#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 28
!
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে,
!
তখনি কেউ মা কে ধাক্কা দেয় আমি সাথেসাথে মাকে সামলে সামনে তাকিয়ে ইয়ানা কে ঝাড়ি মেরে বলি
!
বেয়াদব মেয়ে দেখে চলতে পারোনা?
!
হয়তো ও কিছু বলতে চেয়েছিল,
!
কিন্তু কেন জানি মায়ের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে?
!
তাই আমি আর কথা না বাড়িয়ে,
মা কে নিয়ে রিকশা করে বাসায় চলে আসি,
!
মা তুমি আমার সাথে কথা না বলে চলে গেলে?
!
মা তুমি কি সত্যি আমাকে সত্যি ভুলে গেছো?
!
তুমি তো শুধু ওদের না আমারো মা তাহলে?
আমি তো তোমাকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দেইনি মা,
!
কেউ তো আমাকে এভাবে কখনো বকেনি মা,
!
তুমি ও কখনো আমায় বকোনি?
তাহলে ভাইয়া বকলো কেন?
!
ভাইয়া বকলো তুমি কিছু বললে না,
!
আমাকে এক নজর দেখলে ওনা?
ভাইয়ের সাথে রিকশা করে চলে গেলে তুমি?
!
মেয়ে টা এতো শুকিয়ে গেছে কেন? ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করেনা নাকি?
!
মা, মা,
!
জ্বি বাবা,কিছু বলেছিস?
!
মা তুমি কি ভাবছ হুমম?
তুমি ওদের কথা ভাবা ছেড়ে দাও না প্লিজ?
।
তোমার নিজের শরীর ভালো নেই,
তাই সে দিকে মন দাও মা,
!
আর হ্যা দেখি তো হা করো?
আমি তোমাকে খাইয়ে দেই কেমন?
!
সবসময় তো মা তুমি আমাকে খাইয়ে দাও,
!
আমি খেয়ে নিবো বাবা তুই এখানে রেখে যা কেমন?
!
নাহহহ রেখে যাবো না তোমার কথা ও শুনবো না,
!
হা করো হা নয়তো বকা দিবো হুমম,
!
তারপর ছেলে আমার দিকে বড়বড় চোখ করে তাকায়,
!
তখন আর উপায় না দেখে,
ওর হাতে সোনামুখ করে খেয়ে নেই আমি,
!
তারপর ও আমাকে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাইয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়,
আর মাথায় বুলিয়ে বলে,
!
মা তুমি দুশ্চিন্তা করা ছেড়ে দাও
!
আমরা তো আছি তোমাকে কখনওই কষ্ট পেতে দিবো না,
!
আমি করছি না বাবা,
এখন তুই একটু রেস্ট নে,
!
তারপর ছেলে আমার পাশে শুয়ে আমার হাত দুটো তার বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরে,
!
খান সাহেব লোক মারফত কোনো ভাবে যেনে যায় যে বেগম সাহেবা খুব অসুস্থ,
!
তাই তার অসুস্থতার কারন জানতে মরিয়া হয়ে,
!
তার খাস ভৃত্যদের বেগম সাহেবার ভাইয়ের বাসার আশেপাশে লাগিয়ে দেয়,
!
রাতে খান সাহেব বাসায় ফিরে দেখে,
!
মেয়ে চুপ করে ফ্লোরে বসে আছে,
মেয়ের কাছে গিয়ে বসতেই,
মেয়ে তাকে বলে,
!
বাবাই মায়ের যদি মেয়ে হয়?
তাহলে কি মা আমাকে কম ভালোবাসবে?
!
মেয়ের কথা শুনে খান সাহেব তার মুখে এক চিলতে হাসি টেনে বললেন,
!
না মা তোমাকে অনেক ভালোবাসবে,
তুমি তো জানো?
!
তোমার মা কতো সৌখিন?
সে কখনওই পক্ষপাতিত্ব করবে না,
!
তুমি তো কিছু জানেনা,
তাই এমন বলছ বাবা,
তবে,
আমি ও তোমাকে জানাবো না হুমম
#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 29
!
তবে আমি তোমাকে জানতে দিবো না
বাবাই,
কখনওই না,
!
রাতে এশার নামাজ পরে একাএকা ছাদে বসে হাওয়া খাচ্ছিলাম,
!
হঠাৎ পেছন থেকে দুজন এসে জড়িয়ে ধরে,
!
সাথেসাথে পেছনে ফিরে ইয়াদ ও মিয়াদ কে দেখে আমি ভূত দেখার মতো চমকে যাই,
!
তখন ওরা আমাকে জারিয়ে ধরে আমার দু গালে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দেয়,
!
আর আমি এতদিন পরে,
আমার ছেলে দুটো কে আমার কাছে পেয়ে কেঁদে ফেলি আমি,
!
তখন ওরা আমার চোখেরজল মুছে দিয়ে বলে,
!
মা তুমি কাঁদছ কেন?আমরা তো এসে গেছি,
!
বাবা তোর পরীক্ষা তো শেষ হয়নি?
!
কে বলেছে হয়নি?
সেতো সাতদিন আগেই শেষ,
!
আমি তো তোমাকে সারপ্রাইজ দিবো বলে সবটা লুকিয়ে গেছি মা,
মিয়াদ জানতো তুমি ওকে জিজ্ঞেস করে দেখো?
!
বাবা তোরা এতো বিচ্ছুগিরি করো কেন হুম?
আমি এতো ধকল সইতে পারিনা সোনা,
!
সরি মা চলো বেড রুমে চলো দেখবে না তোমার ও বুনুর জন্যে কি কি এনেছি আমি?
!
বাবা আমার কোনো জিনিসের অভাব তো রাখিসনি তোরা,
তাহলে এমন দুষ্টুমি করছিস কেন শুনি?
!
কি যে বলোনা মা?
পাঁচ টা না দশটা না একটা মাএ মা আমাদের,
সব তো তারি জন্যে করবো,
!
তারপর আমি রুমে গিয়ে বসি,
আর মিয়াদ এসে আমার কোলে মাথা রেখে শোয়,
!
তখন ইয়াদ ওর ধরে হাত টানতে টানতে বলে,
!
ওঠ তাড়াতাড়ি ওঠ এই আট বছর অনেক আদর খাইছ মায়ের এখন সব আদর আমি খাবো,
!
ওদের টানাটানি দেখে,
আমার ভাই এসে বলে,
!
আমার বোন টাকে নিয়ে কি শুরু করেছিস তোরা?
বাবা এবার একটু থাম,
অসুস্থ হয়ে পরবে তো,
!
থামবো?
আগে মিয়াদ কে সরতে বলো তারপর,
!
তখন মিয়াদ একটু সরে যায় আর ইয়াদ এসে কোলে মাথা রেখে শোয়,
!
তারপর আমি ওদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেই,
কিছুক্ষণ পরে খাবার খাইয়ে দেই,
!
তারপরে খেয়াল করে দেখি,
ইয়াদ ম্যাক্সি,মিয়াদ কামিজ আর প্লাজু পরে আমার সামনে ঘুরঘুর করছে আর বলছে,
!
তোমার কাকে বেশি ভালো লাগে মা?
!
আমি ওদের কান্ড দেখে ফিক করে হাসছি আর বলছি,
এসব কি হচ্ছে বাবা?
!
শোনো মা তুমি এখন থেকে কষ্ট করে সাড়ি পড়বেনা,
এই ঢিলেঢালা পেশাক গুলো পরবে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগবে,
কষ্ট কম হবে,
!
সেটা আমাকে বললে তো হতো বাবা,
এভাবে মডেলিং করার মানে কি?
!
তোমাকে ইম্প্রেস করার চেষ্টা করছি মা হা হা হা,
!
পাগল ছেলে দুইটা,
আয় আমার কাছে আয় ঘুম পাড়িয়ে দেই,
!
তখন বিচ্ছু দুটো চেইঞ্জ না করেই আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরে,
!
তারপর আমার সাথে গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে পরে,
!
পরেরদিন সকালে ভাবি ওদের ম্যাক্সি ও প্লাজু কামিজ পরা দেখে হেসে ফেলে,
!
আর ওরা ও লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আমার কাছে খেতে আসে,
!
আর আমি দুটো কে একসাথে বসিয়ে,
এক প্লেটে ব্রেকফাস্ট করিয়ে দেই,
!
তারপর ওরা আমার গালে চুমু খেয়ে,
ফুটবল নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে খেলতে বেড়িয়ে যায়
#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 30
!
বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল নিয়ে খেলতে বেড়িয়ে যায়,
!
কি হয়েছে ননদিনী?
!
তোমার ছেলে কোই ভাবী?
!
কোই আবার?ভাইদের সাথে গেছে,
!
তুমি জানো ভাবি আমি ওদের যেতে দিতে চাইনি,কিন্তু কি কারি বলো? কতদিন পরে আমার দুই ছেলে খেলতে বেড়িয়েছে তাই ওদের আর বাড়ন করতে পারলাম না,দুটোরি আমার মতো ঠান্ডার সমস্যা আছে যদি বাই চ্যান্স ঠান্ডা লেগে জ্বর হয় তখন?
!
হবে না মা?
!
আরে বাবা তোরা ফিরে এলি কেন?
!
কি যে বলো না মা?মাঠ ভর্তি জোক সবাই মিলে কি জোকের কামড় খাবো?
!
বাবা আমার ছেলেরা আবার এতো ভদ্র হলো কবে হুমম?
!
আমরা তো আগেই ভদ্র শুধু তোমার চোখে পড়েনি মা,
আচ্ছা মা তুমি ভাবছ শুনি?
!
ভাবছি তোদের বিয়ে দিবো,আর কত কাল তোদের আমি আমার বুকে ধরে রাখবো?আমার ওতো বয়স হচ্ছে বাবা?কোন সময়ে পটল তুলে আল্লাহর প্রিয় হয়ে যাবো কে জানে?
!
লিসেন মা আজেবাজে কথা বলবে না, তোমার কিছু হবে না আর বিয়ে করার শখ হলে নিজেরাই জানিয়ে দিবো মা
বড় লোক বাপের উৎশৃঙ্খল মেয়ে কে কখনওই বিয়ে করবো না গরিব ঘরের নম্র ভদ্র মেয়ে দেখে বিয়ে করবো হুমম,
তবে এখন না মা প্লিজ,
!
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে ফ্রেশ হয়ে আয় ঠান্ডা লেগে যাবে তো?কি হলো হাসছিস কেন?
!
একচুয়ালি মা হাচ্চু,
!
ফাজিল গুলো যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়,ভাবি একটু তেল গরম করে দাও তো ওদের বুকে মালিশ করে দেই,
!
এই নাও করাই আছে,
!
রাতে ছেলে দুটো কে খাইয়ে আবারো তেল মালিশ করে দেই তখন ইয়াদ আমার গালে চুমু খেয়ে বলে,
!
মা আমি রাত টুকু বাবাইয়ের কাছে থেকে তোমার কাছে ফিরে আসবো
তুমি বলে ছিলে তো না গেলে তো গাল ফুলিয়ে বসে থাকবে
আই প্রমিছ আমি কালকেই তোমার কাছে ফিরে আসবে
ওই বাড়িতে তোমাকে ছাড়া আমার পক্ষে থাকা সম্ভব না মা,
!
রাতে খান সাহেব অফিস থেকে ফিরে নিজে কক্ষে ইয়াদ কে দেখে বেশ সারপ্রাইজড হয়ে যায়
আর ছুটে গিয়ে ছেলে কে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
বাবা কখন এলি তুই?আমাকে জানাবি না আমি তো কিছু জানিনা?
!
শোনো শুধু মা বলেছে বলেই আমি তোমার কাছে এসেছি বাবাই
সে যাই হোক তোমার ও ইয়ানার জন্যে কিছু নিয়ে এসেছি
ট্রলির মধ্যে আছে দেখে নিও প্লিজ,
!
মায়ের কথায় এসেছ?মাকে নিয়ে আসনি কেন?
!
সেই আশা তুমি ছেড়ে দাও প্লিজ,
!
ফ্রেশ হয়ে খান সাহেব রুমে এসে দেখে ইয়াদ ও ইয়ানা পাশাপাশি বসে আছে
কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলছে না তাই ফিক করে হেসে দিয়ে বলে,
!
ডোন্ট ওয়ারী গাইজ আমাদের জন্যে রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার ওয়ার্ডার করেছি,
রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার আসতেই ইয়ানা খান সাহেব খেতে বসে,
!
আর ইয়াদ একটা প্লেট এনে টিফিন ক্যারিয়ার থেকে চিংড়ি মাছের মালাই কাড়ি ও ভাত নিয়ে খেতে শুরু করে
আড়চোখে তাকিয়ে দেখে
যে খান সাহেব ও ইয়ানা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে
তখন ও দুষ্টুমি করে বলে
আহহহ কি স্বাদ মায়ের হাতের রান্না বলে কথা
!
খান সাহেব তখন নির্লজ্জের মতো বলে,
!
বাবা একাএকা খাবি? আমাকে দিয়ে খা অনেকদিন তোর মায়ের হাতের রান্না খাই না,
খেতে হবে না
