তুমি সুখের বৃষ্টি হয়ে ঝড়ো – পর্ব ৭

0
380

#তুমি_সুখের_বৃষ্টি_হয়ে_ঝড়ো
#সমুদ্রিত_সুমি
পর্ব ৭

কলটা কেটে দিয়েই ফোনটা বিছানায় ছুঁড়ে দিলো ভোর।তখন সামনে এক গ্লাস পানি ধরলো ধূসর। এটা দেখে প্রচন্ড রাগ হলো ভোরের।সে ধূসরের হাত থেকে গ্লাসটা ফ্লোরে ছুঁড়ে মারলো।কাঁচের গ্লাসটা ভেঙে গুঁড়িয়ে গড়াগড়ি খেতে রইলো।তাতেও যেন ভোরের রাক কমার নয়।কতবড় সাহস আফিমের। বিছানায় সুখের কথা তুলেছে। আসলেই পুরুষ জাতি কুকুরের থেকেও খারাপ। কথাটা একা একা বলেই বিছানায় বসে পড়লো।সেটা দেখে ধূসর একটি ফুলদানি হাতে তুলে ভোরের সামনে দিলো।ভোর মাথা নিচু করে ছিলো।ফুলদানিটা দেখে মাথা তুলে ধূসরকে এক নজর দেখলো।ধূসরের চাহনি দেখে নিজের রাগ কয়েক দফা বেড়ে গেলো।কেমন লুচুদের মতো হাসছে।যাকে বলে মিচুরমিচুর হাসি।ইচ্ছে করছে ফুলদানিটা ধূসরের মাথায় মারতে।এমনটা চিন্তা মাথায় আনতেই ধূসর বললো–

চাইলে এটা আমার মাথায় ভাঙতে পারেন।

কথাটা শুনে ভোর চোখ বড় করে ফেললো।এই মানুষটা সব কিছু এতো হাল্কা ভাবে কিভাবে নেয়।একটুও কি ভয় নেই যদি সত্যি সত্যি সে মেরে দেয় তখন কি হবে।আসলে এই বাড়ির সবাই পাগল।সে-ও কিছুদিন থাকলে নির্ঘাত পাগল হয়ে যাবে।না কিছুতেই এই বাড়িতে থাকবে না সে।কোনমতেই না।তাই ফুলদানিটা ধূসরের হাত থেকে নিয়ে ফ্লোরে ছুঁড়ে মারলো। ধূসর তা দেখে বললো।

একদিন হয়েছে কি আমি আর মেঘ বাগানে খেলছিলাম।তো আমাদের পাশের বাড়ির কাকিমার ছেলে এসে বললো।তাঁকেও নিতে। মেঘ ছোট থেকেই একটু ত্যাড়া মানুষ। ও বললো নিবে না।তারপর কি হলো জানেন।মারামারি। সে কি মারামারি আপনায় কি বলবো।তো এক পর্যায়ে কি হলো।মেঘ জিতে গেলো ছেলেটা হেরে গেলো।তো ছেলেটার গায়ে অনেক কাঁদা মাটিতে মাখামাখি। আমি আমার শার্ট খুলে বেচারাকে পরিষ্কার করে দিলাম।মেঘ তো অনেক আগেই ঘরে চলে গেলো।ছেলেটাকে ভালো বুঝে আমি দশটা টাকা হাতে দিয়ে পরিষ্কার টরিষ্কার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই হারামিটা আমার পিছনে। মানে ওই যে বুঝছেন আমি কি বলছি।সেখানে একটা থাপ্পড় মেরে দিলো দৌড়। আমি তো পুরো টাস্কি খেয়ে ওখানে দাঁড়িয়ে রইলাম।এটা কি হলো ভেবে।ভাবতে পারছেন ওই টুকু ছেলে আমার কোথায় হাত দিলো।ইসস এখনো বিষয়টা ভাবলে আমার লজ্জায় মাথা ঘুরে যায়।তারপর তো আমি লজ্জায় তিনদিন বাড়ি থেকে বেরোইনি।ওই ছেলেকে দেখলেই আমার সে কি লজ্জা লাগতো।ধূসরের কথা শুনে ভোর হা করে তাকিয়ে রইলো।লোকটার কি লজ্জা টজ্জা কিছু নেই।আসলেও কিছু নেই।নাহলে ছোট বেলায় কি হয়েছে সেটা কি সুন্দর করে ঘন্টা খানেক আগে বিয়ে করা বউয়ের সামনে বলছে।এমন লজ্জাজনক ঘটনা ভোরের জীবনে ঘটলে তো ভোর জীবনেও কাউকে বলতে পারবে না।আর সে কিনা সহজেই বলে দিলো।সত্যি এটা পাগলাগারদ। পাবনার সেই বিখ্যাত পাগলাগারদটার কিছু অংশ ভুল করে এখানে রেখে গেছে। কিন্তু আসল বেপার হচ্ছে এখন ভোরের হাসা উচিত নাকি রাক করা।কোনটাই যেন মাথায় ঢুকলো না।তাই সে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।এই ঘরে এই মুহূর্তে থাকা মানে নির্ঘাত আরো ভয়াবহ ঘটনা শোনার প্রস্ততি নিতে হবে।তাঁর থেকে ভালো ঘর ছাড়া।

—————-

হাতের ফোনটা ভেঙে কয় টুকরো হয়েছে তা গুনতে পারছে না ইলমা।তাই সে ফ্লোর থেকে ফোনের ভাঙা অংশ তুলে তা টি-টেবিলে রাখলো।মোবাইলের ভাঙা অংশ গুলো রাখতেই তা আবারো ফেলে দিলো আফিম।ইলমা কিছু বলতে উদগ্রীব হলেই। আফিম কোন কারণ ছাড়াই ইলমার চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে ড্রইং রুমে নিয়ে এলো।সেখানে খুব আয়েসি ভাবে বসে ছিলো বাড়ির প্রতিটা সদস্য। সফিউল মোর্সেদ,সমিউল মোর্সেদ, তাঁদের স্ত্রীরাও।সাবু,রিনা ছাড়া বাকি সবার মুখেই হাসি।হাজার রকমের গল্পের ঝুড়ি খুলে বসেছেন তাঁরা। ভোররাতের এতো ঘটনা যেন একটুও তাঁদের উপর পরেনি। সব কিছু খুবই স্বাভাবিক। তাঁদের এই আনন্দ ক্ষনস্থায়ী হলো না।যখন সবার সামনে চুলের মুঠি ধরে আফিম টেনে নিয়ে এলো ইলমাকে।ভাইজির সাথে নিজের ছেলের এমন ব্যবহার কিছুতেই মেনে নিতে পারলেন না আফিয়া বেগম।তাই তিনি গর্জে উঠলেন।কিন্তু আফিয়া বেগমেরর সেই গর্জন যেন খুবই হাল্কা লাগলো আফিমের কাছে।তাই সে সবার উদ্দেশ্যে বললো।

তোমার ভাইজি কিভাবে গর্ভবতী হলো তা জিঙ্গেস করো।

কথাটা শুনে মুরুব্বীরা মাথা নিচু করে নিলো।আর গর্জে উঠলো সফিউল মোর্সেদ।ছেলের যে একটুও লজ্জা শরম নেই তা ভালোই বুঝতে পারলেন সফিউল মোর্সেদ।তাই তিনি তাঁর স্ত্রীকে ইশারা করলেন কিছু একটা।তখনই আফিয়া বেগম বললেন।

কি হয়েছে এমন করছিস কেন?

আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে বলো তোমার ভাইয়ের মেয়েকে?

কি করেছে ও। মায়ের কথা শুনে আফিম সব খুলে বলতেই আফিয়া বেগমের কাছে সব ক্লিয়ার হয়ে গেলে।তাই তিনি আফিমকে বললো।

ইলমা ইচ্ছে করে ভোরকে মিথ্যা বলেছে।কিন্তু কেন মিথ্যা বলেছে এটা জানতে চাইলে পরিবারের সবাই এরিয়ে গেলো।আফিমকে রেখে সবাই যে যাঁর কাজে চলে গেলো।আফিম যে যখন তখন লাগাম ছাড়া কথা বলে ফেলতে পারে তা সবাই বুঝতে পেরেই চলে গেলো।

চলবে,,

আজ অনেক ছোট হয়েছে জানি।কিন্তু কিছু করার নেই আমি খুব ব্যস্ত ছিলাম।আর গল্পটার রেসপন্স অনেক কমে গেছে তাই কেন জানি লিখতে বসলেই আলসেমি লাগছে।প্লিজ গল্প নিয়ে কথা বলুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here