যখন_দুজনে_একা ৪২ পর্ব

0
648

#যখন_দুজনে_একা

৪২ পর্ব

বাসায় ফিরে মাহি বলল,
:আমি হসপিটালে যাব এখন ,রং ধুয়ে গোসল করে আসছি কাউকে চা দিতে বলো ।
: তুমি যাও রুমে আমি বলে দিচ্ছি।
মাহি রুমে চলে গেল।
রুবা লাইলি বুয়াকে মাহির জন্য আর তারজন্য চা দিতে বলল।
: মা কোথায় বুয়া ?
: আম্মা তার ঘরে ভাবি।
: ঠিক আছে তুমি যাও বুয়া!
রুবা শ্বাশুড়ি র ঘরে এসে নক করলো ! ভেতর থেকে সাফিয়া বেগম বললেন,
: কে ?
: মা রুবা!
: এসো ভেতরে রুবা !
: কি খবর তোমাদের রং খেলা কেমন হলো ?
: অনেক ভালো হয়েছে মা ! অনেক মজা করেছি!
: গুড ,মাহি কোথায়?
: ও গোসলে গেছে, হসপিটালে যাবে। আপনার সঙ্গে কথা আছে মা আমার!
: সিরিয়াস কিছু রুবা?
: সিরিয়াস মা!
: ঠিক আছে বসে তারপর বলো!
: আমার গায়ে রং মা আমি ঠিক আছি, রুবা হাঁটু তে ভর দিয়ে বেডের পাশে বসলো।
: হ্যাঁ এবার বলো! সাফিয়া বেগম উঠে বসলেন বেডে।
: মা আজ রিয়া আপুদের বাসায় সবাই রাতে থাকবে হৈচৈ করবে অনেক মজা করবে আমাকে যেতে দিবেন ?
: রাতে থাকবে ? তোমার খুব ইচ্ছে করছে ?
: হুম ।
: আচ্ছা ঠিক আছে , যাও!
: থেঙ্ক ইউ থেঙ্ক ইউ মা বলে খুশিতে রুবা সাফিয়া বেগম এর হাত ধরলো এক্সাইটেড হয়ে গেল বাচ্চাদের মত। গলা নামিয়ে রুবা বলল, মা কিন্তু আপনার ছেলে কিছু বলবে না তো?
: ওকে বলো নি তুমি?
: না মা আপনাকেই আগে বললাম!
: ঠিক আছে আমি ওকে বলে দিব , যাও আসছি!
: থেঙ্কস মা । আমি জানতাম, মা আমাকে যেতে দিবেই!
সাফিয়া বেগম হাসলেন,
: যাও এখন গোসল করে নাও।
: যাচ্ছি মা , বলে রুবা বের হয়ে গেল !

রুমে এসে দেখে মাহি এখনো ওয়াস রুমে। রুবা তার ড্রেস বের করলো, তখন‌ই মাহি বের হলো।
: চা দিতে বলেছি তুমি রেডি হতে হতে চলে আসবে।
: তুমি যাও আর কতক্ষন এভাবে রং মেখে বসে থাকবে ?
: আচ্ছা ভালো কথা , তুমি অপার কে কি বলেছো ?
: মাহি একটু ধাক্কা র মত খেল , কি বলেছি ?
: রুবা মাহির কাছে গিয়ে দাঁড়ালো ।মাহি খালি গায়ে টাওয়েল কোমড়ে জড়িয়ে আলমারি থেকে ওর কাপড় বের করছিল । রুবার কথা শুনে দাঁড়িয়ে গেল।
: তুমি নাকি ওকে বলেছো ,আমি ডাল ঘুটনি দিয়ে তোমাকে মারি ?
: এই কথা বলেছে ,আর কি বলেছে? মাহি প্রশ্ন করলো?
: এটাই বলল !
: ঠিক আছে তুমি গোসল করে বের হ‌ও , তারপর বলছি ও কি বলেছে আমাকে। যাও।
: রুবা হেসে বলল, ডাল ঘুটনি অস্ত্র টা ভালোই কি বলো!
: মাহি হাসছে আর শার্ট বের করছে ,হুঁ তুমি আসো ঘটনা বলি।
: ঠিক আছে বলে রুবা ওর হাতে লাগানো একটু রং মাহির পিঠে লাগিয়ে দৌড়ে ওয়াস রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।
: রুবা … এটা কি করলে ? এখন কি আমি আবার গোসল করব , তাহলে খুলো দরজা আমিও ঢুকি রুবা ,মাহি চিৎকার করে উঠলো! পাগল একটা বের হ‌ও আজ!
: এটা ডাল ঘুটনি র ঘুটা ছিল , রুবা চিৎকার করে ওয়াস রুম থেকে বলে হাসছে !

মাহি টাওয়েল দিয়ে পিঠ পরিস্কার করে হসপিটালে র জন্য রেডি হয়ে গেল।
রুবা বের হয়ে দেখে মাহি রেডি হয়ে বসে আছে। রুবা মনে মনে শ্বাশুড়ি র অপেক্ষা করছে। মাহি এসে রুবার হাত ধরলো ,
: কি করলে এটা তখন ?
: কি করলাম , তুমি যে সবার সামনে আমাকে রং লাগিয়ে দিল ,রুবা বলল!
: তাই না এটা সেই জন্য !
: হুঁ এটা সেই জন্য , রুবা হাসছে ।‌
: আমার কাছে রং নাই বলে এখন, তা না হলে তোমাকে রং দিয়ে আবার মেখে দিতাম রুবা। রাতে রং নিয়ে আসব তারপর তোমাকে রং দিয়ে পেইন্ট করব আজ !
: আচ্ছা দেখা যাবে !
এখন ছাড়ো বুয়া আসবে চা নিয়ে , রুবা হেসে বলল।
আর তোমার বুয়া রা যাও ছেড়ে দিলাম ।
রুবা চুল ঠিক করতে করতে বলল, বললে না অপার কে ডাল ঘুটনীর কথা কেন বললে?
: ও আচ্ছা পাগল একটা মেয়ে ! আমাকে বলছিলো গায়ে হলুদে আমার সঙ্গে ডান্স করবে ? আমি বললাম আমি তো ডান্স পারি না । বলে সে শিখিয়ে দিবে । চিন্তা করো অবস্থা। তখন বলেছিলাম আমার ব‌উ ডাল ঘুটনী দিয়ে পিটিয়ে আমাকে মেরে ফেলবে তোমার সঙ্গে ডান্স করলে !
: রুবা হো হো করে হাসছে ! তুমি এই কথা বলেছো ও মাই গড !
: আর কি বলব বলো এত নাছোড়বান্দা মেয়ে , তোমাকে কি বলেছে রুবা?
: হাসি থামিয়ে রুবা বলল, আমাকে বলল ভাবি আপনি নাকি ডাল ঘুটনি দিয়ে মাহি ভাইয়া কে মারতে যান ! উনি তো অনেক সুইট উনার সঙ্গে এরকম কেন করেন !
: তারপর তুমি কি বললে?
: আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম কথা শুনে বুঝলাম তুমি দুষ্টুমি করেছো ! তারপর বলেছি , আমার কথা না শুনলে আমি ডাল ঘুটনি, বেলান, খুন্তি সব ব্যবহার করি ! রুবা আবার হাসছে !
: মাহি ও হাসছে !
: তোমার ইচ্ছে হলে তুমি অপারের সঙ্গে ডান্স করতে পারো ,আমি ডাল ঘুটনী দিয়ে পিটাতে যাব না , রুবা হাসতে হাসতে বলল!
: সত্যি রুবা , তাহলে তো নাচানাচি করাই যায় !
: করো আমি না করেছি নাকি ?
দরজায় নক করে বুয়া ডাকছে!
: ভাবি টেবিলে চা দিসি আম্মা ডাকে!
: যাও আসছি!
: মাহি বলল, চলো আমাকে বের হতে হবে !
: হুঁ চলো , আচ্ছা তোমার কি আজ নাইট ডিউটি আছে ?
: না কেন ?
: এমনি বললাম!
: একটু রাত হবে কিন্তু চলে আসব তুমি টেনশন করো না !
ওরা কথা বলতে বলতে ই ডাইনিং এর দিকে আসলো!

সাফিয়া বেগম ওদের দুজনের অপেক্ষা করছিল!
: এসো মাহি , কি অবস্থা রং উঠেছে চেহারা থেকে ?
: আবীর ছিল তো পানি দিলেই উঠে যায় মা !
: তাহলে তো ভালোই! আমাদের বিয়ের সময় এরকম রং মাখামাখি করেছিল তোমার মামা রা তারপর তো রং আর যায় না । সে কি অবস্থা চেহারার!
হাসছে সবাই!
: ওরা তো কলকাতা থেকে রং নিয়ে আসছে শুনলাম!
: তাই বুঝি ?
: জ্বি মা , রুবা বলল!
: মাহি আজ রাতে তোমার খালামনির বাসায় সবাই থাকবে শুনলাম তারানা ও থাকবে মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে। রিয়া, নিঝুম দের বন্ধুরাও থাকবে। রুবা যাক থাকুক ওদের সাথে , তুমি কি বলো ?
: কি ! রাতে থাকবে ?
: হুঁ বিয়ে বাড়ির এটাই তো আনন্দ
: না থাকলে আনন্দ কম হবে ? তাহলে আর কি করা তুমি যখন বলছো যাক রুবা ! মাহি রুবার দিকে তাকালো !
: রুবা চুপ করে আছে !
: আমি তো এখন চলে যাব হসপিটালে, কার সঙ্গে যাবে ও ?
: আমি যাব তখন দিয়ে আসব, মা বলল !
: মাহি আর কোন কথা না বলে চুপ করে চা খাচ্ছে !
রুবা মাহির মুড বোঝার চেষ্টা করছে ! রেগে গেল নাকি ?
চা খেয়ে মাহি বলল,
: মা তোমরা তোমাদের মত যেও আমার বাসায় ফিরতে রাত হবে ! রুবা আমার পাওয়ার ব্যাংক টা কোথায় ?
: বেড সাইড ড্রয়ারে ! এনে দিব ?
: না তুমি চা শেষ করো আমি নিয়ে নিচ্ছি! মাহি রুমের দিকে চলে গেল!
সাফিয়া বেগম বললেন, যাও রুবা গিয়ে দেখো ও কি মুড অফ করলো নাকি ?
: তাই তো মনে হচ্ছে মা !
: যাও গিয়ে কথা বলো!
রুবা রুমে র দিকে রওনা হলো।

রুমে গিয়ে দেখে ,মাহি পাওয়ার ব্যাংক আর তার চার্জার কড ব্যাগে ঢুকাচ্ছে।
রুবা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো !
: তুমি কি মন খারাপ করলে ?
: কেন ?
: মা যেতে বলল আমাকে তাই ?
: না মন খারাপ করিনি , অবাক হলাম তুমি তো বাসার বাহিরে কখনও থাকো না তাই !
: তাহলে থাক না বলে দেই !
: এখন আর না বলতে হবে না , তো প্ল্যান টা কখন হলো থাকার?
: রুবা মাহির হাত ধরলো , তুমি রাগ করেছো?
মাহি হেসে দিল, রাগ করিনি একটু কেমন জানি লাগছে !
: আমি যাব না !
: না রুবা যাও সবাই আনন্দ করবে তোমার ভালো লাগবে ! এরকম তো কখনো তুমি এনজয় করো না দেখো মজা পাবে। আমার আসতে আসতে সেই রাত হবে । এসে ক্লান্ত থাকব ঘুমিয়ে যাব । সমস্যা নেই! যাও তুমি।
আসি রুবা এনজয় করো ! মাহি বের হয়ে গেল ‌। রুবা সিঁড়ি পর্যন্ত আসলো ওর সঙ্গে।
রুবার মন টা খারাপ লাগছে ।

রুমে এসে নিজের রুম গোছালো রুবা! চুপচাপ শুয়ে রইল কিছুক্ষণ।
মেসেঞ্জার এর রিং টোনের শব্দ শুনে দৌড়ে গিয়ে মোবাইল হাতে নিল , মাহির মেসেজ:
” এমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে চলবে না
এবার হৃদয় মাঝে লুকিয়ে বসো,
কেউ জানবে না, কেউ বলবে না”
রাগ করিনি তুমি যাও , তুমি আনন্দে আছো এটা দেখতেই আমার ভালো লাগে ”

আজ শুধু কবিতা হবে ডাক্তার সাহেব, তাহলে তাই হোক।
রুবার মন ভালো হয়ে গেল ! সে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গুছিয়ে নিলো‌ ! নিজেও রেডি হলো ! এখন শ্বাশুড়ি ডাকলেই বের হবে!
মোবাইল নিয়ে মাহিকে ইনবক্স করলো,
” যেতে যেতে মনে হয়, কোথায় যাবো?
তোমার মতো কোথাও তো আর কেউ নেই,
সকলেই বুকে পোষে নদী,
তবুও সব নদীতে তো আর ঢেউ নেই?”

রুবা একবুক ভালো লাগা নিয়ে মাহি র মেসেজ এর অপেক্ষা করছে।
অনেকক্ষণ পর মাহি ইনবক্স করলো,
” এই যে আমি এমন করে নদী পুষি, বুকের ভেতর
সে নদীটা জানতো কী আর, আপন কে তোর ? ”

দরজায় নক করার শব্দ হচ্ছে,
: কে বুয়া আসো ভেতরে!
: আম্মা যাইতে বলছে ভাবি।
: ব্যাগ টা নিয়ে গাড়িতে তুলে দাও!
রুবা শ্বাশুড়ি র ঘরে গেল!
: মা আসব?
: এসো , তুমি রেডি রুবা ?
: জ্বি মা ।
: তাহলে চলো যাই!
গাড়িতে উঠে সাফিয়া বেগম বললেন,
: মাহি কি রাগ করেছে ?
: না মা ও খুব অবাক হয়েছে , আমি তো কখনও বাসার বাহিরে থাকি নাই।
: সেটাই তো!

বনানীতে নিঝুম দের বাসায় আত্মীয় স্বজন এ ভরা আজ। মেয়েরা গায়ে হলুদ এর জিনিস সব রেডি করছে। রিয়ার এক ফ্রেন্ড ইভেন্ট প্ল্যানার । তার লোকজন ই মেইনলি সব কিছু সাজাচ্ছে।
রিয়া খুব খুশি হলো রুবা রাতে থাকবে শুনে। তানহা- মানহা তো শুনে চিৎকার দিয়ে উঠলো।
রুবা ও ওদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠেছে।

সাফিয়া বেগম রুবার আনন্দ দেখে খুব খুশি।
বোন আর ভাইয়ের বউ দের সঙ্গে বসে গল্প করছিলেন,
: রুবা তো কখনো এভাবে নিজের বাসার বাহিরে থাকে নি। বিয়ের আগে তার বাসা আর বিয়ের পর এই বাসায় , আজ যখন সে ইচ্ছা প্রকাশ করলো আমি বাঁধা দেই নি। এটাই আনন্দ করার উপলক্ষ ননদের বিয়েতে আনন্দ করবে।
তারানা মামি বললেন,
বড়পা মাহি কিছু বলেনি ?
: না আমি যেহেতু বলেছি ও কিছু বলেনি । একটু মুখ ভার করে রেখেছিল তারপর রুবাই ম্যানেজ করেছে।
: বড় আপা মাহি যে এত সুন্দর ভাবে সংসার টা করবে রুবার সঙ্গে সত্যি খুব ভয়ে ছিলাম যখন বিয়েটা হয়েছিল , নিঝুমের মা বলল!
সাফিয়া বেগম বললেন,
: আমার কোন ভয় ছিল না আমি জানতাম মাহি যা করে সিরিয়াসলি করে! বিশ্বাস করবে না, দুটো তে কি যে সারাদিন খুনসুটি করবে ! রুবার বার্থডে জানতো না মাহি , কিন্তু ঠিকই এত টাকা দিয়ে ওর পছন্দের পাখি কিনে নিয়ে আসছে রুবা তো খুশিতে লাফাচ্ছিল!
: আপা দোয়া করো আমার রিয়াটা যেন সুখী হয় ওদের মত ! ওর মধ্যে তো ছেলেমানুষি টা বেশি, নাহার বেগম বললেন।
: দোয়া করি সব সময় !

নিঝুম রুবাকে ডেকে বলল,
: কিভাবে সম্ভব হলো রুবা ?
: কি এখানে আসা?
: হুম!
: মা কে বলেছি , মা চা খেতে বসে ওকে বলল!
: এত সহজে মাহি রাজি হয়ে গেল ! বাহ্
: একটু মন খারাপ করে ছিল , তারপর বলল যাও !
: খুব ভালো লাগছে তুমি এসেছো! আমি তো ভেবেছিলাম মাহি দিবেই না ! মাহি কে ছাড়া তোমার খারাপ লাগবে না তো!
: না আপু এখানে যে মজা হচ্ছে মন খারাপ হচ্ছে না !
নিঝুম হেসে বলল, দেখো রাত বাড়ুক !
: না আপু সেরকম কিছু না ।

তানহা এসে নিঝুম কে টেনে নিয়ে গেল , আপু সবাই ও ঘরে নাচছে এখানে কি করছো তোমরা আসো, ভাবি এসো।
এই মুহূর্তে নিঝুম দের বাসায় বিয়ে বাড়ির আনন্দে ভরপুর।
এর মধ্যে রুবা খুব মিস করছে মাহি কে ! বারবার সে ইনবক্স চেক করছে!
কিন্তু মাহির কোন খবর নেই।

রাত এগারোটায় মাহি নিঝুম দের বাসার নিচে হাজির হলো। একবার ভেবেছিল সরাসরি বাসায় চলে যাবে! তারপর ভাবলো দেখেই যাই কি আনন্দ করছে রুবা !
অনেক দিন পর সে নিঝুম দের বাসায় এলো।
তাইতো , প্রায় এক বছর হয়ে আসছে !
সিকিউরিটি গার্ড টা দেখে বলে উঠল,
: স্যার অনেক দিন পর আসলেন!
: হুঁ ভালো আছেন ।
পুরো এপার্টমেন্ট লাইটিং করা হয়েছে। মাহির বিয়ে বাড়ির এই লাইটিং ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো লাগে।
আসা যাওয়ার পথে এ রকম লাইটিং দেখলে আজও ভালো লাগে। দূর থেকে দেখলেই মনে হয় অন্ধকারে র মাঝে একটা আনন্দময় বাড়ি!
লিফটে ছয় তলায় উঠে এলো মাহি, লিফটের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র মিউজিকের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে । বোঝো যাচ্ছে ভেতরে খুব হৈচৈ চলছে।
দরজা খোলাই ছিল মাহি ভেতরে এসে ঢুকলো!
তার খালামনি তাকে দেখে ছুটে এলো !
: আমার মন বলছিল তুই আসবি মাহি!
: মা আছে নাকি চলে গেছে ?
: আমার রুমে বড়পা!
:তুই ভেতরে ঢুকে যা রুবা , রিয়া , নিঝুম বাকিরা সব লিভিং রুমে ।
: সমস্যা নেই আমি ঠিক আছি , খালু কোথায় ?
: বড় রা সব আমার রুমে যা ঐ দিকে।
: জ্বি আচ্ছা।
: লিভিং রুমের দিকে উঁকি দিল মাহি ! ওর জন্য ওখানে বিরাট সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছিল!
দূর থেকে তাকিয়ে দেখে রুবা, তানহা, শ্রুতিদের সঙ্গে নাচছে।
ও দূর থেকে দেখে পুরো তাজ্জব! মনে মনে বলল,
: রুবা ম্যাডাম আপনি তো ভালো ই নাচতে পারেন , এই প্রতিভা লুকানো ছিল!
নিঝুম আর তার ফ্রেন্ড ও জয়েন করেছে নাচে । মাহি চলে আসলো দরজা থেকে ! দেখলে ওরা লজ্জা পাবে।
সে খালামনির রুমে ঢুকলো!
সাফিয়া বেগম ছেলে কে দেখে খুশি হলেন! মনে মনে স্বস্তি পেলেন , যাক ছেলে মন খারাপ করে নেই রুবা এখানে আসাতে।
: কখন এলে মাহি?
: মা এই তো এলাম মাত্র !
: রুবার সঙ্গে দেখা হয়েছে ?
: না মা যাইনি ওদিকে ওরা সবাই এনজয় করছে ।
তারানা মামি বলল,
: যাও মাহি তুমি ও ওদের সঙ্গে এনজয় করো!
: ঠিক আছি মামি !
খালামনি বলল, ডিনার দিতে বলি তুই তো হসপিটাল থেকে এসেছিস ক্ষুধা পেয়েছে তো অবশ্যই ?
: সবার খাওয়া শেষ ?
: না কিসের সব নাচানাচি করছে ও ঘরে !
: তাহলে পরেই খাই , মাহি বলল!
মাহি উঠে ডাইনিং এ চলে এলো এঘরে এসেই রিয়ার সঙ্গে দেখা ! ওকে দেখে রিয়া বলে উঠলো,
: আরে কে আসছে এটা ! রিয়ার কথা শুনে নিঝুম আর সবাই ডাইনিং এ এলো !
: একেই বলে কান টানলে মাথা আসে , বুঝলে রুবা !
: রুবা রিয়ার পিছনে এসে দাঁড়ালো , মাহিকে দেখে ওর এত ভালো লাগছে , তার চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
: তুই কতদিন পর আসলি আমাদের বাসায় বলতো মাহি, রিয়া বলল!
: কেউ তো আসতে বলেনি এত দিন আপু , মাহি হেসে বলল!
: ও তাই বুঝি ! তো আজ তোকে কে আসতে বলেছে ?
: আজ‌ও তোমরা কেউ বলোনি , এমনি চলে আসলাম তোমাকে দেখতে !
: ও আচ্ছা আমাকে দেখতে এসেছিস তাই না চাপাবাজ!
তানহা বলে উঠলো,
: ভাইয়া আজকে ভাবিকে দেখতে আসছে এটা সবাই না বললেও বুঝে। সব গুলো এক সঙ্গে হাসছে!
: তানহা পাকা বুড়ি হয়েছিস সব বুঝিস তুই তাই না , মাহি বলল!
: রুবা ভাই তুমি এলে বলেই আমাদের ভাইয়ের এ বাড়িতে পা পড়লো , রিয়া বলল!
: আচ্ছা যাও রুবা কে দেখতেই আসছি , এবার খুশি তো তোমরা!
: সেটা বল মাহি !
: বললাম তো , মাহি রুবার দিকে তাকালো ।
কি অবস্থা রুবা কেমন এনজয় করছো ?মাহি ডাইনিং এর চেয়ারে বসতে বসতে বলল,
রুবা মাহির কাছে এসে দাঁড়ালো ,
: ভালো ! কখন এলে তুমি ?
: যখন তুমি ডান্স করছিলে , মাহি হেসে বলল!
: রুবা লজ্জা পেয়ে গেল !
: ভালো ছিল রুবা !
: আরে ধুর তানহা আর শ্রুতি জোর করছিল!
: বুঝেছি , আচ্ছা যাও মা কে আসতে বলো বাসায় ফিরতে হবে রাত অনেক হয়েছে!
: যাচ্ছি বলে রুবা শ্বাশুড়ি কে ডাকতে গেল!

নিঝুম টেবিলে প্লেট সাজিয়ে দিল। মাহির পাশে এসে বলল,
: তুই যে রুবাকে আসতে দিবি কল্পনাও করিনি !
: মা ওকে পারমিশন‌ দিয়েছে !
: তুই দেসনি ?
: মা র উপর আমার কথা তো খাটে না !
: ভালোই তো রুবাকে ছাড়া থাকতে পারিস না !
: কি শুনতে চাইছিস বলতো তোরা , রিয়া আপু এতক্ষণ চালু ছিল এখন তুই !
: নিঝুম হাসছে ! তুই কি লজ্জা পাচ্ছিস মাহি
: তাহলে বুঝতে পারছিস না , মাহি বলল !

সাফিয়া বেগম সহ সব মুরুব্বি রা ডিনার করতে বসলো ! মাহিও বসেছে খেতে, ওদের ফিরে যেতে হবে বাসায় !
রুবা মাহির পাশে দাঁড়িয়ে আছে !
: তুমি খাবে না , মাহি জিজ্ঞাসা করলো!
: আপুদের সঙ্গে খাব !
মাহি রাতে খুব সামান্য ই খায় ! ওর খাওয়া তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল ! হাত ধুয়ে সে ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসলো ।
রুবা ওর পাশে গিয়ে বসে বলল,
:বাহিরে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে ?
: হুঁ‌, তুমি তো থাকছো এখানে রুবা !
: থাকতে না করছো ?
: আমি না করার কে ?
: এভাবে বলছো কেন , তাহলে চলো বাসায় যাই !
: না এমনি বললাম , তুমি এনজয় করো আমি টায়ার্ড হয়ে আছি বাসায় গিয়ে ঘুম দিব একটা !
: শোন খালি গায়ে এসি ছেড়ে ঘুমাবে না , এই কাজ টা কিন্তু তুমি করো প্রায়ই !
: আমি ওভাবে ঘুমালে কার কি , কে চিন্তা করে আমাকে নিয়ে ?
: আমি চিন্তা করি না ?
: তুমি তো এখানে থাকবে !
: তাহলে চলে যাব , ঠিক করে বলো প্লিজ!
: না না থাকো !

সাফিয়া বেগম রুবাকে ডাকলেন! রুবা শ্বাশুড়ি র কাছে এগিয়ে গেল!
: রুবা আমি আসি , এনজয় করো তোমরা !
রুবা শ্বাশুড়ি কে জড়িয়ে ধরলো !
সাফিয়া বেগম বললেন, আজ বাসায় ফিরে খারাপ লাগবে রুবা কে পাব না গিয়ে বলে তিনি হাসলেন!
: মা তাহলে চলেন , আমি ও আপনাদের সাথে চলে যাই !
সবাই রুবার কথায় হেসে উঠলো!
: কালকে মাহি আসবে তোমাকে নিতে ঠিক আছে , রাত ভর‌ সবার সঙ্গে মজা করো। আমি যাই তোমার বাবা অপেক্ষা করছে।‌ মাহি কোথায় আসতে বলো ওকে !
রুবা মাহিকে ডাকতে এলো ,
: চলো মা ডাকছে !
রুবার মাথায় হাত রেখে মাহি বলল, গেলাম ভালো থেকো , কখন আসব নিতে !
: যখন তোমার ইচ্ছা !
: তাহলে এখনি চলো !
: চলো, রুবা বলল!
মাহি হাসলো !

মাহি আর শ্বাশুড়ি কে লিফট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে গেল রুবা!
ওরা যাওয়ার পর রুবার একটু খারাপ ই লাগছে।
ডিনার করতে বসলো সব মেয়েরা একসঙ্গে।
রিয়া বলল,
: মাহি রুবার জন্য ছুটে আসছে আজকে।
: রিয়া আপু সেরকম কিছু না , মা এখানে ছিল মা কে নিতে এসেছিল ও ।
: তাই বুঝি রুবা , রিয়া বলল!
সবাই হাসছে।

মাহি আর সাফিয়া বেগম বাসায় ফিরে আসছে ।‌বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে!
দোতলায় উঠে সাফিয়া বেগম বললেন,
: যাও মাহি রেস্ট নাও , অনেক রাত হয়ে গেছে ! আর রুবা কখন আসবে কিছু বলেছে‌?
: আমি হসপিটালে যাওয়ার আগে নিয়ে আসব গিয়ে।
: ঠিক আছে !
: গেলাম মা !
: যাও মাহি!
অন্ধকার রুমে এসে লাইট অন ‌করলো মাহি ! রুবা নেই ঘরে , ঘর টা কত খালি খালি ‌লাগছে! ওর বুকের ভেতরটা ও খুব ফাঁকা লাগছে ।
মাহি বাসার কাপড় পড়ে সোফায় গিয়ে বসলো । সিগারেট ধরিয়ে চিন্তা করছে , অনেক দিন পর রুমে বসে সিগারেট ধরালো ! রুবা নেই বলেই সম্ভব হলো ! একটা মানুষ হঠাৎ জীবনে এসে কতটা জায়গা নিয়ে নিল ! আজ এত বছরের নিজের ঘরটা ,শুধু ওর জন্য খালি খালি লাগছে ।
ওর সব কিছু এক এক করে জায়গা নিয়ে নিলো এই ঘরে , মাহির অস্তিত্বের সঙ্গে । আজ ঘর জুড়ে ওর জিনিস, চূড়ি, চিরুনি, ওড়না সব এঘরেই বাস করে।
প্রথম রাতে বিছানার একটা পাশে চুপচাপ বসে ছিল।
অসুস্থ ছিল খুব! তারপর এক রাতে কত পাগলামী করলো চিৎকার, কান্নাকাটি সেই রাতে ওর হাতের উপর ই সারা রাত ঘুমালো।
আজ ওর কাছ ঘেঁষে শুয়ে থাকে , কিন্তু আবার কাছে আসে না ! হাসছে মাহি! আসতে তোমাকে হবেই রুবা !
মাহি হাসছে। মেসেঞ্জার এর রিং টোন বেজে উঠেছে।
যা ভেবেছে তাই , রুবার মেসেজ !
” পৌঁছে গেছো ”
মাহি :” হুঁ অনেকক্ষণ ”
রুবা ,” কি করছো‌ ? ”
মাহি, ” তোমার কথা ভাবছি, তোমাকে মিস করছি ”
রুবা, ” চলে আসো আমাকে নিয়ে যাও ”
মাহি রুবাকে কল করলো,
: কি হয়েছে , সত্যি চলে আসব ?
: আসো , আমার খুব খারাপ লাগছে ,রুবা বলল !
: বুঝে বলো রুবা তোমার সঙ্গী সাথীরা তোমাকে কিন্তু খুব ক্ষ্যাপাবে!
: না থাক বাবা , ওরা এমনিতেই তুমি আসাতে কত হাসছিল।
: সেটাই, আরও থাকো তোমার ও শিক্ষা পাওয়া দরকার আছে আমাকে ছাড়া এনজয় করতে গেছো !
: তুমি ও তো জোর করে বললে না , রুবা তুমি যেতে পারবেনা !
: আমার তাই করার দরকার ছিল ?
: হুঁ !
: নেক্সট বার মনে থাকবে , যাও এখন ঘুমাও !
: রাখি
: হু
মাহি ফোন রেখে বলল, পাগল ।
মাহি বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো ! একলা বেডেও তার খুব খারাপ লাগছে ! কতটা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সে রুবার সব কিছু তে !
মনে মনে বলল, রুবা তুমি এভাবে আমাকে রেখে আর কোথাও যাবে না !
রুবা আবার মেসেজ দিয়েছে,
” আমার শুধু ইচ্ছে করে
সঙ্গে বসে থাকি
হঠাৎ করে তোমার গায়ে
‌গোপনে হাত রাখি!

রাখতে রাখতে সাহস হবে
সাহস থেকে প্রেম
বুঝবে আমি শেকড় গুলো
কিভাবে ছড়ালেম ”

মাহি বাকি লাইন গুলো কবিতার রুবাকে মেসেজ করলো,
” আমার শুধু ইচ্ছে করে
‌‌সঙ্গে ভেসে যেতে
ভাসতে ভাসতে সব টা নদী
বুকের কাছে পেতে ! ”

রুবা লাভ ইমোজি পাঠালো!

নিঝুম হঠাৎ রুবার পাশে এসে বলল,
: মাহির সঙ্গে কথা বলছো?
: জ্বি আপু!
: কি খুব মিস করছে তোমাকে ?
: হাসল রুবা।
: এক কাজ করি তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসি এখন ,ওকে তুমি সারপ্রাইজ দিলে !
: না , বাহিরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে এখন গেলে বকবে !
: বকবে না আনন্দে লাফাবে !
: কালকে যাব আপু ও বাই দিস টাইম ঘুমিয়ে গেছে !
: তাই !
: হুম।
: ঠিক আছে ।
রুবা একটা কথা বলবো , কিছু মনে করবে না তো ?
শিহাব ভাইয়া কে মনে পড়ে না তোমার ?
: রুবা এক পলক তাকিয়ে রইল নিঝুমের দিকে !
: প্লিজ রুবা সরি !
: ঠিক আছি আপু ,তারপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে উঠলো রুবা ,
: খুব মনে পড়ে আপু , প্রতিদিন রুম থেকে বের হ‌ওয়ার সময় ঐ ঘরটা দেখে মনে পড়ে, বারান্দায় বসে গল্প করতাম আমরা বারান্দা টা দেখলে মনে পড়ে ! খাওয়ার টেবিলে বসে মনে পড়ে। মাহি কে দেখে ও মনে পড়ে ! ঐ বাড়ির প্রতিটি কোণায় শিহাবের অস্তিত্ব ওর কথা মনে করিয়ে দেয় ! আগে খুব কাদতাম । এখন শুধু দীর্ঘ শ্বাস আসে।
: মাহি ওর ভালোবাসা দিয়ে ওর অস্তিত্ব দিয়ে সব ভুলিয়ে দিচ্ছে আপু!
: মা আমাকে একদিন বলেছে , রুবা যে চলে গেছে তাকে আঁকড়ে ধরে, যে আছে তোমার বর্তমান জুড়ে তাকে কষ্ট দিও না । তাকে তার অধিকার থেকে দূরে রেখো না । আমার এক ছেলের সৃত্মি কথা মনে করে আমার আরেক ছেলে র ভবিষ্যৎ নষ্ট করো না ।
ওর দ্বায়িত্বশীলতা ওর ভালো মনটা‌ যত দেখেছি আমি ভালোলাগায় ভেসে যাই,
মাহির সব কিছু আমার মনে জায়গা করে নিয়েছে তখন‌ই।
: খুব ভালো ! তোমরা খুব ভালো থাকবে দেখো। তুমি কখনও মাহি কে ভুল বুঝবে না রুবা ! ও যা বলে সত্য বলে ও অভিনয় পারে না তাই বলছি ভুল বোঝো না একে‌ ।
: জানি আপু।
:অনেক রাত হয়েছে ঘুমাবে না রুবা ?
: ঘুমাব !
: চলো আমার রুমে ।
ওরা নিঝুমের রুমে গেল।
মাহি ঘুমিয়ে গেছে , নাকি অনলাইন ?
: না ঘুমিয়ে গেছে , মনে হচ্ছে !
: তুমি ও ঘুমাও রুবা !
নিঝুম আর রুবা এক‌ই মানুষের কথা ভাবছে শুয়ে। কিছুক্ষণ পর রুবা এত সুন্দর একটি মেসেজ পেলো মেসেজ পড়েই তার মনে হলো সে বাসায় চলে আসবে মাহির কাছে । মাহি লিখেছে,
” তুমি নাই বলে মোর সাথে
তাই কি‌ বিরহ বরষাতে
এত বাড়ি ধারা আজ রাতে
অঝোরে ঝড়ে প্রিয়! ”

সকাল সাতটার মত হবে মাহি ঘুমের ঘোরে পাশ ফিরতেই দেখে রুবা পাশে শুয়ে আছে। প্রথমে স্বপ্ন‌ই দেখছে মনে হলো, সঙ্গে সঙ্গে ই যেই স্পর্শ করলো দেখে রুবা সত্যি সত্যি পাশে শুয়ে আছে। ওর হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ খুলে তাকালো !
: কি ব্যাপার থাকতে পারলে না?
: রুবা ঘুম ঘুম চোখে বলল, না!
: খুব তো সারারাত মজা করবে বলে গিয়েছিলে , এখন কিহলো ?কার সঙ্গে এলে রুবা?
: খুব ঘুম পাচ্ছে!
: সারারাত জেগে থেকে এখন আমার কাছে আসছে ঘুমাতে! মাহি তাকিয়ে দেখে রুবা সত্যি সত্যি গভীর ঘুমে । মাহি ওর মুখ টা স্পর্শ করলো!
: রুবা ঐ বাসায় বলে এসেছো তো তুমি এখানে চলে এসেছো, তা না‌হলে চিন্তা করবে সবাই ?
: নিঝুম আপু জানে, চোখ বন্ধ করে ই রুবা বলল!
: ওর ঘুমন্ত মুখটা দেখছে আর হাসছে মাহি! এত আদর আদর লাগছে।
মাহি রুবাকে পাশ ফিরে জড়িয়ে ধরলো ! ওর ঘুমন্ত গালে আদর করে দিল। মনে মনে বলল,
: পাগল কোথাকার!
তারপর নিজের খুব কাছে টেনে নিলো, বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে রাখলো রুবাকে।
কানের কাছে মুখ এনে বলল,
: ম্যাডাম গোপনে না আপনি আমার সামনে দিয়েই আমার গায়ে হাত রাখার অধিকার রাখেন !
থাকেন এভাবে ঘুমিয়ে ,আমি আপনাকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি।
মনে মনে বলল, সময় টা থেমে যাক রুবা তোমাকে এভাবে ই জড়িয়ে ধরে থাকি। হসপিটালে যেতে ইচ্ছে করছে না আজ!
মাহি রুবার‌ আর তার গায়ে কাঁথা টেনে নিল !
বৃষ্টি তখনো বাহিরে ব্যাকুল হয়ে ঝড়ছে।‌

( চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here