ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব শেষ

0
727

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:last
.
ওরা ভিতরে যেয়ে জানতে পারল যে ওসি সাহেব এখন থানায় নেই।আসতে একটু দেরি হবে।তাই ওরা ওসি সাহেবের জন্য অপেক্ষা করছে।জয় বলতে লাগল,,,
-আমি কারোর জন্য অপেক্ষা করতে পারব না।আমিই একা উদ্ধার করতে যাচ্ছি ছোঁয়াকে।আমি জানি কে করেছে এই কিডন্যাপ।(জয়)
-কোথায় যাচ্ছিস তুই একেলা।আর কে করেছে ছোঁয়াকে কিডন্যাপ।(রাবেয়া)
-সাদমান আর ওর ছেলে সিরাজ।(জয়)
-কি??(রাবেয়া)
-এইটাই সত্যি।আর আমি জানি কোথায় রেখেছে ওকে।আর আমি সেইখানেই যাচ্ছি।(জয়)
-তুই একা যাবি না ওইখানে।আমি যাব তোর সাথে।আমার উনার সাথে কিছু বোঝাপরা আছে আমার।(রাবেয়া)
-জ্বি চলুন।(জয়)
.
.
.
জয় আর রাবেয়া বের হয়ে পড়ল।ছোঁয়ার জ্ঞান ফিরছে।ছোঁয়া আস্তে আস্তে চোখ খুলতে লাগল।ছোঁয়া মাথায় হাত দিয়ে উঠতে লাগল।আর বলতে লাগল,,,,
-আমি কোথায় এইটা??আমি এইখানে কিভাবে আসলাম??
ছোঁয়ার মাথায় প্রচন্ড ব্যথা করছে।তারপর ছোঁয়ার মনে পড়ল ওর সাথে কি হয়েছিল।ছোঁয়া আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়াল।এই রুমের বাইরে যেতে লাগল।
.
.
.
সিরাজ একটা চেয়ারে বসে রয়েছে।জয় ভিতরে ঢুকল।জয়কে দেখে সিরাজ বলতে লাগল,,,
-আর তুই কে রে??এইখানে কি করে ঢুকলি??(সিরাজ)
-আমি আমার স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য সব জায়গায় যেতে পারি।(জয়)
-কে তোর স্ত্রী??(সিরাজ)
-ছোঁয়া।(জয়)
-তাহলে তুই ই ওর সেকেন্ড হাজবেন্ড।(সিরাজ)
-ছোঁয়াকে কোথায় রেখেছিস??(জয়)
-তোকে বলব কেন??ছোঁয়া শুধু আমার আর কারোর নয়??
জয় সিরাজের শার্টের কলার ধরে বলতে লাগল,,,
-ভালোই ভালোই কি বলবি??(জয়)
-মারবি নাকি তুই আমাকে।মার না মার।উল্টে তুই বিপদে পড়বি।(সিরাজ)
.
.
.
ছোঁয়া এইখানকার কোন কিছুই চিনতে পারছে না।ছোঁয়াও এই ঘরে চলে আসল।কিন্তু কেউ দেখেনি ছোঁয়াকে।
রাবেয়া ভিতরে চলে আসল।সিরাজ রাবেয়াকে দেখে এক ধাপ পিছনে চলে গেল।সিরাজ এর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।সিরাজ ওর নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।সিরাজ রাবেয়াকে দেখে বলছে,,,,
-মা তুমি।তুমি বেঁচে আছ??কিন্তু বাবা যে বলেছিল তুমি বেঁচে নেই।(সিরাজ)
-হ্যা আমি।তোর বাবা তোকে মিথ্যে কথা বলেছিল।না জানি আরও কত মিথ্যে কথা বলেছে তুই নিজেও জানিস না।(রাবেয়া)
-বাবা কেন মিথ্যে কথা বলেছে??(সিরাজ)
-কারন তার যে আমাকে আর দরকার ছিল না।তোর বাবা আমাকে মারার চেষ্টা করেছিল কিন্তু আমি কোন মতে বেঁচে যাই।(রাবেয়া)
-কি??(সিরাজ)
সিরাজ রাবেয়াকে যেয়ে জড়িয়ে ধরল।
.
.
.
সিরাজ আবার রাবেয়াকে বলতে লাগল,,,,
-মা তুমি আমাকে ছাড়া কিভাবে থেকেছিলে একা??তোমার পাশে তো কেউ ছিল না।(সিরাজ)
-আমার পাশে ছিল আমার ছোট ছেলে।তোর ছোট ভাই আবির হাসান জয়।(রাবেয়া)
-আবির হাসান জয়!!(সিরাজ)
সিরাজ জয় এর কাছে যাচ্ছিল।জয় সিরাজকে আটকিয়ে দিয়ে বলতে লাগল,,,
-আমি তোর ভাই না।আমি প্রান্তিক।তোর ভাইতো এই পৃথিবীতেই আর নেই।(জয়)
-কি??আমার ভাই আর বেঁচে নেই।কে মেরেছে আমার ভাইকে??(সিরাজ)
-তোর বাবা সাদমান হাসান জয়।তোর বাবার মূল উদ্দেশ্য ছিল আমাকে মারা।কিন্তু আবির ওইদিন আমার সাথে ছিল আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করেছিল।যখন আমাকে আগুনে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল ওই সময় ও আমার সাথে ছিল।ও তো মারাই গেল।কিন্তু আমি কোন মতে বেঁচে যাই।আর আমার চেহারা পুড়োপুড়ি নষ্ট হয়ে গেছিল।(প্রান্তিক)
-বাবা এইটা করেছে।(সিরাজ)
সিরাজ কান্না করতে লাগল।
.
.
.
ছোঁয়া সব কিছুই শুনে ফেলল।ছোঁয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।আর মুখে একটা হাসি ফুটে উঠল।ছোঁয়া বলে উঠল,,,
-ছোট সাহেব।(ছোঁয়া)
প্রান্তিক ছোঁয়ার দিকে তাকাল।প্রান্তিক দৌড়ে ছোঁয়ার কাছে চলে আসল।জড়িয়ে ধরল ছোঁয়াকে।কান্না করতে লাগল।আর বলতে লাগল,,,
-তুই ঠিক আছিস তো??(প্রান্তিক)
-আমি ঠিক আছি ছোট সাহেব।আপনি ঠিক আছেন তো??(ছোঁয়া)
-হুম।(প্রান্তিক)
-আপনি আমাকে বলেননি কেন আপনি আমার ছোট সাহেব??
-বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু বলতে পারিনি।(প্রান্তিক)
.
.
.
সাদমান সাহেব চলে এসেছে।হাতে একটা বন্দুক আছে।বন্দুকটা প্রান্তিকের দিকে তাক করে রেখে দিয়েছে।আর বলতে লাগল,,,
-ওইদিন না হয় তুই না মরেছিলি কিন্তু আজকে তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।(সাদমান)
-বাবা তুমি প্রান্তিককে কেন মারতে চাচ্ছ??(সিরাজ)
-ওর বাবা আর ওর আঙ্কেল আমার চিরশত্রু।এর জন্য ও আমার সাথে টক্কর দিতে চাইত।এর জন্য মারতে চাই একে আমি।কিন্তু আপসোস ওইদিন ও বেঁচে গিয়েছিল।(সাদমান)
-জান বাবা তুমি ওইদিন কাকে মেরেছিলে??জান তুমি এইটা।(সিরাজ)
-কাকে??(সাদমান)
-তোমার ছোট ছেলে আর আমার ছোট ভাই আবির হাসান জয়কে।ছি বাবা তোমাকে আমার বাবা বলতে লজ্জা হচ্ছে।(সিরাজ)
সাদমানের হাত থেকে বন্দুকটা পড়ে গেল।আর নিচে বসে পড়ল।আর কান্না করতে লাগল।
.
.
.
পুলিশ আর ফাহাদ আর বাকি সবাই এইখানে এসে গেছে।সাদমানকে ধরে নিয়ে গেল।সিরাজ কিডন্যাপ করেছিল তাই সিরাজকেও ধরে নিয়ে গেল।ছোঁয়া সবার কাছে গেল।আর বলতে লাগল,,,
-ছোট সাহেব বেঁচে আছে??(ছোঁয়া)
-কোথায় প্রান্তিক??(আফজাল)
-ওই তো।(প্রান্তিককে দেখিয়ে দিয়ে)
-কি জয়??(আফজাল)
-হুম বাবা।(ছোঁয়া)
আমেনা প্রান্তিকের কাছে ছুটে গেল।জড়িয়ে ধরল।আর কান্না করছে।
.
.
.
ওরা সবাই বাড়ি চলে এসেছে।আজকে প্রান্তিকের সব প্রিয় খাবার রান্না করেছে।
আরও ছয় মাস কেটে গেল।বিয়ের এক বছর পূর্নতা পেয়েছে।
ছোঁয়া মা হতে চলেছে।তাই প্রান্তিক ছোঁয়ার শুধু খেয়াল রাখছে।রাতের বেলা প্রান্তিক আর ছোঁয়া কথা বলছে,,,
-আমার কিন্তু একটা মেয়ে চাই।যে তোর মত কিউট হবে।(প্রান্তিক)
-না ছেলে চাই যে আপনার মত হ্যান্ডসাম হবে।(ছোঁয়া)
-না মেয়ে হবে।
-না ছেলে হবে।
এইটা নিয়ে ওরা ঝগড়া শুরু করে দিল।একসময় ছোঁয়া প্রান্তিককে জড়িয়ে ধরল।প্রান্তিকও ছোঁয়াকে।
.
.
.
সমাপ্ত।
(আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে এই পর্বটা)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here