ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ২০

0
454

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:20
.
আমি আজকে কিছুতেই বুঝতে পারছি না উনি আজকে আমার উপর এত ভালোবাসা দেখাচ্ছেন।আজকে উনার হলটা কি।আমি দেরি না করে খাবারটা মুখে নিয়ে নিলাম।আমিও এক লোকমা উনার সামনে এগিয়ে ধরলাম।উনি সাথে সাথেই নিয়ে নিলেন।উফ ফাজিলটাই হাতে কামড় দিয়ে দিয়েছি।উফ কি ব্যথা করছে।আমি একটা চিৎকার দিয়ে উঠলাম,,
.
সবাই:- কি হয়েছে?চিৎকার দিয়ে উঠলি কেন??
.
আমি:- কিছুই হয়নি আমার।পায়ে একটা পিপড়া কামড় দিয়েছি তাই চিৎকার দিয়ে উঠেছি।
.
মা:- আমরা তো ভয় পেয়েই গেছিলাম।
.
প্রান্তিক:- দেখি তো কোথায় কামড় দিয়েছি।বেশি জোরে দেইনি তো।
.
আমি:- এ কি করছেন আপনি?আপনি আমার পায়ে হাত দিচ্ছেন কেন??
.
প্রান্তিক:- আমাকে দেখতেও দিবি না।
.
আমি:- এতটাও জোরে দেইনি।
.
উনি আমাকে চোখ মারলেন।আমি একটা ভেংচি দিয়ে দিলাম।উনি কান ধরে ইশারায় সরি বলছেন।আমি ওইদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।যত্তসব ভুল করে আবার সরি বলা হচ্ছে।জীবনেও ক্ষমা করব না।খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ।আমি ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছি।উনি আমার হাত ধরে টান দিয়ে দেয়ালের সাথে আটকে ধরলেন।যে আঙুলে কামড় দিয়েছেন সেই আঙুল ধরলেন।তারপর বলতে লাগলেন,,
.
প্রান্তিক:- খুব জোরে দিয়ে ফেলেছি বুঝি??আস্তে করেই দিতেই চেয়েছিলাম কিন্তু জোরে করে লেগে গেছে।আর এমন হবে না।
.
আমি:- আপনাকে কামড় দিতে হবে কেন??
.
প্রান্তিক:- সরি বললাম তো।
.
আমি:- সরি মাই ফুট।
.
আমি চলে যাচ্ছিলাম আমাকে এক টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসলেন।আর আমার কোমড়ে হাত দিলেন।আমি একটু কেপে উঠলাম।উনি উনার মুখ আমার আরও কাছে নিয়ে আসছেন।আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।ঠিক ওই সময় আপু এইখানে চলে আসলেন।আপু এসেই বলতে লাগল,,
.
কাজল:- হাই আল্লাহ আমি কিছুই দেখেনি।
.
প্রান্তিক:- ভাবি।
.
আমি:- আপু দাঁড়াও।আপনি না আসলে পারেন ও বটে।
.
আমি চলে গেলাম ওইখান থেকে।আমি চুপটি করে বসে রইলাম।আসলেও পারেনও বটে।কিন্তু আজকে হঠাৎ উনার এমন কি হল যে আমার সাথে এমন করছে।অথচ কালকেই উনিই বলছেন যে বিয়েটা উনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে হয়েছে।আমিও না কি এখন এইগুলো নিয়ে ভাবছি।আর এত চিন্তা করছি।ডক্টর না আমাকে চিন্তা করতে মানা করেছে।
.
বাবা ছোট সাহেবকে ডেকে পাঠালেন।ছোট সাহেবও চলে গেলেন ওই ঘরে।বাবা ছোট সাহেবকে জিজ্ঞাসা করছেন,,
.
বাবা:- তোকে না রিপোর্ট আনতে পাঠিয়েছিলাম।কি এসেছে রিপোর্টে।আর ডক্টর কি বলেছে??
.
প্রান্তিক:- চুপ।
.
বাবা:- কি হল বলছিস না কেন??
.
প্রান্তিক:- কান্না করছেন।
.
বাবা:- কি হল কাঁদছিস কেন??কি হয়েছে।ডাক্তার কি বলেছে।
.
প্রান্তিক:- ছোঁয়ার ব্রেনে এমন সমস্যা হয়েছে যে ছোঁয়ার যদি অপারেশন না করানো হয় তাহলে ছোঁয়াকে বাঁচানো যাবে না।
.
বাবা:- কি বললি??
.
প্রান্তিক:- যা সত্য তাই বলেছি।আমিও প্রথম প্রথম বিশ্বাস করতে পারেনি।কিন্তু এইটাই সত্য।
.
বাবা:- মেয়েটার সাথে এইটা কি হল।ছোঁয়া মা।
.
প্রান্তিক:- ছোঁয়া।
.
আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না।এ কি বললেন ছোট সাহেব।আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে।আমি একটা দৌড় দিয়ে দিলাম।পিছনে পিছনে ছোট সাহেব বলতে লাগল,,,
.
প্রান্তিক:- ছোঁয়া দাঁড়া।
.
আমি উনার ডাক শুনলাম না।আমি ছাদে চলে আসলাম।ছোট সাহেবও আমার পিছন পিছন ছাদে চলে আসলেন।আমি ছাদের এক কোনায় বসে কাঁদছি।ছোট সাহেব এখনও আমাকে খুজে বেড়াচ্ছেন।ছোট সাহেব আমাকে খুজে পেলেন।আমার কাছে যেয়ে বসলেন।আমাকে বলতে লাগলেন,,
.
প্রান্তিক:- কিচ্ছু হবে না তোর ছোঁয়া।
.
আমি:- আমার মরে যাওয়াই ভালো।অন্তত আপনি বেঁচে যাবেন।এই বন্ধন থেকে মুক্তি পাবেন।
.
প্রান্তিক:- কি পাগলের মত কথা বলছিস তুই ছোঁয়া??এই কথা বলে তুই এইটাই মিন করাচ্ছিস যে আমার মনে তোর জন্য কোন ফিলিংস নেই।আমার মন পাথর।এই খবর শুনার পর চোখের পানি আটকে রাখতে পারেনি।
.
আমি ছোট সাহেবকে জড়িয়ে ধরলাম।জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন।উনিও আমাকে দুইহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন।ছোট সাহেব আমার চোখের পানি মুছে দিচ্ছেন আর বলছেন,,,
.
প্রান্তিক:- অপারেশন করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।এখন চোখের পানি মুছ।নিচে চল।নিচে সবাই অপেক্ষা করছে।
.
আমি:- জ্বি।
.
আমরা দুইজনে নিচে চলে আসলাম।উনার বন্ধুরা উনাকে বলছেন,,
.
রাজ:- বউ পেয়ে তো আমাদের তো ভুলেই গেছিস।সারাটা খন ভাবির সাথে থাকিস।
.
প্রান্তিক:- তোরা না আসলে।দাঁড়া।
.
ছোট সাহেব উনাদের পিছনে ছুটে লাগলেন।এইবার আমার হাসি পাচ্ছে।আমার আবার মনে গেল আমার অসুস্থতার কথা।কথাটা মনে পড়ে হাসি থেমে গেল।পিছন থেকে জ্যাক সাহেব বলে উঠলেন,,
.
জ্যাক:- হ্যালো।
.
আমি:- হাই।
.
জ্যাক:- বিয়ের দিন তোমাকে কিছুই দেওয়ার সময় পাইনি।বাইরে বাইরে ছিলাম।ভাবলাম এখন দিয়ে দিই।
.
আমি:- ও।
.
জ্যাক:- এইটা নাও।খুলে দেখতে পার।
.
আমি:- জ্বি।
.
আমি গিফটা খুলে দেখতে লাগলাম।গিফট খুলে দেখে আমি অবাক হলাম।একটা ডায়মন্ডের নেকলেস।দেখে তো মনে হচ্ছে অনেক দাম।আমি বলতে লাগলাম,,
.
আমি:- এত দামী একটা নেকলেস দেওয়ার কি দরকার ছিল??
.
জ্যাক:- তোমাকে আমার ছোট বোন ভাবি।আর ছোট বোনের জন্য এত দামী একটা গিফট কমই মনে হয়।
.
আমি:- কিন্তু।
.
ফওয়াদ:- কেউ কোন কিছু দিলে কখনও ফেরত দিতে হয় না।তোমাকে ভালোবেসে দিয়েছে ফেরত দিও না।
.
আমি:- জ্বি।
.
আমি চলে গেলাম।কিন্তু আমার আজকে কিছুই ভালো লাগছে না।পুষ্পিতা আমার কাছে আসল।আমার কাছে এসেই বলতে লাগল,,
.
পুষ্পিতা:- ছেলেটা কত কিউট তাই না ভাবি??
.
আমি:- কোন ছেলে??
.
পুষ্পিতা:- ফওয়াদ আঙ্কেলের ছেলে।
.
আমি:- হঠাৎ,, প্রেমে,,,
.
পুষ্পিতা:- তেমন কিছু না।
.
আমি:- আমি সবই বুঝি পুষ্পিতা।বুঝেছি সবাইকে বলতে হবে পুষ্পিতাকেও বিয়ে দিতে।
.
পুষ্পিতা:- ছোট ভাবি।
.
পুষ্পিতা লজ্জা পেয়ে দৌড় দিল।একদম ওই ছেলেটার সাথেই ধাক্কা খেল।পুষ্পিতা বলছে,,
.
পুষ্পিতা:- সরি সরি।
.
জ্যাক:- ইটস ওকে।
.
পুষ্পিতা চলে যাচ্ছিল।জ্যাক পিছন থেকে বলে উঠল,,
.
জ্যাক:- মন কোথায় ছিল??
.
পুষ্পিতা:- কোথাও না।
.
জ্যাক:- তাহলে এইভাবে জোরে ছুটছিলেন কেন??
.
পুষ্পিতা:- এমনি।
.
জ্যাক:- আপনার নাম যেন কি??
.
পুষ্পিতা:- পুষ্পিতা।
.
জ্যাক:- পু,,,
.
পুষ্পিতা:- পুষ্পিতা।
.
জ্যাক:- জাস্ট ফরগট ইট।আমি একটা নতুন নাম দিই আপনার।
.
পুষ্পিতা:- কি নাম??
.
জ্যাক:- p..
.
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here