যাও পাখি বলো তারে – পর্ব ৫

0
632

#’যাও পাখি বলো তারে’❤
#’লেখাঃ ঈশানুর তাসমিয়া মীরা❤
#’পর্বঃ ০৫
.
সন্ধ্যা নেমে গেছে আকাশে! চারদিকে আস্তে আস্তে অন্ধকার বিরাজ করছে। কিন্তু চুল মুছতে মুছতে এখনও রেয়ান তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। সবসময়ের মতো ভ্রুটা তার অনেকটাই কুঞ্চিত। আমি কিছু বলছি না দেখে মুখে বিরক্তি এটে নিয়েছেন উনি। কিছুক্ষণ ওভাবেই আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলেন,

—” তুমি কি এখন ঘুমকাতুরে থেকে বোবাকাতুরে হয়ে গেছ মিস? আবারও হাবলার মতো তাকিয়ে আছো কেন?”

আমি এবার বিরক্তি নিয়ে তাকালাম উনার দিকে। কি পেয়েছেন কি উনি আমাকে? সবসময় এমন খোঁটা দেওয়ার মানে কি? কোন এঙ্গেলে আমি হাবলার মত তাকিয়ে থাকি? কথাটা মনে মনে কয়েকবার আওড়ালাম। শেষে কিছু কড়া কথা শোনানোর আগে একবার তার দিকে তাকাতেই চুপসে গেলাম আমি। কিভাবে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে! যেন পারলে এখনই থাক্কা মেরে রুম থেকে বের করে দেন আমাকে। কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে মাথা নিচু করে ফেললাম আমি। আমতা আমতা করে বললাম,

—” আপনার বিশ্বাস না হলে আম্মুকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।”

উনি ভ্রু নাচিয়ে বললেন,
—” কার আম্মু? ”
—” আমার আম্মু! মানে আপনার সেজো চাচী।”

উনি স্বাভাবিক হয়ে বললেন,

—” ওহ! ঠিকাছে জিজ্ঞেস করে নেবো। এখন তুমি যেতে পারো। এভাবে কোনো মেয়ে আমার রুমে থাকবে সেটা পছন্দ নয় আমার।”

আমি বিস্ময় এবং রাগ নিয়ে তাকালাম তার দিকে। কেমন ছেলে উনি? এটা কি ধরণের ব্যবহার? তারওপর বলছেন কি না আম্মুকে জিজ্ঞেসও করবেন। কেন? আমার কথায় হচ্ছে না? আমি বললেই তার জিজ্ঞেস করতে হবে নাকি? আর এত সন্দেহ কিসের উনার? আমি যে ‘মীরা’ সেটা প্রমাণ করতে কি এখন আবারও ছোট্ট হয়ে যেতে হবে আমার? নাকি পাহাড় থেকে লাফ দিতে হবে? আমার ভাবনার মাঝেই আমার দিকে অনেকটা ঝুঁকে দাঁড়ালেন উনি। চমকে গিয়ে দু’পা পিছাতেই সেটা দেখে মুখে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে রেয়ান বলে উঠলেন,

—” যাচ্ছো না যে? কিছু বলবে আমায়? নাকি ট্রেনের মতো এখনও একা একটা মেয়ে একা একটা ছেলের সাথে থাকতে চাইছো? তোমার মতলব তো ভালো ঠেকছে না মেয়ে। মতলব কি তোমার?”

তৎক্ষণাৎ চোখ বড় বড় করে তাকালাম উনার দিকে। দেড়ি না করে দ্রুত বেড়িয়ে গেলাম রুম থেকে। যাওয়ার আগে বিড়বিড় করে বলে উঠলাম,

—” খাঁটি অসভ্য! ”

কথাটা শুনতে পেয়েছিলেন রেয়ান। বাঁকা হাসিটা মুচকি হাসিতে পরিণত হওয়ার পরপরই গম্ভীর হয়ে উঠলেন উনি। ফ্লোরে পরে থাকা বই উঠিয়ে টেবিলে রাখা ফোনটা হাতে নিয়ে কল করলেন একজনকে। সে ফোন রিসিভ করতেই বেজায় বিরক্তি নিয়ে প্রথমেই বলে উঠলেন উনি,

—” কোথায় তুই? বের হয়েছিস?”

ওপাশ থেকে কিছু বলতেই উনি এবার কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বলে উঠলেন,

—” ভালো করেছিস! শোন তোর বাসায় এখনই আসতে পারবো না। আম্মু যেতে দিবে না। এক কাজ কর, তুই ব্যাগপেক করে কয়েকদিনের জন্য চলে আয় এখানে৷ তারপর একসাথে তোর বাসায়! এখন রাতের ভেতরেই বাসায় আসার চেষ্টা কর। বাই!”

ওপাশের ব্যক্তিকে আর কোনো কিছু বলার সুযোগ দিলেন না উনি। ফোন টেবিলে রেখে বারান্দায় চলে গেলেন। প্যান্টের পকেটে দু’হাত রেখে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলেন মাত্র!

_____________________

সোফায় হেলান দিয়ে খানিকটা জিরিয়ে নিলো আবদ্ধ। এ কয়দিন বিয়ের জন্য একদম কাজ করা হয় নি। এখন আবার কিছুক্ষণ পর পর দীঘির অত্যাচার। ভাবতেই বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে বসল আবদ্ধ। আবারও কাজ করতে লাগলে হঠাৎ-ই কোথা থেকে দীঘি এসে তার কোলে বসে পরে। বিস্ময় নিয়ে কতক্ষণ চুপ থাকে আবদ্ধ। পরক্ষণেই চোখ বড় বড় করে তাকালো সে। ধমক দিয়ে বলে উঠল,

—” আবার এসেছো তুমি? এগুলোর মানে কি একটু বোঝাবে আমাকে? কাজ করছি দেখছো না?”

মুখ ফুলিয়ে নিলো দীঘি। আবদ্ধের বুকে মাথা রেখে মৃদু কণ্ঠে বলল,
—” আপনার কালকেই মাত্র বিয়ে হয়েছে। আজকেই এত কাজ কাজ করছেন কেন? কোই একটু বউয়ের সাথে সময় কাটা..!”

কথার মাঝেই আবদ্ধ রাগ মিশ্রিত কণ্ঠে বলে উঠল,

—” তোমাকে বলেছি এসব পারি না আমি। পছন্দ না আমার! বুঝতে পারছো না? সরো এখান থেকে। কাজ করতে দাও!”

দীঘি তবুও সরলো না। ঠায় বসে রইল আবদ্ধের কোলে। এতে আবদ্ধের বিরক্তি লাগছে প্রচুর। দীঘিকে সরাতে চেয়েও যেন পারছে না। দীঘি একদম বাচ্চাদের মতো গুটিসুটি মেরে বসে আছে আবদ্ধের কোলে। তার শার্টের বোতাম নিয়ে খেলতে খেলতে হঠাৎ-ই আবেগী কণ্ঠে বলে উঠল,

—” আচ্ছা আবদ্ধ আমরা কখন বেবি নিবো? এক বছর পর কি দুই বছর পর? শুনেছি আগেই নাকি এসব প্লেন করতে হয়! আপনি করবেন না?”

চমকে উঠে চোখ যেন কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। কোনমতে দীঘিকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলো আবদ্ধ। দীঘির দিকে কিছুক্ষণ রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে কিছু বলতে গিয়েও বলল না সে। চুপচাপ দাঁতে দাঁত চেপে কাজ করতে লাগলো। যা সহ্য হলো না দীঘির। সে আবদ্ধের সাথে এত ইম্পর্টেন্ট কথা বলছে আর আবদ্ধ কিনা তাকে ইগনোর করছে! কাজ করছে বসে বসে। ল্যাপ্টপটা টাস করে বন্ধ করে দিলো দীঘি। আবদ্ধ চোখ পাকিয়ে দীঘির দিকে তাকাতেই দেখলো সে কোমড়ে হাত দিয়ে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে তারই দিকে। এটা দেখে ভ্রুটা কুঁচকে নিলো আবদ্ধ। যথেষ্ট শান্ত থেকে বলল,

—” কি হয়েছে? ”

—” অনেক কিছু! আচ্ছা একটা কথা বলুন তো। বিয়ের পরের দিনও আপনার এত কি কাজ? আপনার বড় ভাইও কি এমন কাজ নিয়ে পরে থাকে নাকি?”

—” অবশ্যই! আমার বড় ভাই আমার থেকে আরও বেশি কাজ পাগল। এমনকি কাজের জন্য কোথাও ঘুরতেও যায় না। এখানে যে এসেছে সেটা তোমার, আমার সাত কপালের ভাগ্য। তোমার তো আরো সুকরিয়া আদায় করা উচিত। আমি তো তাও বিয়ের পরেরদিন কাজ করছি। ভাইয়ের সময় দেখা যাবে বিয়ের দিনই কাজ করছে। যাই হোক, যাও এখান থেকে। আর একবার ডিস্টার্ব করলে কিন্তু খবর আছে তোমার।”

দীঘি একটা ভেঙচি দিয়ে চলে গেল বারান্দায়। সেদিকে বিরক্ত নিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবদ্ধও কাজে লেগে গেল আবার। মনে মনে ভাবছে, এত সহজে দীঘি চলে গেল কিভাবে? তবে ভালোই হয়েছে। এ ভাবনার একটু পরই দীঘি আবারও এলো রুমে। ল্যাপ্টপটা আবারও বন্ধ করে হাত ধরে টেনে দাঁড় করালো আবদ্ধকে। এবার খানিকটা চেঁচিয়ে উঠল আবদ্ধ,
—” আবার কি? ”
—” ঘুমাবো। ”

বলেই আবদ্ধকে টেনে শুইয়ে দিলো বিছানায়। আবদ্ধও ভদ্র ছেলের মতো শুয়ে গেল এই ভেবে, দীঘি ঘুমালেই সে আবারও কাজ করবে। এদিকে আবদ্ধ বিনা কথায় বিছানায় শুয়ে যাওয়ায় মহাখুশি দীঘি। সেও চটজলদি লাইট অফ করে আবদ্ধকে লতার মতো জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ল। আবদ্ধ ছাড়া পাবার চেষ্টা করলেও ছাড়া পেল না আর। হাল ছেড়ে বিড়বিড় করে বলে উঠল আবদ্ধ,

—” ডেঞ্চারেস পিচ্চি! ”

________________________

রাত প্রায় তিনটা! নির্ঘুম রাতে বসে বসে অফিসের কিছু কাজ করছিলেন রেয়ান। তখনই ফোনে একটা মেসেজ আসে তার- “আমি এসে গেছি। আপাতত দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে মশার চুমু খাচ্ছি। তাই অনুগ্রহ করে তারাতাড়ি এসে দরজাটা খুলে আমাকে বাধিত করুন!”

মেসেজটার দিকে কিছুক্ষণ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলেন রেয়ান। লম্বা একটা নিশ্বাস নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বের হয়ে গেলেন রুম থেকে। সিড়ি দিয়ে নামছিলেন তখনই রান্নাঘর থেকে কিছু মৃদু শব্দ শুনতে পান। কৌতুহল বশত রান্নাঘরে যেতেই দেখতে পান ফ্রিজের কাছে দাঁড়িয়ে আমি কি যেন করছি। আমাকে দেখেই আনমনেই আস্তে করে বলেন- “মরুভূমি?” পরপরই গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠেন,

—” কে ওখানে? এদিকে ফিরো।”

আচমকা কারো গম্ভীর কণ্ঠ শুনে চমকে উঠে পেছনে ফিরলাম আমি। রেয়ান ভাইকে দেখতেই মাথা নিচু করে ফেললাম দ্রুত। উনি আবারও বলে উঠলেন,

—” ফ্রিজের দরজা বন্ধ করো। আর এত রাতে এখানে কি করছিলে তুমি? ”

তাড়াতাড়ি ফ্রিজের দরজাটা বন্ধ করে ফেললাম আমি। আবারও মাথা নিচু করে মিনমিনিয়ে বলে উঠলাম,

—” আসলে নতুন পরিবেশ তো! তাই ঘুম আসছিল না। সাথে ক্ষিদেও লাগছিল। তাই দেখছিলাম কিছু আছে কিনা।”

রেয়ান ভাই মৃদু হেসে বললেন,

—” বাব্বা! ঘুমকাতুরে মিসের ঘুম আসছে না? এটা তো ইতিহাসের সোনালী পাতায় লেখা প্রয়োজন। চারদিকে কেমন অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটছে। তো মেয়ে! কিছু পেয়েছো খাওয়ার?”

উনার কথায় রাগ হলেও প্রকাশ করলাম না। মাথা উপর-নিচ নাড়িয়ে তার প্রশ্নের উত্তর দিলাম। উনি এবার শান্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে নরম কণ্ঠে বললেন,

—” তাহলে এখন ঘুমাতে যাও! রাতে এমন ঘুরে বেড়াবে না। বুঝলে!”

আমি মাথা নাড়ালাম। অযথা ঝগড়া করতে ইচ্ছে করছে না। কেননা এখন প্রচুর ঘুম আসছে আমার। তাই কিছু না বলেই দ্রুত চলে গেলাম রুমে। আমার রুমে ঢোকার আগ পর্যন্ত উনি আমার যাওয়ার দিকে গম্ভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। রুমের ভেতরে ঢুকতেই আবারও পা বাড়ালেন মেন দরজার দিকে। দরজা খুলতেই ওপাশে থাকা ব্যক্তি রাগী কণ্ঠে বলে উঠল,

—” শালা এতক্ষণ লাগে দরজা খুলতে? দেখ মশা চুমু দিয়ে শরীরের কি অবস্থা করছে!”

রেয়ান ভাই বিরক্তি নিয়ে বললেন,

—” চুপ থাক সবুজ! এত দেড়ি হলো কেন আসতে?”

সবুজ ভাইয়া নিজের কাঁধের ব্যাগটা আরো ভালোভাবে কাঁধে ঠেশে নিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকলেন। রেয়ান ভাইয়ের রুমের দিকে যেতে যেতে বলে উঠলেন,

—” শোকর কর এত তাড়াতাড়ি আসছি। নাহলে তো কাল সকালেও আসতাম না। তাছাড়া এটা তোর শহর না। রাঙামাটি! এত রাতে বাসা থেকে বাহির হওয়া যায় এখানে? ভাগ্য ভালো তোদের বাসা থেকে আমাদের বাসার দূরত্ব অত বেশি না। নাহলে যে আমার কি হইত উফফ!”

বলতে বলতেই রেয়ান ভাই আর সবুজ ভাইয়া রুমে ঢুকলেন। রুমে ঢুকেই সবুজ ভাইয়া ধপ করে শুয়ে পড়লেন বিছানায়। রেয়ান ভাই সোফায় বসে ল্যাপ্টপ চালু করতে করতে বললেন,

—” তো শুরু কর! ”

সবুজ ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে বললেন,
—” কি? ”
—” যা জানার জন্য তোকে ডেকেছি। এতো ঢং না করে বল। নাহলে এই রাতে বাসা থেকে বের করে দিতে বেশি সময় লাগবে না আমার।”

সবুজ ভাইয়া বেজায় বিরক্তি নিয়ে বললেন,

—” তোর মতো বন্ধু আমি জীবনেও দেখি নাই৷ তুই বন্ধুর নামে শত্রু!”

রেয়ান ভাই নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললেন,

—” ফ্রেন্ডশিপ করার আগে ভাবা উচিত ছিল। এখন ঢং না করে তাড়াতাড়ি বল।”

সবুজ ভাইয়া মুখ কুঁচকে অতিশুদ্ধ একটা গালি দিলেন রেয়ান ভাইয়াকে। পরপরই বলে উঠলেন,

—” তুই তো জানিস তোর ভাই মানে আবদ্ধ মা-বাবার কথা ফেলতে পারে না। কাইন্ড অফ মা-বাবার বাধ্য সন্তান টাইপ। আর তুই অবাধ্য সন্তান!”

রেয়ান ভাই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সবুজ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন,

—” এখানে তোকে আমার গুণগান গাইতে বলিনি আমি। তাই মূল কথায় আয়!”

সবুজ ভাইয়া কিছুক্ষণ রেয়ান ভাইয়ের দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলেন,

—” তোর বড় চাচা মারা যাওয়ার পর আংকেল চেয়েছিলেন তোরা সবাই যেন আবারও একসাথে রাঙামাটিতে থাকিস। কিন্তু তোকে আর আবদ্ধকে বলার পর তোরা সোজাসুজি মানা করে দিস। যার জন্য আংকেল আবদ্ধকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তোকে শত বললেও তো তুই এখন বিয়ে করতে রাজী হবি না। যেখানে আবদ্ধকে কয়েকবার ইমোশনাল ব্লেকমেল করতেই ও রাজী হয়ে যায়।”

রেয়ান ভাইয়া গম্ভীর ভাবে বলে উঠলেন,

—” এজন্যই বলি আবদ্ধের এত কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার কারণ কি। মাত্র ২২বছর ওর দোস্ত! টুকটাক বিজনেস সামলানোর পাশাপাশি এখনও পড়ালেখা করছে সে। মানে আমার বাবা-মা এত জেদী কেন?”

সবুজ ভাইয়া হেসে বললেন,

—” এটা তো কিছুই না। বিয়েতে তো আরো বড় কিছু হয়েছে। বিয়ের আসর থেকে কনে পালিয়ে গিয়েছিল। পরে দুইপক্ষের মান সম্মান রক্ষার্থে আবদ্ধের সাথে কনের ছোট বোনের বিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনা অনুসারে কনের পরিবার লজ্জায় বিয়ের পরপরই রাঙামাটি থেকে আবার শহরে চলে যায়। যেহেতু এটা গ্রামের বিয়ে ছিল। সেহেতু সকালেই বিয়েটা হয়। আর তাই তারা সহজেই এখান থেকে চলেও যায়। বুঝেছিস ঘটনা?”

—” উহু! আবদ্ধ বা আমার বিয়ের সাথে এখানে সবার থেকে যাওয়ার বিষয়টা স্পষ্ট না। ক্লিয়ার করে বল!”

—” আংকেলের প্লেন ছিল শুধু তোদের কারো মধ্যে কাউকে রাঙামাটিতে বিয়ে করার নামে সবাইকে এখানে একত্রিত করা। পরে সবাইকে নানাভাবে বুঝিয়ে শুনিয়ে এখানে থাকার জন্য বাধ্য করা। আর মেনলি তোকে আর শহরে যেতে না দেওয়া। বুঝলি!”

মুখে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে নিলেন রেয়ান। বিড়বিড় করে বলে উঠলেন,

—” আমাকে আটকানো এতটাও সহজ না। ”

সবুজ ভাইয়া করুণ স্বরে আবারও বলে উঠলেন,

—” দেখ ভাই, যাই-ই করিস। শুধু আংকেল আর আন্টিকে এটা বলিস না যে এসব কিছু আমি তোকে বলেছি বা আমার থেকেই তুই জেনেছিস। অনেক বিশ্বাস করে আমাকে তারা বলেছে এগুলো।”

প্রতিউত্তরে কিছু বললেন না রেয়ান। কানে হ্যাডফোন গুঁজে গান শুনতে শুনতে চলে গেলেন বারান্দায়। সবুজ ভাইয়া নিজের উত্তর না পেয়ে মুখ কুঁচকে বসে রইলেন বিছানায়!

______________________

চলবে…
(রি-চেক করিনি। ভুল-ক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)
Ishanur Tasmia

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here