ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ৪

0
720

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:04
.
আমি ছোট সাহেবের পাশে যেয়ে বসলাম।
আমি আমার উড়না ছুটানোর জন্য উনার ঘড়ির উপর হাত রাখলাম।
উড়না ছুটানোর চেষ্টা করছি।
.
উড়না টা ছুটেও গেছে ঠিক ওই সময় উনি এই পাশে ঘুরে উনার আর একটা হাত আমার হাতের উপর রেখে দিলেন।
আমার বাম হাত এখন উনার হাতের দখলে।
উনি এমন ভাবে ধরে রেখেছেন না পারছি ছুটাতে।
.
হাই আল্লাহ তুমিই এখন আমাকে সাহায্য কর।
অবশেষে উনি ওইপাশে ঘুরলেন আমি বেঁচে গেলাম।
আমি আর এক মুহুর্ত দেরি না করে আমার ঘরে চলে আসলাম।
.
আমার ঘরে আসতে না আসতেই আজান দিয়ে দিল।
আমি আর না শুয়ে ওয়াশরুমে যেয়ে ওযু করে আসলাম।
তারপর নামাজটা পড়ে নিলাম।
.
.
.
নামাজটা পড়ে নিয়ে রান্নাঘরে গেলাম।
ছোট সাহেবের জন্য রান্না করতে লাগলাম।
আর আজকে সবাইও চলে আসবে।
.
খালাআম্মা আর স্যার তো এখনি চলে আসবে।
দুপুরের দিকে বড় সাহেব আর তার স্ত্রী আসবেন।
বলতে গেলে আমি এখন ছোট সাহেব আর স্যার আর খালাআম্মার জন্য রান্না করছি।
.
আমার রান্না করা শেষ।
তখনই কলিংবেলটা বেজে উঠল।
আমি দরজার সামনে যেয়ে দরজাটা খুলে দিলাম।
.
দরজাটা খুলে দেখি খালাআম্মা আর স্যার এসেছে।
উনারা ভিতরে আসলেন।
এসে বসলেন।
.
স্যার আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন,,
.
— কি গো রান্না কি হয়ে গেছে??
.
— জ্বি স্যার।
.
— প্রান্তিক মানে তোর ছোট সাহেব কি উঠেছে??
.
— না স্যার এখনও উঠেনি।
.
— ও।
.
.
.
উনারা খেতে বসলেন।
ঠিক ওইসময় ছোট সাহেব জোরে করে চিল্লিয়ে আমাকে ডাকছেন,,
.
— ওই ছোঁয়া।
তুই কোথায় রে।
তাড়াতাড়ি উপরে আই।
.
আমি বলতে লাগলাম,,
.
— আমি ভাই তাড়াতাড়ি উপরে যাই।
নইতো আবার তিনি নিচে এসে আমায় টানতে টানতে উপরে নিয়ে যাবেন।
.
আমি শুধু একটা দৌড় দিলাম।
খালাআম্মা স্যারকে বলছেন,,
.
— ছেলেটা কিন্তু মেয়েটার উপর একটু বেশি অত্যাচার করছে।
.
— হুম সেটাই তো দেখতে পাচ্ছি।
কিছু একটা তো করতেই হবে।
.
আমি এক দৌড়ে উনার রুমে চলে গেলাম।
তিনি শরীর মোচড়াতে মোচড়াতে বলতে লাগলেন,,
.
— কালকে পার্টি করার পর থেকে শরীর আর মাথাটা একটু বেশিই ব্যথা করছে।
একটু মালিশ করে দে না রে ছোঁয়া।
.
— হুম দিচ্ছি ছোট সাহেব।
.
— আগে মাথায় দে।
.
— জ্বি ছোট সাহেব।
.
.
.
আমি উনার মাথাটা মালিশ করে দিতে লাগলাম।
একটু পর পর উনি বলছেন,,
.
— আস্তে দে কি জোরে দিচ্ছিস।
মেরে ফেলবে নাকি।
.
আমি আবার কি জোরে দিলাম রে।
আস্তে করেই তো দিচ্ছি।
যত্তসব আমার উপর টরচার করার বাহানা।
.
একটু পরে রেগে গিয়ে আমার হাতটা ওইপাশে ঘুরিয়ে বলতে লাগলেন,,
.
— কতবার বলব আস্তে করে দে আস্তে করে দে।
তুই তো আমার কথায় শুনিছ না।
.
— ছোট সাহেব আমাকে ছাড়ুন আমার খুব লাগছে।
.
— লাগলে লাগুক আমার কিছু যাই আসে না।
তুই আমার কথা শুনিস না আর আমি তোকে ছেড়ে দিব তা তো হবে না।
.
— আমি তো আপনার প্রত্যেকটা কথা শুনি কোন কথাটা আমি আপনার শুনিনি ছোট সাহেব।
.
— আবার মুখের উপরে কথা বলে।
.
.
.
এইভাবে পুরো দশমিনিট আমার হাত ধরে রাখলেন।
ব্যথায় একদম মরে যাচ্ছি।
আমার হাতটা ছেড়ে দিয়ে উনি আবার বলা শুরু করলেন,,
.
— যা উপরে নিয়ে আস আমার খাবার।
.
— জ্বি ছোট সাহেব।
.
আমি হাত বুলাতে বুলাতে নিচে চলে আসলাম।
একটা প্লেটে উনার জন্য খাবার বেড়ে নিলাম।
খাবার উপরে নিয়ে যেতে লাগলাম।
.
খাবার উপরে নিয়ে যেয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি।
ভিতরে তাকিয়ে দেখি উনার গায়ে কোন গেন্জি নেই।
আমার তো খুব লজ্জা লাগছে উনাকে দেখে।
.
আমি বাইরে দাঁড়িয়ে বললাম,,
.
— ছোট সাহেব।
.
— ভিতরে আস।
টেবিলের উপর রেখে যা।
আর কালকের ঘটনাকে বেশি মনে নিস না।
.
— আমি মনে নেই নি ছোট সাহেব।
.
— যা এইবার।
.
.
.
আমি নিচে নেমে নিজের ঘরে চলে আসলাম।
হাতটাকে বুলাতে লাগলাম।
খুব ব্যথা করছে।
.
খালাআম্মা আর স্যার কথা বলছেন,,,
খালাআম্মা স্যারকে বলছেন,,
.
— প্রান্তিক কিন্তু ছোঁয়ার উপর একটু বেশিই অত্যাচার করছে।
আপনি কিছু একটা করুন।
আজকে সকালে নিশ্চিত আবার কিছু একটা করেছে।
.
— সেটাই তো ভাবছি গো রাবেয়া।
.
— কি ভাবলেন।
.
— ভাবছি যে দুইজনের বিয়ে দিয়ে দিব।
.
— এইসব কি বলছেন।
এমনিতে যা অত্যাচার টুকু করে পড়ে তো আরও বেশি করবে।
.
— বিয়ে ছাড়া আর কোন উপায় নেই গো রাবেয়া।
আমার বিশ্বাস এই বিয়ে দিলেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
.
— আপনি যা ভালো বুঝেন তাই করুন।
মেয়েটার উপর করা অত্যাচার আর সহ্য করা যাচ্ছে না।
.
.
.
আমি দুপুরের খাবার বসিয়ে দিলাম।
খালাআম্মা আসলেন রান্নাঘরে।
তিনি আমাকে বলছেন,,
.
— আজকে তোকে আর রান্না করতে হবে না।
আজকে একটু পড় গিয়ে।
কলেজ টা অফ হয়ে যাওয়ার পর থেকে তুই তো পড়ছিস না।
.
— খালাআম্মা আমি পরেও পড়ে নিতে পারব।
এখন আমাকে রান্না করতে দিন।
.
— না এইবার তুই তোর ঘরে যা।
.
— জ্বি খালাআম্মা।
.
বড় সাহেব আর তার স্ত্রীও চলে এসেছে।
তাদের সাথে ম্যামসাহেব এর ভাইও এসেছে।
আমি উনাদের সামনে গেলাম।
.
উনাদের ব্যাগ হাতে নিলাম।
নেওয়ার সাথে সাথেই বলে উঠলাম,,
.
— কি ব্যথা গো।
.
ম্যামসাহেব আমাকে বলতে লাগলেন,,
.
— কোথায় আবার ব্যথা পেলি??
ব্যাগ আমার কাছে দে।
.
— না না থাক আমি নিয়েই যাচ্ছি।
.
.
.
আমি ব্যাগটা নিয়ে উনাদের ঘরে দিয়ে আসলাম।
আমি আমার ঘরে চলে আসলাম।
ম্যামসাহেব আমার ঘরে আসলেন।
.
তিনি আমাকে বলছেন,,,
.
— সত্যি করে বলতো তোর হাতে ব্যথা শুরু হল কি করে??
.
— এমনিই।
.
— প্রান্তিক কিছু একটা করেছে।
.
— না উনি কি করতে যাবেন।
.
— তুই যদি আমাকে বড় বোন মনে করে থাকিস তাহলে সত্যিটা বল আমাকে।
আমার কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে রাখিস না।
.
আমি ম্যামসাহেবকে সব খুলে বললাম।
ম্যামসাহেব আমাকে বলছেন,,,
.
— আজকে সকালের টা তো বুঝতে পারলাম কিন্তু কালকে রাতেরটা আমি কিছুই বুঝলাম না।
.
— সেটা তো আমি নিজেও বুঝতে পারিনি।
.
.
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here