ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ১৯

0
585

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:19
.
জ্যাক:- আমি তোমার কথা বুঝলাম না প্রান্তিক।
.
প্রান্তিক:- বিয়ে করলে বুঝতে পারবে আমি কি বলতে চাচ্ছি।
.
আমি বসে রয়েছি।পুষ্পিতা আর আপু আমার দুইপাশে এসে বসল।প্রথমে তারা দুইজন দুইজনের দিকে তাকাল।তারপর আমার দিকে তাকাল।আমার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগল,,,
.
কাজল:- কালকে রাতে এইখানে কি কি হয়েছিল??
.
আমি:- মানে।
.
পুষ্পিতা:- মানে তুমি আর ভাইয়া কি কি করেছিলে??সেইটা জিজ্ঞাসা করছে বড় ভাবি।
.
আমি:- কি আর হবে।সারা রাত কান্না করতেই করতেই রাত পার হয়ে গেছে।আবার আমাদের মাঝে কি হবে।(মনে মনে কথাটা বললাম)
.
কাজল:- কি হল বলছিস না কেন??কি ভাবছিস??
.
আমি:- আপু আজকে খুব গরম।আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসি।
.
কাজল:- ঠিক আছে যা।
.
আমি একটা শাড়ি বের করে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম।শাওয়ারটা অন করে দিলাম।অনেকখন শাওয়ার নিতে লাগলাম।আমি ওয়াশরুমে যাওয়ার পর পরই ছোট সাহেব এই ঘরে ঢুকলেন।ছোট সাহেবকে দেখে আপু বলতে লাগলেন,,
.
কাজল:- প্রান্তিক তুমি এই ঘরে।তোমাকে না এইঘরে আসতে বারন করেছি।
.
প্রান্তিক:- আমি রেডি হব।আমাকে বাইরে যেতে হবে।একটা কাজ আছে।খুবই জরুরি।
.
কাজল:- ও আচ্ছা তুমি রেডি হও।আমরা দুইজনে বাইরে যাচ্ছি।আমরা পরে আসছি এই ঘরে।
.
আপু আর পুষ্পিতা এই ঘর থেকে চলে গেলেন।ছোট সাহেব দরজাটা আটকিয়ে দিলেন।উনি উনার একটা শার্ট বের করলেন।
.
আমি:- একি আমি ব্লাউজ আনতে ভুলে গেছি।এখন আমি কি করব।আমি বাইরে যেয়ে আনব কি করে।আপু কে একবার বলে দেখিতো।আপু আমার একটা ব্লাউজ দাও না।
.
প্রান্তিক:- ভাবি তো এখন ঘরে নেই।আর ব্লাউজ কোনটা।
.
ছোট সাহেব ব্লাউজ খুজতে লাগলেন।অনেকখন ধরে খুজতে লাগলেন।আমি আবার বলতে লাগলাম,,
.
আমি:- কি হল আপু।এত দেরি হচ্ছে কেন আপু??
.
প্রান্তিক:- এই তো পেয়ে গেছি।
.
ছোট সাহেব দরজা ধাক্কাতে লাগলেন।আমি দরজাটা খুলে এক টান দিয়ে নিয়ে নিলাম।আমি শাড়ি পড়ে নিলাম।
.
আমি:- একি ব্লাউজের হুক পিছনে।আমি লাগাব কি করে।আমার হাতই তো যাচ্ছে না।
.
আমি শাড়ি পড়ে নিলাম।ব্লাউজের হুক খুলেই রয়েছে।আমি বের হতে হতে বলতে লাগলাম,,
.
আমি:- আপু আমার ব্লাউজের হুকটা লাগিয়ে,,,,ছোট সাহেব আপনি।আপু কোথায়??
.
প্রান্তিক:- বাইরে গেছে।কি লাগিয়ে দিতে বলছিলি??
.
আমি:- কিছু না ছোট সাহেব।
.
প্রান্তিক:- দেখিতে পিছনে ঘুর।
.
ছোট সাহেবই আমার হাত ধরে পিছনে ঘুরিয়ে দিলেন।হুকগুলো লাগিয়ে দিতে লাগলেন।যখনই হুকগুলো লাগাচ্ছিলেন উনার হাত আমার পিঠে লাগছিল।আমি কেঁপে উঠছিলাম।আমি চোখ বন্ধ করে রেখেছি।লাগানো শেষ।ছোট সাহেব বলতে লাগলেন,,
.
প্রান্তিক:- লাগানো শেষ।এইবার চোখ খুলতে পারিস।
.
আমি:- ও।আমি যে চোখ বন্ধ করে রেখে ছিলাম সেইটা আপনি কি করে বুঝলেন??
.
প্রান্তিক:- সামনে যে একটা আয়না রয়েছে।সেইখানে যে সব দেখা যায়।
.
আমি:- ও।
.
প্রান্তিক:- ছোঁয়া আমি বাইরে যাচ্ছি।সাবধানে থাকিস।
.
আপু আর পুষ্পিতা বাইরে থেকে দরজা ধাকাচ্ছে।ছোট সাহেব দরজাটা খুলে দিলেন।ছোট সাহেব বাইরে চলে গেলেন।ওরা দুইজন ভিতরে ঢুকল।আপুর হাতে খাবার রয়েছে।আমি বলতে লাগলাম,,,
.
আমি:- এত খাবার কার জন্য।
.
পুষ্পিতা:- তোমার জন্য ছোট ভাবি।
.
আমি:- এত আমি জীবনেও খেতে পারব না।পাগল হলে তো।
.
কাজল:- তুই একটু খেয়ে নে।বাকিটুকু তোর ছোট সাহেব খেয়ে নিবে নি।
.
আমি:- যা।
.
কাজল:- কি রে ছোঁয়া বিয়ের পরও কি ছোট সাহেব বলে ডাকিস নাকি??
.
আমি:- তো আর কি বলে ডাকব।
.
কাজল:- এখনও তুই।একটু নাম ধরে ডাকবি।
.
আমি:- না বাবা না উনার অনুমতি ছাড়া ডাকতে পারব না।ভয় করে।
.
কাজল:- তুই যা ভালো মনে করিস।এখন তো খেয়ে নে।আজকে তো আবার বউভাত।
.
আমি:- জ্বি।
.
আমি যতটুকু পেরেছি ততটুকু খেয়েছি।ছোট সাহেব বাইরে গেছেন।বাইক অনেক স্পিডে চালাচ্ছেন।উনি হসপিটালের সামনে বাইক থামালেন।উনি হসপিটালের ভিতরে গেলেন।ডক্টরের কাছে গেলেন।ডক্টর রিপোর্ট নিয়ে বসে রয়েছেন।ছোট সাহেবকে দেখে বলছেন,,,
.
ডক্টর:- তুমি এসেছ।
.
প্রান্তিক:- জ্বি।রিপোর্টে কি এসেছে??
.
ডক্টর:- ব্রেনে এত বড় সমস্যা হয়েছে যে অপারেশন না করা পর্যন্ত ছোঁয়াকে বাঁচানো অসম্ভব।খুব শ্রীঘই অপারেশন করাতে হবে।তা না হলে যে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে।
.
প্রান্তিক:- কি বলছেন আপনি ডক্টর??
.
ডক্টর:- যা বলছি তাই সত্য।
.
ছোট সাহেব হসপিটাল থেকে বের হয়ে আসলেন।বাইকে উঠে বসলেন।ছোট সাহেবের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।ছোট সাহেব বাড়িতে চলে এসেছেন।চোখের পানি মুছে ভিতরে ঢুকলেন।
.
ছোট সাহেব উনার ঘরে চলে আসলেন।ছোট সাহেবকে কেমন মনমরা লাগছে।আমার উনাকে দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে।
.
আমি:- কি হয়েছে ছোট সাহেবের??উনাকে এইরকম কেন দেখাচ্ছে??কারোর কি কোন কিছু হয়েছে নাকি??
.
ছোট সাহেব আলমিরাতে কি যেন একটা জিনিস রেখে বাইরে চলে গেলেন।আলমিরাতে উনি কি রাখলেন।উনি নিচে নেমে গেলেন।সকলের সাথে এমনভাবে কথা বলছেন যে কারোর কোন কিছুই হয়নি।
.
কিন্তু ছোট সাহেবের বুকটা সব থেকে বেশি ফেটে যাচ্ছে।ছোট সাহেব মনে মনে বলছেন,,
.
প্রান্তিক:- একটা অসুস্থ মেয়ের গায়ে হাত তুলেছি।ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছি।ব্যথা দিয়েছি।আমি এইটা কি করে করতে পারলাম।
.
দুপুর হওয়ার আগেই পার্লারের মেয়ে চলে এসেছে।আজকে আবারও সাজতে হবে।এমনিতে ভালো লাগে না।কিছুই করার নেই আমার।দুপুর হওয়ার কিছুখন পর আমাকে সাজানো শেষ হল।মা উপরে আসলেন।বলতে লাগলেন,,
.
মা:- সাজানো শেষ হয়ে গেছে।চল চল ছোট বউমা।সকল গেস্ট তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।চল চল।
.
মা আমাকে নিচে নিয়ে যাচ্ছেন।দেখি সকল গেস্ট চলে এসেছে।ছোট সাহেব আমার দিকে তাকালেন।ছোট সাহেব আমার দিকে মুখ হা করে তাকিয়ে রয়েছেন।পুষ্পিতা আমাকে বলছে,,
.
পুষ্পিতা:- দেখ ছোট ভাবি ছোট ভাইয়া তোমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।চোখ নামাতেই পারছেই না।
.
আমি:- যা।
.
ছোট সাহেব আমার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।ছোট সাহেব মনে মনে বলছেন,,
.
প্রান্তিক:- যখন ও জানতে পারবে ওর মাথায় এত বড় সমস্যা হয়েছে এর জন্য অপারেশন করতে হবে।না জানি কি রিয়েক্ট করবে।ও তো বিশ্বাসই করতে পারবে না।আমারই তো বিশ্বাস হচ্ছিল না।
.
আমাকে আসনে বসিয়ে দিয়া হল।ছোট সাহেবও আমার পাশের টাই বসলেন।ছোট সাহেবকে এখনও মনমরা দেখাচ্ছে।আমার কেমন জানি ভয় করছে।আমি আস্তে করে ছোট সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলাম,,
.
আমি:- ছোট সাহেব আপনার কি হয়েছে??সেই কখন থেকে দেখছি আপনি মনমরা হয়ে রয়েছেন।
.
প্রান্তিক:- আমার আবার কি হবে??আমি ঠিক আছি।
.
অনেকেই আমাদের দুইজনের কাপল পিক তুলতে লাগলেন।খাওয়া দাওয়ার পর্ব শুরু হয়ে গেছে।উনাকে আর আমাকে পাশাপাশি বসিয়ে দিলেন।আপু বলছে,,
.
কাজল:- এখন কিন্তু তোমাদের দুইজনকে একে অপরকে খাইয়ে দিতে হবে।
.
প্রান্তিক:- ঠিক আছে।
.
আমি:- হঠাৎ করে ছোট সাহেবের কি হল ছোট সাহেব রাজি হয়ে গেলেন।কোন রকম রিয়েক্ট দেখালেন না।(মনে মনে)
.
প্রথমে এক লোকমা রাইস আমার সামনে তুলে ধরলেন।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম উনার দিকে।
.
.
.
চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here