প্রিয়তমা❤️ #সিজন_২ #writer-সালসাবিল সারা পর্ব-৫

0
1455

#প্রিয়তমা❤️
#সিজন_২
#writer-সালসাবিল সারা
পর্ব-৫
*
*
সাদিফ ভাইয়া আমার আর জুমুর দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন আর তখনই গাড়ি থেকে ড্রাইভার নেমে আসলো।
ওহমা!!…ড্রাইভারকে রেস্ট করতে দিয়ে সাদিফ ভাইয়া নিজে গাড়ি ড্রাইভ করছিলেন!!কিন্তু কেনো??

আমার এসব জল্পনা কল্পনা শেষ না হতেই সাদিফ ভাইয়ার চিৎকার আমার কানে প্রবেশ করলো…

“এইলোক গুলো এখানে এভাবে কাতরাচ্ছে কেনো..?? আগে আমাকে কাহিনী বল এদের…তারপর তোদের দেখছি”।

সাদিফ ভাইয়ার চিৎকারে আমি জুমুর পিছে লুকিয়ে গেলাম। কি জোরে চিৎকার দেয় রে ভাই!!!জুমু এক নিঃশ্বাসে বলে উঠলো…

“আসলে ভাই এরা আমাদের প্রস্টিটিউট বলে আমাদের রেট জিজ্ঞেস করছিলো।। এই ব্লু শার্ট পড়া ছেলেটা শেফার হাত ধরে অ্যান্ড এইযে টাকলা লোকটা আমার হাত ধরে টানাটানি করছিলো।।।তাই আমি আর শেফা বুদ্ধি করেই ওদের ইয়ে মানে”…!!

জুমুর কথা শুনে সাদিফ ভাইয়া পাঞ্জাবির এলোমেলো হাতাটা ঠিক করে হাত দিয়ে উনার কপালে কিছুক্ষণ ঘষামাজা করতে করতে আশে পাশে কিছু খুঁজতে লাগলেন।।

আর এইদিকে ঐ নীল শার্ট পড়ানো লোকটা একটু উঠতে নিলেই সাদিফ ভাইয়া একদৌড়ে গিয়ে লোকটাকে ধুপ করে একটা লাথি মেরে দিলেন।।আর সাথে সাথেই ঐ লোক গিয়ে পড়লো তার ড্রাইভারের উপরে।

ব্যস শুরু হলো সাদিফ ভাইয়ার কন্টিনিয়াসলি লাথির বৃষ্টি।।এই সুঠাম দেহি মানুষটার হালকা হাতের থাপ্পরেই অনেক ব্যাথা।।
তবে এদের তো উনি সম্পূর্ণ গায়ের জোর দিয়ে মারছেন।।আজ তো এদের হাড় ভেঙেই উনি দম নিবেন।

ছেলেগুলোর আকুতি মিনতি সাদিফ ভাই কানেও নিচ্ছেন না।।

.

এখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মুষলধারের বৃষ্টিটা থেমে গেছে অনেক আগেই।

আমি আর জুমু দাঁড়িয়ে আছি আর ড্রাইভার আমাদের মাথার উপর ছাতা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন পাশে।

আমরা সাদিফ ভাইয়ার মাইর দেখছি। উনি এখনো এদের মারছেন আর চিল্লাচ্ছেন…

“সাহস!এত্ত সাহস???যাদের আমি তোদের মতো অমানুষ থেকে বাঁচিয়ে রাখি,আর সেখানে তুই কিনা!!তোর এত্ত সাহস দেখে সত্যি অবাক হলাম।
যাদের আমি ফুলের টোকা লাগতে দিই না আর সেখানে তুই ওদের কি বললি??? উফফফ!!!
আমার জানদের দিকে তাকানোর শাস্তি ভোগ কর এখন”।।

বলেই উনি উনার মতোই মারছেন।। আশে পাশে এখন অনেক মানুষ।তবে কেউ সাদিফ ভাইয়াকে থামাচ্ছেন না।

সাদিফ ভাইয়ার মতো বড় পলিটিশিয়ান কে চিনে না?? আর হয়তো সবাই উনার রাগ সম্পর্কেও জানে……
তাই উনাকে কেউ কিছু জিজ্ঞেস বা কিছু বলার দুঃসাহস করছেন না।।

আসলে সাদিফ ভাইয়ার এখন মাইর থামানো উচিত না।এসব অমানুষ যারা মেয়েদের সম্মান করতে জানে না,শুধু পণ্য হিসেবে জাজ করে,এদের এমন মাইর খাওয়া উচিত।।যাতে কখনো মেয়েদের কিছু বলার আগে দশ বার চিন্তা করে।

🌸

বেশ কিছুক্ষণ পরে সাদিফ ভাইয়ার বডি গার্ডদের গাড়ি এসে আমাদের সামনে থামলো।বডি গার্ডরা নেমেই সাদিফ ভাইয়ার দিকে এগিয়ে গেলো।।

সাদিফ ভাইয়া ঐ লম্পট দুইটিকে মেরে এতক্ষণে শান্ত হলেন একটু আগে।।কিন্তু ঐ জায়গা থেকে আর নড়ছেন না।এক পলকে ঐ অমানুষদের দিকে তাকিয়ে আছেন।।

শুধু কিছুক্ষণ পর পর উনার চুল গুলোকে উপরের
দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

কি ভাবছেন সাদিফ ভাইয়া মনে মনে আল্লাহ্ জানেন।।

“সরি স্যার।।আসলে আপনার গাড়ি কখন কোনদিকে চলে গিয়েছিলো তা আমরা বুঝতে পারিনি।
উয়ি আর এক্সট্রিমলি সরি স্যার”।।(বডি গার্ডদের মধ্যে একজন বলে উঠলেন)

সাদিফ ভাইয়া কিছু না বলেই একপলক বডি গার্ডটার দিকে তাকালেন আর বলে উঠলেন….

“আমিই গাড়ি নিজের মাপে চালিয়েছি তাই আপনারা আমার গাড়ি ফলো করতে পারেন নিই।।শহীদ সাহেব
ঐসব কথা বাদ দিন।।এখন এক কাজ করেন এদের(অর্ধমৃত ঐ অমানুষের দিকে ইঙ্গিত করে) তুলে নিন।সোজা হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। এদের সুস্থ করে তুলে এরপর থানায় নিয়ে যাবেন।
ওসির সাথে আমি কথা বলে নিবো পরে।আরো অনেক শাস্তি বাকি আছে এদের”।

“ওকে স্যার”।বলেই বডিগার্ড চারজন তাড়াহুড়ো করে উনাদের গাড়ি করে অমানুষ দুটোকে নিয়ে গেলেন।

এখন সাদিফ ভাইয়া আমাদের অবস্থা কি করবে ভাবতেই আমার পেটে মোচড় দিচ্ছে।তার উপর এই বৃষ্টিতে মজা করে ভেজার ফলে আমার ভিতরটা কাঁপছে।

বাহ্ বাহ্ শেফা!!!
আজকে তোর জ্বর আর সাদিফ ভাইয়ার মার থেকে রেহাই নেই।

সাদিফ ভাইয়া আমাদের কাছে এসেই জুমুকে জোরে একটা থাপ্পর দিয়ে জুমুর গাল চেপে ধরলেন…

“কোচিং শেষে এইদিকে কি জন্যে এসেছিলি..???আমি নিতে আসবো বলিনি..??আদনান মানা করা সত্ত্বেও কেনো দৌড় দিলি..??আর এই অন্ধকার রাস্তাটায় পেয়েছিলি এসে ঢং করার জন্যে..?? ছয় বার এদিকে গাড়ি নিয়ে গেলাম কিন্তু একবারও তোরা চোখে পড়িস নি।উত্তর দে আমাকে বেআদব!!!(চিল্লিয়ে)

সাদিফ ভাইয়ার চিৎকার শুনে আমি আমার কানে হাত দিয়ে কান চেপে ধরলাম আর জুমু কান্না করতে করতে বলে উঠলো….

“এইদিকেই তো ছিলাম ভাইয়া।তুমি কেনো দেখো নি তা তো জানিনা। আ..র ঘড়ি নষ্ট থাকায় টাইম আন্দাজ করতে পারি নি।ভেবেছিলাম আর্লি ঘুরা হয়ে যাবে।কিন্তু ক…কখন এমন লে..ট হবে তা বুঝে উঠতে পারি নি”।

“ব্যস…কান্না অফ কর।গাড়িতে গিয়ে বস। এমন ভুল আর কোনো দিন হলে জিন্দা মাটিতে পুঁতে দিবো”!!
সাদিফ ভাইয়ার এমন ধমকানিতে ভেবেছিলাম আমার আর কোনো বিচার হবে না।

এখন বাড়ি যাওয়ার পালা।শরীরটাও আর নিতে পারছে না এই ঠান্ডা।

জুমুর পিছে আমিও যেতে নিলে সাদিফ ভাইয়া আমার হাত ধরে টান দিলো আর আমি থেমে গেলাম।

জুমু তো মার খেয়ে পাথর হয়ে গেলো। হাঁটতেই আছে সে।
পিছে যে আমার কি হাল হবে সে আর ফিরেই দেখছে না।নাকি সে জানে আমার বিচার এখনো বাকি আছে তাই সে যেচে আর সাদিফ ভাইয়ার কাজে ইন্টারফেয়ার করছে না!!

সাদিফ ভাইয়া আমার হাত ধরে টেনে একদম উনার কাছে নিয়ে নিলেন।
আমি ভয়ে চোখ নিচে নামিয়ে রাখলাম আর নিজের কামিজ খামচে ধরে রাখলাম।উনার এই ভয়ংকর চোখের দিকে তাকানোর সাহস নেই আমার।

সাদিফ ভাইয়া আমার মুখ অনেক জোরেই চেপে ধরলেন আর আমি উনার দিকে চোখ তুলে তাকালাম।

রাস্তার এই সোডিয়াম লাইটে উনার ফর্সা মুখটা আরো বেশি সাদা মনে হচ্ছে।তার উপর উনার ছোট ছোট চোখগুলো লাল হয়ে আছে।আর উনার মুখে গায়ে বৃষ্টির পানি।উনার গায়ে ছাই রঙের পাঞ্জাবিটা বৃষ্টিতে আধভেজা হয়ে আছে।
কয়েক সেকেন্ডেই আমি সাদিফ ভাইয়াকে ভালোই পর্যবেক্ষণ করে নিলাম।লোকটা আসলেই প্রচন্ড সুন্দর।

কিন্তু এই সুন্দর লোকের মুখের কথা শুনে আমার অন্তর কেঁপে উঠলো….

“খুব শখ তোর???নিজের এই ফিগার অন্যদের দেখানোর??এইযে বৃষ্টিতে ভিজেছিস গায়ের কাপড় তো একদম গায়ের সাথেই চিপকে রয়েছে।যে কেউ তো দেখে বাজে কথা বলবেই। ওরনাটা দিয়েও কি লাভ হলো???ভিজে তো একেবারে গায়ের উপরে জেকে বসেছে”।

এই সুন্দর মানুষটার মন আর মুখ এত বাজে তা আমি ভালো করেই জানতাম।কিন্তু এতো বাজে!!! তা তো কখনো ভেবে দেখি নিই।

“সাদিফ ভাইয়া!!!আপনার মুখের ভাষা এতো বাজে কেনো..??নেতা মানুষদের বুঝি মন দিল কিছুই নেই??
আপনার কি একটুও রুচিতে বাঁধেনি আমাকে এসব কথা বলার”..??

আমার কথার জবাবে সাদিফ ভাইয়ার কোন ভাবান্তর হলো না। উনি উল্টো আমার চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে ভারী গলায় বলে উঠলেন….

“এই লম্বা লম্বা চুলও তো খুলে দিয়েছিস। বাহ্ বাহ্।।খুব সুন্দর”।
আমি চুপ করে থাকল।।চুলে টান পড়ায় প্রচন্ড ব্যাথা ব্যাথা পাচ্ছি।
সাদিফ ভাইয়া এবার আমার কান টেনে ধরলেন। কানে জোরে টান দিয়ে বললেন….

“আর কখনো এমন ভুল হবে??এভাবে আর কখনো না বলে কোথাও যাবি…?ফের যদি এমন কিছু করিস তোরা… গড প্রমিজ! মেরে আমি তোদের তক্তা বানিয়ে দিবো”।
কথাটা বলেই সাদিফ ভাইয়া কান ছেড়ে দিলেন।।

আর আমি অপমানিত হয়ে মাথা নিচু করে কান্না করতে করতে সাদিফ ভাইয়াকে মাথা নাড়িয়ে “না” বললাম।।

সাদিফ ভাইয়া “গুড”বলেই আমার হাত ধরে টেনে গাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।।

আমার তো সেই লেভেলের সর্দি লেগে গেলো মুহূর্তেই। আমার নাকের পানি আর চোখের পানি মিলে এক হয়ে যাচ্ছে।

🌸

গাড়ির কাছে নিয়েই সাদিফ ভাইয়া দরজা খুলে দিলেন।
আর আমিও বাধ্য মেয়ের মতো বসে পড়লাম।
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সাদিফ ভাইয়াও আমার পাশে বসে গেলেন,তাও একেবারে আমার গা ঘেঁষে।

সাথে সাথেই ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট করে দিলেন।। ড্রাইভার কাকা যেনো এই কাজেরই অপেক্ষা করছিলেন।

সাদিফ ভাইয়া তো সচরাচর পিছনের সিটে বসেন না।।।আর তাছাড়া আমি সাদিফ ভাইয়াকে সবসময় সামনের সিটেই বসতে দেখেছি।।তাহলে উনি আজ এখানে কেনো বসলেন..??
এসব কথা আনমনে ভাবতে লাগলাম।

কিন্তু আমার ভাবনার মাঝে জুমু আমাকে ফিসফিসিয়ে বললো…

“দোস্ত..!!চুল টানা আর কান টানা কেমন উপভোগ করলি”??

আমি অসহায় চোখে জুমুর দিকে তাকালাম।।জুমু তার ওরনা দিয়ে নিজেকে একেবারে মুড়িয়ে নিয়েছে।।আমি সাদিফ ভাইয়ার পাশ থেকে সরে জুমুর দিকে আরো চেপে বসলাম।

আমি জুমুকে কিছু বলার আগেই পরপর চারটা হাঁচি দিয়ে দিলাম।

সাথে সাথেই আমার দিকে টিস্যু এগিয়ে দিয়ে সাদিফ ভাইয়ার চিল্লানি….

“ভেরি গুড।।একটু পরেই জ্বর আসবে তোর।।ইচ্ছা তো করছে দুইজনকে লাঠি পিটা করি। অসভ্যের দল।। জুমান তোরও কি জ্বর আসছে”???

“না ভাইয়া।।আমি ঠিক আছি”।

আমি আর জুমু সিটে হেলান দিয়ে বসে আছি।।পাশে সাদিফ ভাইয়া মোবাইলে কি কি যেনো করছে।।

হঠাৎ একটু পরেই উনি গাড়ি থামাতে বললেন।।কোথায় যাবেন আল্লাহ্ জানেন।

আমার তো ঠান্ডায় অবস্থা ডাল হচ্ছে।বৃষ্টিতে ভেজার মজা খুব ভালো ভাবেই পাচ্ছি।।

সাদিফ ভাইয়া ফিরে এলেন একটা প্যাকেট নিয়ে।।আবারো আমার পাশে এসে বসলেন।।আর প্যাকেট থেকে তাওয়াল বের করে, আমাকে আর জুমুকে দুটো তাওয়াল ধরিয়ে দিলেন।

“আপাতত এগুলা দিয়ে কভার করে নে।একটু পরেই মেইন রোডে উঠবো আর ট্রাফিকে বসে থাকতে হবে।রাস্তার কাজ চলছে।।আরো ঠান্ডা লেগে যাবে তখন”।

আমি আর জুমু দেরি না করেই তাওয়াল দিয়ে নিজেদের মুড়িয়ে নিলাম।যাক এখন একটু আরাম লাগছে।কিন্তু এই হাঁচি তো থামছেই না।আর ঠিকই বুঝছি শরীরের তাপমাত্রা বাড়ছে আমার!!

জুমু তো আমার কোলের উপরেই ঘুম।আধাঘন্টা ধরে ট্র্যাফিকে বসে আছি। সাদিফ ভাইয়াও চুপচাপ আমার গায়ের সাথে চিপকে বসে আছেন আর আমি এই দুই ভাইবোনের মাঝে চাপা পড়ে চোখ বন্ধ করে আছি।।

হঠাৎ সাদিফ ভাইয়া আমার মাথা টেনে উনার কাধে রাখলেন।আমি সরতে চাইলেই দিলেন এক ধমক…

“জ্বর আসছে তোর।চুপচাপ আমার কাধে হেলান দিয়ে রাখ.. না হলে মাথা ধরবে তোর। আর মাথা সরাতে চাইলে চট করে একটা থাপ্পর খাবি”।

আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ সাদিফ ভাইয়ার কাধে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলাম।।

*
*

“ফুল,বেবি, জান!!!চোখ খুলো।গাড়ি থেকে নামতে হবে তো।অনেক ঘুমিয়েছো।এবার চোখ খুলো ভেজা কাপড়ে আর কতক্ষণ থাকবে”!!

এমন আরো কিছু লাইন আমার কানে ভেসে আসছিলো…কিন্তু চোখের মাঝে যেন রাজ্যের ঘুম জেঁকে বসলো।

খুব কষ্ট করে চোখ মেলে তাকালাম।তাকিয়ে দেখলাম সাদিফ ভাইয়া আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।

ওহহ উনি!!!ধুর!!!ঘুমের মাঝে কি কি ভাবতে লাগলাম।

আমার চোখ খুলতেই সাদিফ ভাইয়া আমাকে ধরে নামালেন গাড়ি থেকে।আমি উনার থেকে হাত ছাড়িয়ে নিলাম। সাদিফ ভাইয়া কিছু বলতে যাবেন এর আগেই ইতি আপু এসে আমাকে ভিতরে নিয়ে গেলেন।

রুমে যেতেই খালামণি আমার কপালে গলায় হাত দিয়ে
তাপমাত্রা চেক করতে লাগলেন।

“তোদের সাদিফ বকা দিয়ে,খুব ভালো করে। দুইবোন হয়েছিস কার মতো তোরা?? কারো পরোয়া করিস না কেনো তোরা???এখন যে তোর জ্বর বাঁধিয়েছিস!! সাদিফ এখানে না এনে তোদের বাসায় নিয়ে গেলে তোর মায়ের মাইর থেকে বাঁচতে পারতি”??
লেকচার দিতে দিতেই খালামণি আমার গায়ের তাওয়াল দিয়েই আমার মাথা শরীর মুছতে লাগলেন।
আর আমি চুপচাপ খালামনির কথা শুনছি।

জুমু ওয়াশরুম থেকে বের হতেই ইতি আপু আমাকে কাপড় দিয়ে বললো….

“ফুল!! ওয়াশরুমে যেতে পারবি একা?? নাকি আমার হেল্প লাগবে”???

“নাহ!! শেষ আপু। আমি একা যেতে পারবো”।।
বলেই ওয়াশরুমে চলে গেলাম… ফ্রেশ হয়ে পালাজো আর টিশার্ট পড়ে নিলাম।

ইতি আপু গরম পানির বোল এনে দিলেন।আমি আর
জুমু মিলে গরম পানির ভাব নিচ্ছি।আমার জ্বর এসে কাঁপাকাঁপি ছুটে গেলো।
কিন্তু জুমু দিব্যি রাফসান ভাইয়ার সাথে মোবাইলে কথা বলছে আর পানির ভাব নিচ্ছে।।

একটু পরে খালামণি এসে আমাদের গরম গরম স্যুপ খাইয়ে দিলো।। আমাকে তিতা সিরাপ আর সাথে কিছু ট্যাবলেট খাইয়ে এরপর খালামণি রুম থেকে গেলেন।।

ওষুধ আর খাবার খেয়েই আমি কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে পড়লাম।
ইতু আপু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর আমি আস্তে আস্তে ঘুমের দেশে পাড়ি জমাচ্ছি।।

জ্বর আস্তে আস্তে বাড়ছে এটা আমি বেশ বুঝতে পারছি।আর তার সাথে খেয়াল করছি.. কেউ আমার হাতে কিছু একটা মালিশ করছে।।

চোখ খুলে আশপাশ বুঝার চেষ্টা করতে লাগলাম।আমার পাশে জুমু ঘুম আর অন্যপাশে ফিরতেই আমার
হুঁশ উড়ে গেলো।।

সাদিফ ভাইয়া আমার হাতে কিছু একটা মালিশ করছে। আর ইতি আপু ভাইয়ার পাশে বসে আছে।।মালিশ করার পাশাপাশি সাদিফ ভাইয়া কিছু একটা পড়ে আমার গায়ে ফুঁক দিচ্ছেন।

একটু চোখ খুলেই আমি আবার বন্ধ করে দিলাম।কারণ আমি জানি এটা আমার একটা মনের ভুল!! যা আমার জ্বরের প্রভাবে হচ্ছে।।

এই জ্বরের কারণে তখন গাড়িতে কি কি কল্পনা করে বসলাম। আর এখন এই অসম্ভব কান্ডটা।। জ্বর আমাকে ভালোভাবেই আপন করে নিয়েছে।।

কিন্তু যায় হোক।।কল্পনায় হলেও এই সাদিফ ভাইয়া আমার সেবা করুক।।নাহলে বাস্তবে উনার সেবা পাওয়া আমার কপালে নেই।
এসব আজগুবি কথা ভাবতে ভাবতেই আবারো ঘুমের দেশে পাড়ি জমালাম।।

চলবে..❤️
সবাই অনেক অপেক্ষা করেন গল্পের জন্যে।আমি জানি।কিন্তু আমি নিজেই অসুস্থ হয়ে গেলাম।চোখের যন্ত্রণায় মোবাইল নিতে পারছিনা।। করোনার কারণে এখন হসপিটালে যাওয়াও সেফ না।আপাতত চোখ একদম ভালো হলেই গল্পে ফিরবো।ততদিন সবাই ভালো থাকবেন আর নিজের যত্ন নিবেন।।অনেক কষ্টে এই পার্ট লিখলাম দুইদিন ধরে।।
আর আমি বারবার বলছি আমার এই একটাই আইডি। দয়া করে সবাই আমার ফেক আইডি থেকে দূরে থাকবেন।।🙂
নেক্সট কমেন্ট করবেন না।এত কষ্ট করে গল্প লিখার পরে আপনাদের নেক্সট লিখাটা দেখলে একদম মন খারাপ হয়ে যায়।।
কেমন লেগেছে গল্প তা জানাবেন অবশ্যই।
হ্যাপী রিডিং ☺️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here