ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ৩

0
742

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer: Bushratuzzaman Shoya
Part:03
.
আমি আমার রুমে যেয়ে শুয়ে পড়লাম।
ঘুমিয়েই পড়েছিলাম।
ছোট সাহেব আমার ঘরে আসলেন।
.
উনি আমার হাত ধরে জোরে করে টান দিয়ে ঘুম থেকে উঠালেন।
এমন মনে হচ্ছিল যে আমার‌ দম বন্ধ হয়ে আসছে।
কোন কিছু না বলেই ছোট সাহেব আমাকে টানতে টানতে আমাকে ঘরের বাইরে নিয়ে গেল।
.
যেখানে পার্টি হচ্ছিল সেইখানে নিয়ে গেল।
হাতটা শক্ত করে ধরে আমাকে খাবার টেবিলের সামনে বসাল।
ধমকের সুরে বলতে লাগল,,
.
— তুই এখনও খাস নি কেন??
তোর প্লবলেম টা কি??
.
— ছোট সাহেব আমার খিদে নেই।
তাই আজকে খাব না।
.
— খিদে নেই বললেই হল।
তুই এখনি আমার সামনে বসে খাবি।
তাড়াতাড়ি খা।
.
— কিন্তু ছোটসাহেব,,
.
— কোন কিন্তু নয়।
এখনি খা।
.
.
.
এই কথা বলার পর পর ছোট সাহেব আমার সামনে এক প্লেট বিরিয়ানি রাখলেন।
আমি ছোট সাহেবকে বলছি,,,
.
— ছোট সাহেব আমার কথাটাকে বোঝার চেষ্টা করেন।
এইগুলো খেলে আমার দম আটকে আসে।
.
— কোন কিছুই হয় না তোর।
এইগুলো শুধু তোর অজুহাত না খাওয়ার।
এখনি খাবি তুই।
.
আমি বাধ্য হয়েই বিরিয়ানি খেতে লাগলাম।
ছোট সাহেব আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে।
পিছনে দাঁড়িয়ে ছোট সাহেবের বন্ধুরা বলাবলি করছে,,
.
— আমি তোদের কাছে একটা কথা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি।
.
— কি কথা রে??
.
— এই ছোঁয়া প্রান্তিককে ভালোবাসে।
.
— কিভাবে??
.
— দ্যাখ কিভাবে ছোঁয়া প্রান্তিকের কথা শুনেই যাচ্ছে।
যতই ছোঁয়ার এখন খেতে না মন চাচ্ছে।
ভালোবাসে বলেই তো কথা শুনছে।
.
— তোর কথাও ঠিক হতে পারে।
.
.
.
আমার পেটটা একদম ভরে গেছে।
ছোট সাহেবের এইটা আবার কোন অত্যাচার।
আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
.
ছোট সাহেব আবার আমাকে বলছেন,,
.
— খাওয়া শেষ??
.
— হুম।
.
— যা হাত ধুয়ে আস।
.
আমি এক দৌড়ে রান্নাঘরে গেলাম হাত ধোয়ার জন্য।
ছোট সাহেবের মন কিছুতেই বুঝি না রে বাপু।
একেক সময় একেক স্টাইলের অত্যাচার।
.
উনার মনে যে কি চলে কিছুই বুঝি না আমি।
হাত ধুয়ে আবার উনার সামনে চলে আসলাম।
এখন আবার কি বলে বসবে আল্লাহ জানে।
.
আমাদের বাড়ির কলিংবেলটা বেজে উঠল।
আমি তাড়াতাড়ি যেয়ে দরজাটা খুলে দিলাম।
বাইরে পাঁচটা মেয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
.
তারা ভিতরে ঢুকলেন।
আমি দরজাটা আটকে দিলাম।
ওই পাঁচজন মেয়ে ছোট সাহেবের পাঁচজন বন্ধুকে যেয়ে জড়িয়ে ধরল।
.
ছোট সাহেব ওই দিকে মুখ করে তাকিয়ে রয়েছেন।
ছোট সাহেবের একজন বন্ধু উনার কানের কাছে যেয়ে বলছেন,,
.
— দোস্ত প্লিজ একটা কথা রাখবি।
.
— কি কথা??
.
— আজকে রাতের জন্য তুই ছোঁয়াকে তোর গার্লফ্রেন্ড বানাতে পারবি।
.
— কেন??
.
— আমরা আমাদের জানুকে এইটা বলে আনিয়েছি যে তোর একটা সুন্দরি গার্লফ্রেন্ড হয়েছে।
সেইটার জন্য ওরা এসেছে।
.
— তোরাও পারিছ বটেও।
.
— প্লিজ প্লিজ।
.
— ঠিক আছে।
.
.
.
আমি দরজাটা আটকিয়ে দিয়ে নিজের ঘরে চলে যাচ্ছিলাম।
ছোট সাহেব আমাকে বলছেন,,
.
— তুই কোথায় যাচ্ছিস??
আমি কি তোকে যেতে বলেছি।
আমি যতখন না পর্যন্ত তোকে না যেতে বলব তুই যেতে পারবি না।
.
আমার আর কি করার আমি একদম থ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
উনি আমার হাত ধরে টান দিয়ে ঘুরিয়ে কোমড়ে হাত দিলেন।
আর মেয়েগুলোকে বলতে লাগল,,
.
— hello ladies, she is my beautiful girlfriend..
.
— wow,
So sweet,so beautiful, so cute…
.
— thanks…
Boys and girls let’s start the party…
Play music…..
.
.
.
উনি আমার হাত টা ধরে এমনভাবে ডান্স করছেন যে আমার হাত উনি ভেঙ্গেই ফেলবেন।
আর আজকে উনার ছোঁয়া বড় অদ্ভুত লাগছে।
.
উনি যতবারই আমার কোমড়ে হাত দিচ্ছেন ততবারই কেঁপে উঠছি।
আমি আর পারছি না।
আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ে গেছে।
.
উনি আমার কোমড়ে হাত দিয়ে আমাকে সামনে ঘুরিয়ে উনার মুখ আমার ঘাড়ের কাছে নিয়ে আসলেন।
আমি আমার চোখটা বন্ধ করলাম।
আমি অনুভব করতে পারলাম উনি উনার ঠোঁট আমার ঘাড়ের সাথে স্পর্শ করেছে।
.
আমি একদম পুরোপুরি ভাবে কেঁপে উঠলাম।
আমি আর সহ্য করতে পারছি না উনার এই নতুন অত্যাচারকে।
আমার খুব লজ্জা করছে।
.
আমি ছোট সাহেবকে ধাক্কা দিয়ে এক দৌড়ে নিজের রুমে চলে আসলাম।
তিনি মেয়েগুলোকে বলছেন,,,
.
— Ladies..
She doesn’t like dance….
.
— Oh..
OK fine…
.
উনারা আবার শুরু করে দিলেন উনাদের পার্টি।
.
.
.
আমি আমার রুমে যেয়ে মুখ লুকিয়ে বসে পড়লাম।
আমার বুকটা থরফর করছে।
আমি আমার ঘাড়ে হাত দিলাম।
.
এইটা আজকে আমার সাথে কি হল।
যতবারই আমি আমার চোখকে বন্ধ করছি ততবারই আমি ছোট সাহেবের স্পর্শ অনুভব করতে পারছি।
এর আগেও উনি আমাকে ছুয়েছেন কিন্তু কখনও এমন লাগেনি।
.
কিন্তু আজকে আমার এমন কেন লাগছে।
চোখ বন্ধ করলে উনাকেই দেখতে পারছি আর উনার স্পর্শ করাকে অনুভব করতে পারছি।
তবে কি আমি,,,,,
.
আমার মোবাইলটা বেজে উঠল।
খালাআম্মা ফোন করেছে।
আমি ফোনটা ধরলাম,,
.
— আসসালামুলাইকুম আসসালাম খালাআম্মা।
.
— ওলাইকুমআসসালাম।
কি করছিস টা কি??
.
— কিছু না খালাআম্মা।
.
— আজকে প্রান্তিক মানে তোর ছোট সাহেব তোর উপরে অত্যাচার করে নি তো??
.
— না খালা আম্মা।
.
— এখন তোর ছোট সাহেব করছে টা কি??
.
— খেয়েদেয়ে ঘুমুতে গেলেন।
.
— মিথ্যে বলছিস না তো??
.
— না।
.
— ঠিক আছে।
খোদা হাফেজ।
.
— খোদা হাফেজ।
.
.
.
খালাআম্মার সাথে কথা বলা শেষ করে নিজে শুয়ে পড়লাম।
জানি না উনারা এখনও ঘুমিয়েছেন কিনা।
গানের শব্দ তো এখনও শোনা যাচ্ছে।
.
মাফ করবেন খালাআম্মা আপনাকে মিথ্যে কথা বললাম।
আপনাকে যদি সত্যিটা বলতাম তাহকে আপনি ছোট সাহেবের উপর রাগ দেখাতেন।
আর স্যারও উনার উপর আরও রাগ করে বসতেন।
.
এমনিতে তো রাগ করে বসে আছেন।
আর রাগ বাড়াতে চাই না।
আমি কোন মতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
কিসের জন্য রাত তিনটায় আমার ঘুম ভাঙ্গল।
আমি ঘরের বাইরে বের হলাম।
বাইরে এসে দেখি উনি নিচে শুয়ে রয়েছে।
.
উনার বন্ধুরাও চলে গেছে।
তারমানে সারারাত পার্টি করতে করতে এইখানেই ঘুমিয়ে পড়েছেন।
আমি উনাকে আস্তে আস্তে করে উঠালাম।
.
তারপর সিঁড়ি দিয়ে কষ্ট করে উনার ঘরে নিয়ে গেলাম।
আর উনাকে বেডে শুইয়ে দিলাম।
উনাকে শুইয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছিলাম।
.
যাওয়ার সময় আমি অনুভব করলাম আমার উড়না কেউ টেনে ধরে রেখেছে।
আমি পিছন ফিরে দেখি ছোট সাহেবের ঘড়ির সাথে আমার উড়না বেজে রয়েছে।
.
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here