এক পশলা বৃষ্টি – শেষ পর্ব

0
411

#এক_পশলা_বৃষ্টি
লেখনী ঃ আলো ইসলাম
#শেষ_পর্ব

— এখন হবে নাচের কম্পিটিশন তাও জোড়া জোড়া। কিন্তু তার আগে নুসু,তন্নি,অনু,নাহিদ, সায়ন,আরুশি,হাবিবা তারা নাচ করবে একসাথে। তাই তারা আগেই স্টেজে চলে গেছে। সবাই কালা চশমা গানে নাচ করবে তাই সেই গান চালু করে দেওয়া হয়েছে। তারপর নাচ শুরু তাদের।

— সবাই বেশ ইঞ্জয় করছে তাদের নাচ। সবাই কালো চশমা পড়ে এক তালে নাচ করে যাচ্ছে। ওদের নাচ শেষ হতেই অন্তর মাইকের মুখে এনাউন্স করেন এবার নাবু আর অনিক নাচ করবে। নাবু তো প্রথম থেকে বেশ ঘাবড়ে আছে। কারণ এই ভাবে সে কখনো নাচ করেনি আগে। সবাই নাচের জন্য প্রাক্টিস করেছে ঠিকই কিন্তু তাও ভয় একটা থাকে প্রথম বলে কথা।

— অনিক নাবুর হাত ধরে স্টেজে উঠে। তারপর তেরি মেরি-মেরি তেরি গানে তারা নাচ শুরু করে৷ নাবু প্রথমে ঘাবড়ে থাকলেও নাচের স্টেপ গুলো সে বেশ ভালো ভাবে তুলতে পেরেছে। সাথে অনিক আরো সাহস জুগিয়েছে তাকে। ওদের নাচ শেষ হতেই তানু অন্তরকে বলে সজিয়া আর রাহাতকে স্টেজে ডাকে। তারপর দুজনেই প্রথমে চমকে উঠেছিল কিন্তু তানু ইশারায় বুঝিয়েছে কিছু হবে না। তাই তারাও চলে যায় খুশি হয়ে স্টেজে।

– এবার তাসু আর রনিত এবং জাকিয়া আর মেহেদী একসাথে ডান্স করবে৷ সবার আবদার দুই কাপল এক সাথে ডান্স করবে। আর তাদের মধ্যে একটা কম্পিটিশন হবে। তাসু আর জাকিয়া দুজনেই লাজ লজ্জা ভুলে মেহেদী আর রনিতের হাত টেনে স্টেজে নিয়ে যায়। তাসু বলে শুনো ডাক্তার যদি আমরা জিততে না পারি তো বাসর রাতে খবর আছে হু। লেডি ডন আমি মাথায় থাকে যেনো 😎😎।

— তাসুর কথায় রনিত একটু ঘাবড়ে যায় আর মনে মনে ভাবে এখানে এসেও থ্রেট দিচ্ছে কি মেয়েরে বাবা। জীবন আমার তেজপাতা বুঝা শেষ 🙂। জাকিয়া ও মেহেদীর কানে কানে বলে শুনুন ভালো করে ডান্স করবেন কিন্তু আমরা জিতব ওকে।মেহেদী মাথা নাড়ায় অবুঝের মতো। রনিত মেহেদী দুজনই যেনো বিপদে পড়ে গেছে বিয়ে করতে এসে এমন ভাব।

– হাম তেরে বিন আব রেহে নাহি সাকতা তেরে বিনা কেয়া জুদ মেরা গান চালু করা হয়। তাসু আর রনিত, জাকিয়া আর মেহেদী নাচ শুরু করে। দুই কাপলই অনেক সুন্দর করে ডান্স করে চলেছে। সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখছে। কেউই কারোটা থেকে চোখ সরাতে পারছে না। নাচের মাঝে তাসু রনিতকে চোখ মেরে দেয় আর রনিত চোখ বড় বড় করে তাকায়। কোথায় এই মেয়ে লজ্জা পাবে তা না তাকেই আরো লজ্জাতে ফেলছে।

— এবার সবাই সবার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে এক মনে নাচ করে চলছে। এমন ভাব যেন তারা কোন রাজ্যে হারিয়ে গেছে। মুগ্ধ হয়ে চার জোড়া চোখ চেয়ে আছে তাদের প্রিয় -প্রেয়সির দিকে। গান যে শেষ হয়েছে কখন তাদের কোনো খেয়ালই নেই। সবার তাদের কান্ডে হাসাহাসি শুরু করে দেয়। তখনই অন্তর মাইক নিয়ে জোরে তাদের ডেকে উঠে আর তাদের ধ্যান ভাঙ্গে। তারপর কি হয়েছে বুঝতে পেরে ওরা সবাই লজ্জা পেয়ে যায়। অন্তর বলে ভাই এখনো বাসর ঘর আছে তো দেখার জন্য। এতে ওরা লজ্জা পেয়ে যায়।

— তারপর ওরা এদের জায়গা বসে। তানু এমনি আফসোস করছে সে বিয়েতে কিছু করতে পারছে না তাই। আরো মন খারাপ যেনো না লাগে তানুর তাই তনয় বলে অন্তর আর মেহু, তনয় আর তানু এবার ডান্স করবে কিন্তু তানু চেয়ারে বসে থেকে তনয়কে সাহায্য করবে। এতে তানুর একটু মন টা ভালো হয়। তারপর ওরা চলে যায় স্টেজে। হিন্দি একটা নরলাম গান চালু করে তারা নাচে। তানুও বসেই নানা ভাবে স্টেপ তুলছে নাচের৷ তারপর নাচ গানের পালা শেষ করে সবাই যে যার ঘরে চলে যায়। সবাই অনেক ক্লান্ত তাই রেস্টের দরকার। কাল আবার বিয়ে অনেক কাজ আছে।

————————————
“”আজ বিয়ের দিন। চারিদিকে মুখরিত সব কিছু। হৈচৈ আনন্দে ভরা অডিটোরিয়াম। সবাই সবার মতো কাজে ব্যস্ত। তনয় ভোরে থেকে উঠে সব দেখাশুনা করছে সাথে অন্তর অনিক রহিত আছে। মেহেদী রনিত তারাও যে বসে আছে তা নয়৷ তাদের ও বিভিন্ন দিক দেখতে হচ্ছে যেহেতু এক সাথেই হচ্ছে বিয়ের প্রোগ্রাম তাই।

— তাসু আর জাকিয়াকে একটা লাল টকটকে বেনারসী সাথে ম্যাচিং করা জুয়েলারি পড়ানো হয়েছে।ভারী মেকাপ সব মিলাই অপরুপ সুন্দর লাগছে দুজনকে। তানু একটা লেহেঙ্গা পড়েছে খয়েরী রঙের লেহেঙ্গা চুমকির কাজ করা অনেক সুন্দর লাগছে তানুকে লেহেঙ্গাটাই।

— মেহু, নাবু,নুসু, অনু,তন্নি,আরু,হাবিবা সবাই কমলা রঙের লেহেঙ্গা পড়েছে তবে সবার টা সবার থেকে ভিন্ন। তনয় সবাইকে গিফট করেছে লেহেঙ্গা গুলো। সাথে ভারি মেকাপ করেছে সবাই চুল গুলো একপাশ দিয়ে নেওয়া সব মিলাই অনেক সুন্দর লাগছে সবাইকে।। তানু সাজ তেমন পছন্দ করে না কিন্ত আজ সেও সেজেছে তনয়ের জন্য। তনয় বলেছে আজ তাকে মনের মতো করে সাজতে তাই।

— ছেলেরা সবাই ফরমাল লুকে আছে। শুধু বর গুলো বাদে। তারা বিয়ের শেরওয়ানি পড়েছে। তনয় কালো সুট কালো ঘড়ি স্পাইক করা চুল এই লুকে জাস্ট অসাধারণ লাগছে তনয়কে। তানু যেনো চোখ সরাতে পারছে না তনয়ের থেকে। তনয় বুঝতে পেরে বলে এভাবে দেখো না বরটা তোমারই তানু পাখি। দেখার জন্য অনেক সময় পাবে আরো। আশেপাশের মানুষ দেখছে এখন দেখা একটু অফ রাখো ঠোঁট চেপে হেসে বলে তনয়। তানুর এবার ধ্যান ভাঙ্গে আর ভীষণ লজ্জা পায় তারপর। তনয় হেসে চলে যায় অন্যদিকে।

— বিয়ের সকল কাজ কর্ম শেষ করে চলে আসে বিদায় পর্ব। সবার মনে এবার চলে আসে বিষাদের ছায়া। তনয়ের বাড়ির সবার মন খারাপ অনেক কারণ দুই মেয়ে এক সাথে চলে যাবে বাড়ি থেকে। তাই সবাই অনেক কষ্ট পেয়েছে। তাসু আর জাকিয়া তাদের বাবা মা কে ধরে কেঁদে উঠে তাদের কান্না দেখে সবাই কেঁদে দেয়। তারপর তাসু তনয়কে আর জাকিয়া অনিককে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। তনয় আর অনিকের ও কান্না পাচ্ছে কিন্তু তাদের কাঁদলে চলবে না।

–তনয় বলে আরে পাগলী কাঁদছিস কেনো। এভাবে কান্না করলে কিন্তু রনিতকে পাঠিয়ে দেব আর তোকে রেখে দেব হুম । রনিত বলে ভাই আমারে মেরো ফেকো তাই এই কথা বলো না একটা মাত্র বউ আমার। বউ ছাড়া যামু না আমি। তাসু এবার হেসে উঠে তাদের কথা শুনে৷ জাকিয়াকে তনয় এবার জড়িয়ে ধরে বুঝায়। একে একে সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায় তারা। সবাই মন খারাপ করে ভেতরে চলে আসে। তাদের ও বাড়ি ফিরতে হবে তাই স৷ গোচগাচ করার আছে।

————————————-

– ফুল দিয়ে সাজানো বিসানার উপর বসে আছে জাকিয়া।মেহেদী এখনো আসে নি। জাকিয়া এসে পুরো ঘর একবার দেখে নিয়েছে। মেহেদীর ঘরটা অনেক সুন্দর গোছানো একটা ঘর। তবে সব কিছু সাদা দিয়ে ঘেরা তাতে ঘরটার সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তুলেছে। জাকিয়া একরাশ ভয় সাথে লজ্জা নিয়ে বসে আছে। সাথে অনেক ভালো লাগাও কাজ করছে৷ তার যেনো এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না ভালবাসার মানুষটা কে সে এত সহজে পেয়ে গেছে। তখনই দজরা খোলার শব্দ হয় আর জাকিয়া একটু নড়েচড়ে বসে। সাথে ভয় আর লজ্জা আরো বেড়ে যায়।

— মেহেদী ঘরে আসতেই জাকিয়া নেমে তাকে সালাম করতে যায় কিন্তু মেহেদী বাধা দেয় আর বুকে জড়িয়ে নেয়। জাকিয়া তাতে মৃদু হাসে। মেহেদী বলে তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী তাই তোমার অধিকার আমার সমান সমান তাই পায়ে না বুকে স্থান। মেহেদীর কথায় জাকিয়া মুগ্ধ হয়ে যায়। তারপর মেহেদী বলে জাকিয়াকে অজু করে আসতে এক সাথে নামাজ পড়বে তারা। আল্লাহর দোয়া নিয়ে তারা এই রাত থেকে পথ চলা শুরু করতে চাই। জাকিয়া ও চলে যায় মেহেদীর কথা মতো।

——————

— তাসু অনেক্ষন থেকে অপেক্ষা করছে রনিতের কিন্তু তার আসার নাম নেই। তাই বিরক্ত হয়ে ঘরের এদিক থেকে ওদিক পায়চারি করছে তাসু। আজ আসুক রনিত ঘরেই ঢুকতে দেবে না সে৷ তখনই রনিত ঘরে প্রবেশ করে। তাসুকে এই ভাবে দেখে বুঝে যায় আবহাওয়ায় বেশ গরম আছে। তাই রনিতা দরজায় ছিটকিনি দিয়ে একটা ফোকলা হাসি দিয়ে বলে আসলে তাসু সোনা হয়েছে কি রনিতকে বলতে না দিয়ে তাসু বলে তাড়াতাড়ি বের হও ঘর থেকে। আজ তুমি বাইরে থাকবে আর এটাই তোমার দেরি করে আসার শাস্তি।

— রনিত বুঝে এই মেয়ে সেই ক্ষেপে গেছে তাই তাসুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে আরে শুনবে তো কেনো দেরি হলো। তাসু এবার চুপ আছে কিছু বলে না। রনিত বলে তোমার জন্য গিফট নিয়ে আসতে গিয়ে তো দেরি হয়ে গেলো। তারপর আমাকে যুদ্ধ করে এই রুমে আসতে হয়েছে। তাসু ভ্রু কুচকে বলে যুদ্ধ করে মানে। রনিত বলে হ্যাঁ যুদ্ধ করেই বটে। ওই বজ্জাত গুলো বলে ঘরে আসতে নাকি ৫০ হাজার টাকা দেওয়া লাগবে( রহিত আরু,হাবিবা,এরা)। মামা বাড়ির আবদার। আমার ঘর আমার বউ আমি আসব আর আমাকে নাকি তার জন্য ৫০ হাজার দেওয়া লাগবে।

— তাসু বলে তুমি এতো কিপটে আগে জানতাম না তো। ওরা না তোমার ভাই বোন আর একদিনই তো নেবে নাকি। রনিত বলে যা বাবা আমার ঘরেই তো মিলিটারির সর্দার বসে আছে ওদের তাহলে আর কি।দোষ দেব। তাসু বলে কি বললে আমি মিলিটারির সর্দার। তোমার সাথে কোনো কথায় নেই যাও তুমি। রনিত দেখে ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছে। তাই তাসুকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে। আজ না আমাদের বাসর রাত আর তুমি আজ আমার সাথে ঝগড়া করছো তাসু সোনা।এটা ঠিক না কিন্তু। কিউট ফেস করে বলে রনিত এতে তাসুর রাগ গলে জল। তাসু হেসে বলে আচ্ছা নামাজ পড়ব চলো আমার অজু করা আছে তুমি করে আসো। রনিত চলে যায় ওয়াসরুমে। তাসু রনিতের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।

— মেহেদী আর জাকিয়া নামাজ শেষ করে উঠে। জাকিয়া এক পাশে চুপটি করে দাড়িয়ে আছে তাই দেখে মেহেদী জাকিয়াকে ধরে বসিয়ে দেয় বিসানায় তারপর একটা রিং বের করে ধরে জাকিয়ার সামনে। রিংটা ডায়মন্ডের সাদা পাথর দেওয়া উপরে অনেক সুন্দর লাগছে তাতে। জাকিয়া রিংটা দেখে খুশি হয়ে যায় মুখে নিয়ে আসে হাসি তাই দেখে মেহেদী বলে পছন্দ হয়েছে তোমার। জাকিয়া মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে।

— মেহেদী এবার ঘোর লাগা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে জাকিয়ার দিকে।তা দেখে জাকিয়া লজ্জায় লাল হয়ে যায়। মেহেদী বলে তোমাকে কি আমি আজ আপন করে পেতে পারি জাকু। নিজের সব ভালবাসা দিয়ে আগলে নিতে পারি। জাকিয়া একটু চুপ থাকে তারপর কিছু না বলে মেহেদীর বুকে মাথা গুজে দেয় মেহেদী তার উত্তর পেয়ে জাকিয়াকে নিয়ে পা রাখে ভালবাসার এক সুখময় রাজ্যে।

“তাসু নামাজ শেষ করে বলে চলো ছাদে যায় রনিত। আজ পুর্নিমার চাঁদ উঠেছে অনেক সুন্দর। একসাথে দেখব চলো। রনিতও চলে যায় তাসুর সাথে ছাদে।। দুজন পাশাপাশি বসে আছে আর অনেক কথা বলছে তারা৷ রনিত শুধু শুনছে আর তাসু বলেই চলেছে। একসময় রনিত কিছু বলে না দেখে তাসু রনিতের দিকে তাকিয়ে দেখে রনিত এক মনে তাসু দিকে তাকিয়ে আছে৷ চোখে আছে ভালবাসার নেশা। তাসু বুঝতে পেরে লজ্জা পায় মাথা নিচু করে ফেলে। তা দেখে রনিত তাসুর দুই গালে দুইহাত রেখে মুখটা একটু উঁচু করে কপালে ঠোঁট ছুয়ে দেয়। তাসু আবেশে চোখ বন্ধ করে ফেলে। তারপর তাসুকে কোলে নিয়ে চলে আসে ঘরে রনিত। এসে বিসানায় শুয়ে দেয় তাকে। তারপর তারাও হারিয়ে যায় ভালবাসার এক সুন্দর ভুবনে।।

——————

— কেটে যায় পাঁচটা বছর। এই পাঁচ বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে। তানুর একটা মেয়ে হয়েছে মেয়ের বয়স প্রায় পাঁচ বছর হতে আসছে। আর তার নাম রেখেছে তুরান চৌধুরী তনয় আর তানুর মেয়ে তুরান। সবাই তুর বলে ডাকে। অনিক আর লাবুর বিয়ে হয়েছে ৩ বছর আগে তাদের একটা বেবিও হয়েছে আর আজ তারই জন্মদিন পার্টি হচ্ছে চৌধুরী বাড়িতে। নাবু আর অনিকের মেয়ের নাম ফাইজা চৌধুরী।

— সজিয়া আর রহিতের ও বিয়ে হয়েছে তবে তারা আছে দেশের বাইরে। রহিতের কাজের জন্য দুই বছর আগে তাদের যাওয়া। তানু রনিতকে সব বলে সজিয়া আর রহিতের ব্যাপারে তারপর রনিত সজিয়ার বাড়িতে প্রস্তাব দেয় বিয়ের তারাও রাজি হয়ে যায়। বিয়ের পরপরই রহিত সজিয়াকে নিয়ে দেশের বাইরে চলে যায়।

— তাসু আর রনিতের একটা ছেলে আছে তিন বছর বয়স নাম রিয়ান। আর জাকিয়ার একটা মেয়ে নাম জেরিন রেখেছে মেহেদী। সবাই সবার মতো সংসার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।।সাথে বাচ্চাদের নিয়ে তারা আরো ব্যস্ত এতো দুস্টু সবাই। তাসু জাকিয়া তারাও এসেছে। এসে সবার সাথে কৌশল বিনিময় করে তারা।

— মেহু আর অন্তর এসেছে জন্মদিনের পার্টিতে সাথে আসছে তাদের কিউটের ডিব্বা একমাত্র পুত্র অমিত যার প্রধান কাজ তুরানকে জ্বালানো।। এই বাসায় আসলেই তুরের সাথে অমিতের ঝগড়া লেগেই থাকে আর এটা সবাই বেশ উপভোগ করে। এখনই তাদের ঝগড়া চলছে আর এর টপিক হলো ফাইজাকে কোলে নেওয়া নিয়ে।।।

— শুন তুর পর্বত তুই এখনো বাচ্চা আছিস বুঝলি তাই বেবিকে ক্যারি করতে পারবি না। আমার কাছে দে বলছি। তুর বলে সাদা বিলাই( অমিত অনেক ফর্সা তাই তাকে তুর সাদা বিলাই বলে 🙂) আমি পারব তাই একদম ছোট বলে লেকপুল করবে না। এই নিয়ে বেধে যায় তাদের ঝগড়া তখনই হাজির হয় মেহু অন্তর তানু তনয় আর নাবু অনিক। মেহু বলে অমিত তুমি আবার তুরের পিছে লেগেছো। এই ছেলেটা একটু ও শান্তি দেয় না আমার মেয়েটাকে। তুর এবার নেকা কান্না করে বপে দেখো না মামনি আমি নাকি ছোট আর বেবিকে নাকি তাই ক্যারি করতে পারব না এই সাদা বিলাই তাই আমার সাথে ঝগড়া করছে।

–মেহু তখন অমিতকে বকতে শুরু করে তা দেখে তানু বলে মেহু একদম বকবি না ওকে। অমিত তো ঠিকই বলেছে৷ তুর বনুকে আমার কাছে দাও৷ তুমি পারবেনা। অমিত বলে দেখো না মামনি আমি তো তখন থেকে এটাই বুঝাচ্ছে এই পর্বতকে কিন্তু বুঝছে না। তুর এবার চোখ গরম করে তাকায় অমিতের দিকে আর অমিত বলে ঠিক হয়েছে তাই বলে একটা ভেংচি কেটে দেয়। এদের কান্ড দেখে সবাই হাসতে থাকে।

– নুসু অনু রা আসছে জন্মদিনের পার্টিতে। সবাই হৈ-হুল্লোড় করে জন্মদিনের পার্টি শেষ করে। সবাই সবার ঘরে চলে যায়।

——————–

“”তানু ফ্রেস হয়ে এসে সবে বসেছে বিসানায় তখনই তনয় পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তানুকে । তানু নিজেকে ছাড়ানো চেষ্টা করতে থাকে।কিন্তু পারে না। তানু এবার বলে উঠে কি হচ্ছে তনয় ছাড়ো। তুর এসে দেখলে লজ্জার হয়ে যাবে ব্যাপারটা৷ এমনি তোমার মেয়ে যা পাকনা হয়েছে। তনয় বলে খবরদার আমার মেয়ের নামে কিছু বলবে না। আমার মেয়ে আমার মতো হয়েছে৷ তোমার মতো আনরোমান্টিক না। সে জানে তার পাপা আর মাম্মামের একটা প্রাইভেসির দরকার আছে তাই সে আজ তার দাদুর দিম্মার কাছে থাকবে বলে গেছে। আজ আর এই ঘরে সে আসছে না।

— তানু বলে আচ্ছা। তাই বুঝি আপনি সুযোগ পেয়ে গেছেন খুব। কিন্তু এই সব কিচ্ছু হবে না৷ আমি এখন ঘুমাবো সরো তো। তাই বলে তনয়কে সরিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ে। তনয়ও ছাড়ার পাত্র নয় সেও তানুর উপর শুয়ে পড়ে। তারপর বলে আচ্ছা তানু পাখি আমাদের তুরের জন্য একটা খেলার সাথি নিয়ে আসা দরকার না এবার। তানু বুঝতে পারে তনয় কি বলতে চাচ্ছে তাই সে লজ্জায় তনয়ের বুকে মাথা লুকায়৷ তা দেখে তনয় বলে এখনো তোমার লজ্জা গেলো না তানু পাখি সেই প্রথম দিনের মতোই এখনো লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠো যার জন্য আমি নিজেকে কোন্ট্রল করতে পারি না। তাই বলে তানুর ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দেয় তারপর তারা ভালবাসার রাজ্যে পাড়ি দেয়।

— জীবনের প্রতিটা মুহুর্ত যেনো এমন আনন্দ সুখময় হয়ে উঠের সবার জীবন। ভালবাসা দিয়ে যেনো ঘেরা থাকে প্রতিটা সম্পর্ক। সুখ দুঃখের সাথী হয়ে যেনো এভাবেই চলে যায় এক সাথে তাদের।

——- সমাপ্ত————

( আমার লেখা প্রথম গল্প ছিল এটা। আমার মনের সম্পুর্ন কল্পনা দিয়ে লেখা একটা গল্প। জানি ঠিক ভাবে গোছায় উপস্থাপন করতে পারিনি। তাও আপনারা যে আমার পাশে থেকেছেন আমাকে সাপোর্ট করেছেন উৎসাহ দিয়েছেন তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে। বিশেষ করে আমার বেস্টু গুলাকে ধন্যবাদ তাদের উৎসাহ জন্য আমি গল্প লেখা শুরু করি। আমি চাই সব সময় তারা আমার পাশে থেকে এই ভাবে আমাকে উৎসাহ দিয়ে যাক। ভুলক্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষে বিবেচনা করবেন। আবার দেখা হবে নতুন গল্প নিয়ে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবাই।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here