ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ২৯

0
505

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:29
.
ছোঁয়া জয়ের দিকে তাকাল।জয়কে দেখে ছোঁয়ার চোখ দিয়ে যেন আরও পানি পড়ছে।জয় ছোঁয়াকে আরও বলছে,,,
জয়ঃআপনি কান্না করলে কিন্তু একটুও ভালো দেখায় না।অনেক পচা দেখায়।আপনাকে হাসলে অনেক কিউট দেখা দেয়।
ছোঁয়া এই কথা শোনার পর মুখে একটু হাসি ফুটে উঠল।ছোঁয়ার মনে পড়ে যাচ্ছে সেই দিনটার কথা।
.
.
.
ছোঁয়া একদিন খুব কান্না করছিল।প্রান্তিক একটু বকেছিল ছোঁয়াকে।ও কথা শুনছিল না বলে।তাই কান্না করছিল।
আর প্রান্তিকের উপর খুব রেগেছিল।প্রান্তিক ওর সাথে কথা বলতে আসলে মুখ ঘুরিয়ে নিত।আবার কান্না করা শুরু করে দিত।প্রান্তিক ছোঁয়াকে বলছে,,,
প্রান্তিকঃআর কোনদিন বকব না।এইবার তো মাফ করে দে।
ছোঁয়াঃআমি আপনাকে কখনই মাফ করব না।আপনি অনেক পচা।
প্রান্তিক এখন কি করবে ওর রাগ ভাঙ্গানোর।সেইটাই বুঝে উঠতে পারছে না।প্রান্তিক আবার বলা শুরু করল,,,
প্রান্তিকঃতুই জানিস তোকে কান্না করলে না অনেক পচা দেখা যায়।তুই হাসলে না অনেক কিউট দেখা যায়।একদম সত্যি কথা এইটা।
ছোঁয়ার মুখে একটু হাসি ফুটে উঠল।ছোঁয়া প্রান্তিককে জড়িয়ে ধরল।প্রান্তিকও ছোঁয়াকে জড়িয়ে ধরল।ছোঁয়া প্রান্তিককে বলছে,,,
ছোঁয়াঃআপনি কখনও আমাকে ছেড়ে যাবেন না তো।
প্রান্তিকঃকখনও ছেড়ে যাব না তোকে।এইভাবে জড়িয়ে ধরে রাখব।
.
.
.
জয় ছোঁয়ার মুখে একটু হাসি দেখে বলতে লাগল,,,
জয়ঃহঠাৎ করে আপনি হেসে উঠলেন।কি হয়েছে??
ছোঁয়াঃকিছু না এমনি।জানেন জয় বাবু ছোট সাহেব আমাকে বলেছিলেন উনি আমাকে কখনও ছেড়ে যাবেন না।কিন্তু উনি আমাকে ছেড়ে চলে গেছেন।
জয়ঃআমি তোকে ছেড়ে যাইনি।আমি তোর পাশেই আছি।(মনে মনে)
ছোঁয়াঃকিছু বললেন জয় বাবু।
জয়ঃকিছু না।
.
.
.
দুইজনে জয়ের বাড়িতে চলে এসেছে।জয় প্রথমে গাড়ি থেকে নামল।তারপর ছোঁয়াকে নামাল।ছোঁয়া দরজার সামনে যেয়ে দাঁড়াল।রাবেয়া ছোঁয়াকে ঘরে তুলে নিল।তারপর সোফার মধ্যে বসিয়ে দিল।
জয়কে ছোঁয়ার পাশে নিয়ে বসিয়ে দিল।কিছু নিয়ম ছিল সেইগুলো পালন করে নিল।রাবেয়া ছোঁয়াকে নিয়ে খাবার টেবিলের কাছে নিয়ে গেল।বসিয়ে দিল চেয়ারের উপর।রাবেয়া ছোঁয়ার সামনে খাবার দিয়ে বলতে লাগল,,,,
রাবেয়াঃনাও কিছু খেয়ে নাও।জানি তেমন কিছুই খাওনি।না খেয়ে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়বে।
ছোঁয়াঃনা মা আমার খিদে নেই।
রাবেয়াঃবললেই হল।দাঁড়াও আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
এই বলে এক লোকমা রাইস ছোঁয়ার দিকে এগিয়ে দিল।ছোঁয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।জয় বলে উঠল,,
জয়ঃমা নিজে থেকে আপনাকে খাইয়ে দিতে চাচ্ছে।খেয়ে ফেলুন।মার হাত তো ব্যথা হয়ে গেল।আর কত দেরি করবেন।
রাবেয়াঃমায়েদের হাত কখনও ব্যথা হয় না।
.
.
.
ছোঁয়া খেয়ে নিল।রাবেয়া নিজে ছোঁয়াকে জয় এর ঘরে নিয়ে গেল।জয় এর ঘরে দিয়ে আসার পর চলে গেল।ছোঁয়া চুপচাপ করে বসে রয়েছে।ছোঁয়ার ভয় হচ্ছে জয় তো আবার ওর সাথে কোন কিছু করে ফেলবে না।ছোঁয়া মনে মনে বলছে,,,
ছোঁয়াঃবিয়েটা তো হয়ে গেছে এখন যদি উনি আমার সাথে উল্টা পাল্টা কিছু করতে আসে।তখন কি করব আমি??আমি তো কিছুই বলতে পারব না যতই হোক উনার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে।কিন্তু আমাকে টাস করার অধিকার আমি আমার ছোট সাহেবকে দিয়ে দিয়েছি।আমার খুব ভয় করছে।
জয় ঘরে চলে আসল।ছোঁয়া জয়কে দেখে ভয় পেয়ে গেল।ছোঁয়ার মনে হচ্ছে এই বুঝি জয় ছোঁয়ার কাছে আসছে।জয় বুঝতে পারছে ছোঁয়া ভয় পাচ্ছে।আর কিসের জন্য ভয় পাচ্ছে সেইটাও খুব ভালো করে বুঝতে পারছে।তাই জয় ছোঁয়াকে বলছে,,,,
জয়ঃভয় পাবেন না আপনি।আমি আপনার সাথে কিছুই করব না।আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।
জয় বিছানা থেকে বালিশটা নিয়ে সোফায় গেল।সোফায় শুয়ে পড়ল।আর বলতে লাগল,,,
জয়ঃআপনি বিছানায় শুয়ে পড়ুন।আমি সোফায় শুয়ে পড়ছি।
ছোঁয়া আর কিছুই বলল না।শুয়ে পড়ল বিছানায় লাইটটা অফ করে দিয়ে।
.
.
.
সিরাজ ওর ঘরে এইদিক থেকে ওইদিকে হাটাহাটি করছে।আর প্রচুর রেগে রয়েছে।এমন মনে হচ্ছে সবকিছু শেষ করে দিবে।সিরাজ রাগে গজগজ করতে করতে বলতে লাগল,,,
সিরাজঃধ্যাত বিয়েটা আটকাতেই পারলাম না।কেন যে ওইদিন পার্কে গিয়েছিলাম।পার্কে না গেলেই ভালো হত অন্তত ওই মেয়ের সাথে আমার দেখা হত না।আমার মনের মধ্যে গেঁথে যেত না।না পারছি মেয়েটাকে ভুলতে।সারাটাখন আমার কল্পনার মধ্যেই আচ্ছে।ওই আবির হাসান জয় কেড়ে নিল ওই মেয়েকে আমার কাছ থেকে।আবির হাসান জয়কে তো আমি ছাড়ছি না।
.
.
.
সাদমান বাইরে থেকে সিরাজের সব কথা শুনছিল।সাদমান মনে মনে বলছে,,,
সাদমানঃআমার ছেলে যে মেয়েকে বিয়ে করেছে সেই মেয়ের সাথে আবির হাসান জয় এর সাথে বিয়ে হয়েছে।আবির হাসান জয়কে হারানোর একটা উপায় পেয়েছি।জাস্ট শুধু এই আইডিয়াটা সিরাজ এর কানে ডোকাতে হবে।
.
.
.
সাদমান হাসতে হাসতে সিরাজের ঘরে ঢুকল।সিরাজ ওর বাবাকে দেখে বলতে লাগল,,
সিরাজঃবাবা কিছু কি বলবে??
সাদমানঃতোকে একটা আইডিয়া দিতে এসেছি।
সিরাজঃকি আইডিয়া বাবা??
সাদমানঃতোর ভালোবাসার মানুষকে ফিরে পাবার আইডিয়া।
সিরাজঃসেইটা কিভাবে সম্ভব বাবা??ওর তো বিয়ে হয়ে গেছে।
সাদমানঃতুই ছোঁয়াকে কিডন্যাপ করে ফেল।তাহলেই প্লবলেম সল্ভড।
সিরাজঃকিন্তু কিভাবে করব কিডন্যাপ??
সাদমানঃকালকে ওদের বউভাত।আর কালকে ওর বাড়ির লোকজন ওকে বাড়িতে নিয়ে যাবে।ঠিক সেই সময়টাতে কিডন্যাপ করে নিবে।
সিরাজঃওই আবির হাসান জয় সাথে থাকলে তো কিডন্যাপ করতে পারব না।
সাদমানঃচিন্তা করিছ না সেই ব্যবস্থা আমি করব।
সিরাজঃতুমি অনেক ভাল বাবা।
.
.
.
ছোঁয়ার ঘুম আসছে না কিছুতেই।অথচ একটা বেজে গেছে।ছোঁয়া সোফার দিকে তাকিয়ে খেয়াল করল যে জয় শীতে কাঁপছে।আসলে কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারনে শীত শীত ভাব।
ছোঁয়া একটা কাঁথা নিয়ে জয়ের কাছে গেল।জয়ের গায়র দিয়ে দিল।এইবার জয়ের কাঁপুনিটা একটু কমছে।ছোঁয়ার নিজেরও শীত করছে।তাই ছোঁয়া বিছানায় যেয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুইয়ে পড়ল।
.
.
.
ছোঁয়ার মনে পড়ে যাচ্ছে সেই দিনটার কথা যেইদিন ছোঁয়া আর প্রান্তিক এইভাবে কাঁথা মুড়ো দিয়ে শুইয়ে ছিল।ওইদিন প্রান্তিক খুব জ্বালাচ্ছিল ছোঁয়াকে।তাই ছোঁয়া প্রান্তিককে বলছে,,,
ছোঁয়াঃকি হয়েছে আপনার??এত জ্বালাচ্ছেন কেন??
প্রান্তিকঃআমার বউটাকে কি একটু আদর করতেও পারব না।একটু টাচও করতে পারব না।
ছোঁয়াঃএখন ঘুমানোর সময়।এখন না।পড়ে এইসব।এখন আমার ভালো লাগছে না।এমনিতে খুব শীত করছে।
প্রান্তিকঃআচ্ছা ঠিক আছে।
প্রান্তিক মুখ ঘুরিয়ে শুইয়ে পড়েছিল।আর আজকে জ্বালানোর মত কেউ নেই।
জয়ঃচিন্তা করিস না আর কয়েকদিন যেতে দে তারপর জ্বালানো শুরু করব।
.
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here