ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ১

0
1056

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:01
.
সারা বাড়িতে কেউ নেই আমি আর ছোট সাহেব ছাড়া।
বাড়ির সবাই বাইরে গেছে।
বড় সাহেব তো সে তার স্ত্রী কে নিয়ে ঘুরতে দেখে।মালিক আর মালকিন তো গ্রামের বাড়ি গেছে বেড়াতে।
.
আমাকেও সাথে করে নিয়ে যেতে চেয়েছিল কিন্তু ছোট সাহেব যেতে চাননি তো তাই আমাকে রেখে চলে গেছেন।
ছোট সাহেবের খেয়াল রাখার জন্য।
.
বিকাল পাঁচটা বেজে গেছে।
ইস ছোট সাহেব তো এখন কফি খাবেন।
যাই তাড়াতাড়ি করে কফিটা বানায়।
.
তাহলে আজকে আর আমার রক্ষে নেই।
আমি তাড়াতাড়ি করে কফি বানাতে চলে গেলাম।
গ্যাস অন করতে যেয়ে একটু আগুনের ছোঁয়া আমার হাতে লেগে গেছে।
.
তেমন কিছুই হয়নি।
আমি কফিটা বানিয়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি ছোট সাহেবের ঘরে ঢুকলাম।
উনার ঘরেই ঢুকে দেখি উনি ল্যাপটপে কার সাথে যেন কথা বলছেন।
.
আমাকে দেখার পর পরই ছোট সাহেব ল্যাপটপ টা অফ করে দিলেন।
উনি আমাকে দেখে চরম পর্যায়ে রেগে গেছেন।
রাগি গলা নিয়ে আমায় বলতে লাগলেন,,
.
— তুই এইখানে কি করছিস?
আমার ঘরে কেন এসেছিস?
.
— আপনি তো এইসময় কফি খান তাই কফি নিয়ে এসেছি।
.
— কফি নিয়ে এসেছিস ভালো কথা আমার ঘরে যে ঢুকলি দরজায় তো একবার নকও করতে পারি।
তা না করে সরাসরি আমার ঘরে ঢুকে গেলি।
.
— মাফ করবেন ছোট সাহেব আমি বুঝতে পারি নি।
এরপর থেকে আমি দরজায় টোকা দিয়েই আপনার অনুমতি নিয়ে আপনার ঘরে আসব।
.
তিনি বিছানা থেকে উঠে এসে আমার হাতটা শক্ত করে ধরলেন।
আমার খুব ব্যথা করছে।
এমনভাবে উনি আমার হাত ধরেছেন যে কফিতো প্রায়ই পড়েই যাচ্ছিল।
.
— বুঝতে পারিনি বললেই হল।
ফাজিল মেয়ে একটা।
তোকে কতবার বলেছি আমার সামনে আসবি না তুই।
.
ছোট সাহেব আমার হাতটা মোচর দিয়ে ওইদিকে ঘুরিয়ে নিল।
আমার হাতটা এখন আরও ব্যথা করছে।
আমি আর সহ্য করতে পারছি না।
.
এইবার উনি বলতে লাগলেন,,
.
— তুই তো আমার কথায় শুনিস না।
তাও বেহায়ার মত আমার সামনে চলে আছিস।
তুই কি বুঝতে পারিছ না আমি তোকে সহ্য করতে পারি না।
আজকের পর থেকে তুই আমার সামনে আসবি না।
.
— হ্যা আসব না।
.
আমার হাতটা ছেড়ে দিয়ে উনি কফি মগটা হাতে নিলেন।
কফিতে একটু চুমুক দিয়েই বলে উঠলেন,,
.
— এইটা কি কফি নিয়ে এসেছিস।
একদম ঠান্ডা হয়ে গেছে।
.
— কি বলছেন ছোট সাহেব।
আমি তো এই মাত্র বানিয়ে নিয়ে আসলাম।
এত তাড়াতাড়ি কি করে ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে।
.
— তাহলে তুই নিজেই দ্যাখ কতখানি ঠান্ডা হয়ে গেছে।
.
এই কথা বলার সাথে সাথে উনি আমার দুই‌ হাতে গরম কফি ফেলে দিলেন।
হাতটা জ্বলে যাচ্ছে আমার।
.
— এইবার বুঝতে পারলি তো কত ঠান্ডা হয়ে গেছে।
যা বের হ আমার ঘর থেকে।
.
আমি চলে যাচ্ছিলাম উনার ঘর থেকে উনি পিছন থেকে ডাক দিয়ে বলতে লাগলেন,,,,
.
— এই শোন।
.
— জ্বি ছোট সাহেব।
.
— আজকে রাতে আমার জন্য রান্না করার দরকার নেই।
ফ্রেন্ডসরা আসবে ওরা বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসবে।
.
— ঠিক আছে।
.
.
.
আমি উনার ঘর থেকে বের হয়ে আসলাম।
আস্তে আস্তে করে নিজের রুমে বসে পড়লাম।
আমি কান্না করতে লাগলাম।
.
হাতে ফু দিতে লাগলাম।
হাতে একদম ফোসকা পড়ে গেছে।
এই জ্বালা আর সহ্য করতে পারছি না।
.
আমার শুধু কান্নায় পাচ্ছে।
কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি টেরই পাইনি।
.
ছোট সাহেবের ফ্রেন্ডসরা চলে এসেছে।
সবগুলো ফ্রেন্ডস একসাথে জড়িয়ে ধরল।
ছোট সাহেবকে উনারা বলতে লাগলেন,,
.
— কি রে প্রান্তিক কেমন আছিস??
.
— ভালোই আছিরে।
তোরা কেমন আছিস সেটা তো আগে বল??
.
— আমরাও ভালো আছিরে।
.
— খাবার আনবি বলেছিস তাই বলে এত নিয়ে এসেছিস।
এত খাবে কে??
.
— আমরাই খাব।
.
— আমরা এত খাই নাকি রে।
তবে ভালোই করেছিস ছোঁয়া তো রয়েই গেছে।
মম ড্যাড রেখে গিয়েছে আমার দেখাশুনার জন্য।
আমি নিশ্চিত ও নিজের জন্য রান্না মোটেও করবে না।
ওই খেয়ে নিবে।
.
— আগে বল এইগুলো এখন কোথায় রাখব??
.
— এইগুলো তো বেড়ে রাখতে হবে।
দাঁড়া।
ছোঁয়াকে ডাক দিচ্ছি।
.
— এই প্রান্তিক।
এই ছোঁয়াটা আবার কে রে??
.
— আমাদের বাড়িতে আগে আন্টি কাজ করত না তার একটা মাত্র।
ওই আন্টি মারা যাওয়ার পর থেকে ও এইখানে থাকে।
বলতে গেলে মম ড্যাডই ও কে রেখে দিয়েছে।
মম ড্যাড অবশ্য ওকে পড়াশুনাও করাচ্ছে।
.
— দে তাড়াতাড়ি ডাক দে ওকে।
.
— হুম দিচ্ছি।
.
.
.
ঘুম থেকে উঠে দেখি আট টা বেজে গেছে।
আরে আমি এতখন আমি ঘুমিয়েছি।
আমাকে তো ছোট সাহেবের জন্য রান্না করতে হবে।
.
আরে আমি এত টেনশন করছি কেন??
উনি তো বলেই দিয়েছেন আজকে রান্না না করতে।
উনার ফ্রেন্ডসরা খাবার নিয়ে আসবেন।
.
ছোট সাহেব আমাকে ডাকছে,,,,
.
— ওই ছোঁয়া।
তাড়াতাড়ি বাইরে চলে আস।
.
উনি এখন কেন আমাকে ডাকছেন??
উনি তো বলে দিয়েছেন উনার সামনে না যেতে।
তাহলে এখন কেন আমাকে প্রয়োজন পড়ছে।
.
আমি যাব না উনার কাছে।
.
— কিরে আসছে না কেন??
দাঁড়া তোর এখনি মজা দেখাচ্ছি ফাজিল মেয়ে একটা।
.
ছোট সাহেব নিজেই আমার ঘরে আসলেন।
আমি বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়ালাম।
উনি বলতে লাগলেন,,,
.
— তোকে না সেই কখন থেকে ডাকছি।
তুই কোন রেসপন্স দিচ্ছিস না কেন??
.
— আপনিই তো বললেন আমাকে আপনার সামনে না যেতে।
.
— আসলেই তুই,,,
.
আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছেন।
আমি উনাকে বলছি,,
.
— ছাড়ুন আমাকে বলছি।
কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে ছাড়ুন।
.
আমাকে টানতে টানতে উনার ফ্রেন্ডসদের সামনে নিয়ে গেলেন।
আমাকে বলতে লাগলেন,,,
.
— যা এইগুলো বেড়ে দে।
.
— দিচ্ছি ছোট সাহেব।
.
উনারা ফ্রেন্ডসরা উনাকে বলছে,,,
.
— এই কি ছোঁয়া??
.
— হুম।
.
— কত সুন্দর রে।
.
.
.
চলবে।

April

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here