মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️ 🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒 ইভা_রহমান Part-23

0
727

😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒

ইভা_রহমান
Part-23

✅12_13 & 24_25 পার্ট Fb lite দিয়ে পড়া যাচ্ছে না,,অনুগ্রহ করে নরমাল এফবি দিয়ে পড়ুন!!

পরের দিন বউভাত সেরে সবাই মিলে একটা বাস রিজার্ভ করে ঢাকা ফেরবার জন্য,ঝিনুক হিয়াকে সহ সাব্বির কে কিছু খাবার প্যাক করে দেয় কারণ এরা দুজনেই সাবলেটে থাকে বাড়ি গিয়ে কখন রাঁধবে এই ক্লান্ত শরীরে তাই জন্য

বাসে হিয়ার পাশে শ্রাবণ বসলেও উজান এসে জায়গার সংকট এর বাহানা দিয়ে ঠিক হিয়ার পাশে বসে পড়ে,,উজান একটা চুইংগাম মুখে দিয়ে চিবোতে থাকে আর একটা শ্রাবণকে মুখে ঢুকে দেয়

হিয়াঃ জাস্ট এই আড়াই তিন ঘন্টা,,তারপর যদি আমি আর আপনাকে আমার আশেপাশে ঘুরতে দিয়েছি তো আমার নামো হিয়া মুনতাসীর না

উজানঃ তাই,, তা চাচাতো বউ তোমার মনে হয় আমি এতো সহজে তোমাকে রেহাই দেবো হি হা হা হা

হিয়াঃ সারুন তো পিছিয়ে বসুন,,জায়গার অভাব পড়ছে যেনো ওপাশে

উজান একটা ভেংচি কেটে শ্রাবণের সাথে বক বক করতে করতে অর্ধেক রাস্তা পাড় করে দেয়,এদিকে হিয়া সেই প্রথম থেকে জানালার দিকে হেলান দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে তো আছে,,সন্ধ্যা নামছে সূর্য টা পশ্চিমা আকাশ থেকে একটু একটু করে নেমে পড়তে শুরু করছে,কালকের বৃষ্টির হিমেল বাতাস এখনো বইছে,,কালো মেঘের আবরণ জানান দিচ্ছে একটু পর আবার হয়তো ঝড়ো বৃষ্টি নামবে,,

একটা সময় ভালো ভাইয়ার সাথে খেলতে খেলতে শ্রাবণ উজানের কোলে ঢুলে পড়ে_____উজান চুইংগাম টা দিয়ে একটা বড় বাবল বানিয়ে বা হাতে হিয়াকে খোঁচা দিতে থাকে

হিয়াঃ কি হলো কি,খুচাচ্ছেন কেনো এ-রকম করে

হিয়া মুখ ফিরিয়ে উজানের দিকে তাকালে দেখে উজান কি রকম বড় বাবল টা মুখে ধরে দম আঁটকে আছে,,একদম পুরো বাচ্চাদের মতো লাগছে,,হিয়া একটা ফিঁক করে হেঁসে দেয়,,হিয়ার মুখের হাসি দেখে উজানো হেঁসে ফেলে কিন্তু একটু নড়তেই বাবল টা ফটাস করে ফুটে উজানের পুরো ঠোঁটে থুতনিতে কিছুটা নাক বরাবর লেপ্টে যায়,,উজানের মুখ টা দেখার মতো হয়,,হিয়া তো তা দেখে পুরো হাসতে হাসতে কুপোকাত

হিয়াঃ বেশ হয়েছে,,আমাকে সারাদিন জ্বালিয়ে মারেন এখন বুঝোন,,প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিচ্ছে

উজান রাগে গটগট করতে থাকে,এখন মুখ কি দিয়ে মুছবে তাই খুঁজতে শুরু করে,,কিছু না পেয়ে এক টানে হিয়ার ওরনা টেনে নিয়ে ঠোঁট আর থুতনি থেকে চুইংগাম টা সারাতে চেষ্টা করে,,

হিয়াঃ আ হা কি হচ্ছে টা কি

উজানঃ এই দেখো তো আরো কোথাও লেগে আছে না-কি কিছু

উজানের প্রশ্নে হিয়া উজানের ঠোঁটের দিকে তাকাতে গিয়ে উজানের ঔ ঠোঁট জোড়ার মধ্যে আঁটকে যায়,,পিংক পিংক ঠোঁট গুলো এতো কচলাকচলির চোটে আরো ফুলে লাল হয়ে উঠেছে,,তারউপর তিরতির করে কাঁপছে,,যেনো প্রত্যেক নারীকে নেশা ধরিয়ে দেবার জন্য এই ঠোঁট দু’টোই যথেষ্ট

উজানঃ ওভাবে চেয়ে থেকো না আমার মন প্রেয়সী, যখন তখন ভুলভাল কিছু হয়ে যাবে এবার তোমার দ্বারা!!

উজানের কথায় লজ্জা পেয়ে হিয়া মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চাপা হাসি দিয়ে উঠে,,উজান সন্ধির থেকে আয়না নিয়ে দেখে ওর মুখে আর চুইংগাম লেগে আছে কি না,,মুখ দেখা হয়ে গেলে উজান হিয়ার দিকে ঝুঁকে আসে,,হিয়া তখন জানালার কানিতে এক হাতে নিজের ভর রেখে বাহিরে তাকাতে ব্যস্ত,,সূর্য প্রায় ডুববে ডুববে,,পাখিরা দল বেঁধে আকাশ পথে নিজেদের বাড়িতে ফিরছি,,অনেক দোকানে সন্ধাবাতি জ্বালানো শুরু হয়েছে,,অফিস থেকে কেউ বা বাড়ি ফেরার জন্য বাস খুঁজছে,,

হিয়া আনমনে সেসব দেখায় ব্যস্ত,,উজান যে কখন হিয়ার মাথার কাছে এসে হিয়ার সাথে নিজেও প্রকৃতির ব্যস্ততা দেখছে হিয়া টের পাই নি,,দেখছে দেখছে দু’জনই প্রকৃতি দেখছে কিন্তু হঠাৎ হিয়া মুখ টা হুট করে এ পাশ ফিরতে যাবে ওমনি হিয়ার ঠোঁট গিয়ে আটকে যায় উজানের ঠোঁটে!!

হিয়া শকড উজানো কম্পিত,,কি হলো এটা,,দুজনে বুঝতে চেষ্টা করছে কি হচ্ছে,,দু’জনের ঠোঁট অনেকক্ষণ চিপকে আছে একে অন্যের সাথে,,হঠাৎ বাসের হর্নের কড়া শব্দে দুজনে কেঁপে ওঠে একে অন্যের থেকে দূরে ছিটকে যায়,,

উজানঃ ক ক কোন কোন জায়গা এটা ওটা দেখতেই মুখ টা হেলে দিয়েছিলাম বাহিরে

হিয়াঃ ঠিক আছে

দুজনে লজ্জায় প্রায় চুপ থাকে অনেকক্ষণ,,হিয়া আবার মন দেয় বাহিরে,,উজান শ্রাবণকে ভালো করে কোলে নিয়ে সীটে হেলান দেয়,,সন্ধ্যা নেমে তখন রাত হয়েছে,,বাসের সব লাইট ওফ করে দেওয়া,,শুধু সামনের দিকে দুটো লাইটের দেখা মিলছে

হিয়াঃ আপনি কি ঘুমোবেন,,শ্রাবণকে আমায় দিন তাহলে,,আপনার কষ্ট হচ্ছে হয়তো

উজানঃ না আমি ঠিক আছি,,তুমি না হয় একটু চোখ টা বন্ধ করো আর ঘন্টা খানেক হয়তো লাগবে বাড়ি পৌঁছাতে

হিয়াঃ হুম,,আপনি চাইলে শ্রাবণকে আমার কোলে দিন ওকে কোলে নিয়ে জার্নি করবার অভ্যেস আছে আমার

উজানঃ না শ্রাবণ আমার সাথে থাক শ্রাবণ আমার সাথে থাকলে মনে হয় তুমি আমার সাথে আছো,,আমি তোমাকে অনুভব করতে পারি শ্রাবণের মাঝে,,

হিয়াঃ আপনি যা চাইছেন তা কখনোই সম্ভব না

উজানঃ কি সম্ভব না??

হিয়াঃ কিছু না

উজানঃ কি হ’য়েছে তোমার,কাল থেকে আপসেট দেখছি,,বলো আমাকে না বললে আমি কি করে বুঝবো হিয়া

হিয়াঃ আপনি আমাকে একটা চাকরি জোগাড় করে দিতে পারবেন,,আপনার তো অনেক জানাশুনা আমাকে কি কোনো একটা,,যদি চাকরি না হয় কোনো একটা টিউশন ম্যানেজ করে দিতে পারবেন এর মধ্যে

উজানঃ কি হয়েছে??

হিয়াঃ নিঝুমের মা কাল সকালে ফোন দিয়েছিলো নিঝুমের বাবার নাকি সিলেটে পোস্টিং হয়ে গেছে হুট করে,তাই ওরা সামনের সপ্তাহে চলে যাচ্ছে

উজানঃ নিঝুমের মা’ই তোমাকে বেশি টাকা দিতো না ঔ তিন হাজার

হিয়াঃ হুম,,যদি একটা টিউশন ম্যানেজ হতো তাহলে এই ধাক্কা টা ওদিক দিয়ে পুষে নিতে পারতাম

উজানঃ আচ্ছা আমি ব্যবস্থা করছি,,তুমি ঘুমোও চোখ মুখ দেখেই ক্লান্ত লাগছে

হিয়াঃ আমি ঠিক আছি,,আপনি চোখ টা বন্ধ করুন,,একটু শরীরে রেস্ট এর ও প্রয়োজন হয় সারাদিন এতো এতো ছুটাছুটি করেন এতো এনার্জি আসে কোথা থেকে আপনার

উজানঃ উজান শাহরিয়ার এর ডিকশনারিতে ক্লান্তি নামক কোনো ওয়ার্ড নেই হিয়া মুনতাসীর

হিয়াঃ তাই না,,সবসময় বেশি কথা আপনার

বলেই হিয়া হেঁসে দিয়ে চোখ টা বন্ধ করে,,উজান অপেক্ষা করে হিয়া যদি নাটক মুভির মতো একটু হেলে ওর কাঁধে মাথা রাখতো,,কিন্তু আমাদের হিয়া তো আবার খুবই সতর্ক,,সে মাথা দেওয়া তো দূর একটু সরেও আসলো না উজানের পাশে!!তাই উজান নিজে ইচ্ছে করে ঘুমোঘুমো চোখে হিয়ার কাঁধে মাথা রাখলো
__________________

পরের দিন

হিয়া ভার্সিটি আসে আর ঠিক করে আজ থেকে সে যতোটা পারবে উজান কে এ্যাভয়ড করতে চেষ্টা করবে,,কারণ হিয়ার বুঝতে বাকি নেই উজান ওকে নিজের সব দিয়ে বসেছে,,কিন্তু উজান আবেগে ভাসলে তো আর তার চলবে না উজানের মতো ছেলে যে কোনোভাবেই হিয়ার সাথে মানায় না হিয়া এটা মনে করে,,কিন্তু হিয়া কেই যে উজানের সব চাইতে বেশি জরুরি সেটা আর কবে বুঝবে হিয়া,,

আসার সময় উজানের চোখ ফাঁকি দিয়ে ক্লাস রুমে ঢুকলেও ক্লাস শেষে বের হতেই উজানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যেতে হবে এটা হিয়া ভাবে নি,,হায় রে এখন বুঝো

উজানঃ লুকোচুরি খেলা হচ্ছে আমার সাথে

হিয়াঃ বালাইষাট,,আচ্ছা একটা কথা বলুন তো আপনি কি ইদানীং ক্যাম্পাসে আসেন এই আমার জন্য,,ক্লাস ট্যাল্সো কি কিছু করেন মাঝেমধ্যে

উজানঃ ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন আমাদের মাস্টার্সের ক্লাস এখন সব শেষ,,সামনের মাসে ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েই পড়াশোনার প্যারা থেকে মুক্তি

হিয়াঃ যাগ তাও ভালো,,এরপর একটা চাকরি জোগাড় করে সারাদিন অফিসে কাটাবেন তবেই আমার শান্তি

উজানঃ চাকরি করছে কে,,কিছুদিন একটু রেস্ট নিয়ে ঘুরবো ফিরবো-খাবো-আড্ডা দিবো তারপর

হিয়াঃ তারপর!!

উজানঃ (একটা গুন্ডা গুন্ডা হাসি দিয়ে) স্যার হয়ে ভার্সিটি জয়েন করে তোমাকে টর্চার করবো হি হা হা হা

হিয়াঃ আআআ অসহ্য একবারে,,আপনি স্যার হয়ে জয়েন করলে আমি এই ভার্সিটি ছেড়েই পালিয়ে যাবো

উজানঃ পালিয়ে আর যাবে কোথায়,,ঘুরেফিরে তো তোমাকে আমার খাঁচা তেই আসতে হবে হিয়া পাখি

হিয়া কিছু বলার আগেই মকবুল স্যার পেছন থেকে এসে উজানের পিঠ চাপড়ে গল্প করতে শুরু করে,,উজান প্রথমে বিরক্ত হলেও মকবুল স্যারকে দেখে খুশিতে আত্নহারা হয়ে উঠে,,ঝিনুকের বোনের বিয়ের জন্য তো এই ক’দিন স্যারের সাথে গল্পই করা হয়ে ওঠেনি তার,,স্যার আর উজানের গল্পের ফাঁকে হিয়া আস্তে করে পাশ কাটিয়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসে এক দৌড় লাইব্রেরির দিকে আসতে শুরু করে,,এদিকে স্যারের থেকে বিদায় নিয়ে পেছন ঘুরতেই উজান দেখে হিয়া নেই,,রাগে মেজাজ একবারে গরম হয়ে যায় উজানের,,আবার লুকোচুরি শুরু করলো হিয়া!!

উজান খুঁজে খুঁজে ঠিক লাইব্রেরীর ভেতরে গিয়ে দাড় হয়,,হিয়া যে ক্লাস শেষে প্রায় প্রায় বই নিতে লাইব্রেরি আসে উজান সেটা জানে

উজানকে দেখা মাএই হিয়া টুক করে একটা টেবিলের নিচে ঢুকে যায়

হিয়াঃ এই লোক টা আমার পেছন ছাড়বে না অসহ্য একদম,,সামনের মাসে পরীক্ষা গিয়ে পড়তে বসলেই তো হয়,,সারাক্ষণ এই আমার পেছনে পড়ে থাকা দেখবো এবার ফাইনালে সিজিপিএ কতো তুলতে পারে,,হু

হিয়া যেই টেবিলের নিচে ছিলো সেই টেবিলে রিতা আর রিমা নামের দুজন মেয়ে বসে ছিলো,,তারা উজানকে দেখামাএ ঠিক হয়ে বসে নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করতে শুরু করলো

রিতাঃ শুনেছিস ঘটনা?

রিমাঃ কিসের ঘটনা

রিতাঃ আরে ভার্সিটির হার্টথ্রব উজান শাহরিয়ার নাকি মাস্টার্স কম্পিলিট করে আবার টিচার হয়ে জয়েন করে সব গুলো মেয়েগুলোর রাতের ঘুম হারাম করবে বলে ব্যাক করবে,,,,

রিমাঃ ও এটা,,হ্যা গুঞ্জন তো এরকম কিছু শুনলাম কিন্তু উজান ভাইয়া তো এখনো এ-ব্যাপারে কিছু বলে নি তাই এ নিয়ে আর মাথা ঘামাতে যাই নি,

রিতাঃ আরে টুইস্ট তো এখানে না টুইস্ট অন্য জায়গায়!!

রিমাঃ মানে??

রিতাঃ সিফাত ভাই আছে না আরে উজান ভাইয়ের পরে পরে থাকে যে সবসময়,,উনিও না-কি টিচার হয়ে জয়েন করতে চাইছে বাট ভার্সিটিতে তো টিচার নেবার জন্য ঔ বিভাগের আপাতত একটা সীট আছে

রিমাঃ সেকি এখন?

রিতাঃ এখন আর কি আর most importantly উজান ভাইয়ের গত পরীক্ষা টা খারাপ হয়ে রেজাল্টের নাকি একটু খারাপ অবস্থা তাই এখন ফাইনালে যার পজিশন এগিয়ে থাকবে এস এ টিচার সে জয়েন করতে পারবে

রিমাঃ আবার দুই ছেলের চুলোচুলি!!দেখা যাগ কি হয়___তবে মনে হয় না উজান ভাইকে সিফাত এতো ইজিলি টপকাতে পারবে,,মানুষের তো এক দুবার কোনো কারণে পরীক্ষা খারাপ হতেই পারে,,তাতে কি

রিতাঃ আচ্ছা বাদ দে,,ভাইয়া এদিকে আসছে,চুপ
______________________

হিয়াঃ এজন্য আমি আপনাকে নিষেধ করেছিলাম আমার পেছনে এরকম অহেতুক সময় নষ্ট না করতে,,দেখলেন কি হলো,,পরীক্ষায় গোল গোল গোল্লা পেলেন তো,,এবার টিচার হয়ে জয়েন করবার জন্য এক্সট্রা খাটতে হবে হু

উজান এদিকে আসে বুঝে হিয়া আশেপাশেই হয়তো কোথাও আছে,,

উজানঃ পিচ্চি পিচ্চি গন্ধ পাচ্ছি না একটা❤️

উজান মাথা চুলকে একটা বুদ্ধি বের করে হিয়ার নাম্বারে ডায়াল করে,,আর ডায়াল করতেই ফোনের কিরিং কিরিং টোন ভেসে আসে,,লাইব্রেরির নিশ্চুপ পরিবেশে খুব সহজেই বোঝা যায় শব্দ টা ঠিক কোন টেবিলের নিচ থেকে আসছে,,হিয়ার বুঝ আসতেই হিয়া তড়িঘড়ি করে ব্যাগটা বুকের কাছে জাপ্টে ধরে কিন্তু কোনো লাভ হয় না এতে,,উজান ঝুঁকে টেবিলের নিচে বসে হিয়ার দিকে তাকিয়ে একটা বিশ্ব জয়ের হাসি দেয়,,হিয়া এবার কাঁদো কাঁদো মুখ করে টেবিলের তল থেকে বেড়িয়ে গা হাত পা ঝারতে শুরু করে,,টেবিলের তলে অনেক ময়লা ছিলো ঔজন্য

উজান লাইব্রেরির সবার সামনে হিয়াকে হাত ধরে টেনে নিয়ে মাঠে দাঁড় করিয়ে দেয়

উজানঃ কি সমস্যা তোমার??

হিয়াঃ কি চাই আমার কাছে আপনার

উজানঃ তোমাকে চাই তোমাকে,,বাংলা কথা বুঝো না তুমি,,না বুঝেও না বোঝার ভান করো কোন টা,,নাকি বারবার শুনতে ভালো লাগে আমার শুধু তোমাকে চাই তোমাকে চাই তোমাকে চাই

হিয়াঃ আস্তে মানুষ শুনবে

উজানঃ শুনুক,,এই ধরো এটা আমার পাশের বিল্ডিংয়ের ঠিকানা সামনের মাস থেকে ফয়সালকে পড়াতে যাবা,,সপ্তাহে চার দিন মাসে চার হাজার খুশি এবার

হিয়াঃ চার হাজার!!আরো এক হাজার এক্সট্রা বেশি

উজানঃ হুম,,বাড়ি ফিরবে এখন না অন্য টিউশন আছে?

হিয়াঃ আছে গুনগুন,,কিন্তু ওকে ছটার ওদিকে পড়াই তাই এখন বাড়ি যাবো,,দুপুরে আবার মিলন স্যারের ওখানে যেতে হবে নোটস কিছু আছে ওগুলো ঝিনুক সহ কালেক্ট করবো

উজানঃ কীসের নোটস??

হিয়াঃ ঔ তিনদিন স্যারের লেকচার গুলো মিস করলাম না ওটার

উজানঃ (বাইকের হেলমেট পড়তে পড়তে)আচ্ছা দেখি কিছু কা—জ আছে আমার দুপু—রে যদি সময় পাই তাহলে মিলন স্যারের ও–খানে ড্রপ করে দিয়ে আসবো,,আর না আসলে মিলন স্যারের বাড়িতে একা যাবার কোনো দরকার নেই,,উনি শুনেছি বাড়িতে একা থাকে,,ঝিনুক সাথে গেলে তবে যেও কিন্তু একা যেন না যা-ওয়া শুনি

হিয়াঃ আপনি বললেই যেনো আমাকে শুনতে হবে

উজানঃ yes,of course,,as your would be teacher তুমি আমার সব কথা শুনতে বাধ্য,,

উজানের কথায় হিয়া হাত কোমড়ে ভাজ করে উজানের মুখের সামনে এসে দাঁড়ায়

হিয়াঃ would be teacher মানে!!

উজানঃ মানে মকবুল স্যারকে আজ ফাইনালি বললাম মাস্টার্স টা শেষ করবার সাথে সাথে আমি টিচার হয়ে জয়েন করতে চাই ভার্সিটিতে,,আমার প্রস্তুাব শুনে স্যারের এক্সপ্রেশন টা তুমি জাস্ট দেখতা হিয়া,,পারলে স্যার বুঝি ক্যাম্পাসের সবাইকে মিষ্টি বিলিয়ে দেয়,,

হিয়াঃ তার মানে আমি ঠিক শুনলাম,,আপনি আমার পেছন ছাড়বেন না তাই তো

উজানঃ হুম তাই,,ইদানীং পাখা দুটো একটু বেশি গজিয়েছে তোমার টিচার হয়ে ভার্সিটি জয়েন করলে ওগুলো একটু কম উড়বে

হিয়াঃ খুব খারাপ আপনি,,খুব খুব খুব

হিয়া মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে যায়,,উজান জোর করে হিয়াকে বাইকে বসাতে ধরেও পারে না,,হিয়া এবার রাগে হাঁটতে শুরু করে,,ধুর এই বয়লার মুরগী টা তো তার হাঁস পাখির পেছন ছাড়বেই না দেখছি!!

_________________

বিকেলে হিয়া ঝিনুক সহ স্যারের বাড়িতে আসে নোটস কালেক্ট করতে,,ওখানে আরো দু তিন জন ছেলে মেয়ে ছিলো ওরাও কিছু লেকচার মিস করেছে দেখে নোটস নিতে আসা,,স্যার হিয়া আর ঝিনুককে দেখে সবাইকে ভেতরে বসতে বলে,,স্যার রুম থেকে বাকিদের নোটস নিয়ে এসে হাতে দিয়ে বলে দুটো নোটস শর্ট,দারোয়ান কে দিয়ে ফটোকপি করতে পাঠিয়েছে এলেই ঝিনুক আর হিয়াকে দেবে,,বাকিরা নোটস নিয়ে চলে যেতেই স্যারের বাড়িতে থাকা একটা দু বছর বয়সী বাচ্চা দৌড়ে এসে ঝিনুকের কোলে উঠে বসে

হিয়াঃ বাচ্চা টা কতো কিউট,,ওর মনে হয় তোকে বেশি পছন্দ হয়েছে

ঝিনুকঃ বলছে তোকে,তুই হাত পাত দেখ তোর কোলে যায় না-কি

হিয়া হাত পাতলে বাচ্চা টা হিয়ার কোলে উঠে আসে

ঝিনুকঃ দেখলি তো বাচ্চা টা তোকেও পছন্দ করেছে অনেক

হিয়াঃ হুম

ঝিনুক আর হিয়া বাচ্চা টার সাথে খেলতে থাকে,একটা সময় পর স্যার এসে নোটস নিয়ে দাঁড়াতেই হিয়া ঝিনুক উঠে দাঁড়ায়,,স্যার ঝিনুকের হাতে নোটস গুলো দিয়ে হিয়ার থেকে ওনার বাচ্চা টাকে নিতে যাবে ওমনি উনি ইচ্ছে করে হিয়ার বুকের নিচে পেটের উপর ওনার হাত টা স্পর্শ করে দেয়,,হিয়া পুরো চুপ হয়ে শক্ত হয়ে যায় মুহুর্তে

স্যারঃ তোমাদের আর কিছু নোটস আসছে, আসছো যখন একবারে নিয়ে যাও

হিয়াঃ না স্যার লাগবে না,,ঝিনুক চল এখান থেকে

স্যারঃ হিয়া তুমি থাকো আমার কিছু কথা ছিলো তোমার সাথে,,ঝিনুক তুমি যদি একটু

হিয়াঃ আপনার কিছু বলার থাকে সেটা ঝিনুকের সামনেই বলুন স্যার,,আর খুব জরুরি না হলে কাল ভার্সিটিতে ক্লাসে আছে ওখানেও বলতে পারেন

স্যারঃ হ্যা পারি কিন্তু কি বলো তো কথা গুলো একটু পারসোনাল তাই জন্য,,Anyway শুনেছি হিয়া তুমি নাকি অনাথ অনেক স্ট্রাগেল করে মানুষ_______

হিয়াঃ আপনি এসব কেনো বলছেন আমাকে!!

স্যারঃ আসলে আমি তোমাকে একটা অফার দিতে চাই,,কি বলো তো আমার স্ত্রী গত হয়েছে আড়াই
বছরের কাছাকাছি,,আর এই বাচ্চা টাই এখন আমার সব,,যদি তুমি আমাকে বিয়ে করে আমার বাচ্চা টার দায়িত্ব নিতে আমি না হয় তোমার ভাই আর তোমার পুরো ভবিষ্যৎ টার

হিয়াঃ (স্যারকে থামিয়ে দিয়ে)আপনার বলা শেষ,,স্যার আমি কোনো বাজারের জিনিস না যে আপনি একটা নিলে আরেকটা ফ্রি তার সাথে তুলনা করবেন,,আমি যখন এতোদূর নিজ যোগ্যতায় আসতে পেরেছি তো বাকি টাও আমি একাই সামলে নিতে পারবো,,কিন্তু কারো ভোগের বস্তু হয়ে দু বেলা খাবার লোভে নিজেকে বিক্রি করে দেবো এতো টা সহজ সব টা হয় না স্যার,,,,ঝিনুক আয়

হিয়া যেতে ধরতেই স্যার টা হিয়ার হাত ধরে নেয়

স্যারঃ এতো কিসের কথা হ্যা তোমার,,কি মুরাদ আছে দু বেলা তো ভাত ও জুটাতে পারো না কপালে,,আর আসছো আমাকে চোখ রাঙা দেখাতে

ঝিনুকঃ কি করছেন কি স্যার,,হিয়ার হাত টা ছাড়ুন লাগছে ওর

হিয়াঃ আপনি আমার হাত ছাড়বেন না আমি লোক জড়ো করবো

স্যারঃ আমাকে ভয় দেখাচ্ছে তুমি,,আমি যদি চাই না পুরো ভবিষ্যৎ তোমার নষ্ট করে দিতে পারি,,চিনো তুমি আমাকে

এক পর্যায়ে স্যার খুব বাড়াবাড়ি করলে হিয়া স্যারের গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়,,হিয়ার এই কাজে স্যার একদম ক্ষেপে উঠে হিয়ার হাত আরো চেপে ধরতেই হিয়ার এক পাশের জামার হাতা ছিঁড়ে যায়

ঝিনুকঃ আপনি একজন ভার্সিটির টিচার হয়ে কি করে এরকম পশুর মতো আচরণ করছেন,,ছিঃ

ঝিনুক স্যারকে একটা ধাক্কা দিয়ে সোফায় ফেলে দিয়ে হিয়াকে নিয়ে দৌড়ে উঠোন পেড়িয়ে রাস্তার চলে আসে,,হিয়া ওর ওড়না টা গায়ে পেচিয়ে নেয়,,ঝিনুক হিয়াকে শান্ত করে সামনের রাস্তা দিয়ে হাটতে ধরেই উজান বাইক নিয়ে এসে ওদের সামনে দাঁড়িয়ে যায়

উজানঃ কি হ’য়েছে শালি সাহেবা আমাকে এতো জরুরি তলব,,এই তো আমার চাচাতো বউ একদম ঠিক আছে দেখছি,,তুমি শুধু শুধু আমাকে

বলতে বলতে উজান হিয়ার চোখের দিকে তাকাতেই খেয়াল করে হিয়া হয়তো কাঁদছিলো একটু আগে,,উজান হেলমেট খুলে সামনে ঝুলে রেখে বাইক থেকে নেমে হিয়ার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়

উজানঃ কি হ’য়েছে,,কাঁদছে কেনো ও ওরকম করে ঝিনুক??___হিয়া it’s everything all right??

ঝিনুকঃ রাইট না রং এই দেখুন,,দেখলেই বুঝতে পারবেন

বলেই ঝিনুক রাগে হিয়ার গা থেকে ওরনা টা টেনে খুলে,,আর খুলতেই হিয়ার ছেঁড়া জামার সাথে হিয়ার উন্মুক্ত হাতের বাহু আর বুকের উপরের অংশ সহ ভেতরে পড়া অন্তর্বাস টাও চোখে ভেসে আসে উজানের!!উজান একবার দেখে পর মুহুর্তে চোখ নামিয়ে নিয়ে ঝিনুকের থেকে ওরনা টা নিয়ে হিয়াকে জড়িয়ে দিলে,,আলতো করে হিয়াকে নিজের বুকে আগলে নিতেই হিয়া হাউমাউ করে কেঁদে উঠে

হিয়াঃ এই পৃথিবীতে একা একটা মেয়ের জন্য বেঁচে থাকা টা এতো কঠিন কেনো আপনি বলতে পারবেন,,কি দোষ ছিলো আমার,,কেনো সবসময় আমাকে সবাই এতো ছোট করে দেখে,,আজ আমার কিছু নেই বলে আজ আমি নিঃস্ব বলে,,বলুন না আপনি,কবে এই সমাজ টা আমাদের মতো মেয়ে দের একটু শান্তি করে বাঁচতে দেবে আর কবে

হিয়ার কান্নায় উজানের বুক ভিজে উঠে,,উজান হিয়াকে চুপ করিয়ে ঝিনুককে বলে কি হ’য়েছে সেটা বলতে,,ঝিনুক উজান কে ঘটনার আদৌপান্ত সব খুলে বলে,,শুনেই শরীরের সব লোম জেগে উঠে উজানের,,চোখ যেনো আগুনের লাভার মতো রাগে লাল হয়ে উঠে,,

✅12_13 & 24_25 পার্ট Fb lite দিয়ে পড়া যাচ্ছে না,,অনুগ্রহ করে নরমাল এফবি দিয়ে পড়ুন!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here