বিষ_করেছি_পান(২১)

0
431

#বিষ_করেছি_পান(২১)

(কপি করা নিষেধ)
ছুটি বসে বসে অসহায় মন নিয়ে রিতীকে দেখে যায়। রিতী ফ্রেস হয়ে আসে। আগের মতোই বসে আবার বলতে থাকে,
— ছুটি তোর যে বিষয় নিয়ে মন খারাপ তা তোর কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলেও অন্যদের কাছে না। অন্যরা শুনলে টিটকারী দিবে হাসবে। বাবা মা শুনলে তোর গালে থাপ্পড় পড়বে। তোকে ঘর বন্দি করবে। তোর উপর নানান কিছু চাপিয়ে দিবে। একসময় সহ্য করতে না পেরে এই বয়সে ডিপ্রেশনে যাবি,স্বাস্থের ক্ষতি হবে নয়তো মরে যেতে ইচ্ছে করবে। ঠিক এই কারনেই আমি ঐ শয়তানটার কথা কাউকে বলিনি। এই সমাজে মেয়েদের দোষটাই প্রগড়। আমাকে ঐ শয়তানের হাত থেকে কে বাঁচিয়ে নিয়ে এসেছে জানিস? বাবা আর সুবল কাকারা। রক্তের কোন সম্পর্ক নেই অথচ নিজের ভাতিজীর মতোই দেখে বলে আমার সম্মান এখনো অক্ষুন্ন আছে। অন্য কেউ আশে পাশের যাদের সাথে আমাদের তেমন খাতির নেই তাদের কেউ হলে আজকে বাবাও মাথা তুলে বাইরে হাটতে পারতোনা। হতে পারে আমি সুইসাইড করতাম। সবাই দোষটা আমাকেই দিতো। কারন আমি যুবতী সুন্দরী। আমার রুপ দেখেই ঐ বাখাটে গুলোর মাথা গেছে। ছয়জন ছিলো জানিস?আমাকে ছিড়ে খেতো। আমার সমস্যা আর তোর সমস্যা দুটো সেইম হলেও প্লট আলাদা।তুই ভালোবাসিস আমি বাসিনা। তোর ভালোবাসার ফুলের মতো পবিত্র আর আমার ঘৃণার মানুষ টা নীল বিষাক্ত। আমি জেনেশুনে বিষ পান করতে চাইনা। তুই আবেগে চলিস আমি চলিনা। তুই চেয়েও পাসনা আমি চাইইনা। তোর অনুভূতিটা সবার কাছে হাস্যকর। আর আমার টা ভয়ঙ্কর। মানুষের একটা একান্তই আশ্রয়স্থল লাগে জানিস?যে আশ্রয় তাকে ছায়া দিবে আড়াল করবে আগলে রাখবে। ভাইবোনদের ক্ষেত্রে বড় ভাই বা বোন হলো সেই আশ্রয়স্থল । তোর আছে তোর সুকপাল আমার নেই আমার কুকপাল। আমি খুব অভাববোধ করি জানিস? যে আমার কোন বড় ভাই-বোন নাই।আজ যদি কেউ একজন থাকতো তাহলে আমার সব কথা বাবা মাকে আগলাতে হতোনা। তাদের উল্টোধর্মী এই অত্যাচার গুলো সহ্য করতে হতোনা। বাবা মা অস্থির হয়ে থাকে সন্তানের কিভাবে ভালো হবে তাই তারা এসব করে। কিন্তু এই সময়ে সন্তানের উপর দিয়ে কি যায় তারা সেটা বুঝতে পারেনা। কারন তারা অনেক আগেই এই সময়টা পার করেছে আর অনুভুতি গুলো শূণ্যের কোঠায় পৌঁছিয়েছে। কিন্তু বড় ভাই/বোন সম্প্রতি এই সময়গুলো পার করে চলেছে। তাই ছোটদের মনের অবস্থা তাদের দায়িত্ব ভালোভাবেই নিজ হাতে তুলে নিতে পারে। চলার পথে সবাই সবার নিজ নিজ রোল প্লে করে। বাবা মা কখনো ভাইবোন হতে পারবেনা,ভাই-বোন কখনো বাবা মা হতে পারবেনা। সব কথা বাবা মার কানে দিতে নেই। এতে হিতে বীপরিতটাই বেশি হয়। তার ধকলটাও সামলাতে নয় সহ্য করতে হয়। আমি তোকে সেই পথে ছেড়ে দিবোনা। দু হাতে আগলে রাখবো।যেনো তোকে এই বিষয়গুলো ছুঁতে না পারে। আমি চাই তোর সবকিছু আমাতেই সীমাবদ্ধ হোক যতদিন না অন্যকেউ এসে আমাকে দায়িত্ত্বচ্যুত করছে। বাবা মার কানে যা দিতে হবে তা বুঝে শুনে ঠিকই দিয়ে দিবো। তোকে এটা নিয়ে আফসোস করতে হবেনা। ঘুমিয়ে পড়। আমার পড়া হবেনা।

ঘর ছেড়ে রিতী বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। এখান থেকে কোনাকোনি ভাবে ঝিমাদের বিল্ডিংটা দেখা যায়। ঝিমা বারান্দায় একা একা দাঁড়িয়ে আছে। বাঁধনের বারান্দায়। লাল নীল ফেইড়ি লাইটে আবছা বিষন্ন মুখখানা দেখা যাচ্ছে। হয়তো ভাইকে মিস করছে। হটাৎ ই কি থেকে কি হয়ে গেলো। আমরা যেরকম ভাবে ঝামেলা ছাড়া জীবন পাড় করার চেষ্টায় থাকি জীবন আমাদের সেভাবে চলতে চায়না। জীবনের একঘেয়েমিতা পছন্দ না। চলার পথে নিত্য নতুন সুধা পান করাই তার কর্ম।
________________
রমিজ উদ্দিন বাড়ী ছিলোনা। সেজন্য ই সোহাগকে জেল থেকে বের করতে দেড়ী হয়ে গেলো। শহরে না থেকে তিনি যা করতে পেরেছেন তাই ঢেল! সোহাগের গায়ে একটা আচর কাটতে দেননি। এমপি সাহেবের সাথে রমিজ উদ্দিনের গলায় গলায় ভাব।ল্যাংটা কালের বন্ধু। বেশী কিছু বলেনি। শুধু বলেছে যে,
— আমার পোলার গায়ে একটা আচর পরলে তোর সাথে জীবন মরন সম্পর্ক শেষ।
ব্যাস এই কথাতেই কাজ হয়ে গেছে। অনেক আগেই জামিন হয়েছে তবে সোহাগ বের হয়নি। বাবার জন্য জেলখানায় বসেই কাটিয়েছে। বাবাকে দেখাতে চায় দেখো আব্বা তোমার পোলা একটা মেয়ের লাইগা জেলে পচে মরছে। এবার কও তুমি সেই মেয়েরে এনে দিবা কিনা?নয়তো এ জীন্দাগী থাকবোনা। তবে তেমন কিছু ই হয়না। জেলে থাকতে থাকতে সোহাগের মন মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। বাবার দেখা পেয়েও কথা বলেনি। রমিজউদ্দিন থানায় এসে হায় হায় করতে করতে ছেলেকে বাড়ি নিয়ে এসেছে। বাড়ি ফিরতেই সোহাগ সোহাগীর বুকে মুখ গুজেছে। জেল খাটতে খাটতে সে অশান্ত। তাকে একমাত্র মা ই শান্ত করতে পারে। রমিজউদ্দিনের কষ্টে কান্না পাচ্ছে। তার বংশের বাতির একি হাল দশা! মাথায় হাত বুলিয়ে সুধায়
— আব্বা ও আব্বা। আমি কি তোমারে সুখে রাখতে পারতাছি না? আমার সব কিছুই তোমার। তুমি যা চাইছো আজ পর্যন্ত আমি সব দিছি। আমার বড় সপ্ন ছিলো। একমাত্র পোলা আমার ‌। তারে ডাক্তার বানামু। আমি হমু ডাক্তারের বাপ। আমার এই সপ্নটাও জলাঞ্জলি দিছি। তুমি পড়তে চাওনাই সেটাও মেনে নিছি। তুমি বাইক,গাড়ি চাইছো তাই দিছি। ব্যবসা সামলাবানা আমি নিজেই সামলাইতাছি, মদ খাও পার্টি করো আমি নিজে ব্যান্ডেড এনে দিছি। কত কত সুন্দরী মেয়ে তোমার কাছে নিজে সায় দিছি। এতো কিছুর পরে আমার সম্মানের কথাটা তুমি ভাইবা দেখলানা আব্বা? আমি তোমার আব্বা, তোমার দাদা, তোমার চৌদ্দ পুরুষ কোনদিন জেল কি জিনিস চোখে দেখে নাই আর তুমি বংশের মান সম্মান ডুবাইয়া দিলা। তুমি জানো আমি যখন তোমার জন্য তোমার এমপি চাচার কাছে ফোন দিয়েছি আমার মুখ থেকে কথা বেরোয়নাই। মাথা নিচু হয়ে আসছে। এমন কেন করলা আব্বা? বাপের মাথা কেন নিচে নামাইলা? আমার মুখটা কি তোমার একবার ও মনে পড়লো না?
— আমারে মাপ দেও আব্বা। আমার কিছু করার ছিলোনা।
— করার ছিলোনা? কোন মেয়ের জন্য তুমি জেলে গেছো এটা আমি মেনে নিবোনা? তোমার কি মেয়ের অভাব যে তুমি জোর করে জিম্মি করবা?
— আমি কি করবো আব্বা? ঐ মেয়ে কেন মানেনা? আমার মাথা খারাপ করে দিতাছে আব্বা। দেড়টা বছর থেকে ঘুরতাছি আমারে একটা চান্স দিলোনা কতোটা খারাপ লাগে জানো আব্বা? আমি ঘুমাইতে পারিনা খাইতে পারিনা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারিনা খালি মনে হয় এইযে সামনে দাঁড়ায়ে আছে মেয়েটা। দিনকে দিন টগবগ করে গোলাপের কলি ফুটতেছে তো ফুটতেছে।ধারনার বাইরে সুন্দর হয়ে যাইতাছে। চোখের সামনে দিয়ে ঘুরঘুর করতাছে। ওরে দেখলে আমি ঠিক থাকতে পারিনা। ইচ্ছে করে চাইপ্পা ধরে রাখি। ওরে হাতের মুঠোয় না পাওয়া পর্যন্ত আমি শান্তি পাইতাছিনা। কি হয় একটা দিন আমারে দিলে? কতো খোসামত করলাম। ছেসরার মতো বললাম, পিরিতি তোমার রুপ আমার তৃষ্ণা মেটায়। তবুও আমার কথা শুনলোনা। তাই আমি রাগের মাথায় ওরে তুইলা নিয়ে গেছি। আমার অন্য কোন মেয়ে আর ভাল্লাগেনা। অনেক হয়ছে। ঐ মেয়ের জন্য আমি জেলে গেছিতো? তোমার মুখ নিচু হয়ছে! ওরে আমি ছাড়তাছিনা। এক্কেবারে ছাড়তাছিনা।

রাগে গজগজ করতে করতে সোহাগ রুমে চলে যায়। সোহাগী ডেকে বলে,
— খেয়ে যা আব্বা।
সোহাগের সাড়া না পেয়ে কাজের মেয়েকে বলে তাড়াতাড়ি খাবার বেড়ে আনতে। এতোক্ষন বাপ বেটার কথা গুলো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। রমিজউদ্দিন কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে। তর্জনী আঙুলে কপালে স্লাইড করতে করতে বলে,
— সোহাগী আমার পোলার কথা তো সুবিধার লাগলো না।
— তাইতো মনে হয়তাছে। আব্বা আমার এমন হাঁসফাঁস করে কে?
সোহাগীর কন্ঠে অসহায়ত্ব প্রকাশ পায়। রমিজউদ্দিন কি একটা ভাবে। কপাল থেকে আঙুল সরিয়ে হাঁটুতে রাখে। হু হু করে গম্ভীর ভাবে হাসে। সোহাগীর ভ্রু কুচকানো মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,
— আমার পোলা অতিসত্বর প্রেমের বিষ পান করতে যাচ্ছে আমার ধারনা হয়। চিন্তা একটাই এই চক্করে মেয়েটার না বড়সড় কোন ক্ষতি হয়।‌
— তুমি দেখে রাখতে পারবানা?
— নাহ। বাপ হয়ে পোলার পেছনে গোয়েন্দা লাগাবো এমন বাপ আমি নাহ।
_____________________
ঝিমাকে আজ একবার আসতে বলেছিলো বাঁধন। বাঁধনের জানামতে ঝিমা এলে আর কেউ আসবেনা। হসপিটালে একজনের বেশী কেউ কখনো থাকেনা। যখন মা আসে তখন ঝিমা বাবা আসেনা। যখন বাবা আসে তখন ঝিমা মা কেউ আসেনা আবার যখন ঝিমা আসে তখন মা বাবা কেউ আসেনা। বাঁধনের মাথায় অন্য চিন্তা। হাত পা নাড়াতে সক্ষম এখন। কতো যে অপেক্ষা! নিজের সুস্থতা দেখে বাঁধন শান্তি পায়। যখনি সুমির কথা মনে পড়ে তখনি মনটা আফসোসে বিষিয়ে যায়। ঝিমা এলে প্রস্তাবটা অকপটে রাখে। তবে ঝিমা বিরক্ত হয়। কড়া গলায় বলে,
— মা বলেছে তোমাকে আর পেছন ফেরে না তাকাতে। সুমি আপুকে ভূলে যেতে।
বাঁধন মুচকি হাসে। ঠোঁটে হাসি বজায় রেখে বলে,
— ভাবী থেকে আপুতে চলে গেলি? বাহ। ভালোই উন্নতি।
— আমাকে ক্ষমা করো ভাইয়া। আমি মায়ের অবাধ্য হতে পারবোনা।
— তোকে মায়ের অবাধ্য হতে বলছিনা। কিন্তু আমি দেখতে চাইছি মা কেনো তোদের সবাইকে বাধ্য করছে। ঝিমা মা অবুঝপনা করলেও তুইতো অবুঝ না। সুমি আমার বিয়ে করা বউ। আমাকে তোরা আটকাতে পারিসনা।
— বিয়েটা বাদ হয়ে যাবে ভাইয়া। চিন্তা করোনা।
— কেনো বাদ হবে? সুমির কি জ্ঞান ফিরবেনা? অবশ্যই ফিরবে। ফিরতে হবে। আমি কেনো বিয়েটা বাদ করবো বলতে পারিস? তোরা চাইছিস বলে?

ঝিমা এক ধ্যানে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ। ভাইয়ের বিষয়ে অনেক চিন্তা করেছে সে। যতবার ই হিসাব মেলাতে গিয়েছে ততোবার ই শূন্য মিলেছে। আর চিন্তা করতে পারছেনা। ছোট মাথা বিরোধ জানিয়েছে আর প্রেশার নিবেনা। ঝিমা বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরে আসে হুইলচেয়ার হাতে। বাঁধন স্বস্তির শ্বাস ফেলে। ঝিমা বিনা বাক্য ব্যায় এ বাঁধনকে ধরে চেয়ারে বসায়। বাঁধনের এমন ব্যবহার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।তবুও চুপ থাকে। ভবিষ্যত এ কি হতে যাচ্ছে তা ভেবেই কপালে ঘাম জমে। সুমিকে দেখতে যাচ্ছে। কতগুলো দিন পর বিয়ে করা বউটাকে দেখবে। সেই বউ চুপ থাকবে। কথা বলবেনা। নড়াচড়া করবেনা। বাঁধনকে দেখবেনা।শুধু শ্বাস টানবে। এমন দৃশ্য দেখার জন্য ই বাঁধন একটু একটু করে এগুচ্ছে।

আইসিইউ রুমের সামনে একটা কিশোর সামনে পড়ে। ছেলেটা সম্পর্কে বাঁধনের শেলক হয়। সুমন নাম। বিয়ের আগে একদিন কথা হয়েছিলো। বিয়ের দিন খেয়াল করেনি। সুমন বাঁধনকে দেখেই সালাম দেয়। কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,
— ভাইয়া ভালো আছেন?
— তোমার বোনের কি অবস্থা?
— জীবন আছে।
সোজাসুজি প্রশ্ন সোজাসুজি উত্তর। বাঁধন এগুয় সামনের দিকে। ঝিমা একপাশে দাঁড়ায়। সুমন হেল্প করে। অনুমতি নিয়ে বাঁধনকে ভেতরে যেতে দেওয়া হয়। ঝিমা আসেনি। বাঁধন যদি কোন রিয়েক্ট করে ঝিমা সেটা দেখতে পারবেনা। ঝিমা মনে মনে ভয় পাচ্ছে। কিন্তু আশ্চার্য জনক ভয়ের কিছুই ঘটে না। বাঁধন কোন রিয়েক্ট ই করেনা। বাধনের চোখ জোড়া ছল ছল করে উঠে। বোধহয় এক দু ফোঁটা গড়িয়েও পড়ে। আবছা দৃষ্টিজোড়া নিবদ্ধ হাত বিহীন জীবন্ত লাশের দিকে। যার কোন বোধবুদ্ধি নেই,বাকশক্তি নেই, পৃথিবীকে ধারন ক্ষমতা নেই। বাঁধনের ধারনাই ঠিক। তবে দুটো হাত ই যে থাকবেনা সেটা ভাবতে পারেনি। বাঁধন ভেবেছিলো হয়তো একটা পা নষ্ট হয়েছে নাহয় চোখ নষ্ট হয়েছে। তাই মা বাবা ঝিমা এরকম আচরণ করছে। সুমির সাথে সম্পর্ক শেষ করে দিতে বলছে। বাঁধন এগিয়ে যায়। সুমির কাছাকাছি আসে। ফর্সা মুখখানা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। ঠোঁট দুটো শুষ্ক হয়ে আছে। বাঁধনের মনে পড়ে বিয়ের দিন এই মুখখানা কি যে সুন্দর দেখাচ্ছিলো। মেকাপে সাজে ফুটন্ত গোলাপ এর মতো লাগছিলো। যে হাত জোড়া আজ নেই সেই হাত জোড়া দিয়েই তো ছেলেমানুষী ইচ্ছেটা পূরন করতে গিয়েছিলো। নিজে ড্রাইভ করে শ্বশুর বাড়ি আসবে। কি পাগলামী!অনুমতি পাওয়া মাত্রই নিষ্প্রাণ চোখ জোড়া হেসে উঠেছিলো। পুরোনো স্মৃতিগুলো নড়ে চড়ে উঠছে। বাঁধন খেয়াল করে তার বুকে কষ্ট হচ্ছে। সামনে জীবন্ত লাশের মতো পড়ে থাকা একসময়কার সুন্দরী চঞ্চল সুমি মেয়েটাকে দেখে তার কষ্ট বাড়ছে। আবার বাঁধনের চোখ ছল ছল করে উঠছে। বাঁধন আর নিজেকে এখানে রাখার ক্ষমতা রাখে না। তার দম বন্ধ হয়ে আসছে। ঝিমাকে ঢেকে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে আসে। নিজের কেবিনে এসেও ছটফট করে।মাথার চুল খামচে পড়ে থাকে। ঝিমা ফুঁপিয়ে কাদে। নাক টেনে টেনে বলে,
— ভাইয়া তুমি জোরে জোরে শ্বাস নিবে? সবার সাথে দেখা করবে? মা কে ডাকবো?বাবাকে? না ডাকবোনা। তারা তোমাকে আরো হতাশ করবে। ভাইয়া আমার গ্যাং কে ডাকবো? শিপ্রুদেরকে?
— ছুটিকে সহ আসতে বল। এই মুহূর্তে আমার সবাইকে প্রয়োজন।
— ছুটি কি আসবে?

চলবে,
লাবিবা তানহা এলিজা ~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here