হিংস্র_ভালোবাসা🌹 #Season_2 #Writter_Farhana_Chobi #পর্ব-১২

0
819

#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-১২
.
.
🍁
— ” ওয়াট দ্যা হেল ফারু তুই জানিস তোর এই কান্ডের জন্য আমাদের পুরো গ্যাং টা প্রিন্সিপাল স্যারের নজরে পরে গেলো ..?”( রাব্বি)

— ” চুপ ওই সালা টাকলুর নজরে পরলে তোর বাপের কি তুই এতো হাইপার হচ্ছিস কেনো..?? “(ফারু)

— ” দেখ বাপে যাবি না তাহলে কিন্তু আমি তোর মায়ে যামু…”(রেগে বললো রাব্বি)

— ” তুই কিন্তু..বাকি টা বলতে না দিয়ে আফিফ চেচিয়ে উঠলো …” চুপ একদম চুপ তোরা দারিয়ে দারিয়ে ঝগড়া না করে একটা Solution দিবি তা না ৷ আর একটা কথা বললে দুইটার মাথায় আমি কাঠাল ভাঙ্গমু..”

— ” আফিফফা তোর একদিন নয় তো আমার একদিন কাঠাল ভাঙ্গবি দারা দেখাচ্ছি মজা ”

আফিফ ফারহার হাত থেকে বাচার জন্য দৌড়ে কলেজ থেকে বের হয়ে যায় ফারহা আফিফের পিছু নিয়ে দৌড়ে কলেজের বাইরে আসতেই ফারহার সামনে একটা কালো মাইক্রো দারিয়ে ফারহার হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে গাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে নেয় ……….
*
*
*
*
—” ডক্টর আমার ছেলে কে কেমন দেখলেন..?? ও ঠিক হয়ে যাবে তো..??”(আরিয়ান খান)

— ” ইয়েস মিস্টার খান দেখুন আগুনের মাথায় চোট টায় আগে ভালো করে ট্রিটমেণ্ট দেওয়া হয়েছে মেবি তাই তো কোন প্রব্লেম হয়নি আর পরে রইল আগুনের জ্ঞান ফেরা ৷ মিস্টার খান আগুন কে কড়া ডোজের ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে তাই আগুন বেহুসের মতো ঘুমোচ্ছে ৷ “(ডাক্তার)

—” তাহলে বলছেন কোন বিপদের আশঙ্কা নেই তাই তো..??”(আরিয়ান খান)

— ” ইয়েস মিস্টার খান ৷ তো এখন আমি আসছি আর আগুন কিছুদিন রেস্ট করলে পুরো পুরি সুস্থ হয়ে যাবে..”(ডাক্তার)

— ” থ্যাংইউ ডক্টর ”

ডাক্তার চলে যেতে আরিয়ান খান আগুনের পাশে বসে আগুনের কপালে চুমু দিয়ে বলে” মাই সান তোমার কোন বিপদ আমি হতে দিবো না ৷ আমার জীবন দিয়ে দরকার হলে তোমাকে রক্ষা করবো ৷ তোমার জীবনের থেকে বড় কিছু আমার কাছে হতে পারে না তাই তোমাকে আমি আর এদেশে রাখবো না তোমাকে প্যারিস পাঠিয়ে দিবো বিজনেসের দোহাই দিয়ে ৷ তুমি জানো না মাই সান তুমি কার কলিজায় হাত দিতে গিয়েছিলে আজ আমি যদি না হতাম তাহলে হয়তো তোমাকে আর কোন দিন ফিরে পেতাম না……

আরিয়ান খান একপ্রকার ইমোশনালি কথা গুলো বলে গেলো ৷ এদিকে আগুনের কোন হুস না থাকায় আরিয়ান খানের কোন কথাই ওর কান পর্যন্ত পৌছালো না ৷ আরিয়ান খান আগুনের গায়ে চাদর দিয়ে ঢেকে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো…….
*
*
*
*
— ” তো মিস্টার আশিকুর কেমন লাগলো ঝটকা টা …??”(জ্যাক)

—- ” কে,,কে আপনি আর আমাকে এভাবে বেধে রেখেছেন কেনো..??”( না জানার ভান করে বললো আশিকুর)

— ” ওহ আপনি জানেন না তাই না আর জানেন না বলে ছদ্দবেশ ধরে কেবিনে ঢুকলেন..”

জ্যাক কথা টা বলতে বলতে আশিকুরের ছদ্দবেশ খুলতে লাগলো ৷ এদিকে আশিকুর ভেবে পাচ্ছে না এতো নিক্ষুত পরিকল্পনা কি করে জ্যাক জানতে পারলো ! এই পরিকল্পনা তো এদের জানার কথা না তাহলে কে বললো..?? আশিকুরের পুরো মাথা হ্যাং হয়ে আসছে আর আসবে না কেনো জ্যাক নেশার পাউডার ফু দিয়ে আশিকুরের মুখে ছড়িয়ে দিলো ৷ আশিকুর না চাইতে ও নেশায় বুদ হয়ে গেলো ৷ জ্যাক আশিকুর কে গাড়িতে তুলে মেঘ কে মেসেজ করে সব টা জানিয়ে দেয় জ্যাক ৷ মেঘ মেসের পরে রিপলে পাঠিয়ে দিতে জ্যাকের মুখে এক পৌশাচিক হাসি ফুটে উঠলো ৷ আশিকুর নিজের আস্তানায় নিয়ে আসে জ্যাক ৷ জ্যাক ওর লোক দের কিছু একটা ইশারা করতে কয়েক জন লোক বড় কাঠের একটা ক্রুশ নিয়ে আসে তারপর জ্যাকের নির্দেশে আশিকুর কে ওই ক্রুশের উপর শুইয়ে দিয়ে হাতে পায়ে দড়ি দিয়ে বেধে দেয় ৷
*
*
*
*
—” এই এই আপনারা কারা হা এভাবে আমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন কোথায় .? গাড়ি থামান আমি বলছি গাড়ি থামান নয়তো আমি চিৎকার করবো..”(ফারহা)

—” ম্যাম প্লিজ শান্ত হোন আপনাকে আপনার গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে..”(আসলাম)

— আরেবাস এরা কি সত্যি কিডনাপার নাকি অন্য কিছু ..? কিডনাপার হলে তো এতোক্ষনে আমাকে অজ্ঞান করে নিয়ে যেতো তা তো করছে না .! তাহলে এদের মুটিভ টা কি ..?? আর কোন গন্তব্যের কথা বলছে এই মুখ পোড়া হনুমান গুলো জানতে চাইবো ..?? নাহ থাক দেখি কি করে এরা ?? কিন্তু এতোক্ষন চুপ থাকবো কি করে পেটের ভিতর কেমন যেন গুর গুর করে চুপ থাকলে নাহ এদের কে একটু জ্বালাই দেখি কি বলে ..!!

— ” এই মুখ পোড়া হনুমান আমার কোন গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন শুনি..?? নাহ মানে বর্তমান গন্তব্যে হচ্ছে আমার কলেজ আর সেখান থেকে আপনি আমাকে তুলে নিয়ে এসেছেন কেন..??”(ফারহা)

—” ম্যাম একটু পর সবটাই জানতে পারবেন ততোখনে …বাকিটা বলতে না দিয়ে ফারহা বলে উঠলো ..” এই এই একমিনিট আপনাকে কোথায় যেনো দেখেছি বলে মনে হচ্ছে তাকান তো আমার দিকে আপনার হনুমান মার্কা মুখটা আমি ভালো করে একবার দেখি..??”

আসলাম না চাইতেও অবাক হয়ে ফারহার কথা শুনে যাচ্ছে আর ভাবছে ” আল্লাহ মাত্র পাচঁ মিনিট হলো আর এর মাঝে আমাকে কতো কথা না শুনিয়ে দিল এতো কথা কি করে একটা মানুষ বলতে পারে ..??”

—” হায় হায় এ ব্যাটারে তো আমি হাসপাতালে দেখছিলাম মেবি কিন্তু কেনো যেনো …? ধুর ছাই মনে পরছে না ৷ কিন্তু এ তো আমার বন্ধু বা আত্নিয় না তাহলে আমাকে নিয়ে কই যাচ্ছে ..?? আচ্ছা মিষ্টি কথা বলে আবার আমাকে বিক্রি করে দিবে না তো..?? ফারহা কথা গুলো ভাবতেই ভয়ে এক শুকনো ঢোক গিললো ..””

হঠাৎ করে ফারহার চোখে মুখে ভয়ের ছাপ দেখে আসলাম ও ঘাবড়ে গেলো ৷

—-” ম্যাম আপনি ভয় পাবেন না প্লিজ দেখুন আপনার কোন ক্ষতি করবো না ৷ আপনি প্লিজ ভয় পাবেন না৷ ”

বলতে বলতে গাড়ি থেমে গেলো ফারহার পিছুনে বসা লোক টা হুট করে ফারহার চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেধে ফেলে এবার ফারহা ভিষন ভয় পেয়ে যায় চিৎকার করতে যাবে তার আগে ফারহার মনে হলো ও শূন্যে ভাষছে বেপার টা এমন কেউ একজন ফারহা কে কোলে নিয়ে আছে ৷

—” আল্লাহ গো আমি ঠিক ভাবছিলাম এরা মিষ্টি কথা কইয়া আমার মতো নিশ্পাপ বাচ্চা মেয়েদের তুলে নিয়ে এসে বিক্রি করে দেয় ৷ এখন আমার কি হবে আমার আর বিয়ে করা হলো না আর না আমার নাতি নাতনির মুখ দেখা হলো এ্যা এ্যা এ্যা এখন আমার কি হবে ……

ফারহার চোখ বাধা অবস্তায় ভয়ে উলটা পালটা কথা বলছে আর হাত পা ছুড়ছে মেঘ ফারহার উদ্ভট কথা শুনে হাসি চাপিয়ে রাখতে না পেরে হা হা করে হেসে উঠলো ৷ মেঘের হাসির ঝংকার ফারহার কানে আসতে ফারহা চুপ করে শুনতে থাকে হাসির আওয়াজ ৷ মেঘ ফারহা কে ফুলের বাগানের মাঝখানে দার করিয়ে দিয়ে চোখের বাধন খুলে দেয়………

—” কেউ মনে হলো আমার চোখের বাধন খুলে দিলো ৷ চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি আমার সামনে হিরোর স্টাইলে দারিয়ে আছে সেদিনের সেই আহত যুবক যাকে দেখে একটা বড়সর বাস থুক্কু ক্রাশ খেলাম৷ নাহ ফারহা এখন তোর ইমোশন তোর ব্যাগে রাখ এখন ভাব এই ব্যাটা তোরে ক্যান তুলে নিয়ে আসছে…??”

— “কখন থেকে দেখে যাচ্ছি প্রেয়শী আমার দিকে তাকিয়ে কি যেনো মনে মনে ভেবে যাচ্ছে হয়তো কিছু মনে করার চেষ্টা করছে আর না করলেও আমি আছি তো মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ….

মেঘ ধিরে ধিরে ফারহার সামনে দারিয়ে ফারহার কপালে ভালোবাসার পরশ দিতে ফারহা ধ্যান ভাঙ্গে ৷ এভাবে অচেনা কোন লোক ওর পার্মিশন ছাড়া টার্চ করছে এটা ফারহা মেনে নিতে পারে নি ৷ মেঘ কিছু বলতে যাবে তার আগেই ঠাসসসস করে একটা শব্দ হলো ৷ হ্যা ফারহা মেঘ কে থাপ্পোর মেরেছে আর তার শব্দ টা এতো জোড়ে হলো যে মেঘের গার্ড রা সবাই হা করে চেয়ে আছে৷ গার্ড রা ফারহার দিকে এগোতে যাবে তখনি মেঘ হাতের ইশারায় থামিয়ে দেয় গার্ডদের ৷ গার্ডরা মেঘে ইশারায় ওখানে থেমে যায়……………

— ” হাউ ডেয়ার ইউ ..আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে টার্চ করার..?? ” (মেঘের শার্টের কলাট ধরে )

— ” নিজের জিনিস টার্চ করতে কারোর পার্মিশন প্রয়োজন হয় জানা ছিলো না..”(মেঘ)

—” নিজের জিনিস মানে ..?? আমি আপনার নিজের জিনিস কখন থেকে হলাম..??”(ফারহা)

মেঘ এবার ফারহার মুখে হাত রেখে বলে উঠলো ” যখন তুমি আমায় রক্তাক্ত অবস্তায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে হসপিটালের ভর্তি করেছিলে সে মুহূর্তে ৷ ”

— মানে টা কি ..?? যাস্ট আপনাকে হসপিটালে ভর্তি করেছি বলে আমি আপনার জিনিস হয়ে গেলাম..???”

— ” নাহ জিনিস না তুমি আমার কলিজা , আমার হৃদস্পন্দন , আম,,,বাকিটা বলতে না দিয়ে ফারহা বলে উঠলো …” লিসেন মেঘ না কি ওয়াট এভার ভালো করে আমার কথা টা শুনে রাখুন সে দিন আপনাকে মানবতার খাতিরে হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলাম কারন চোখের সামনে কোন আহত ব্যাক্তি কে চোখের সামনে মরতে দিতে পারি না তাই আর আপনি সমান্য বিষয় টা কে একে বারে কোন পর্যায় ফেলেছেন বুজতে পারছেন ..?? দেখুন আমি আপনার বিষয় সব টা ক্লিয়াররি না জানলে ও এই টুকু বুজতে পারছি আপনি মটেও ভালো লোক না ৷ ভালো লোক হলে কেউ আপনাকে এভাবে মাঝ রাস্তায় গুলি করে ফেলে রাখতো না…..”

ফারহার কথা গুলো শুনে মেঘ হা হা হা করে হাসতে লাগলো এদিকে ফারহা মেঘের হাসির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে আর তাকিয়ে থাকবে না কেনো সূর্যের সোনালি আলোয় এই ডেন্জারাস লোকটার সৌন্দর্য উপচে পরছে ছোট ছোট চোখ সাথে গাঢ় নীল চোখের মনি ঘন বড় বড় চোখে পাপড়ি হালকা ব্রাউন কালার সিল্কি চুল খাড়া নাক চিকন লাল টুক টুকে ঠোট হালকা চাপদারি আবার ঠোটের নিচের ডান পাশে কালো কুচ কুচে ছোট একটা তিল যা যেনো হাজার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে লোকটার যে কোন মেয়ে এই লোকটার প্রেমে পরতে বাধ্য ৷ বডির কথা তো আগে একবার বলেছি মাশাআল্লাহ পুরো বলিউড হিরো (হায় হায় আমি এই লোকটার রুপের বর্ননা দিচ্ছি কেনো পাঠকরা তো আমাকে লুচু মেয়ে ভাববে আমি কিন্তু মটে ও লুচু না😒😒)

মেঘ হাসি থামিয়ে পাশ থেকে একটা লাল গোলাপের তোরা নিয়ে ফারহার সামনে হাটু গেরে মেঘ বসে পরে………..

*
*
*
*
#চলবে………..🍁
(বিঃদ্রঃ ভুলট্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here