ত্যাগের সংসার – পর্ব ৩০+৩৪

0
268

#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 30
!
বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল নিয়ে খেলতে বেড়িয়ে যায়,
!
কি হয়েছে ননদিনী?
!
তোমার ছেলে কোই ভাবী?
!
কোই আবার?ভাইদের সাথে গেছে,
!
তুমি জানো ভাবি আমি ওদের যেতে দিতে চাইনি,কিন্তু কি কারি বলো? কতদিন পরে আমার দুই ছেলে খেলতে বেড়িয়েছে তাই ওদের আর বাড়ন করতে পারলাম না,দুটোরি আমার মতো ঠান্ডার সমস্যা আছে যদি বাই চ্যান্স ঠান্ডা লেগে জ্বর হয় তখন?
!
হবে না মা?
!
আরে বাবা তোরা ফিরে এলি কেন?
!
কি যে বলো না মা?মাঠ ভর্তি জোক সবাই মিলে কি জোকের কামড় খাবো?
!
বাবা আমার ছেলেরা আবার এতো ভদ্র হলো কবে হুমম?
!
আমরা তো আগেই ভদ্র শুধু তোমার চোখে পড়েনি মা,
আচ্ছা মা তুমি ভাবছ শুনি?
!
ভাবছি তোদের বিয়ে দিবো,আর কত কাল তোদের আমি আমার বুকে ধরে রাখবো?আমার ওতো বয়স হচ্ছে বাবা?কোন সময়ে পটল তুলে আল্লাহর প্রিয় হয়ে যাবো কে জানে?
!
লিসেন মা আজেবাজে কথা বলবে না, তোমার কিছু হবে না আর বিয়ে করার শখ হলে নিজেরাই জানিয়ে দিবো মা
বড় লোক বাপের উৎশৃঙ্খল মেয়ে কে কখনওই বিয়ে করবো না গরিব ঘরের নম্র ভদ্র মেয়ে দেখে বিয়ে করবো হুমম,
তবে এখন না মা প্লিজ,
!
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে ফ্রেশ হয়ে আয় ঠান্ডা লেগে যাবে তো?কি হলো হাসছিস কেন?
!
একচুয়ালি মা হাচ্চু,
!
ফাজিল গুলো যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়,ভাবি একটু তেল গরম করে দাও তো ওদের বুকে মালিশ করে দেই,
!
এই নাও করাই আছে,
!
রাতে ছেলে দুটো কে খাইয়ে আবারো তেল মালিশ করে দেই তখন ইয়াদ আমার গালে চুমু খেয়ে বলে,
!
মা আমি রাত টুকু বাবাইয়ের কাছে থেকে তোমার কাছে ফিরে আসবো
তুমি বলে ছিলে তো না গেলে তো গাল ফুলিয়ে বসে থাকবে
আই প্রমিছ আমি কালকেই তোমার কাছে ফিরে আসবে
ওই বাড়িতে তোমাকে ছাড়া আমার পক্ষে থাকা সম্ভব না মা,
!
রাতে খান সাহেব অফিস থেকে ফিরে নিজে কক্ষে ইয়াদ কে দেখে বেশ সারপ্রাইজড হয়ে যায়
আর ছুটে গিয়ে ছেলে কে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
বাবা কখন এলি তুই?আমাকে জানাবি না আমি তো কিছু জানিনা?
!
শোনো শুধু মা বলেছে বলেই আমি তোমার কাছে এসেছি বাবাই
সে যাই হোক তোমার ও ইয়ানার জন্যে কিছু নিয়ে এসেছি
ট্রলির মধ্যে আছে দেখে নিও প্লিজ,
!
মায়ের কথায় এসেছ?মাকে নিয়ে আসনি কেন?
!
সেই আশা তুমি ছেড়ে দাও প্লিজ,
!
ফ্রেশ হয়ে খান সাহেব রুমে এসে দেখে ইয়াদ ও ইয়ানা পাশাপাশি বসে আছে
কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলছে না তাই ফিক করে হেসে দিয়ে বলে,
!
ডোন্ট ওয়ারী গাইজ আমাদের জন্যে রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার ওয়ার্ডার করেছি,
রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার আসতেই ইয়ানা খান সাহেব খেতে বসে,
!
আর ইয়াদ একটা প্লেট এনে টিফিন ক্যারিয়ার থেকে চিংড়ি মাছের মালাই কাড়ি ও ভাত নিয়ে খেতে শুরু করে
আড়চোখে তাকিয়ে দেখে
যে খান সাহেব ও ইয়ানা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে
তখন ও দুষ্টুমি করে বলে
আহহহ কি স্বাদ মায়ের হাতের রান্না বলে কথা
!
খান সাহেব তখন নির্লজ্জের মতো বলে,
!
বাবা একাএকা খাবি? আমাকে দিয়ে খা অনেকদিন তোর মায়ের হাতের রান্না খাই না,

খেতে হবে না

#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 31
!
খেতে হবে না,
!
একটু দিলে হবে,
!
কি?
তুমি কি বয়রা?
আমি তোমাকে দিবো না?
!
মা আমার জন্যে রান্না করে পাঠিয়েছে তোমাকে দিবো কেন?
!
নিজে তো খাবার আনিয়ে নিয়েছ সেটা খাও না,
!
খান সাহেব তখন মুখ কালো করে সোনামুখ করে রেস্টুরেন্টের খাবার গুলো খেয়ে ওঠেন,
তারপরি তার ফোন বেজে ওঠে,
ফোন রিসিভ করতেই তার খাস ভৃত্য বলেন,
!
সাহেব আমরা বেগম সাহেবার ফোন নম্বর টা যোগার করতে পারিনি,
!
সমস্যা নেই আমি করে নিবো,
সেই উদ্দেশ্যে খান সাহেব রাতে ইয়াদের কাছে ঘুমোতে যায়,
!
ইয়াদ ঘুমিয়ে যেতেই খান সাহেব ওর ফোন টা নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করে দেয়,
!
আর সেখান থেকে বেগম সাহেবার ফোন নম্বর টা কালেক্ট করে নেয়,
!
তারপর গ্যালারি তে ঢুকে তার সুন্দর সুন্দর ছবি তে চুমু খায়,
!
হঠাৎ ইয়াদ উঠে ওনার কাছ থেকে ফোন টা কেড়ে নিয়ে বলে,
!
কারো ব্যক্তিগত জিনিসে হাত দিতে নেই সেটা কি জানোনা তুমি?
!
আসলে বাবা আমি তোর মায়ের ছবি দেখছিলাম?
!
অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি আছে তোর ওই ফোনো,
!
আমাকে শেয়ার ইটে এই ছবি গুলো দিবি বাবা?
!
ইয়াদ তখন খান সাহেবের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে কথা না বাড়িয়ে ছবি গুলো দিয়ে আস্তে করে শুয়ে পরে,
!
পরেরদিন সকালের নাস্তা না করেই মায়ের কাছে ফিরে আসে ইয়াদ,
!
বেগম সাহেবা তখন নিজের হাতেই ছেলেকে খাইয়ে দেয়,
তখন মিয়াদ এসে
মাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
মা আজকে আমরা বাসার পাশের শিশুপার্কে ছোটোখাটো আউটিং এ যাবে?
!
তাহলে তোমার হাটা হয়ে যাবে একঘেয়েমি টাও দূর হয়ে যাবে,
!
হ্যা মা মিয়াদ ঠিক বলেছে তুমি রাজি হয়ে যাও না প্লিজ?
!
আমি তো রান্নাবান্না করে রেখেছি,
সমস্যা নেই ননদিনী তুমি তোমার দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুরে আসো কেমন?
!
আচ্ছা ভাবি ঠিক আছে,
!
কি হলো মা কিছু বলবি?
!
বাবাই আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে? অনেকদিন তোমার সাথে কোথাও যাইনি তো?
!
আচ্ছা মা আমার সাথে পার্কে যাবি?
!
হ্য অবশ্যই যাবো কতদিন পার্কে যাইনি,
!
তাহলে যাও গিয়ে রেডি হও মা,
রেডি হয়ে ইয়ানা খান সাহেবের সাথে পার্কে বেড়াতে যায়,
তখন একটা বাচ্চা কে খেয়াল করে দেখে,
!
যে সে তার মা কে পেছনে থেকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছে,
আর তার মা তাকে আদর করছে,
!
এসব দেখে ইয়ানার মন খারাপ হয়ে যায় হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখে,
!
ইয়াদ,মিয়াদ,জিয়ানা,জিয়ান মিলে মা কে নিয়ে কানামাছি খেলছে,
!
আর মিয়াদ চোর হয়ে চোখে কাপড় বেধে সবাই কে খুঁজছে,
!
তখন খান সাহেবের নজর ও গিয়ে পরে বেগম সাহেবার ওপর,
!
তখন সে মনের ভুল ভেবে অন্যদিকে ফিরে আবার ওদের দিকে তাকিয়ে দেখে না সত্যি বেগম কে নিয়ে সবাই কানামাছি খেলছে,
!
খেলা শেষ হতেই বেগম সাহেবা হাত ধুয়ে সবাই কে নিজের হাতে ইলিশ পোলাও খাইয়ে দেয়,
!
আর তা দেখে ইয়ানা কেঁদে দেয়,
খান সাহেব মেয়ের চোখেজল দেখে বেশ হতবাক হয়ে যায়,
!
তখন মেয়ে তাকে বলে
বাবাই আমি বাসায় যাবো?
এখানে আমার একটু ও ভালো লাগছেনা,
!
খান সাহেব ও মেয়ের অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে নিয়ে বাসায় ফিরে যান

#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 32
!
খান সাহেব মেয়ের অবস্থা বুঝতে পেরে ওকে নিয়ে বাসায় ফিরে যান,
!
তারপর ওকে কাছে বসিয়ে জিজ্ঞেস করে,
!
তোর কি হয়েছে মা?
!
কিছুনা বাবাই?
!
অনেকদিন পর মাকে দেখে মন খারাপ করেছে মা?
!
না বাবাই কেন?
উনি কি আমার মা?
উনি তো ইয়াদ মিয়াদের মা,
!
বাবা এখন বাসায় ফিরে চল আমার শরীর টা বড্ড খারাপ লাগছে,
!
হ্যা মা চলো,
আজকে অনেকদিন পর এতো আনন্দ করলাম জানো ফুফি মা?
!
ফুফা তোমাকে তো আসতে দিতে চায় না তোমাকে ছাড়া থাকতে চায় না,
!
হয়েছে মা চুপ কর তোরা?
!
রাতে খান সাহেব ফেসবুকিং করছিলেন,
!
হঠাৎ একটা প্রোফাইল দেখে এক লাফে শোয়া থেকে উঠে দাঁড়ান,
!
যেন তিনি তার দুচোখ কে বিশ্বাস করতে পারছেননা,
!
কারন প্রোফাইল টা আর কারো না বেগম সাহেবার,
!
বহু কষ্টে নিজের রাগ টাকে সামলে বলে,
!
মোবাইল কিনেছ মানলাম,
ফেসবুকে একাউন্ট ও খুলেছ?
এতো বদলে গেছো তুমি?
!
তাই তখনি খান সাহেবের মাথায় বদবুদ্ধি খিলে যায়,
!
আর সে সাথেসাথে সে ফেইক আইডি খুলে বেগম কে ম্যাসেজ দিয়ে বলে,
!
হাহ সুন্দরি,
!
কি তিন বাচ্চার মা আমি আমাকে বলে কিনা সুন্দরি?
!
কি হয়েছে মা?
!
কোন পাগল জানি আমাকে ফেসবুকে ম্যাসেজ করে বলে হাই সুন্দরি,
!
ওহহ মা তুমি আজো এতো সুন্দর কেউ বলবে,
যে তুমি তিন বাচ্চার মা আবারো মা হতে চলেছ কেউ বলবেনা,
!
যেখানে তোদের বাবা আমাকে কখনো সুন্দরি বলেনি,
সেখানে উনি আমাকে সুন্দরি বলে কোন আক্কেলে?
!
তোমাকে ভালো লেগেছে তাই বলেছে মা,
আর এমনি তেও আমাদের মা অনেক কিউট,
!
যা ভাগ দুষ্টু কোথাকার,
!
হা হা হা,
!
এই বেগম টাও না কি করে ও?
কার সাথে প্রেম করে?
!
উফফ আমি ওনা হয়তো ম্যাসেজ টা ওর চোখে পড়েনি,
!
আরেক টা ম্যাসেজ দিয়ে দেখি,
!
এই যে সুন্দরি আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
!
ধুররর এই উটকো ঝামেলা আবার কোথা থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে?
!
কে জানে?
!
এই আপনার সমস্যা কি?
!
ইসসস ফাইনালি রিপ্লে দিয়েছে,
!
না মানে আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
!
লিসেন আমি বিবাহিত তিন বাচ্চার মা তো আপনি আমার বন্ধু হয়ে কি করবেন?
!
কি তুমি আমার বৌ হয়ে আমার সাথে ভাব লও?
কি দিনকাল পড়লো আমার?
!
আসলে বন্ধু হতে তো কোনো বয়স লাগেনা তাই না?
!
ও তাই তা আপনার নাম কি?
!
ধুররর এখন আবার নাম ফুটাইতে আসছে একবার বাগে পাই ফেসবুকের সখ জম্মের মতো ছুটাইয়া দিবো,
!
আমার নাম ইশাম,
!
ও আচ্ছা,
!
আপনি কি সিঙ্গেল?
!
বেটা বদমাইশ,
বললাম না আমার তিনটে বাচ্চা আছে?
আপনার চোখে ছানি পরেছে নাকি?
!
কি?
আমাকে বলে কিনা বদমাইশ?
আমি বদমাইশ?
আমাকে বকা দেয় এতো বড়ো সাহস ওর?
!
সরি,আপনি না অনেক সুন্দর,
!
ওমা তাই আপনি আমাকে চাক্ষুষ দেখেছন?
!
দেখেছি মানে?
বিয়ে করা বৌ,বিয়ে করলাম,
বাসর করলাম তোমার বাচ্চার বাবা হলাম আর বলে এখনো দেখিনি?
!
হাতের কাছে পাই তোমাকে কাঁচা গিলে খাবো হা হা হা
!
#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 33
!
হাতের কাছে একবার পাই তোমাকে কাঁচা গিলে খাবো হা হা হা,
!
না মানে একটা কথা বলি যাদি কিছু মনে না করেন?
!
ন্যাকা ষষ্ঠী?
বললেই তো হয়?
!
কি নিজের স্বামী কে সম্মান দিতে ভুলে গেছ তুমি?
!
এতো টা খারাপ তুমি?
নির্ঘাত যার সাথে প্রেম করো সে তোমার মাথা খেয়েছে?
!
ইয়ে মানে আপনার একটা পিক পাওয়া যাবে?
!
কেন পিক দিয়ে ধুয়েধুয়ে জল খাবেন?
!
ইসসস কথার কি শ্রী?
নিজের স্বামী কে কেউ এভাবে অপমান করে?
না মনে একটু দেখতাম আরকি?
!
প্রোফাইলে অনেক অনেক দেওয়া আছে সেখান থেকে দেখে নিন,
!
শাঁকচুন্নি জানি কোথাকার?
ঠিক আছে,
!
আপনি কি করেন?
!
শুয়ে শুয়ে ভাবছি যে তুমি কবে আমার কাছে আবারো ফিরে আসবে?
তুমি তো ভালো করেই জানো তোমাকে জড়িয়ে ধরে না শুলে রাতে ঘুম আসেনা আমার,
এই কয় মাস তো রাতে ঘুম হয়না আমার,
!
কি হলো?
!
কিছুনা শুয়ে আছে আমি,
!
ওকে গুডনাইট
!
কি এখনি ঘুমবেন?
!
জি বাই,
!
সেই কখন বলল ঘুমবে?
এখন এই রাত দুটোর সময় ফেসবুকে কি করে ও?
!
আমাকে কি ইচ্ছে করে এ্যাভয়েট করে?দেখি তো ম্যাসেজ করে,
!
হাই সুন্দরি?
!
ব্যাটা তো দেখি সেই লেভেলের গরু চোর এখনো বিরক্ত করে?যা করে করুক আমি আর রিপ্লে দিবো না,
!
পরেরদিন খান সাহেবের অফিসের কনফারেন্স শেষে লাঞ্চ করতে রেস্টুরেন্টে যায়,
!
সেখানে গিয়ে বেগম কে সাদা কামিজ লাল প্লাজো ও হিজাব পরা দেখে তার চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে যায়,
!
কারন খান সাহেব তাকে সাড়ি পড়া ছাড়া অন্য ড্রেসে আগে কখনো দেখেনি,
!
তার ওপরে বেগম সাহেবা কে এতো সুন্দর লাগছে যে সে তার নজর ফেরাতে পারছেন না,
!
হঠাৎ তখন মিয়াদের নজর তার পরে পড়তেই ইয়াদ কে খোচা মেরে বলে,
!
ভাই শকুন টা মায়ের দিকে বদ নজর দিচ্ছে তাই তাড়াতাড়ি চল,
!
ছেলের কথার মাথামুন্ডু বুঝতে না পেরে বেগম সাহেবা বলেন,
!
খাবারের পার্সেল এসে গেছে এবার তো চল বাবা
!
তারপর ওরা মাকে নিয়ে গাড়িতে করে চলে যায়,

!
আর খান সাহেবের খেয়াল হতেই বেগম বেগম বলে হাক পারতে শুরু হয়ে যায়,
কিন্তু সে ডাক তার কান পর্যন্ত পৌছায় না,
!
ইদানীং ইয়ানা লক্ষ করছে বাবাই রাতে ফেসবুকিং করে,
আর একাএকা হাসে
!
তাহলে কি সে কোনো মেয়ের প্রেমে পরে গেছে?
!
হায় আল্লাহ বাবার মাথা টা বোধ হয় গেছে?
এখন যদি সেই মেয়ে টা আমার বয়সী হয় তখন?
!
ইসসস আমার মানইজ্জত তো তাহলে খালে পরে যাবে,
!
এই বাবা ওনা বুড়ো কালে পাগল হয়ে গেছে সে যাই হোক নজর রাখতে হবে আর একটু বেখাপ্পায় পরলে চেপে ধরতে হবে,
!
হাই সুন্দরি?
!
ফাজলামি পাইছেন?
!
না কেন?
আপনি সুন্দর তাই বললাম আরকি?
আপনার স্বামী কেমন আছেন?
!
মারা গেছেন, চল্লিশা খাবেন?
তাহলে সাভারে আসেন,
!
কি আমি মরে গেছি?
আর আমাকেই আমার চল্লিশার দাওয়াত দেয়?
কপালে বুঝি এই লেখা ছিল,
!
ফাজিল বেটা বিটলামি শুরু করছে?
আমি যেন বুঝিনি সে
কে?
হা হা

#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 34
!
হা হা হা,
এই যে কি হলো?
বেচেঁ আছেন না মরে গেছেন?
!
না মানে আপনার হাজবেন্ড?
!
বললাম তো মারা গেছে কেন?
আপনার কষ্ট হচ্ছে আমার জন্যে?
!
বজ্জাত বেটি জলজ্যান্ত মানুষ টাকে মেরে ফেলে তার ভূতের সাথে চ্যাঁট করছ তুমি তাই না?
!
এই যে কোই গেলেন?
!
কোথাও না শুয়ে আছি,
তা আপনার স্বামী আর নেই তাহলে এখন আপনার খেয়াল কে রাখবে?
!
কে আবার আমার ছেলরা আপনি জানেন ওরা তো মা বলতে পাগল,
!
হ্যা তাই তো আমাকে ছাগল করে ছাড়ে,
তা ছেলেরা তো মাশাল্লা,
তা ওদের বিয়ে দিবেন কবে?
!
ওদের বাপের চল্লিশার পরে,
আসলে তার অনেক বিষয়সম্পত্তি আছে তো সে গুলো দখল নেওয়ার পরে,
!
কি?
এতদিন আমি দুধ কলা দিয়ে কালনাগিনী পুষেছি?
সে যাই হোক এই কালনাগিনী টাকেই ভালোবাসি আমি,
!
বোধ হয় চারশো চল্লিশ ভোল্টের ঝটকা খেয়ে মাথা ধরে বসে আছে ব্যাটা বিটকেল হা হা হা,
!
কি হলো?
!
কিছুনা?
স্বামী কে অনেক ভালোবাসেন তাই না?
!
বাসতাম এখন আর বাসিনা,
যে লোক বাড়িতে বৌ রেখে,অন্য মেয়ে নিয়ে মেতে থাকে,
!
আর তাকেই সব ব্যাপারে প্রায়োরিটি দেয় সেই লোক কে কখনওই ভালোবাসা যায় না বুঝলেন?
!
টেক্সট টা পরে খান সাহেবের চোখেজল চলে আসে,
!
আর তখনি ইয়ানা তাকে দেখে ফেলে ভাবে
!
নির্ঘাত বাবাইয়ের প্রেমিকার সাথে মনোমালিন্য হয়েছে,
তাই সে কাঁদছে,
!
তবে সে যাই হোক এই প্রেমিকা টা আবার কে?
তার পরিচয় কি?
!
আমাকে সবটা জানতে হবে?
মা তো আমাদের ছেড়ে চলেই গেছে,
!
তবে বাবাইয়ের কুকীর্তি মায়ের কানে গেলে বোধ হয় ডিভোর্স টাও ফাইনাল হয়ে যাবে?
!
আমি চাই না এমন কিছু হোক,
তাই কোনো ভুল পদক্ষেপ নেওয়ার আগে বাবাইকে এই পথ থেকে সরিয়ে আনতে হবে,
!
খান সাহেব তখন বিছানা ছেড়ে উঠে বাথরুমে যায়,
!
আর সে সুযোগেই ইয়ানা তার রুমে ঢুকে ফোন টা হাতে নিয়ে ম্যাসেঞ্জারে যায় এবং সাথেসাথে তার চোখ দুটো রসগোল্লা সাইজের হয়ে যায়,
!
খান সাহেব হঠাৎ বাথরুম থেকে বেড়িয়ে মেয়ের হাতে ফোন দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়,
!
তারপরো ফিক করে হেসে দিয়ে বলে,
!
মা তোর মায়ের সাথে আমার ফেক আইডি দিয়ে ফ্রেন্ডশিপ করেছি আমি?
!
হুমম তাই তো দেখছি মা ছাড়া আর কেউ নেই তোমার এই আইডি তে,
!
আমি তো ভেবেছি কিনা কি?
!
তা মাকে আইডি খুলে দিলে কবে?
আগে তো বলনি?
!
আমি তো খুলিনি তোর ভাইয়েরা খুলে দিছে নিউ ফোন ও কিনে দিয়েছে,
!
তো কি হয়েছে বাবাই,
আজকাল কার ভিখারি রাও স্মার্ট ফোন সাথে নিয়ে ঘেরেন,
!
সেখানে মা একটা ফোন কিনেছে সেটা আশ্চর্য কিছুনা?
!
আজকাল এটা সবারি নিত্যদিনের প্রয়োজন,
!
মা আমি খুব খারাপ তাই না?
!
তোমার মতো আমি ও খারাপ বাবাই,
বলে মেয়ে অন্যদিকে ফিরে চোখেরজল মুছতে মুছতে নিজের রুমে চলে যায়,
!
আর খান সাহেব তাদের বিয়ের সময়ে তোলা কিছু ছবি নিয়ে বসে যায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here