ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 25
!
বিষয় টাকে স্বাভাবিক ভাবে নিবে,
হঠাৎ লিমন আমার বিচ্ছু টাকে কান টেনে আমার কাছে নিয়ে এসে বলে,
!
আন্টি এই শয়তান টা না সবার পেছনে লুকিয়ে ছিলো,
!
আর বোলো না বাবা ওর কাজি তো এই,
!
তখন ওরা সবাই আমাকে জড়িয়ে ধরে কতো গুলো ছবি সেলফি তুলে আমাকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয়,
!
তারপর আমরা বাসায় চলে আসি,
!
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বসতেই আমার ফোনে ভিডিও কল আসে ব
কল রিসিভ করতেই আমার ইয়াদ বলে ওঠে,
!
লাভ ইউ লাভ ইউ মা,
!
সোনা বাবা,
খেয়েছিস তুই?
তোর শরীর স্বাস্থ্য ভালো আছে তো?
!
আরে ধুর ছাড়ো তো তুমি কেমন আছো মা?
বুনু কেমন আছে?
মিয়াদ তোমার খেয়াল আছে তো?
তুমি ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করোনা?
এতো শুকিয়ে গেছো কেন হুমম?
!
কে বলেছে আমি শুকিয়ে গেছি?
তুই আমাকে দেখেছিস?
আমি কতো মোটু হয়ে গেছি?
!
তাহলে তো ভালোই আমি এসে আমার গোলুগালু মা কে দেখবো?
!
সেই কবে আমি তোমাকে ইয়ানার সময়ে গোলুগালু দেখেছিলাম তারপরে তো আর দেখিনি?
ওর জন্মের পরে তো তুমি বেলুনের মতো চুপসে গেলে,
!
বিদেশে গিয়ে তুমি এসব শিখেছ?
ফাজিল ছেলে মাকে বলে কিনা চুপসে যাওয়া বেলুন?
!
ফাজিল তো আমি আগেই ছিলাম শুধু তোমার চোখে পড়েনি মা,
!
আমি তোমাকে অনেক মিস করি আমারো মন চায় মিয়াদের মতো তোমার হাতে খাবার খেতে, তোমাকে জড়িয়ে ধরতে, তোমার কাছে ঘুমতে,আমি তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি মা,
!
তখনি হঠাৎ মিয়াদ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে তখন ইয়াদ ওকে মুখ ভেঙিয়ে বলে,
!
ওই তুই আমার মাকে জড়িয়ে ধরেছিস কেন?
!
উম্মা তুই কে এ্যা?আমার মাকে নিজের মা বলো কোন দঃখ্যে হুমমমম,
!
ছেমড়া শয়তান আমি একবার আসি তোর জীবন টা একে বাড়ে তেজপাতা করে ফেলবো?
!
তুই তো জানিস ভাই আমাকে জোড় করে বাবাই এখানে পাঠিয়ে দিয়েছে,
যদি তোর কথা শুনতাম আর দাদুবাড়ি চলে যেতাম,
তাহলে আমাকে আর মাকে ছেড়ে এখানে আসতে হতো না হুমম,
!
তুই বুদ্ধি করে দাদুবাড়ি চলে গেছিলি বলেই আজ তুই মায়ের কাছে আর আমি এখানে এতো দূরে,
!
থাক বাবা আর তো মাএ কয়েট টা দিন তারপর তো তুই আমার কাছে চলে আসবি,
!
ভাইয়া প্লিজ তুই মন খারাপ করিস না মা কেঁদে ফেলবে তো?
!
ইসস মগের মুল্লুক আমি মাকে কাঁদতেই দিবো না মা হাসো প্লিজ,
!
হা হা হা,
!
লাভ ইউ মা,
!
মায়ের একটা কথা শুনবি বাবা?
!
হ্যা বলো?
তুমি যা চাইবো তাই করবো?
!
তাহলে শোন দেশে ফিরে কয়দিন বাবাইয়ের কাছে থেকে আমার কাছে আসবি কেমন?
!
কি?
মা ওনার জন্যে আজ আমি তোমার থেকে এতো দূরে,
!
তুমি জানো মা আমি ইংলিশে বকবক করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাই,
তখন আমার তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে,
!
তবে তুমি যখন বলেছ আমি অবশ্যই ওনার কাছে যাবো,
তবে আমি তোমার কাছে থেকে ওনাকে দেখতে যাবো হুমম,
!
পাগল ছেলে আমার,
!
হুমমম মা শুধু পাবনা যাওয়া বাকি তাই না হা হা হা হা
#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 26
!
হুমমম মা শুধু পাবনা যাওয়া বাকি আছে তাই না হা হা হা?
!
আচ্ছা মা ওখানে তো অনেক রাত হয়ে গেছে তাই না?
!
তুমি এখন ঘুমো নাহলে শরীর খারাপ করবে?আর ভাই মাকে চোখেচোখে রাখবি কেমন?
!
জ্বি ভাইয়া তুমি কোনো টেনশন করো না ওকে,
!
বাবা পরীক্ষা আছেনা আজ ভালো করে দিস কেমন?
!
ঠিক আছে মা লাভ ইউ,
!
লাভ ইউ টু বাবা,
!
পরেরদিন সকালে,
রিহান ওদের বাসার সামনে ক্রিকেট খেলছিল হঠাৎ বল টা এসে ইয়ানার সামনে পরে,
আর ও বলটা তুলে বলে,
!
রিহান ভাইয়া তোমার বল,
!
থ্যাংকইউ,ওহহহ ইয়ানা তুমি জানো কালকে আন্টি আমাদের ইউনিভারসিটি তে এসেছিল,
!
খান সাহেব তখন ওর কথা শুনে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন,
!
সেকি ইউনিভারসিটি তে কোনো অনুষ্ঠান ছিলো নাকি বাবা?
!
না আঙ্কল আমাদের অনার্স কমপ্লিট হওয়ার খুশিতে,
ফ্রেন্ডসরা মিলে ছোটোখাটো গেট টুগেদারের আয়োজন করেছিলাম,
!
সেখানেই আন্টি আমাদের জন্যে খিচুড়ি ও ইলিশ ভেজে নিয়ে এসে ছিলেন ,
আহহহ কি স্বাদ?
এখনো জিবে লেগে আছে,
!
রিহানের কথা শুনে খান সাহেবের মুখে জল চলে আসে,
আর মন টাও খারাপ হয়ে যায় ঠিক তখনি ইয়ানা ও মন খারাপ করে দৌড়ে ওর রুমে চলে যায় আর ভাবে,
!
মা তুমি কি আমাকে ভুলে গেছ?
আমার কথা কি একটু মনে পড়েনা তোমার?
!
মেয়ে টা বড্ড খিচুড়ি খেতে ভালোবাসে,
কিন্তু আমি তো ওদের ছেড়ে চলে এসেছি,
!
কেন আসতাম না হুম?
তুই ও তোর বাবা আমাকে এক মুহূর্ত ও শান্তি দাওনি,
!
কথায় কথায় তোরা যা মন চায় তাই বলে ইশার প্রসঙ্গ টেনে এনে আমাকে অপমান করে কষ্ট দিতি,
!
একটু বোঝার চেষ্টা করিসনি,
যে আমি ও মানুষ আমারো একটা মন আছে?
!
তোদের কাছ থেকে এতো অবহেলা ও কষ্ট পেতে পেতে কখন যে তোদের এতো টা ঘৃণা করে ফেলেছি?
!
যে আমি আমার ধের্য্য হাড়িয়ে তোদের খুশির জন্যে তোদের ছেড়ে চলে এসেছি,
!
থাক তোরা তোদের মতো আমি আর কখনওই তোদের চাওয়া পাওয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়াবো না,
!
দোয়া করি ভালো থাক তোরা,
!
কি হয়েছে মা?কি ভাবছ তুমি?
!
কিছুনা বাবা,
!
আচ্ছা আমি মা কে নিয়ে এতো ভাবছি কেন?
আমি তো মাকে কখনওই ভালোবাসিনি?
!
হয়তো অলস মস্তিষ্ক কাজের অভাবে আমার মা কে নিয়ে গবেষণা করছে?
!
খান সাহেব তখন মেয়ের কক্ষে এসে দেখে যে সে মন খারাপ করে বসে আছে,
!
তাই পা টিপে টিপে মেয়ের কক্ষে ঢুকে ওর ছোটো বেলার একটা ভিডিও প্লে করে দেন,
!
যা দেখে বাবা মেয়ে দুপাটি দাঁত বেড় করে হেসে দেয়,
!
কারন ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে যে দু বছর বয়সের ইয়ানা তার মায়ের কাছে বাবা কে দেখলেই রাগে গজগজ করতে করতে কান্না জুড়ে দিতো,
!
আর মেয়ের কান্না থামাতে খান সাহেব তার বেগমের থেকে দূরে সরে যেতো,
তখন ইয়ানা কান্না ছেড়ে খটখটিয়ে হাসতে হাসতে মায়ের গালে চুমু খেতো,
!
কিন্তু বাবা কে মায়ের আশেপাশে দেখলেই কান্না জুড়ে দিতো,
তাই খান সাহেবের ঘুমোবার স্থান ছিলো তখন সোফায়,
!
যাই হোক ভিডিও টা দেখে ইয়ানা বাবা কে জড়িয়ে ধরে,
তখন খান সাহেব ও মনে একটু স্বস্তি ফিরে পান
#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 27
!
তখন খান সাহেব একটু স্বস্তি ফিরে পান,
তারপর মেয়ে কে আদর করে বলেন,
!
তোর কি হয়েছে মা?
সারাদিন এভাবে মন খারাপ করে থাকিস কেন শুনি?
!
এমনি বাবা ও কিছুনা,
তুমি আমার একটা আবদার রাখবে প্লিজ?
!
হ্যা মা কেননা?
বল কি চাই তোর?
আমি তোকে সব এনে দিবো?
!
তেমন কিছু চাইনা বাবা,আমাকে একটু নিজের হাতে খাইয়ে দিবে প্লিজ? অনেকদিন তোমার হাতে খাই না?
!
হ্যা মা দিবো তো আমি তোর ফেভারিট মাংসের খিচুড়ি রান্না করতে বলে এসেছি চল এতক্ষণে হয়তো হয়ে গেছে
দুজনে মিলে মজা করে খাবো কেমন?
!
হ্যা চলো,
!
খান সাহেব তারপর মেয়ে কে খিচুড়ি খাওয়াতে ডায়নিং এ নিয়ে যায়,
!
ফুলির রান্নাকরা খিচুড়ি মুখে দিতেই ইয়ানা রেগে গিয়ে বলে,
!
এসব কি ছাইপাঁশ রান্না করেছ তুমি হুমমম?
!
এতো কাল তো আমাদের বাসায় থেকেছ মায়ের রান্না দেখেছ তবু ও তুমি কিছু শিখনি তাই না?
!
তারপর ও রাগ করে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়,
!
খান সাহেব তখন ফুলি কে আশ্বস্ত করে বলেন,
!
ভয় পেয়ো না হয়তো মন মতো রান্না হয়নি তাই রেগে চলে গেছে,
!
সাহেব আমি ভয় পাইনি,
!
বলিকি বেগম সাহেবা কে ফিরিয়ে আনুন কারন আপনার সংসার সামলানো শুধু মাএ তাকে দিয়ে সম্ভব,
!
খান সাহেব ফুলির কথা শুনে মন খারাপ করে অফিসে চলে যায়,
!
ইয়ানা বাসা থেকে বেড়িয়ে হাটতে হাটতে কিছু দূর গিয়ে দেখে,
!
মিয়াদ মায়ের হাত ধরে হাটছে আর মা মিয়াদ কে আইসক্রিম খাইয়ে দিচ্ছে,
!
এসব দেখে,
ইয়ানার মন আরো খারাপ হয়ে যায়,
!
কিন্তু তখন খেয়াল করে দেখে,
!
যে মায়ের স্বাস্থ্য আগের থেকে অনেক টা ভালো হয়ে গেছে এবং সে খুব সাবধানে আস্তে আস্তে মিয়াদের হাত ধরে হাটছে,
!
মা তোমার হাটা হয়েছে?
কষ্ট হচ্ছে নাতো?
তাহলে বলো?
তোমাকে রিকশায় করে বাসায় নিয়ে যাবো,
!
না বাবা থাক দরকার নেই,
আমি ভালো আছি হেটে হেটেই যাবো,
!
সারাদিন তো বাসায় বসে হাতের কাজ করি, সবসময় কি এক কাজ করতে ভালো লাগে নাকি হুমম?
!
আর আমি চাকরি করতে চাই বাসায় পায়ের পায়ের ওপরে পা তুলে আয়েশ করতে মোটে ও ভালো লাগেনা আমার,
!
কি?
মা তোমার দুই ও ছেলে চাকরি করে তো,
তোমার কিসের অভাব আছে বলো তো?
!
তোমার বুটিক শোরুম ওপেন হয়ে গেলে তো তুমি ওখানেই বিজি হয়ে যাবে তখন?
!
দেখো মা তোমাকে কোনো কষ্ট আমরা করতে দিবো না,
তাই চাকরি করার কথা মনের ভুলে ও ভাববে না,
!
আর তাছাড়া তুমি একা নও আমার বুনু ও তেমার সাথে আছে,
তাই তুমি এসব ভুলে যাও মা প্লিজ,
!
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে,
!
তুমি এভাবে বাহানা করবেনা প্লিজ মা,
তোমার ছেলেরা আছে তো আমরা তোমার যত্ন করবো কেমন?
!
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে