#বিষ_করেছি_পান(৩১)
(কপি করা নিষেধ)
ছানোয়ারের সপ্ন পূরণ হয়েছে। রিতীর ঢাবি সহ জাবিতে এবং জবিতেও চান্স হয়েছে। ছানোয়ার গিয়ে রিতীকে ঢাবিতে ম্যাথমেটিকস এ এডমিট করে এসেছে। সে যে রাস্তায় হেঁটে এসেছে সেই রাস্তায় তার মেয়েও হাঁটছে। একটা বাবার কাছে এর থেকে বড় কিছু আর পাওনা থাকে না। ছানোয়ার উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে রিতীর হাত দুটো মুঠোয় ভরে নিলো। মুখের দিকে আকুল হয়ে তাকিয়ে বললো,
— আমার কাছে তুই কি চাস মা? বল। আজ যা চাইবি খাস দিলে তোকে দিয়ে দিবো।
বাবার এমন অফারে রিতীর গা শিরশির করে উঠলো। সুক্ষ চোখে বাবাকে পরখ করলো। ছানোয়ারের চোখে মুখ চিকচিক করছে। যেনো এক্ষুনি চামড়ার উপর সোনার পান বসানো হয়েছে। ঠোঁট দুটো অনবরত কাপছে। রিতী বুঝার চেষ্টা করলো তার বাবা কতটুকু সিরিয়াস। রিতীর মুখটা মলিন হয়ে গেলো। কথা ঘুরাতে চাইলো।
— আজ থাক বাবা। সময় সুযোগ বুঝে অন্যদিন চেয়ে নিবো। অনেক বড় কিছু চাইবো। যা তুমি কখনোই মানতে চাইবেনা।
— কে বললো চাইবোনা? আমার মেয়ে আজ যা চাইবে খাস দিলে দিয়ে দেবো। একটুও কার্পন্য হবেনা। আমি আমার মেয়েকে চিনি। খারাপ কিছু সে কখনোই চাইবে না।
রিতী শুকনো হাসলো। মুখটা শক্ত আবরণে ঢেকে নিলো।
— আমাকে কখনো বিয়ের জন্য প্রেশার দিবেনা বাবা। আমি আগে নিজের ক্যারিয়ার দেখবো তারপর সেটেল হবার কথা ভাববো।
— তা তো অবশ্যই। আগে ক্যারিয়ার তারপর সেটেল। আমি আমার মায়ের সাথে একমত পোষন করছি।
কথাতো হাসিমুখে ছানোয়ার দিয়ে দিলো। কিন্তু শেষ অব্দি সে কথা রাখতে পারবে কি?
ছুটি রিতি ঝিমা তুলি একসাথে এসেছে বসুন্ধরায় সিনেমা দেখতে। তুলিকে ছুটিই এনেছে। এর জন্য ওকে ঢের পোহাতে হয়েছে।তুলির সাথে আড্ডা দেবার নাম করেই রিতীকে নিয়ে এসেছে। ঝিমা ছুটির চিরসঙ্গী। ফ্রি ফ্রি সব অফার লুটে নিচ্ছে। তবে সে এর বিনিময়ে অনেক বড় একটা কাজ করে যাচ্ছে। যাকে বলে ‘see hear but not tell.’ সিক্রেসি বিষয়টা তার মধ্য বরাবরই ঠিকঠাক। তুলির সাথে দীর্ঘ দিন পর দেখা। দুই বান্ধবী দুজনকে মিনিট খানেক হাগ দেয়। তারপর ঘুরতে থাকে। সময় মতো টিকিট নিয়ে ঢুকে যায় মুভি দেখতে। সিটে বসার ঘন্টা খানেক পর রিতীর পঞ্চেদ্রীয় বলে কেউ তার দিকে তাকিয়ে আছে। কে তাকিয়ে আছে? সবার চোখ এখন বড় পর্দায় থাকার কথা তবে কে তার দিকে তাকিয়ে থাকবে? চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে একটু পর পর খোঁজ ও করে। তবে কাউকে পায়না। হটাৎ ই পাশ থেকে কেউ বলে উঠে,
— তোমার প্রেম এদিকে।
চমকে লাফিয়ে সরে উঠে রিতী। সোহাগের মুখটা পাশের সীটে দৃশ্যমান হতেই অপর পাশে তাকিয়ে দেখে ছুটি ঝিমারা কেউ নেই। চোখ বুলাতে গিয়ে দেখে ওরা আছে কয়েকসিট পড়েই। সোহাগ ধ্যান ধরে তাকিয়ে আছে রিতীর অস্থির হওয়া মুখটার দিকে। গোলাপী১ ব্লাসনে ইস কী সুন্দর গাল দুটো টসটস করছে। হচ্ছে এখনি কামড়ে দিতে। সোহাগ তো রিতীকে কামড়াতেই চায়! পারে কি?
— সোজা হয়ে বসো।
সোহাগের ছোট কথায় রিতী একদম সামনে বরাবর সোজা হয়ে বসে। চোখ নিবদ্ধ হয় পর্দার দিকে। সোহাগ বিনা দ্বিধায় রিতীর বা হাতটা ধরে নিজের উরুর উপর রাখে। আকষ্মিক ঘটনায় রিতী স্তব্দ হয়। হাত ছাড়িয়ে নিতে গেলে সোহাগ রিতীর হাতের উপর নিজের হাত রেখে চাপ দেয়। রিতী উহ করে উঠে সোহাগের দিকে তাকায়। দুজনের চোখে চোখ আবদ্ধ হয়ে যায়।সোহাগ রিতীর হাতটা নিয়ে নিজের হাতের আঙুলের ভাজে ভাজে ঢুকিয়ে নেয়। রিতীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার চোখ বুলিয়ে বলে,
— পিরিতি? তোমার গোলাপী আভাযুক্ত স্কীনে হলুদ রংটা বেশ মানিয়েছে। হলুদ ফুলের মতো লাগছে। ইচ্ছে করছে এখনি ছুঁয়ে দেই।
— হাত ধরে তো বসেই আছেন। আবার কি?
— বুঝনা?
রিতী বিরক্ত হয়। সামনের দিকে তাকিয়ে বলে,
— আপনার সময় শেষ । হাত ছাড়েন। আমার বোনটাকে হাত করেছেন তাইনা? বড্ড ধান্দাবাজ আপনি।
— ধান্দাবাজ আমি না তোমার বোন। গুনে গুনে আমর থেকে তিনহাজার টাকা খসিয়েছে।
— বেশ করেছে।এখন তো আমার ইচ্ছে করছে আপনাকে খসিয়ে নিতে।
সোহাগ চোখ ছোট ছোট করে তাকায়। রিতীর রাগন্নিত মুখটা ভালোভাবে পরখ করে। আতঙ্ক গলায় বলে,
— সত্যি পিরিতি? বহুত চালাক তো তুমি। আমার কাছে এসে আমার সবকিছু ভোগ করার সপ্ন দেখছো নাকি?
রিতী জোড় করে হাত ছাড়িয়ে নেয়। দাঁতে দাঁত পিষে বলে,
— কখোনো না। কোনদিন না। আপনার সম্পত্তির উপর আমার কোন ইন্টারেস্ট নেই। বার বার কেনো শুনতে হয় আমাকে এই একই কথা?
— তাহলে ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে করার মানে কি?
— যাতে আপনার মধ্যে একটু হলেও ভয় ঢুকে যে রিতী কি জিনিস! রিতীর থেকে দূরে থাকতে হবে।
সোহাগ ফিচেল হাসে। রিতীর হাতখানা আবার নিজ হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়। ধীরে ধীরে বলে,
— তোমাকে ছোঁয়া যে এখনো আমার বাকি।
— হাত ছাড়ুন। আমি চলে যাবো এখনি।
মুভি না করেই চলে যায় রিতী। ছুটিরা মুভি শেষ করে দেখে রিতী নেই। রিতীকে খুঁজতে গেলে কিছুক্ষন পর সোহাগ আসে।
— তোমার আপু চলে গেছে।
— একা একা?
— নাহ আমার গাড়িতে।
— রাজি হলো?
— উবার নামক সোহাগের গাড়িতে যেতে রাজী হতে হয়না।
ছুটি যা বুঝার বুঝে গেছে। তুলি চলে যায়। ছুটি ঝিমার এবার ভূরিভোজের পালা। দুজন যা ইচ্ছা তাই অর্ডার করে। খেতে খেতে সোহাগ ছুটিকে আরেকটা আরজি জানায় যেটা শুনে ছুটির রাগ হবার কথা হলেও ছুটি একটুও রাগ করতে পারেনা। কেউ না জানলেও ছুটি জানে সোহাগ রিতী দুজন এখন স্বামী স্ত্রী। সোহাগের সোজাসাপটা প্রপোজাল।
— ছুটি রাণী! আজকের জন্য ধন্যবাদ। তোমার বোনটা আরো বেশি মাখনের মত নরম হয়ে গেছে। হাতটা কি তুলতুলে! আগে এমন ছিলোনা। যার কারণে তোমার বোনকে আমার পেতে ইচ্ছে করছে। ব্যবস্থা করো।
সোহাগের কথায় ঝিমা মুড বিগড়ে গেলো। নিরব দর্শকের খাতা থেকে প্রতিবাদী দর্শকের খাতাম নাম লিখালো। গুন গুন করতে করতে নাক সিঁটকালো,
— ছিহ! আপনার মন মানসিকতা এতো খারাপ দুলাভাই!এর জন্যই আপু আপনাকে দেখতে পারেনা।
সোহাগ ছুটিকে ভ্রু উঁচিয়ে বললো,
— এই বোবা শালী কথা বলে কেনো? একে চুপ থাকতে বলো।
— আমি সত্যি কথা বলি। কথা বলিনা দেখে আমাকে বোবা বলবেন?
— আমি তোমাদের বোনকে বিয়ে করতে যাই নি,তোমাদের বোন ই আমাকে চেপে ধরে বিয়ে করেছে।বোবাকে তো বোবাই বলবো। বোবা না হলে এতো দিন ধরে যে আমার ছুটি রাণি তোমার ভাইকে মন দিয়ে বসে আছে, কষ্টে চুপসে থাকে, বান্ধবীর প্রতি এতো টান আওয়াজ দাওনা কেনো?
কথাটা বলার সাথে সাথেই ঝিমা ছুটির মুখের দিকে তাকায়। ছুটিও ঝিমার দিকে তাকায়। ঝিমা আতঙ্ক ছড়িয়ে মৃদু চিৎকার করে,
— ছুটি!!
ছুটি তাড়াহুড়ো করে সোহাগকে বলে,
— অযাচিত কথা বলবেন না দুলাভাই।
ঝিমা জিজ্ঞাসা করে,
— কোনটা অযাচিত কথা?
ছুটি মনে মনে লাফাতে থাকে। বাঁচার জন্য হাঁসফাঁস করতে থাকে। ঝিমা ছুটিকে চেপে ধরে,
— দুলাভাই এটা কি বললো ছুটি? তুই? আসলেই? সোহাগ ভাইকে তুই এই কথা কেনো বলেছিস?
ছুটি অনবরত মাথা নাড়াতে থাকে। সোহাগ হাসতে হাসতে বলে,
— ও কি বলবে? ওর চোখ মুখের এক্সপ্রেশন এর দিকে খেয়াল করলেই দেখা যায় সব চকচকা।
ঝিমার চোখে জল চলে আসে। বিরবিরিয়ে বলে,
— এতো বড় ধোঁকা! এতো বড় বিশ্বাসঘাতকতা? আমার বিশ্বাসের অবমাননা এভাবে করলি?
ছুটি কিছু বলার আগেই ঝিমা সব টুকু অভিমান কুড়িয়ে দৌড় দেয়। ছুটি শান্ত বদনে ঠাঁয় বসে থাকে। ছলছল চোখে সোহাগের দিকে তাকায়। ঝিমার এইটুকু রিয়েক্ট ছুটির চোখ পর্যন্ত জল এনে দিয়েছে। ঘায়েলটা ভালোই হয়েছে। ছুটির কাঁদতে ইচ্ছে হয় হাউমাউ করে। রাগে দুঃখে খাবারের প্লেটটা সোহাগের দিকে ঠেলে দেয়। সোহাগ হাত উঠিয়ে বলে,
— এতো কষ্ট পাবার কিছু নেই। তুমি আমার কষ্টের দিক মন দাও। তোমার ওসব ছুচকো কষ্ট আমি এক নিমেষেই দূর করে দিবো। ছুটি জামার হাতা দিয়ে চোখ ডলে নেয়। শান্তভাবে জিজ্ঞেস করে,
— কি হিসেবে চান আমার বোনকে?
— কি হিসেবে মানে?
— আমি যদি আপুকে আপনার কাছে পাঠাই কি হিসেবে পাঠাবো? বিবাহিত বোনকে আমি কিন্তু আমার মতো করেই পাঠাবো আপনি গ্ৰহণ করতে পারবেন তো?
— যা লাগবে নিয়ে যাও।
— আপনি যদি মেয়েলি নেশাটা না করতেন আমি সত্যি সত্যি আমার বোনের জন্য যা লাগবে তাই নিয়ে যেতাম।যেতে না চাইলে কলার ধরে নিয়ে যেতাম।
ধমকে উঠে সোহাগ।
— এই মেয়ে এই? একদম বোনের মতো কথা বলবেনা বলে দিলাম। খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু।
— আমি তো ভালোই ছিলাম। খারাপ তো আপনি করলেন। কসম দুলাভাই! আপনে যে আগুনে ফু দিলেন সেই আগুন যদি আমার আর আমার ব্যক্তিগত বিষের মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় আমার তৃষ্ণার জল টুকু শুকিয়ে ফেলে আমিও আপনার তৃষ্ণার জলটুকু কেড়ে নিবো। ধাপরিয়ে মরবেন আপনি।
— বাহ ভালোই ব্লাকমেইল করো সোহাগের শালী বলে কথা! আমিতো ভেবেছিলাম সব কথাই তোমার বান্ধবীর সাথে শেয়ার করো। এখন তো দেখছি নিজেকে লুকিয়ে বান্ধবীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো।
এরপর কি হবে ভেবে ছুটির চোখ দুটো আবার ভিজে উঠে। ধীরে ধীরে একা একাই বেরিয়ে আসে । সোহাগ পেছন থেকে ডাকে। একা একা যেতে পারবেনা সোহাগ পৌঁছে দিবে বলে। ছুটি দাঁড়ায় না। সোহাগের সাথে একপাও যাবেনা। সে রিতীর মতো বোকা না।
ছুটির এমন অবাধ্যতা সোহাগ মেনে নিতে পারেনা। এইটুকুই মেয়ে তার আচরণে এইটুকু বোঝা যায়না। ছুটির প্রতি রাগ হয়। ভেবেছিলো ছুটিকে কব্জা করে রিতীকে মন চাইলেই নিজের মতো ঘুরাতে পারবে তা না মেয়ের দেমাগে আটেনা। আবার থ্রেড ও করে দেয়। পেছন থেকে কেউ সিটি বাজায়। সোহাগ ঘাড় ঘুরাতেই দেখে বাদল আর ধলা। সোহাগকে দেখে বিশ্রি হাসি হাসছে। হসপিটালে এদের মারার পর থেকে এরা আর সোহাগের পেছনে আসেনা। ভাই বন্ধুত্ত্বের সম্পর্ক সেখানেই শেষ। সোহাগের আর এদের প্রয়োজন হয়না। সোহাগের রাজ্যে এখন শুধু রিতীই বিরাজ করে। রিতীকে ভেবেই তার দিন চলে যায়। বাদল আর ধলা সেদিনের পর একজোট হয়ে চলে। সোহাগকে দেখেই হাসাহাসি করে। সোহাগের তখন রাগ হয়। খুন করে ফেলতে ইচ্ছা করে রিতীকে। পুরুষ হয়েও সে একটা নারীর কাছে হেরে গেলো। তাও আবার সেই নারী তার পিরিতি ভীতু কোমল একটা মেয়ে। ধলা একটু জোরেই বলে, — আজ বড়লোকের পোলা না জন্য আমরাতো শালা একটা পাইনা। আর বড়লোকের পোলারা বড়টা ছোটটা সহ ই খায়।
— হ্যারে ঠিক বলেছিস। কচি থেকে যে কলিতে এসে থেমেছে সেটাতো আজ না দেখলে জানতাম ই না। দুই দুইটা পাখিই খাঁচায় ডানা ঝাপটায়।
সোহাগের বোঝার বাকি থাকেনা এরা কি বলছে। ধলা রাগে বিচ্ছিরি একটা গালি দিয়ে বলে,
— শিকারী শালা নিমুকহারামের জাত। কথা দিয়ে কথা রাখেনা।
বাদল উস্কে দিয়ে বলে,
— জাত পাত দেখোস নাকি আজকাল? তোর ও কি জাতপাত আছে নাকি? তাইলে খপ করে খাঁচা থেকে পাখিরে টেনে ধরস না কেন?
— ইসস পাখিযে আঘাত পাবে।
— পাখির রক্ত খাইছিস কোনদিন? খাবি নাকি? চল। ভীষন মজা।
সোহাগের আর সহ্য হয়না। উঠে গিয়ে কলার চেপে ধরে বাদলের। মুখের উপর মুখ নিয়ে বলে,
— ভীষন মজা? খুব লোভ না? শেষ করে ফেলবো একদম নজর দিলে। চোখ তুলে ফেলবো।
বাদল কলার ছাড়িয়ে নেয়।
— এই যা যা। বিশ্বাসঘাতক শালা। প্রতারক ।কথা দিয়ে কথা রাখস না। বলছিলি রিতীরে দিবি। শালা নিজেই খাইলি শুধু শুধু তোর পেছনে এতো দিন ঘুরছি। তোর কথা শুনছি। নয়তো কবেই ঐ রিতী আমাগো বিছানায় থাকত।
কথাটা শেষ হতেই সোহাগ ঘুষি মেরে দেয় নাক বরাবর। উল্টো পাল্টা আরো কয়টা লাথি দিতেই দুজনেই উল্টো সোহাগের গায়ে হাত তুলে। রেস্টুরেন্টে ছোটখাটো একটা মারামারি হয়ে যায়। সোহাগ চিল্লিয়ে বলে,
— শালা তোদের ভাই ভেবে আমি ভুল করছি। আমার পিরিতি তোদের ভাবী হয়। কুত্তা ভাবীর দিকে নজর দেস। চোখ তুলে ফেলমু একদম।
— ভাই বড় ধন আত্মার বাঁধন। যদি নষ্ট হয় নারীর কারণ। ঐ নারীর জন্য ই আজ আমাদের গায়ে হাত তুলছোস। তোর কির্তী কিভাবে শেষ করতে হয় আমার জানা আছে। বড়টারে রেখে এখন ছোটটারেও ধরছোস। বড়টা নয় তোর বউ। ছোটটা?
— আল্লার কসম লাগে আমার শালীর দিকে হাত বাড়াবিনা। বোনের চোখে দেখবি নয়তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবেনা।
— আর তুই কি বোনের লগে রঙ্গতামাশা করস!
— শালা কুত্তার বাচ্চা মুখ ছিঁড়ে ফেলবো তোর।
সোহাগ আবার এগিয়ে যেতেই সিকিউরিটি এসে সোহাগকে ধরে নিয়ে যায় অন্যত্র টানতে টানতে। রাগে দুঃখে সোহাগ বাড়ি ফেরেনা। এই রিতীর কারণে সব কিছু হয়ছে। রিতীকে সে কিছুতেই ছাড়বেনা।কিছুতেই না। বুকটা ভীষন জ্বলছে।। বারে বসে দুটো বোতল শেষ করে। তবুও বুকের জালা কমছে না। মদ ফেলে কার্ড খেলায় বসে। ঝোঁকের বসে লাখ টাকা বাজী ধরে একরাতেই কাবার করে। ভোরের দিকে সবাই চলে যায়। টেবিলে বসে সোহাগ গোঙাতে থাকে। ঘুম এসে হানা দেয় চোখে। ঠিক সে মুহূর্তেই বাবার কল আসে। না দেখেই কানে ধরে হ্যালো বলতেই রমিজউদ্দিন ধারালো গলায় চিৎকার করে বলে,
— এতো বড় সাহস তোমার আব্বা? আমাদের না জানায়ে বিয়া করে বউ লুকাইয়া রাখছো। এখ্খন বাড়ি আসো। আজকে তোমার অপরাধের হিসাব নিকাশ করার পালা।
দেখতে দেখতেই উপন্যাসটি ৩০ পর্ব ক্রস করে ফেললো। আরো ৩০ পর্ব হবার আগেই শেষ হবে ইনশাআল্লাহ।গল্প পড়ার পর চুপি চুপি কেউ চলে যাবেন না। রেসপন্স অবশ্যই করবেন। যদিও আমি নিজেকে আনন্দ দেবার জন্যেই মূলত লেখালেখি শুরু করেছি তবে আমি যখন ঝিমিয়ে যাই আপনাদের সাপোর্ট ই আমার লেখালেখির অনুপ্রেরণা যোগায়। এটা অস্বীকার করার সাধ্য আমার নেই। ধন্যবাদ সবাইকে।
চলবে,
লাবিবা তানহা এলিজা