তুমি সুখের বৃষ্টি হয়ে ঝড়ো – পর্ব ১৮

0
353

#তুমি_সুখের_বৃষ্টি_হয়ে_ঝড়ো
#সমুদ্রিত_সুমি
পর্ব ১৮

মুখ ভার করে বসে আছে সবাই। পরিবেশটা একটু থমথমে। সবাই খুব গভীর চিন্তায় মগ্ন।সবাই কিছুক্ষণ পর পর খুব সিরিয়াস মুডে দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। পেকেট থেকে একটি চিপস মুখে পুরলো মেঘ।মেঘের হাত থেকে বৃষ্টি, এবং রূপাও কেঁড়ে নিয়ে তাদের মুখে পুরলো চিপস। সবার মাঝে এমন একটা ভাব যেন তাঁরা সত্যি খুব চিন্তিত।

আমি ভাবছি ভাবি জ্ঞান হারালো কি করে( মেঘ)

বেচারি ভাইয়ার এতো চাপ নিতে পারেনি ( রূপা)

আচ্ছা বলছি কি ভাইয়া তুমি কি খুব জোরে জড়িয়ে ধরেছিলে।(বৃষ্টি)

এই পাকনি চুপ এতো কথা বলিস কেন?

তোমরা বললেই মজা, আমি বললেই চুপ।

রূপরে, ওদের কথার মাঝে ধূসর ডেকে উঠলো রূপাকে।

হ্যা বলো ভাইয়া।

ওই বই গুলো কোথায় পাওয়া যায়।

কোন বই গুলো।

ওই যে,ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়ে প্রেম হয়।বিয়ে হয় বাসর হয় সেই বই।আমি আবার কলেজে ভর্তি হবো।তোদের ভাবি কেও ভর্তি করবো।লাইব্রেরি থেকে ওই বই গুলো কিনবো।তোর ভাবি ধাক্কা খাবে।আমার বই গুলো মাটিতে লুটিয়ে পড়বে।আমি তোর ভাবিকে বাঁচাতে গিয়ে বই গুলো ফেলে দিবো।সে আমার দিকে চেয়ে থাকবে।আমিও থাকবো।তারপর, তারপর।

তারপর ভাবি সেন্সলেস হয়ে যাবে(মেঘ) খুব মনোযোগ সহকারে ধূসরের কথা গুলো শুনছিলো বৃষ্টি আর রূপা।কিন্তু মেঘের কথা শুনে নিজেদের একটু সামলে বললো।

বেপার না ভাই,আমি ব্যবস্তা করছি। ফেসবুক ইনস্টাগ্রামে সব জায়গায় খোঁজ লাগাবো এমন বই কোথায় পাওয়া যাবে।তুই কোন চিন্তা করিস না।তোর কষ্ট হচ্ছে। যা গিয়ে গিটার বাজা।তাহলে দেখবি তোর মন ভালো হয়ে গেছে। ধূসর ওখান থেকে চলে গেলো।ধূসর চলে যেতেই সবাই এক সাথে বললো।মিশন-টু প্রেমে পড়ার বই।লালা লা।

গিটারে সুর তোলার চেষ্টা করছে ধূসর। কিন্তু মন ভালো নাহলে কি কিছু ভালো হয়।তাই এই মুহূর্তে ধূসর গিটারের সুর টাও তুলতে পারছে না।কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করেও কাজ হলো না।তখনই পাশে এসে দাঁড়ালো ভোর।ভোরকে দেখে ধূসর চুপ করে মনোযোগ দিলো গিটারের সুর তুলতে।

আপনার গিটারের টেং টং আওয়াজে আমার শান্তির ঘুমটা নষ্ট হলো।

আমার এতো সুন্দর গিটারের সুরটা আপনার কাছে টেং টং আওয়াজ মনে হলো?

টেং টং আওয়াজকে টেং টং বলবে না তো কি বলবে,রবীন্দ্রনাথের সংগীত।

এই প্রথম কোন রমনীকে দেখলাম।যাঁর কি-না, বৃষ্টি অপছন্দ। চাঁদের মিষ্টি আলো,গিটারের মায়াবী সুর,চোখে কাজল।আচ্ছা আপনি এতো আনরোমান্টিক কেন?

আপনি খুব রোমান্টিক তাই

তাহলে আপনি বলছেন আমি আনরোমান্টিক হলে, আপনি রোমান্টিক হতেন।তাহলে ঠিক আছে আজকে থেকে আমি আনরোমান্টিক হয়ে যাচ্ছি। আপনি রোমান্টিক হতে শুরু করুন।

এই আমি এই কথা কখন বললাম।

কেন ওই যে বললেন

ওটা তো কথার কথা বলেছি।

এমন কথার কথা বলবেন না।বুকে লাগে তো?

কিহহ

হুম

————

সকাল থেকেই বুকটা চিনচিন করে ব্যথা করছে সামিউল মোর্সেদের।হঠাৎ করে কেন জানি মনটা উতলা হয়ে উঠেছে।বর্তমানে এই বাড়ির অবস্থা ভাঙা নদীর মতো।কি থেকে কি হচ্ছে তা আন্দাজ করা যাচ্ছে না।তাঁর কেন জানি মনে হচ্ছে, এই বাড়িতে তাঁর কদর একটু একটু করে কমে যাচ্ছে। আজকাল তাঁর মা কেমন জানি করে।তাঁর একমাত্র বড় ভাই টাও কেন জানি একটু দূরে দূরে থাকে।তাঁর একমাত্র মেয়ে রিনাও তাঁর খোঁজ খবর নেয় না।হঠাৎ করেই এতো পরিবর্তন বাড়ির এটা মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।আফিম বাড়িতে ফেরে না চব্বিশ ঘন্টা হয়ে গেছে। কিন্তু সে বিষয়ে কারো কোন হেলদোল নেই।সাবু কখন আসে কখন যায় তা কেউ জানে না।তাহলে কি তাঁদের সংসারে ভাঙন শুরু হলো।না না সে কি ভাবছে এসব।জীবন থেকে দু’টো আপদই তো বিদায় হয়েছে। তাহলে কেন বাড়ির এই অবস্থা হবে।এসব চিন্তায় যখন মোর্সেদ মগনো ছিলো, তখনই দরজায় কারো কাশির শব্দ শুনতে পেলো।দরজার দিকে তাকাতেই দেখলো সেখানে সফিউল মোর্সেদ দাঁড়িয়ে আছেন।ভাইকে দেখে সামিউল অনেকটাই খুশি হলো।তাই তিনি বসা থেকে উঠে ভাইকে ডাকলেন।

ভাই ওখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? ভেতরে আসুন।

হুম আসছি,তারপর সফিউল ঘরের ভেতরে এসে একটি চেয়ার টেনে বসলেন।বলছি তোর সাথে কিছু কথা ছিলো।

হ্যা ভাই বলেন। কি কথা?

বলছি আমাদের জীবন আর বাড়ি থেকে তো আপদটা বিদায় হয়েছে। এখন তো আর কোন অশান্তি নাই।তাই ভাবছি।

কি ভাবছেন ভাই

ভাবছি,ছেলে মেয়েদের সম্পত্তি ভাগ করে দিবো।দেখ সামিউল তোর এক মেয়ে।আমার দুই ছেলে এক মেয়ে।মেয়েটা তো সেই দূর দেশে থাকে।কাল ফোন দিয়েছিলো।বললো দু-একের মধ্যে দেশে ফিরছে।ও নাকি ওই দেশে ব্যবসা শুরু করতে চায়।তাই টাকার প্রয়োজন।তুই তো জানিস ভাই, আমার সম্পত্তি তিন ভাগ করতে হবে।তাই আমার ভাগে কম সম্পত্তি থাকবে।তুই যদি কিছু মনে না করিস তোর ভাগের কিছু জমি বিক্রি করে সিমাকে দিতাম।আমায় ভুল বুঝিস না।বুঝিস তো ভাই বিপদে পরেছি।

কিন্তু ভাই, তুমি ভুলে যাচ্ছো।বাড়ির অর্ধেক সম্পত্তি ভোরের আর তাঁর মায়ের নামে ছিলো।ইনু যা চালাক সে ঠিক তাঁর নামের সম্পত্তি তাঁর মেয়ের নামে লিখে দিয়ে গেছে। তাহলে আমরা কি করে সেই সম্পত্তি বিক্রি করবো।

সেই জন্যই তো তোর সাথে কথা বলতে এসেছি এই বিষয়ে।শোন ভোরকে টাইট দিতে হবে।

কি টাইট দিবে।আগে ও একা ছিলো।এখন ওই সফিক ইসলাম।

আগে আমার কথা তো শোন

বলো কি বলবে।

আগে ওকে বোঝাব।না বুঝলে তারপর না-হয় একটা ব্যবস্থা করবো।

তুমি কিসের ব্যবস্তা করার কথা বলছো।

সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুলটা একটু বাঁকাতে হবে।

মানে?

মানে ভোরকে প্রথমে বোঝাব,যদি না বোঝে তাহলে শেষ করে দিবো।

কি বলছো ভাই।তোমার মাথা ঠিক আছে।

আরে তুই এতো ঘাবড়ে যাচ্ছিস কেন?ভুলে যাচ্ছিস কেন? ও কিন্তু তোর মেয়ে না।

আমি সেটা বলছি না।তুমি যেটা চাইছো সেটা এতো টাও সহজ না।

সহজ না কঠিন সেটা আমার উপর ছেড়ে দে।তুই রাজি কিনা বল।

কিন্তু ভাই এতো বড় পাপ

আরে আগে তো আমরা বোঝাব।কথায় আছে, যদি সহজ কথায় কেউ না বোঝে,তাহলে তাঁকে কঠিন কথায় বোঝাও।এতে কোন পাপ নেই।

তবুও ভেবে দেখো।

আমার ভাবা শেষ।

হুম বুঝতে পারছি। তুমি তোমার জায়গায় অটুট। তা সিমা ফিরছে কবে।

কবে ফিরছে বলেনি।বললো সারপ্রাইজ।

ওওও

আচ্ছা থাক আমি গেলাম,তো ওই কথাই রইলো।

হুম

চলবে,,,

সরি কাল গল্প না দেওয়ার জন্য। কিছু সমস্যা ছিলো এবং মামা বাড়ি গিয়েছিলাম।সব বোনেরা এক হয়েছি ফোন হাতে নেওয়ার তেমন সময় পাইনি।এখন থেকে আল্লাহ যদি চান নিয়মিত গল্প দিবো।আর গল্পের রেসপন্স এতো কমে গেছে যে লেখার আগ্রহটা হারিয়ে গেছে। কেউ গঠন মূলত কমেন্ট করছে না।আপনাদের ওই ছোট্ট কমেন্ট কতটা লেখার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয় তা যদি জানতেন তাহলে ঠিক কমেন্ট করতেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here