#বিষ_করেছি_পান(৩৩)
(কপি করা নিষেধ)
ছুটির পেছনে সোহাগ। সোহাগকে দেখে ছুটি ইচ্ছে করেই রিকশায় উঠেনি। ঝিমাটাকে বাঁধন স্কুলে নামিয়ে দেবে। সোহাগ পেছন থেকে ডাকছে,
— ছুটি রাণি! এই ছুটি রাণি! আরে দাঁড়াও।
ছুটি আরো জোরে পা ফেলে। সোহাগের উপর যতটা রাগ ছিলো ততোটা রাগ নেই। ঝিমাকে যখন জড়িয়েছিলো তখনি রাগ কমে গেছে। কিঞ্চিৎ পরিমাণ এখনো তবে আছে। সেটাকেই মুঠোয় রেখে ছুটি রাগ দেখাচ্ছে। তবে একদিক থেকে ছুটি সোহাগের প্রতি তুষ্ট। যে কথাটি প্রাণের বান্ধবীকে বলতে না পারায় ভিতরে ভিতরে একটা অপরাধ বোধ কাজ করতো ইনসিকিউরিটি ফিল হতো আজ তা নেই। সোহাগ যেনো এই অপরাধবোধ থেকে ছুটিকে বাঁচিয়েছে। ভাবতেই ছুটির ঠোঁটের পাশে হালকা খুশি উঁকি দেয় । সোহাগ এবার ছুটিকে পেছনে ফেলে। ছুটির দু পা আগে আগে হাঁটতে থাকে। পেছনে ঘাড় ঘুরিয়ে বলে,
— ছুটি রাণীর এতো জেদ!
— ঠকবাজ দের সাথে আমি কথা বলিনা।
সোহাগ মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায়। ছুটির কথায় একটুও রাগ হয়না। বরং ছুটির নাকের ডগায় রাগ তিড়িৎবিড়িৎ করছে। সোহাগ কলার ঝাঁকিয়ে বলে,
— তুমি কি আদৌ জানো ছুটি আমি তোমার কি হই ? তুমি তো বুদ্ধিমতি সব বুঝে নেবার কথা। এবার সম্মানটাতো দিতে পারো!
— দেবো না আমি সম্মান। আমাকে ঠকানো হয়েছে। কেনো আমাকে ব্যতিত এতোবড় একটা ঘটনা ঘটানো হয়েছে আমি জানতে চাই। আমি কি অমত ছিলাম? বরং আপনার হয়ে আমি মাঝে মাঝে কনভিন্স করার চেষ্টা করি। আপনি কি সেটা জানেন?
সোহাগ মুচকি হাসে। ছুটির মাথায় আলতো ছুঁয়ে দেয়।
— এরজন্যেই তো ভাবী বাংলাদেশের প্রত্যেকটা দুলাভাইয়ের তোমার মতো শালিকা হোক। ছুটি রাণি! দুলাভাই সরি।
— সরি মাই ফুট! সরি বললেই কি সব হয়ে যায় নাকি? এইযে আমাকে আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো। গেইট ধরার টাকা, পিড়িতে দাঁড়ানোর টাকা,হাত ধোয়ানোর টাকা, গিট দেওয়ার টাকা এগুলো কে পুষিয়ে দিবে শুনি?
— দুলাভাই সব দিবে।
— দুলাভাইয়ের টাকাতো আর দিবে না। দিলে দুলাভাইয়ের বাবার টাকা দিবে।
সোহাগের মুখের উপর ঝামা ঘষে ছুটি আবার পা চালায়। সোহাগ ও আসে।
— আমার বাবার সব টাকা পয়সা আমারি। অন্য কোন অংশীদার নাই।
ছুটি উত্তর দেয় না। সোহাগ মানিব্যাগ বের করে যতগুলো নোট ছিলো ছুটির হাতে ধরিয়ে দেয়।
— তোমার সাথে কথা আছে। আসো বসে কথা বলি।
— দাঁড়িয়েই বলি।
— ইমপর্টেন্ট!
রেস্টুরেন্টে গিয়ে ছুটি চেয়ার টেনে বসে। সোহাগ ব্রেকফাস্ট অর্ডার করে। ছুটি নোট গুলো একটা একটা করে গুছিয়ে নেয়। নোট দেখেই মনটা ফুরফুরা। নাহ! দুলাভাইটা খারাপ না। মনে মনে অসংখ্যবার থ্যাংকু দিলেও মুখে সিরিয়াসনেসটা বজায় রাখে। নিজের এই গুনের জন্য ছুটি মাঝেমাঝে নিজেকে অনেক বড় অভিনেত্রী মনে করে। টাকা গুলো ব্যাগে রেখে বলে,
— আমি হলাম শালিকা। আমি দুলাভাইয়ের বাবার টাকা নিতেই পারি। কিন্তু আমার বোন তো তা নিবেনা। শ্বশুরের গতর খাটানোর টাকা নিয়ে নিজেকে ছোট করে দেবার কোন মানেই হয়না।
— আমি তোমার বোনকে টাকা দিতেও যাবোনা। এখন আসল কথায় আসি। একটা সর্বনাশ ঘটতে চলেছে।
— কী সর্বনাশ?
— আমার আব্বায় আম্মায় আজকে তোমাদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবে। আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোন ভাবেই আটকাতে পারিনি। এবার তোমাকে কিছু করতে হবে।
— বিয়ে শাদীর ব্যপার! এখানে আমি কি করবো?
— তুমিই করবে। এই বিয়ে যেনো কিছুতেই না হয় সেটার দায়িত্ব নিবে।
— বাপরে! আমি ছোট মানুষ! আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা? আমি এসব ফর্দি মর্দি আটতে পারবোনা।
— হ্যা। কিভাবে পেত্নী সেজে আমাকে ভয় দেখাবে সেটা পারবে।
ছুটি এবার একটু ঢোক গিলে! মনে মনে দাতে জিহবা কাটে।বাপরে! জেনে গেছে! এত্তো পাওয়ার! আপুরে…. কিন্তু কিভাবে? সাত পাঁচ ভাবতে থাকে। ভাবতে ভাবতেই বলে,
— আমার বাবা কখনোই তোমাদের মেনে নিবে না। এবার কি হবে?
— আরে বাবা আমিতো সেটাই চাই মেনে না নিক।
— তাহলে আপনি আমার আপুকে কিভাবে বউ করে নিবেন?
— আমার তোমার আপুকে চাইনা।
— এটাকি আপুকে বলবো?
— যা ইচ্ছা করো।
— আ’ম কনফিউজড।
— জানিনা।
ছুটি রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে যায়। স্কুলে পৌঁছতেই মাথা থেকে দুশ্চিন্তা দূর করে ফেলে। আগে বাসায় যাক তারপর ভাববে। কিন্তু বাসায় যেতে যেতেই দেখে যা ঘটার তা ইতোমধ্যে ঘটে গেছে।
রমিজউদ্দিন এবং সোহাগী গাড়ি ভর্তি উপহার নিয়ে এসেছেন রিতীর বাসায়। সাথে আছেন অত্র আসনের এমপি মহোদয়। হটাৎ করে নিজ বাড়িতে গণ্যমানের আগমন দেখে ছানোয়ার কি রেখে কি দিয়ে আপ্যায়ন করবে সেটা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রুম্পা পাশের বাড়ির রতনের মাকে ডেকে নেয়। সাথে তাদের ছুটা বুয়া তো আছেই। রমিজউদ্দিন ছানোয়ার কে ব্যস্ত হতে না বলে। হাত ধরে পাশে বসায়। এমপি সাহেব কথাটা পাতেন।
‘ স্যার আপনি ব্যস্ত হবেন না। আমরা আজ বড় একটা আবদার নিয়ে আসছি আপনার বাড়িতে।’
বিচক্ষন ছানোয়ারের বুঝতে অসুবিধা হয়না। তার মুখে লটকে রয়েছে হাসি। বড় মেয়ে তার বড়ই সুকন্যা। আর কি চাই! হাত কচলে কচলে ছানোয়ার বলে,
‘ গরীবের ঘরে আপনার পায়ের ধুলো পড়েছে। এর থেকে সৌভাগ্যের আর কি হতে পারে?’
‘ হা হা। কই তোমার মেয়ে কই। ডাকো। শুনলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। দেখতে শুনতে জুড়ি নেই। ব্যবহার যেমন কথা বার্তা তেও তেমন।এমন মেয়ে আজকাল দিনে কোথায় পাবো?তাই খোঁজ পেয়ে চলে এলাম আমাদের ছেলের জন্য তোমার মেয়েটাকে চাইতে। তোমার কোন অমত আছে? ‘
ছানোয়ার হাতে আকাশের চাঁদ দেখতে পাচ্ছে। এমপি সাহেবের একটাই ছেলে। গত বছর পি এইচ ডি করে আসছে সুইজারল্যান্ড থেকে। ছানোয়ারের যে কি খুশি লাগছে!! প্রথমবার বাবা হওয়াতেও বোধহয় এতোটা খুশি হয়নি। গদ গদ হয়ে আচমকা এমপি সাহেবের হাত চেপে ধরে।
— ভাইজান ! আপনি আমার বড় ভাই! আপনার দয়া! আমার আপত্তি থাকার প্রশ্ন ই উঠেনা। এই সামান্য স্কুল শিক্ষকের মেয়ে এতো বড় ঘরে যাবে এতো আমার সৌভাগ্য। ছেলে তো আমি জানি। মাশাআল্লাহ মাশাআল্লাহ।
এমপি সাহেব প্রসস্ত হাসেন। এবার সোহাগী মুখ খুলেন। ঠোঁটের কোণে হাসি লটকিয়ে বলেন,
— আমার একমাত্র ছেলে ছানোয়ার ভাই। এতো বিষয় সম্পত্তি সবই আমাদের পর তার ই হবে। সারাজীবন পায়ের উপর পা তুলে খেলেও শেষ হবেনা। মেয়েকে নিয়ে আপনার কোন চিন্তা নেই। আমার বউমাকে আমি সোনায় মুড়িয়ে নিয়ে যাবো।
সোহাগীর কথা শুনে ছানোয়ারের মুখটা থমথমে হয়ে যায়। তার অঙ্কের হিসাবের ফল মিলছে না। সোহাগী বেগমকে ছানোয়ার চেনেন না। তবে এমপি মহোদয়ের স্ত্রীকে চেনেন। তাকে চেনেন না এমন কেউ নেই। রমিজউদ্দিন কে শুধু মুখ চেনাটাই চেনেন। শুনেছেন তিনি অনেক বড়লোক। অঙ্কে বেশ গড়মিল বেঁধে যায়। এরা কি কোনভাবে আত্ত্বীয় ?
— ভাইজান!! ছেলে আপনার কে হয়?
— আমার বড়ভাই সমতুল্য এই রমিজউদ্দিন ভাইয়ের ছেলে। আমার ভাতিজা। সাদেকুর রহমান সোহাগ। সোহাগের জন্য আপনার মেয়েকে চাইতে এসেছি।
রুম্পা ও একটু আগে এসে দাঁড়িয়েছে ছানোয়ারের পেছনে। সোহাগ নামটা শোনা মাত্রই স্বামীর কাধের উপর শার্ট খামচে ধরে। ছানোয়ার ও সাথে সাথে রুম্পার দিকে তাকায়। দুজনের চোখেই অস্বাভাবিকতা খেলা করছে। রুম্পা ইশারায় মাথা এদিক ওদিক নাড়ায়। যার অর্থ – নাহ। ছানোয়ার সিউর হবার জন্য বলে,
— বখাটে সোহাগ?
শোনা মাত্রই রমিজউদ্দিন হেসে উঠে।
— আরে না বেয়াই সাব। ছেলে আমার এখানে ওখানে আড্ডা দেয়। তাই মানুষ বখাটে বলে। আদরের ডাক! বুঝলেন তো?
ছানোয়ারের শরীরে তিড়িৎ বিডিৎ করে রক্ত লাফাচ্ছে। কোনভাবেই নিজেকে আটকাতে পারছেনা। বখাটে নাকি আদরের ডাক! কেরেক্টারলেস একটা ছেলে। মূর্খ কথাকার।তার সাথে নাকি নিজের ফুলের মতো মেয়ে বিয়ে দিবে। সাত পাঁচ না ভেবেই ছানোয়ার মুখের উপর বলে দেয়
— আপনার ছেলে যতটুকু শুনেছি পড়াশোনা করেনি।
— আরে বেয়াই সাব! এতো পড়ালেখা করে হবেটা কি? ছেলে তো আর আমার চাকরি করতে যাবেনা। এতো টাকা পয়সা বসে খেয়েও তিন প্রজন্ম শেষ করতে পারবেনা সেখানে চাকরীর কি দরকার?
— কিছু মনে করবেন না ভাইসাব। শিক্ষার একটা মূল্য আছে। মূর্খ মানুষ কেবল ই মূর্খ। আপনার ছেলের চরিত্রের ঠিক ঠিকানা নেই। আমি যতটুকু সামর্থ্য পারি মেয়েকে বড় আদরে বড় করেছি। মেয়ে আমার কোন বানের জলে ভেসে আসেনি যে তাকে একটা মূর্খ দুশ্চরিত্র ছেলের সাথে বিয়ে দিতে হবে।
— বেয়াই সাহেব। কথাটা অনেক বড় বলে ফেলেছেন। আমরা আত্ত্বীয়তা গড়তে এসেছি। অপমানিত হতে নয়। বউমাকে আমার ছেলের বউ করেই নিয়ে যেতে চাই।
— আমি দুঃখিত। বার বার আমার মেয়েকে বউমা বলে অপমান করবেন না। আমার ফুলের মতো মেয়ে এই অপমান টুকু নেবার যোগ্য নয়।
রমিজউদ্দিন সোহাগী এর উত্তরে কিছু বলতে গিয়েও বলেনা। ছেলে তাদের আসার আগে পই পই করে বলে দিয়েছে যেনো ওদের বিয়ের কথাটা না বলা হয়। রিতী কোনভাবেই তার বাবা মাকে কষ্ট দিতে পারবেনা। আর তার বাবা মা কষ্ট পেলে সোহাগ কে মেনে নিবে না। লেখাপড়া জানা মেয়ে। তাদের অকর্মা ছেলেকে যেচে পড়ে বিয়ে করেছে। ঘরের লক্ষীর বিরুদ্ধে কোনভাবেই যাওয়া যাবেনা। ব্যপারটা গোপন রেখেই এগোতে হবে।
এমপি সাহেব ছানোয়ারকে বোঝানোর চেষ্টা করে। উল্টো ছানোয়ার সোহাগের প্রত্যেকটা বেয়াদবির কথা এমপি সাহেবের কাছে তুলে ধরে সোহাগের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে বসে। এমপি সাহেব একগুঁয়ে মানুষ। সে আরো ছানোয়ার কে বলে,
— তুমি যদি মেয়ে বিয়ে না দাও তাহলে এইযে তোমার মেয়েকে আটকে রেখেছিলো,বাড়ি বয়ে এসে গেছে এসব সব এলাকায় রটিয়ে দেওয়া হবে। মুখ নিয়ে বাইরে বেরোতে পারবেনা। সোহাগ বখাটে। তার পরিবারের কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হবে তোমার। সামান্য স্কুল শিক্ষক তুমি যেখানে তোমার সম্মানটুকুই সম্বল। হয় মেয়েকে বিয়ে দাও নাহলে সর্বস্ব হারাবে।
ছানোয়ার নিজের কথায় অনড়। এর থেকে মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করবে কিন্তু ঐ বখাটের সাথে বিয়ে দিবে না। এক কথায় দু কথায় অনেক বড় ঝামেলা বেঁধে যায়। রমিজউদ্দিন হুমকি দিয়ে বাড়ি ছাড়ে। রাতের মধ্যে যদি উত্তর হ্যাঁ না আসে কাল মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাবে।
ব্যবস্থাও হয় সেভাবেই। ছানোয়ার ফোন তুলেনা। মেয়েকে বিয়ে দিবেনা জানায়। মোড়ের এক দোকানদারের থেকে গোপন সূত্রে খবর পায় আজ রাতটা শেষ হতেই বাড়ি থেকে রিতীকে অপহরণ করা হবে। এমপি মহোদয় এতে সায় আছে। আইন কোন ব্যবস্থা নিবেনা। ছুটি কিছুই বলেনা। বড়দের মাঝে চুপচাপ বসে আছে। তার সোহাগকে ফোন দিতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু ফোন বাবার হাতে। সোহাগকে জানালে অবশ্যই একটা ব্যবস্থা করবে। আচ্ছা দুলাভাই কি জানে? মন থেকে উত্তর আসে– না। জানে না। সে তো নিজেই চায় না রিতীকে। কেনো চায়না? এইযে তার আপু দুলাভাই কে এতো ভালোবাসে!! এতো চায়!! নয় মুখে নাই বলে! মুখে বললেই কি চাওয়া হয়? ছুটি বুঝে রিতী কি চায়। কেনো দুলাভাই কি পারেনা আপুকে ভালোবাসতে? মেনে নিতে? এতো কষ্ট দেবার ই কি মানে আছে? মনে মনে আওড়ায়। ছুটির অভিমান হয়। অনেক বড় অভিমান। সে ঠিক করে দুলাভাইয়ের সাথে আর কথা বলবেনা। যে তার আপুকে ভালোবাসে না তার সাথে কোন কথা নেই।
প্রতিবেশী শুভাকাঙ্ক্ষী দের নিয়ে ছানোয়ার আলোচনায় বসেছে। নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে। কি করবে কি করবে? কোন উপায় পাচ্ছেনা ঠিকঠাক। রিতী ভয় পেয়ে গেছে। মায়ের বুকে চুপটি করে মাথা গুঁজে আছে। মাথায় নানা রকম চিন্তা। সোহাগের বাবা কি তাকে সত্যিই তুলে নিয়ে যাবে? তারপর রিতীর কি হবে? সোহাগের হাতে বলিদান হবে। তার সাগরেদদের খাদ্য হবে? ঠোঁট চেপে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে উঠছে রিতী। ছানোয়ার আলোচনা থেকে উঠে রিতীর কাছে যায়। রুম্পার বুক থেকে টেনে মেয়েকে নিজের বুকে চেপে ধরে। তমাল ওমনি রুম্পার কোলে উঠে বসে। ছুটি এসে বাবার আরেক বাহু ঘেঁষে বসে। ছানোয়ার থমথমে গলায় বলে,
— একটা কিছু হয়ে যাবে রুম্পা। কিভাবে বাঁচাবো মেয়েকে?
রুম্পা আঁচলে মুখ চেপে কেঁদে উঠে। রিতী মাথা তুলে তাকায়। দুই হাতে চোখ মুছে বলে,
— বাবা চলো আমরা দূরে কোথাও চলে যাই। যেখানে কেউ আমাদের ক্ষতি করতে পারবেনা।
ছানোয়ার ভাবতে ভাবতে বলে,
— তোকে ছাড়বে না মা। কিন্তু কোথায় যাবো আমরা?
ছুটি ধীরে সয়ে বলে,
— গ্ৰামে।
— গ্ৰামে?
— মফস্বলের সেই গ্ৰামটায়। আমাদের দাদু বাড়িতে।
চলবে,
লাবিবা তানহা এলিজা