয়নি….এরিক হা করে পুরো ছাদ টা দেখছে ছাদটার চারি দিকে মরিচ বাতি দিয়ে সাজানো আবার চার কোনে লাইট সেট করা ৷ ছাদ টা দুইটা অংশ ভাগ করা এক পাশে প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ প্রজাতির ফুলের গাছ ৷ প্রায় অর্ধেক হচ্ছে বাইরের ফুল গাছ ….তার সামনে বড় একটা দোলনা সেট করা তার উলটো পাশে পাতার ছাউনি দিয়ে বসার আলাদা যায়গা সেখানেও ডেকোরেট করা …. আর অন্য পাশে পুল …ছাদ টা দেখলে যেনো রিদয় জুরিয়ে যায় …….

এতোক্ষন এরিক তার চোখ দুটো দিয়ে পুরো ছাদঁ টা দেখায় এতোটাই ব্যাস্ত ছিলো যে মেঘ যে সামনে দারিয়ে আছে সে দিকে খেয়াল নেই এরিকের …… …আসলাম মেঘ কে দেখে ভয় পেয়ে যায়…আসলাম এরিকের শার্টের কলাট ধরে বারে মিনি ছাদে নিয়ে যেয়ে ভিতর থেকে গ্লাস লাগিয়ে দেয় হঠাৎ আসলামের এমন কান্ডে এরিক হতবম্ব হয়ে যায় কিন্তু মেঘের ভয়ে কিছু বলতে পারে না…….

—” বস এনেথিং সিরিয়াস..??”(আসলাম)

—” আসলাম জ্যাক কে বলো ফাহাদ চৌধুরী আর আশিকুর কে দেশে নিয়ে আসতে ৷ আমার কলিজায় হাত দিলে যে আমি কাউকে ছাড়ি না তার প্রমান এবার মিসেস মোহনা কে দিতে হবে …”

—” বস তাহলে খেল এবার শুরু করবেন..?”

—” ইয়াহ ,,,, নাও গেম ইজ অন …. “(বাকা হেসে)
.
.
🍁
.
.
—” কিহ বলছিস এখন দেখা করবি মানে এখন তো মাত্র তিন টা বাজে ছয়টায় দেখা করি না প্লিজ..”(তিন্নি)

—” না তিন্নি ইট’স আর্জেন্ট ..তুই সবাই কে আসতে বল রেস্টুরেন্টে …”(ফারহা)

— ” ওকে আমি ওদের বলে দিচ্ছি ঠিক চারটায় সবাই থাকবে তুই চলে আসিস ..”(তিন্নি)

—” হ্যা আমি চলে আসবো …”

কল ডিসকানেক্ট করে ফারহা বিছানায় এলোমেলো হয়ে শুয়ে পরে …মেঘ এতোক্ষন ফারহার ফোনে বলা কথা শুনতে পায় মেঘ ভাবছে…. এমন কি দরকার যে এখুনি সব বন্ধুদের সাথে দেখা করতে চাইছে…….

** বিকাল চারটা বেজে বিশ মিনিট ………

ফারহার সামনে তিন্নি ইভা রাব্বি হাসান আফিফ বসে আছে চোখে মুখে এক রাশ বিরক্তি নিয়ে ….গত বিশ মিনিট ধরে ফারহা মুখ ফুলিয়ে বসে আছে কাউ কে কিছু বলছে না ৷ এদিকে তিন্নি বার বার হাই তুলতে ঘুমে চোখ ভেঙ্গে আসছে ওর কিন্তু ঘুমোতে পারছে না …..

—” ফারহার বাচ্চা আর্জেন্টলি ডেকে এখন কুলুপ এটে বসে আছিস কেন পেটের ভিতর কি কথা রান্না করছিস নাকি..”(রেগে বললো তিন্নি)

ফারহা এবার না পেরে ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলো ,,, ফারহার কান্না দেখে তিন্নি ইভা রাব্বি আফিফ হাসান ঘাবড়ে গেলো ওরা বুজতে পারছে না ফারহার হলো টা কি …?? এভাবে কাদছে কেন …??

—” জানু কাদে না আমাকে বল কি হয়েছে..??”(তিন্নি)

ফারহা হেচকি তুলতে তুলতে তিন্নি কে বলে উঠলো …” মা ..মামুনি আ,, মার বি,,,বিয়ে ঠিক করেছে …”

—” কিহহহহহহহহহ”সবাই এক সাথে চিৎকার করে বলে উঠলো ,,,, ওদের এমন চিৎকার শুনে রেস্টুরেন্টের বাকি কাস্টোমার রা ওদের দিকে তাকিয়ে পরলো ……..ফারহার তাতে কোন রিয়াকশন নেই ও ভ্যা ভ্যা করে কেদে যাচ্ছে … রাব্বি হাসান ফারহার কান্না সহ্য করতে না পেরে দুজনে উঠে ফারহার পাশে বসে ফারহা কে জরিয়ে ধরে সান্তনা দিতে থাকে…কিন্তু কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধে হয় এখানে ঠিক তাই হলো মেঘ রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে ফারহার দিকে ফারহার সে দিকে কোন খেয়াল নেই কিন্তু ইভা তিন্নি আফিফ ঠিকি মেঘ কে দেখতে পায় … মেঘ ধিরে ধিরে রেস্টুরেন্টের ভিতর ঢুকতে আসলাম সব কাস্টোমার দের বের করে দেয় …..

—” ফারহহহহহহহা …”(মেঘ)

ফারহা মেঘের গলা পেয়ে রাব্বি হাসান কে ছেড়ে সামনে তাকিয়ে দেখে মেঘ চোখ মুখ লাল করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে দেখে মনে হয় এখুনি ওই রক্তচক্ষু দিয়ে এখুনি ভর্ষ করে দিবে ফারহা মেঘ দেখে ভয়ে কান্না করতে ভুলে গেলো ….এদিকে মেঘ আসলাম কে ইশারা করতে আসলাম রাব্বি হাসান কে গান ধরে বাইরে নিয়ে যায়… ফারহা কিছু বলতে যায় তখনি মেঘ ফারহা কে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠলো …………
.
.
.
.
#চলবে…… …… ……🍁🍁🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here