ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ১৭

0
571

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:17
.
গায়ে হলুদের দিন এসে গেছে।
আজকে গায়ে হলুদ আমাদের।
এই বাড়ির সবাই অনেক খুশি।
.
কিন্তু ছোট সাহেব মুখ ঘুমড়ো করে বসে রয়েছে।
ছোট সাহেবের মুখখানা দেখারই মত।
আজকে সন্ধ্যায় দুইজনের গায়ে হলুদ।
.
তাই সবাই মিলে আমাকে সাজাচ্ছে।
হলুদ কালারের একটা শাড়ি পড়িয়ে দিল সবাই আমাকে।
ফুলের গহনা পড়িয়ে দিচ্ছে আমাকে।
.
সাজা জিনিসটা আমার মোটেও ভালো লাগে না কিন্তু ওরা আমাকে সাজিয়ে দিচ্ছে।
আমি ওদেরকে কিছু বলতেও পারছি না।
ছোট সাহেবের হাল একই রকম।
.
তিনি তো পান্জাবি পড়তেই চাচ্ছেন না।
কিন্তু ছোট সাহেবের বন্ধুগুলো জোর করে পড়িয়ে দিচ্ছেন।
উনি তো একদম রেগে গেছেন।
.
কিন্তু কিছুই করার নেই।
ছোট সাহেব শেষমেশ পান্জাবিটা পড়ে নিলেন।
ছোট সাহেবের বন্ধুগুলো ছোট সাহেবকে বলছে,,,
.
— প্রান্তিক তোকে না আজকে সেই লাগছে।
ভাবি না তোকে দেখে পাগলি হয়ে যাবে।
.
— তোরা না আসলে আমার হাতে মার খাবি।
.
— আজকে তোর হাতেও মার খেতে রাজি।
.
— ওফ।
.
ছোট সাহেবের বন্ধুর গার্লফ্রেন্ডরা আমার কাছে আসল।
আমি তাদেরকে দেখে একটু খুশি হলাম।
তারা আমাকে বলছে,,,
.
— তোমার কি ভাগ্য যাকে ভালোবাস তার সাথেই তোমার বিয়ে হচ্ছে।
এই রকম ভাগ্য আর কার হয় বল তো।
তোমাকে আজকে খুব সুন্দর লাগছে।
প্রান্তিক ভাইয়া তোমাকে দেখলে ব্যাস দেখতেই থাকবে।
.
— ধ্যাত।
উনি আমার দিকে তাকাবেনই না।(মনে মনে)
.
— সত্যি বলছি।
আমার কথা মিলিয়ে দেখ।
.
— আজকে ও আমাকে দেখবে কি করে আজকে তো আমাদের দুইজনের দেখা করার কোন নিয়ম নেই।
একদম বিয়ের পর দেখা করতে পারব।
.
— ও।
আসলে জানতাম না আমরা এই কথা।
.
গায়ে হলুদের সময় হয়ে গেছে।
ওরা আমাকে নিচে নিয়ে যাচ্ছে।
আর একদিকে ছোট সাহেবকে নিয়ে যাচ্ছে।
.
আমাদের দুইজনকে দুইদিকে বসিয়ে দিল।
আর আমাদের মাঝখান দিয়ে একটা কাপড় দিয়ে দিল।
যাতে করে আমরা দুইজন দুইজনকে না দেখতে পারি।
.
সবাই আমার গায়ে হলুদ মাখাতে লাগল।
বাবা আমার গায়ে হলুদ মাখাল।
আর আমাকে একটা জিনিস দিল।আর আমাকে বলতে লাগল,,,
.
— এইটা এখন এইখানে দেখার দরকার নেই।
পরে কোন এক সময় দেখে নিস।
আর সব সময় সুখে থাকিস।
.
মা আমার গায়ে হলুদ মাখাতে আসল।
আমার গায়ে হলুদ মাখাচ্ছে আর বলছে,,,
.
— আমার ছেলেটাকে কখনও ভুল পথে যেতে দিও না।
আমাকে কথা দে।
.
— আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি ছোট সাহেবকে কোনদিন ভুল পথে যেতে দিব না।
.
— সুখে সংসার করিস।
.
যখন বাবার বন্ধু ফওয়াদ আঙ্কেল আমার গায়ে হলুদ মাখালেন মনে হল আমার খুব কাছের মানুষ আমার গায়ে হলুদ মাখালেন।
মনে হল আমার বাবা আমার গায়ে হলুদ মাখালেন।
আনার চোখ দিয়ে পানি পড়ে গেল।
.
আঙ্কেল আমার মাথায় হাত রাখলেন।
আর বলতে লাগলেন,,,
.
— সব সময় ভালো থেক।
আর এইটা তোমার জন্য।
.
আমি গিফট টা রেখে দিলাম।
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ।
আমি ঘরে চলে গেলাম।
.
ওয়াশরুমে গেলাম।
ওয়াশরুমে যেয়ে মুখ পরিষ্কার করতে লাগলাম।
আর‌ শাড়িটাও চেন্জ করে নিলাম।
.
রাত দশটা বাজে।
আমি আর জেগে রইলাম না।
আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
.
আমি লাইটটা অফ করে দিয়ে শুইয়ে পড়লাম।
সবাই এখনও জেগে রয়েছে।
অনেক কাজ করছে।
.
কালকের রান্না বান্না করার জন্য আজকেই সব কিছু করে রেখে দিচ্ছে।
যাতে করে কোন সমস্যা না হয়।
সকাল হয়ে গেছে।
.
সকাল সকাল আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।
চোখ খুলে দেখি আপু আর পুষ্পিতা দাঁড়িয়ে রয়েছে।
আমি উঠে দাঁড়ালাম।
.
আপু আমাকে বলছে,,
.
— শেষমেশ উঠলে তাহলে।
তুমি তো এত সকাল করে কোনদিন ঘুমাও না আজকে হঠাৎ।
.
— আগে তো খুব কম ঘুম আসত।
কিন্তু কালকে রাতে অনেক ঘুম হয়েছিল।
.
— ও ভালো।
.
আপু আর পুষ্পিতা আমার সাথে গল্প করতে লাগল।
আপু কিছুখন পর বলতে লাগল,,,
.
— যাই তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসি।
অনেক সকাল হয়ে গেছে।
.
আপু নিচে চলে গেল খাবার আনার জন্য।
পুষ্পিতা আমার সাথে বসে গল্প করছে।
আপু উপরে খাবার নিয়ে এসেছে।
.
অনেক খাবার নিয়ে এসেছে।
খাবার দেখে আমার মাথা ঘুরাচ্ছে।
আমি আপুকে বলতে লাগলাম,,
.
— এত খাবার কে খাবে??
.
— তুমি খাবে।
.
— কি আমি??
.
— হুম তুমি।
.
— আমি একটুও খেতে পারব না।
.
— ঠিক আছে।
যতটুকু পারিস ততটুকু খাস।
.
আমি অল্পটুকু খাবার খেলাম।
দুপুর হওয়ার কিছুখন হওয়ার আগে থেকে আমাকে সাজাতে লাগল।
পার্লারের মেয়ে এসেছে আমাকে সাজাতে।
.
আমার মুখ সাজাতে লাগল ওরা প্রথমে।
আমার মুখ সাজানো শেষ।
আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিল।
.
শাড়ি পড়ানোর পর চুলটা বেধে দিল।
আমাকে পুরোপুরি সাজানো শেষ।
পুষ্পিতা আমাকে দেখে বলছে,,,,
.
— তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
ভাইয়া তোমার দিকে শুধু হা করে তাকিয়ে থাকবে।
.
— যা।
.
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here