প্রিয়তমা❤️ #সিজন_২ #writer- সালসাবিল সারা পর্ব-৩৬

0
1516

#প্রিয়তমা❤️
#সিজন_২
#writer- সালসাবিল সারা
পর্ব-৩৬
*
*
সকালের আরামদায়ক রোদ পর্দা ভেদ করে রুমে প্রবেশ করতেই সাদিফের ঘুম ছুটে গেলো।বুকের উপর গরম নিঃশ্বাস অনুভব করতেই সে তার বুকের উপরে নিশ্চিন্তে ঘুমন্ত প্রিয়তমাকে দেখতে পেলো। গত চার বছর ধরে সাদিফ এই সকালটির জন্যে অনেক অপেক্ষা করে ছিলো।
আজ তার নিজের জীবনকে সার্থক লাগছে। কতো অপেক্ষার পর তার জানকে সে নিজের করে পেলো।শেফার মুখের উপরে পড়ে থাকা চুল গুলো আঙ্গুল দিয়ে আলতোভাবে সরিয়ে দিলো সে।
শেফাকে বুকের উপর নিয়ে বেশকিছুক্ষণ শুয়ে ছিলো সাদিফ।মাঝে মাঝে শেফার মাথায় চুমু দিতেও ভুলেনি সে।

মোবাইল নিয়ে সময় দেখে নিলো সাদিফ।সময় দেখে সে মনে মনে বলতে লাগলো..

“নয়টা বাজতে চললো।আবার অফিসে যাওয়া লাগবে।সামনে ইলেকশন,খুব চাপ হবে কাজের।”

এসব নানা কথা ভেবে আস্তে করে সে শেফাকে বালিশে শুয়ে দিলো।শেফা নড়েচড়ে উঠতে নিলেই, সাদিফ আবারো জড়িয়ে ধরে তাকে ঘুম পাড়িয়ে দিলো।কারণ মেয়েটা রাত জাগলেই অসুস্থ্য হয়ে যায়। কাল রাতে সে ঘুমিয়েছে প্রায় পাঁচ টায়।এখন উঠে গেলে নিশ্চয় সে মাথা ব্যাথায় ছটফট করবে।তার চেয়ে বরং ঘুমাক আরো কিছুক্ষণ। সাদিফ শেফার গায়ের টিশার্ট ঠিক করে দিয়ে তার গায়ের উপরে পাতলা কম্বলটি টেনে দিলো।নিজের পড়নে ট্রাউজার ঠিক করে সাদিফ শেফার কপালে আর ঠোঁটে আলতো চুমু দিয়ে তাওয়াল নিয়ে ওয়াশ্রূমে চলে গেলো।

শাওয়ার নেওয়ার সময় তার পিঠ, ঘাড় প্রচন্ড জ্বলছিল।অবশ্য জ্বলবে নাই বা কেনো,তার ফুল তাকে প্রচুর খামচি দিয়েছে কাল রাতে। কাল রাতের কথা ভাবতেই সাদিফের গায়ে শীতল হাওয়া বয়ে গেলো।

শাওয়ার নিয়ে রুমে এসেই সাদিফ পাঞ্জাবি আর কোটি পড়ে রেডি হয়ে নিলো।চুলের উপর স্প্রে করে চুল সেট করলো।ঘড়ি লাগিয়ে গায়ে পারফিউম মেখে সে রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগে আবারো তার ঘুমন্ত প্রিয়তমার কাছে গেলো।
বেশ কিছুক্ষণ শেফার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে, সে আলতো করে শেফার ঠোঁটে চুমু দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।

নিচে নামতেই সাদিফ দেখলো চারপাশে সব কিছুই নীরব।শুধু তার মাকেই দেখা যাচ্ছে ডাইনিং এ বসে কিছু করছে।
সাদিফ তার মায়ের দিকে এগিয়ে গেলো।

“মা,সবাই এতো শান্ত কেনো?”(সাদিফ)

“ওমা! কাল রাতে সবাই ঘুমোতে অনেক দেরী করেছিলো।তাই সবাই ঘুমিয়ে আছে এখনও।তুই এত জলদি উঠলি কেনো বাবা?”(সাদিফের মা)

“ওহহ তাই বলো।
সামনে ইলেকশন তাই একটু মিটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকবো।অলরেডি দশটা বাজে মা।নাস্তা দিতে পারবে এখন?আর তুমি ব্যস্ত থাকলে আমি চলে যায়।বাহিরে খেয়ে নিবো।”

“তোর বাবার জন্যে আমি সাত সকালে উঠে গেলাম।দুনিয়া উল্টে গেলেও তোর বাবার সকালের আটটা বাজে নাস্তা করা লাগবেই।নাস্তা বানানো আছে।বস তুই,আমি কফি দিচ্ছি তোকে।আচ্ছা ভালো কথা,ফুল ঘুম এখনো?ঘুম না হলে ওকে নাস্তা করতে বলে আয় তুই ।”

“না মা, শেফা ঘুম। পরে তুমি ডেকে দিও ওকে। মা,কফি একটু আর্লি করে দাও।দেরি হচ্ছে আমার।”

সাদিফ মোবাইল বের করে নিউজ দেখতে লাগলো।তাদের বিয়ের ছবি,কিছু শর্ট ভিডিও ভাইরাল হলো।অবাক চোখে সে তার জানকে দেখছে।অনেক বেশি সুন্দর লাগছিলো তার বউকে।তার বউটা এমনিও পরী,ভারী মেকাপে তাকে আরো বেশি সুন্দর লাগছিলো।

বেশ কিছুক্ষণ এসব নিউজ দেখে সে,পলিটিকাল নিউজ দেখতে শুরু করলো।এইবার ইলেকশন বেশ চাপ হবে।অবশ্য প্রতি বছরই চাপ থাকে,তবে এবার অনেক নতুন প্রতিযোগীর সম্মুখীন হতে হবে।

নাস্তা শেষ করেই সে তার মিটিং এর জন্যে বেরিয়ে গেলো।

দরজায় নক পড়তেই বেশ বিরক্ত লেগে উঠলো।মা রুমে আসার হলে এসে যাবে এমনি। এতো নক করার কি আছে।
চুপচাপ মুখে কম্বল দিয়ে আবারো চোখ বন্ধ করে নিলাম।আবারো দরজায় নক পড়তেই বিরক্তি নিয়ে মুখ থেকে কম্বল সরিয়ে চোখ মেলে তাকালাম।
চোখ খুলে চারপাশে রুমের অবস্থা দেখে এক লাফে উঠে বসলাম।আল্লাহ্!আমি তো এখন বিবাহিত।এটা তো সাদিফের মানে আমাদের রুম।

নিজের দিকে তাকিয়ে বেশ অবাক হলাম।আমার গায়ে উনার টি শার্ট।এইটা কখন পড়লাম আমি আবার!রাতে কখন ঘুমিয়েছি কিছুই মনে নেই।শুধু মনে আছে, কাল রাতে আমাদের ভালোবাসার প্রহর কাটিয়ে আমি উনার উদোম বুকে শুয়ে উনার হার্টবিট শুনছিলাম।কখন যে চোখ লেগে এলো! নিশ্চিয় উনি উনার টিশার্ট পড়িয়ে দিয়েছেন আমাকে।

দরজায় আবার নক পড়তেই আমি বেড থেকে দ্রুত নেমে
দরজা খুলে দিলাম।

জুমু রুমে প্রবেশ করে আবারো দরজা লক করে দিলো।

“কিরে ভাই,তুই মোবাইল অফ রেখেছিস কেনো?বারোটা বাজছে।ভাইয়া সে এগারোটা থেকে কল দিয়ে চলেছে আমাকে। কাল রাতে বিয়ের ভাত অল্প করে খেয়েছিস আর কিছুই খাসনি।শাওয়ার নিয়ে আর্লি খেতে আয়।”(জুমু)

“আমার মোবাইলে চার্জ নেই হয়তো।আর তুই নক করা ছাড়া আসতে পারিসনি?”(আমি)

“আমার ভাই,মহা কারবারি সে দরজা লক করে গিয়েছিলো।তাই তো এতক্ষণ ধরে নক করছিলাম।বাই দা ওয়ে, কাল রাত কেমন কাটলো?হুহু!!গলার দাগ আর বুকের দাগ দেখে তো, বেশ লাগছে।খুব আদর করছে ভাই,তাই না?”
(জুমু)

জুমুর কথায় আমি টিশার্ট খামচে ধরলাম।লজ্জামাখা হাসি দিয়ে বললাম..

“ছি বেআদব।”

“ওমা!বিয়ে হলো,বাসর হবে না?এখানে বেয়াদবির কি? হে হে,লজ্জাবতী সকিনা।গোসল সেরে নে।”(জুমু)

জুমুকে হালকা জড়িয়ে ধরে আমি শাওয়ার নিতে চলে গেলাম।

গোসল শেষ করে,ব্লাউজ আর পেটিকোট পড়ে বেরিয়ে এলাম ওয়াশ্রুম থেকে।জুমু বেডের উপরে বসে আছে।
ওর সাহায্য নিয়েই শাড়ি পড়ে নিলাম। কাল রাতে কেমন করে শাড়ি পড়েছিলাম,মনে পড়তেই হাসি আসে।কিন্তু সাদিফ গাধা এতো কিছু বুঝেনি।সে তো তার আদরে ব্যস্ত ছিল।একদম ভালো করে আমি শাড়ি পড়তে পারিনা।

ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে,উনার দেওয়া ভালোবাসার চিহ্নে ক্রিম লাগিয়ে নিলাম।ভাবতে লাগলাম,ভাগ্যিস আজকে রিসিপশনের অনুষ্ঠান না।কালকে হবে রিসিপশন,এই কথা ভাবতেই মন খুশি হয়ে গেলো।কারণ আমি আজ বড্ড টায়ার্ড।

সামান্য কিছু জুয়েলারি পড়ে নিলাম।ভেজা চুলে তো আর নিচে নামা যাবে না।তাই ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে নিলাম। উনি আমার সাথে দেখা না করেই চলে গেলেন।ভাবতেই মন খারাপ লাগলো।

মোবাইল চার্জে লাগিয়ে কিছুক্ষণ কথা বললাম মায়ের সাথে।খুব মনে পড়ছিল মায়ের কথা।কথা শেষে মাথায় কাপড় দিয়ে নিচে নেমে এলাম জুমুর সাথে।

আমাকে দেখে ইতি আপু, মীরা আপি,জুরাইন সবাই আমার কাছে এগিয়ে এলো।
আড্ডা দিতে বসতেই,খালামণি এসে হাজির।

“এই যে,এটা বাপের বাড়ি না এটা শ্বশুরবাড়ি। এখানে আপনি মোটেও খাবারে অনীহা করতে পারবেন না।
আমার ছেলে উপদেশ দিয়ে গিয়েছে, তোকে যেনো ভালো করে নাস্তা করিয়ে দিই।আগে নাস্তা এরপর আড্ডা।আমার ছেলের মন মতো না খেলে কিন্তু সে বকবে,আগে তো আমার বোনের মেয়ে ছিলি তাই তোকে সবসময় বাঁচিয়েছি সাদি থেকে।কিন্তু এখন তুই ওর বউ,এখন সে বকা দিলে কিন্তু আগের তুলনায় আরো বেশি বকা দিবে। আমার কথাও শুনবে না সে।”
(এক নিঃশ্বাসে খালামণি বললেন)

“খালামণি!তুমি আমাকে পর করে দিয়েছো?আল্লাহ্!আমাকে এখন কেউ সাপোর্ট করবেই না।শেষ আমি।”
(অসহায় ভাবে বললাম)

“এই কে তোর খালামণি! মা ডাকবি আমাকে। আমি সাদির যেমন মা,তেমন তোরও মা।”(খালামণি)

“ওকে আম্মু ডাকবো তোমায় কেমন?”

আমার কথায় খালামণি আমাকে জড়িয়ে ধরলো।

নাস্তা করে সবার সাথে আড্ডা দিতে বসলাম।ইতি আপু এতক্ষণ ছিলো আমাদের সাথে।কিন্তু আজ রাফিদ ভাইয়া চলে যাচ্ছেন স্পেনে,তাই আপু ভাইয়ার সাথে ফোনে কথা বলছিল রুমে।

আড্ডার মাঝে ইতি আপু আমার মোবাইল নিয়ে এলো।

“এই ফুল,ভাইয়া কল করেছে।আমি নিচে আসার টাইমে শুনলাম রিং বাজছে। ধর।”(ইতি আপু)

মোবাইল হাতে নিয়ে আমি ডাইনিং এর দিকে চলে গেলাম।

“হ্যালো, আসলামুয়ালাইকুম।আপনি কোথায়?”

“ওয়ালাইকুম আসসালাম।আমি তো আছি অফিসে।তোমার কি খবর?জামাইটা বাইরে আছে,সে খেয়াল
আছে তোমার?”(সাদিফ)

“আসলে,একটু ব্যস্ত ছিলাম সবার সাথে।আপনি অনেক পঁচা আমাকে একটু জাগিয়ে দিলে কি হতো?আপনি আমাকে আদর না দিয়েই চলে গেলেন অফিসে!”

“উফফ!আমার বউটা তো আদর পাগল হয়ে গেলো। কাল রাতে অনেক জ্বালিয়েছি,তাই আজ একটু ঘুমাতে দিলাম।আমি আসলে আবার রোমান্স শুরু করবো তাই,একটু রেস্ট করার জন্যে টাইম দিয়েছি।আর আমি অফিসে আসার টাইমে আদর করে এসেছি।আমার জানকে আদর করা ছাড়া আমি বাসা থেকে বের হবো নাকি?”(সাদিফ)

“আচ্ছা চুপ করুন তো।ভালোলাগে না এসব কথা।লাঞ্চ করতে আসবেন না?”

“হ্যাঁ,আসবো।দেরি হলে খেয়ে নিও।”(সাদিফ)

“নাহ,একসাথে করবো লাঞ্চ।আপনি আসুন।সাবধানে আসবেন।”

“আচ্ছা। আল্লাহ্ হাফেজ বউ। ভালোবাসি।”(সাদিফ)

“আল্লাহ্ হাফেজ ।আমিও ভালোবাসি।”

কথা বলে কল কেটে দিলাম।

উফফ..এত তাড়াতাড়ি বিয়ে না করলে এসব ফিলিংস আমার সত্যিই অজানা থেকে যেতো।মুচকি হেসে আবারো আমি সবার সাথে কথা বলতে চলে গেলাম।

দুপুরে সবাই খাবার টেবিলে বসেছে।আমাকে দেখতে রাফসান ভাইয়া এসেছে।ভাইয়াকে আমি অনেক্ষণ জড়িয়ে ধরে ছিলাম।

যদিও খালামণি মানে আম্মু আমাকে সবার সাথে বসতে বলেছিলো কিন্তু আমি না করে দিলাম।এই নিয়ে সবাই এক দফা হাসাহাসি করে নিলো।আমি নাকি জামাই ছাড়া কিছুই বুঝি না।
কি পরিমান বেশরম এই গোষ্ঠী!যেমন ভাই বেশরম তেমনই বোনগুলো বেশরম।

সবাইকে ভাত সার্ভ করে দিলাম।এর কিছু সময় বাদে সাদিফ আসলেন।ডাইনিং এ সবার কথা বলে,উনি নিচের ওয়াস্রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে নিলেন।

সাদিফ চেয়ার টেনে বসে পড়লেন। আমি উনাকে ভাত সার্ভ করে দিলাম।

“তুমি করছো কেনো।আমি নিতে পারবো।বসো এখন।”(সাদিফ)

আমিও সাদিফের পাশে বসে পড়লাম। সাদিফ তো আমাকে ইচ্ছা মতো খাইয়েছেন।নতুন বউ হওয়ার কারণে আমি মুখ ফুটে কিছুই বলিনি।কারণ আমি কিছু বললেই,শুরু হবে উনার তুই তোকারি করা।যা আমি চাই না।তাই না চাওয়া সত্ত্বেও খেয়ে নিলাম।

খাওয়ার পরই সবকিছু পেটে গুলিয়ে উঠছিলো।তাও মুখ বুঝে ছিলাম।

সাদিফ নিচে কথা বলছিলো খালুর সাথে। আর আমি কাজ শেষ করে জুমুদের সাথে উপরে উঠে আসলাম। জুমুরা ওদের রুমে গেলো আর আমি আমার রুমে।
রুমে গিয়ে দেরি না করেই, মুখে হাত দিয়ে বমি করে দিলাম।
সব কিছু বের হয়ে এখন শান্তি লাগছে।এতক্ষণ মনে হচ্ছিলো, পেটে যেনো পাথর বেঁধেছি।পিছে ফিরতেই সাদিফের গর্জন কানে ভেসে এলো…

“বাহ্ বাহ্!এই কাহিনী করছিস তুই ওয়াশ্রূমে?”

“আমার অস্বস্থি লাগছিলো অনেক। তা…”
বলার আগেই উনি আমার হাত ধরে নিয়ে এলেন রুমে।ফ্রুট বোল থেকে একপিস আম নিয়ে আমার মুখে ঢুকিয়ে দিলেন।

“আমি আরো ভেবেছিলাম গুড নিউজ আসছে।কিন্তু এই তো দেখি সব তোর ফালতুমি।আর বমি করলে কিন্তু খবর করে দিবো তোর।”(সাদিফ)

“আপনি কি মেন্টাল?একদিনেই কি আমি প্রেগন্যান্ট হয়ে
যাবো নাকি?”

“হ্যাঁ,সেটাই তো ভাবছি।বাবুর প্ল্যানিং এখন না।আগে তোর পড়ালেখা এরপর বাবু।এখন তো তুই নিজেই বেবি।”
বলেই উনি হা হা করে হাসতে লাগলেন।

আমি কিছু বলার আগেই আমার ঠোঁট উনার ঠোঁটের মাঝে নিয়ে নিলেন।

আমাদের গ্র্যান্ড রিসিপশনের অনুষ্ঠান হয়েছে আজকে।
অনুষ্ঠানে আজও আমি ভারী সাজ,কাপড় পড়েছিলাম।
অনেক ধুমধাম ভাবে অনুষ্ঠান শেষ হলো।
ব্ল্যাক প্রিন্টেড কোট,সাদা শার্টে আমার জামাইকে পুরো ড্যাশিং লাগছিলো।আমি উনার উপর আরেক দফা ফিদা হয়ে গেলাম আজ।

বাসায় আসতেই আমি উপরে চলে এলাম।খুব বেশি টায়ার্ড লাগছে।এই সাজগোজ, পোজ দেওয়া শেষ হলো আজ ফাইনালি।জুয়েলারি আর গারারা সেট খুব সহজেই খুলে ফেললাম।
ওয়াশ্রূমে গিয়ে একটা লম্বা শাওয়ার নিলাম।শাওয়ার নিয়ে বেশ ভালই লাগছে এখন। কোনমতে,একটা সুতির শাড়ি পড়লাম।জুমু থেকে শাড়ি পড়া শিখে নিয়েছি।

আমি তাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে মুছতে রুমে প্রবেশ করলাম। সাদিফ এখনো উপরে আসেনি।

আমি চুলে তাওয়াল পেঁচিয়ে আপুদের রুমে চলে গেলাম।

“ভাবী, আয় বস।”(জুমু)

আমি গিয়ে জুমুদের বেডে বসলাম।ইতি আপু ফ্রেশ হচ্ছিলো ওয়াশ্রূমে।

“ভার্সিটি কবে থেকে যাবি জুমু?”

“এইতো, দুইদিন পর থেকে যাবো।রেস্ট করি ভাই।অনেক ধকল গেলো এই কয়দিন।”(জুমু)

“হ্যাঁ,ঠিক বলেছিস।রেস্ট করা দরকার।”

এভাবেই আমি আর জুমু গল্প মত্ত হয়ে গেলাম।
আমার আর জুমুর কথা বলার মাঝে সাদিফ এলো রুমে।গলায় তাওয়াল ঝুলিয়ে প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে খাটের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়ালেন।

” তোদের কথা শেষ হলে, আমি কি আমার বউকে নিয়ে যেতে পারি?”

সাদিফ ভাইয়ার এমন কথা শুনে আমি ভ্রু কুঁচকে উনার দিকে তাকালাম।

“আরে ভাই,ভাবীকে নেওয়ার জন্যে তুমি পারমিশন খুঁজছো?তোমার বউ তুমি নিয়ে যাও।”(জুমু)

জুমুর কথা বলে দম নেওয়ার আগেই সাদিফ আমাকে বেড থেকেই কোলে নিয়ে নিলেন।

জুমু হা হা করে হাসছে।

জুমুর রুম থেকে বাহির হতেই সাদিফ আমার ঠোঁটে চুমু দিতে লাগলেন।একে তো কোলে নিয়ে হাঁটছে ঘরের মাঝে।তার উপর চুমু দিচ্ছেন, তাও ঠোঁটে?

আমি রেগে মুখে হাত দিতে যাবো, তার আগেই উনি আমাদের রুমে গিয়ে আমাকে কোলে নেওয়া অবস্থায় দরজা লক করে দিলেন।

“এই,কি শুরু করলেন এসব।কেউ দেখলে কি ভাববে?”

“আমার বাড়ি,আমার ঘর,আমার বউ,আমি আদর করবো। এখানে কার কি?কে কি ভাবলো, আই ডোন্ট কেয়ার।”
(সাদিফ ভাইয়া)

“নির্লজ্জ কোথাকার।”

আমার কথায় উনি বাঁকা হেসে আমাকে কোলে নেওয়া অবস্থায় বেডে শুয়ে গেলেন।

“নির্লজ্জের অত্যাচারে অত্যাচারিত হতে রেডি তো তুই?”

আমি লজ্জায় অন্যদিকে মুখ সরিয়ে নিতেই, সাদিফ আমার মুখ ধরে শক্ত করে একটা কামড় দিলেন গলায়।

ব্যাথায় আমার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। উনি চোখে ছোট ছোট চুমু দিতে লাগলেন।

“সরি”
বলে উনি আবারো সফ্টলি চুমু দিলেন আমার গলায়।

উনি আমার ঠোঁটে কামড় দিতেই আমি আবেশে উনার পিঠ খামচে ধরলাম। আস্তে আস্তে আমিও উনার মাঝে হারিয়ে গেলাম।

চলবে…❤️

কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দয়া করে কেউ গল্প কপি করবেন না।আমার পেজ ছাড়া আমি আর কোথাও গল্প পোষ্ট করবো না।সো,কপি করা নিষেধ।
আমার এক্সাম চলছে। সো,গল্প প্রত্যেকদিন দিতে পারবো নাকি জানি না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here