ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ১৮

0
615

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:18
.
— যা।
উনি আমার দিকে জীবনেও তাকাবেন না।
.
— আমি বলছি ভাইয়া তোমার দিকে তাকাবে।
তোমার দিকে যখন তাকাবে তোমার দিকে শুধু মুখ হা করে তাকিয়ে থাকবে।
.
আমি পাখিকে যখন কিছু বলতে যাব ঠিক তখনি মা আসল।
আমাকে দেখার জন্য যে কতটুকু হয়েছে আমার সাজগোজ।
মা আমার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,,,
.
— মাশাল্লাহ।
কত সুন্দর লাগছে আমার এই মেয়েটাকে।
কারোর যেন নজর না লাগে।
.
— ছোট ভাইয়ার নজরে তো পড়বে।
I am sure..
.
— পুষ্পিতা।
.
সবাই হেসে দিল।
মা চলে গেল।
আমাকে বিছানার উপর সুন্দর করে বসিয়ে দিল।
.
আজকেও ছোট সাহেবে পান্জাবি পড়তে চাচ্ছেন না।
সবাই মিলে জোর করে পড়িয়ে দিলেন।
ছোট সাহেব যেই কিছু বলতে যাবেন তখনই ভাইয়া বলে উঠলেন,,,
.
— আজকের দিনে পান্জাবি পড়তে হয়।
আর আমি বুঝি না তোর পান্জাবি পড়তে এত সমস্যা কিসের।
.
— কোন সমস্যা নেই।
এই বিয়েটাই করতে আমার সমস্যা।(বিড়বিড়িয়ে)
.
— কিছু কি বললি তুই প্রান্তিক।
.
— না কিছু বলি নি ভাইয়া।
.
— না বললেই ভালো।
.
ছোট সাহেব একদম চুপ করে বসে রইলেন।
আর কিছু বললেন না।
মুখের হাল এমন বানিয়ে রেখেছেন যে দেখার মতনই।
.
বিয়েটা ভালোই ভালোই হয়ে গেছে।
আমরা দুইজন এখনও নিচে বসে রয়েছি।
ছোট সাহেব আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
.
অন্য দিকে তাকাচ্ছেন না।
আমার উনার দিকে তাকাতে খুব ভয় করছে।
পুষ্পিতা আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলছে,,
.
— দেখছো ছোট ভাবী ছোট ভাইয়া তোমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
চোখ অন্য দিকে ফিরাতে পারছেন না।
.
— পুষ্পিতা আমি আমার ঘরে যাব।
.
— কেন??
.
— আমার ভালো লাগছে না।
.
আপু ঠিক এমন সময় বলে উঠলেন,,,
.
— যাদের জন্য এই দিনটা তারা দুইজন এখন সুন্দর একটা ডান্স উপহার দেয় তাহলে কেমন দেখায়।
.
— অনেক সুন্দর দেখায়।
.
আমি ছোট সাহেবের দিকে তাকালাম।
ছোট সাহেব একবার আমার দিকে তাকাচ্ছেন আর একবার আপুর দিকে তাকাচ্ছেন।
.
আমাদের দুইজনকে টান দিয়ে সামনে নিয়ে গেল।
আমাদের দুইজনকে নাচিয়েই ছাড়বেন।
সবাই বলতে লাগলেন,,,
.
— তোরা দুইজন নাচবি না নাকি।
.
ছোট সাহেব রাগ করে বলে উঠলেন,,,
.
— গান না দিলে নাচব কি করে।
.
— ও হ্যা গান দে একটা।
.
একটা গান দিয়ে দিল।
ছোট সাহেব আমাকে এমনভাবে ছুচ্ছেন যে আমার উপর প্রচুর রেগে রয়েছেন।
.
আমাকে না যেন মেরে ফেলবেন।
আমার উনাকে দেখে খুব ভয় করছে।
নাচ শেষে।
.
আমি আর এক মুহুর্ত নিচে থাকলাম না।
উপরে চলে গেলাম।
বসে রইলাম।
.
আমার কিছুই ভালো লাগছে না।
ছোট সাহেব এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না।
আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
.
কিছুখন পর উনি রুমে আসলেন।
দেখে মনে হচ্ছে উনি খুব রেগে আছেন আমার উপর।
রাগ করে দরজাটা অনেক জোরে লাগালেন।
.
আমি ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠে গেলাম।
এতটাই রেগে রয়েছেন যে সব কিছু শেষ করে দিবেন।
উনি আমার দিকে রাগি একটা লুক নিয়ে এগিয়ে আসলেম।
.
উনাকে দেখে আমার এতটাই ভয় করছে যে আমি শাড়ি শক্ত করে ধরে রেখেছি।
কখন উনি উনার টরচার শুরু করে দেন।
.
উনি হঠাৎ করে বলে‌ উঠলেন,,
.
— তুই আমাকে বিয়ে করতে রাজি হলি কেন??
.
— জানি না।
হয়ত ভালোবাসি বলে।
.
— কি বললি?
.
— কিছু না।
.
— আমাকে ভালোবেসে কোন লাভ নেই।
আমি তোকে ভালোবাসি না।
আমি তোকে ঘৃনা করি।
.
— তাহলে যখন অন্য কেউ আমার কাছে আসতে চাই তখন রেগে যান কেন??
তাকে মারেন কেন??
.
— তুই চুপ করবি।
.
— না চুপ করব না।
আজকে আপনাকে বলতে হবে।
.
উনি আমার হাত শক্ত করে ধরলেন।
হাতটা বাকিয়ে ধরলেন।
আর বলতে লাগলেন,,,
.
— চুপ কর।
তা না হলে এর থেকেও খারাপ অবস্থা হবে তোর।
.
— আমার হাত ছাড়ুন ছোট সাহেব।
আমি আপনার খেলার পুতুল নয়।
.
— আমার সাথে বিয়ে করে এখন তাই হয়ে গেছিস।
এখন থেকে আমি যা বলব শুধু তুই তাই করবি।
তুই যে আমাকে বিয়ে করে কত বড় ভুল করেছিস সেইটা এইবার তুই বুঝবি।
.
— আপনি আমাকে যতই অত্যাচার করুন না কেন??
আমি আপনার সব অত্যাচার সহ্য করে যাব।
.
ছোট সাহেব আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন।
টেবিলের সামনে যেয়ে পড়লাম।
হাতে একটু ব্যথা পেলাম।
.
ছোট সাহেব লাইটটা অফ করে দিয়ে শুইয়ে পড়লেন।
আমার চোখ দিয়ে শুধু পানিই পড়ছে।
সারারাত কান্না করতে করতে আমার চলে গেল।
.
টেবিলের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
সকাল হতে না হতেই পুষ্পিতা আর আপু ডাকা শুরু করল।
ওদের ডাকার শব্দে আমার ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।
.
আমি উঠে দাঁড়ালাম।
আমি দরজাটা খুলে দিলাম।
ওরা ভিতরে ঢুকল।
.
আপু বলতে লাগল,,,,
.
— তুমি তো ঘুম থেকে উঠে গেছ।
কিন্তু দেবরজি তো এখনও ঘুম থেকে উঠেনি।
ডাক দাও।
.
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি।
পুষ্পিতা বলে উঠল,,
.
— ছোট ভাবী লজ্জা পাচ্ছে ছোট ভাইয়াকে ডাক দিতে।
আমিই ডাক দিয়ে দিচ্ছি।
এই ভাইয়া উঠ না।
আমাদের কাজ আছে।
.
ছোট সাহেব ঘুম থেকে উঠে গেলেন।
রাগ করে বলতে লাগলেন,,,
.
— কি হয়েছে ষাঁড়ের মত চিল্লাচ্ছিস কেন??
শান্তি মত কি ঘুমাতে পারব না।
.
— কি আমি ষাঁড়ের মত চিল্লাচ্ছি।
.
— প্রান্তিক তুমি বাইরে যাও।
আজকে রাতের আগে এই ঘরে তুমি ঢুকতে পারবে না।
.
— কেন??
.
— তোমার বউকে নিয়ে আমাদের কাজ আছে।
তুমি নিচে যাও।
.
— না যাব না বাইরে।
আমি আমার ঘর ছেড়ে থাকতে পারব না।
.
— বাইরে কি যাবে নাকি তোমার ভাইয়াকে ডাক দিব।
.
— না না যাচ্ছি আমি।
.
ছোট সাহেব নিচে চলে গেলেন।
নিচে যেয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলেন।
জ্যাক সাহেব ছোট সাহেবকে বলছেন,,,
.
— কি হয়েছে প্রান্তিক??
এই ভাবে মাথায় হাত দিয়ে বসে রয়েছ কেন??
.
— বিয়ে করলে জ্বালায় পড়তে হয়।
নিজের ঘর নিজের থাকে না।
.
.
.
চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here