ত্যাগের সংসার – পর্ব ৩৫-৩৭

0
272

#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 35
!
খান সাহেব বিয়ের সময়ে তোলা কিছু ছবি নিয়ে বসে যায়,
!
তার ভালে কারেই মনে আছে বেগম সাহেবা কে বিয়ে করতে চায়নি তিনি,
!
কিন্তু মা তার হাতে কোরানশরিফ রেখে ওয়াদা করিয়ে ছিলেন বলে তাদের পছন্দের মেয়ে কে বিয়ে করতে বাধ্য হন তিনি,
!
প্রথমে তার বেগমের প্রতি অনিহা থাকলে ও সে বিয়ের মাএ চোদ্দ দিনের মাথায় বেগমের প্রতি দূরবল হয়ে পরে,
!
তাই সে তাকে নিয়ে সুখেস্বচ্ছন্দে সংসার শুরু করে,
!
কিন্তু কোথা ও বেগমের প্রতি অনিহা থাকার কারনে তাকে সব ব্যাপারে প্রায়োরিটি কম দিতে থাকে,
!
আর নিজের মতামত টা তার ওপরে চাপিয়ে দিতে থাকে,
!
তবে তাই বলে কখনো পরনারী কে নিজের জীবনে জরানোর কথা কখনওই ভাবেননি তিনি,
!
তবে ইশা তার বন্ধু ছিল বলে তার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণভাবে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে ছিলেন,
!
কিন্তু তাই বলে তার সংসারের সুখ শিকেয়তুলে যাবে এটা কখনওই ভাবেননি তিনি,
!
আজ বেগমের রাগ ও অভিমানের কারন বুঝতে পেরে তার নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে তাই সে নিঃশব্দে চোখেরজল ফেলছেন,
!
পরেরদিন সকালে ইয়ানার একটু জ্বর জ্বর হওয়ায় খান সাহেব একে ডক্টরের কাছে নিয়ে যায়,
!
ডক্টর ওর প্রপার ট্রিটমেন্ট করে কিছু টেস্ট করতে দেয় সেই টেস্ট গুলো করিয়ে রিপোর্ট নিয়ে ফেরার সময়ে,
!
তিনি দেখেন,
তার বেগম সাহেবা ছেলেদের হাত ধরে,
মা ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সিকদার মাহমুদ হোসেনের চেম্বার দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছেন,
!
এই দৃশ্য দেখে সাথেসাথে বেশ চমকে যান তিনি,
!
তখন অনেক প্রশ্ন যেগে ওঠে তার মনে,
!
হঠাৎ খান সাহেবের ফেনের শব্দে ঘোর কেটে যায়,
ফোন রিসিভ করতেই তার খাস ভৃত্য বলে,
!
সাহেব বেগম সাহেবা ছয় মাসের সন্তান সম্ভাবা,
আজি ইয়াদ ও মিয়াদ বাবা তাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে গেছে,
!
ভৃত্যের কথা গুলো শুনে সে “থ” হয়ে দাঁড়িয়ে যায় তিনি,
!
তখন ইয়ানা এসে তাকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যায়,
!
ডক্টর ওর রিপোর্ট চেক করে বলে,
!
তোমার নরমাল জ্বর হয়েছে
!
তবে এই সিজন টা ভালো না,
তাই সামলে থাকবে বলা যায় না ভাইরাল জ্বর ও হতে পারে,
!
তাই যে ঔষধ গুলো দিয়েছি ওগুলো খাবে আর খাওয়াদাওয়া ঠিক মতো করবে কেমন?
!
জ্বি ডক্টর,
!
বাসায় ফিরে খান সাহেব তার বেগম সাহেবার হঠাৎ করে অসুস্থ হওয়ার কারন বুঝতে পারেন,
!
তখন নিজেকে বড্ড অক্ষম বলে মনে হতে থাকে তার
)
#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 36
!
তখন নিজেকে বড্ড অক্ষম বলে মনে হয় তার,
!
সে এখন ভালো করেই বুঝতে পারছেন বেগমের তার প্রতি অনিহার কারন,
!
তা বলে এই এতো বড় খুশির খবর টা বেগম আমার থেকে লুকবে?
!
আমি ওতো ওর বাবা,
বেগম কি চায়না আমাদের ওনাগত সন্তান আমার ভালোবাসা পেয়ে বড় হোক?
!
ওকি সত্যি ধরে নিয়েছে যে আমাদের সম্পর্ক টা আর নেই?
!
অনেক ভাবনা চিন্তা করার পর রাত আট টায় খান সাহেব তার বেগম কে ফোন করেন,
!
বেগম ফোন রিসিভ করতেই খান সাহেব দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলেন,
!
কেমন আছো তুমি?
!
বেঁচে আছি মরে যাইনি,
!
এভাবে বলছ কেন?
তোমার শরীর টা ভালো আছে তো?
!
সেটা আপনার না জানলে ও চলবে,
!
বাড়িতে ফিরে আসো আর কতকাল সংসার টা এভাবে ফেলে রাখবে?
!
দেখুন এখন আর আমি আপনার সংসার করার দায় নিয়ে রাখিনি বুঝলেন?
!
তাই মনের মতো কাও কে খুজে নিয়ে তার সাথে সংসার করুন,
!
কারন আমি আর কখনো আপনার কাছে স্ত্রীর দাবি নিয়ে আসবো না,
!
আপনি তো বরাবরি সুন্দরি কাওকে নিজের বেগম হিসেবে পেতে চাইতেন,
তাহলে তেমন কাও কে খুঁজে নিন,
!
দেখুন একবার যখন ওই জাহান্নাম থেকে বেড়িয়ে এসেছি দ্বিতীয়বার সেখানে গিয়ে অনিহার আগুনে জ্বলে পুরে মরতে চাই না আমি,
!
দোয়া রইল ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ,
!
কথা গুলো শুনে খান সাহেবের চোখেজল চলে আসে,
আর সে চুপ করে বসে থাকে কারন সে বেগমের কথায় তার প্রতি ঘৃণার আভাস পেয়েছেন,
!
এই ছয় মাসে যে তাদের মাঝে পাহাড় সমান দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেটা সে হাড়েহাড়ে বুঝতে পেরেছেন,
!
তাই হতভম্ব হয়ে ভাবছেন যে,
!
আমার বোকামি গুলো আমার নজরে আগে কেন আসেনি?
!
কথায় তো আছে বাবাই দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝোনি তাহলে মায়ের মর্ম কি করে বুঝবো?
!
সত্যি বলতে আমি আজকাল মাকে অনেক মিস করি বাবাই,
!
তবে মা হয়তো ভেবে নিয়েছে যে সে আর কখনো আমাদের কাছে ফিরে আসবেনা,
!
ও আসবে আমি ওকে বাধ্য করবো এখানে ফিরে আসতে,
!
মা যে এখন আর তোমার বাধ্য নয় সেটা তুমি এখনো বুঝতে পারোনি বাবাই?
!
তুমি জানতে না তোমার মায়ের অসুস্থতার কথা?
!
হ্যা কদিন আগেই জেনেছি,
মায়ে অসুস্থতার কথা কারন আমি চাই না মায়ের কোল আলো করে কোনো মেয়ে বেবি আসুক,
!
আমি চাই না মা আমার থেকে বেশি আর কাওকে ভালোবাসুক,
!
তাই?
!
হ্যা তাই,
তোমার ভাবা উচিৎ ছিলো মায়ের বয়স হয়েছে,
!
মেয়ের কথা শুনে খান সাহেব হেসে দিয়ে বলেন,
!
আমি দোয়া করি যেন আমার আর একটা মেয়ে হয় হা হা হা,
!
ইয়ানা তখন রেগে গিয়ে বলে,
!
শকুনের অভিশাপে গরু মরে না দেখে নিও তুমি,
!
কি আমি শকুন?
!
জ্বি,
!
আচ্ছা ঠিক আছে হা হা হা,
এখন তুমি যাও আমি একটু,
!
প্রেম করবা মায়ের সাথে?
বলে দিবে তাকে তুমি ফেইক আইডি দিয়ে ডিস্টার্ব করো?
!
বাবা কে ব্লাকমিল করো?
!
না হুমকি দেই যতসব বুড়ো বয়সের ভীমরতি
হা হা হা,
আমি আসি তুমি যা পারো করো,
কিন্তু মেয়ে বেবি হবেনা আমি তোমাকে বলছি,
!
কেন মা তুই তুকতাক জানো নাকি?
!
তোমার মাথা আমার মুন্ডু জানি যতসব

#ত্যাগের_সংসার
লেখিকা সুরিয়া মিম
part : 37
!
তোমার মাথা আমার মুন্ডু জানি যতসব,
!
এই মেয়ে টাও না এতো রাগতে পারে?
ওর মতো রাগচটা মানুষ তো আমি ও নই,
!
সে যাই হোক আমার বেগম এখন অনলাইনে আছে তবে আমার কি?
!

সে আমি ম্যাসেজ না করলে সিন করে ও দেখেনা,
!
তবে ওর সাথে চ্যাট না করলে আমার ভালো ও লাগেনা,
!
ধুররর তাতে কি একটা ম্যাসেজ করেই দেখি,
!
হাই সুন্দরি,
!
এই তো শুরু হয়েছে বিটকেল ব্যাটার চুলকানি হা হা হা,
!
এতো লেকচার শোনার পরে ও শিক্ষা হয়নি ওর?
!
তবে তাতে আমার কি?
সিন ও করবোনা রিপ্লাই ও দিবো না দেখি কি করেন উনি?
!
ধুররর কি হয়েছে ওর রিপ্লাই দেয় না কেন?
ওকি কারো সাথে বিজি হয়ে গেছে?
না এটা আমার মনের ভুল?
!
হ্যা তাই হবে হয়তো ও বোধ হয় অন্য কাজে বিজি,
!
দেখি আবারো ম্যাসেজ করে কি বলে ও,
!
হাই সুন্দরি,
!
কি হয়েছে আপনার?
আপনি আমাকে মগেরমুল্লুক পেয়ে বসেছেন নাকি হুমম?
!
না আসলে এতক্ষণ আপনার সাড়াশব্দ পাচ্ছিলাম না তো তাই,
!
আসলে আমরা একটা ছেলে ফ্রেন্ড আছে ও অনেক কিউট ওর সাথেই জমিয়ে চ্যাটিং করছি আমি,
!
কি?
তলেতলে এতো?
তাহলে তো তোমার ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করে দেখতে হয়,
!
বেগম সাহেবার ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করতে গিয়ে খান সাহেব হতভম্ব হয়ে যায় কারন তার ফ্রেন্ডলিস্টে সব অল্পবয়সী ছেলে,
!
কি?
তুমি এতো দূর এগিয়ে গেছো?
ছেলের বয়সী ছেলেদের সাথে প্রেম করছ?
!
তুলে আনবো আমি তোমাকে,
তারপর তোমাকে যা করবো তুমি স্বপ্নে ভাবতে পারবেন,
!
তবে তোমার এতে দোষ কি?
আমার জন্যেই তো তুমি আমি চাই না তুমি কারো সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পরো,
!
আর আমি বেঁচে থাকতে তোমাকে কখনওই অন্য কারো সাথে জড়াতে দিবো না কখনওই না,
!
কি জানি কি ভাবছেন উনি?যা ভাবে ভাবুক তাতে আমার কি?
!
আপনি কি অসুস্থ?
!
হ্যা আমি ছয় মাসের সন্তান সম্ভাবা,
!
আপনার স্বামী এখবর জানে?
!
মোরে যাওয়া মানুষ জানবে কি করে হুমম?
!
সত্যি মরে গেছে সে?
!
হ্যা হয়তো গেছে?
!
হয়তো?
!
হ্যা তার সাথে আমি আমার সমস্ত সম্পর্কের পাট চুকিয়ে এসেছি,
!
যাই হোক সেটা আপনা জানার বিষয় না তাই এসব যেনে কোনো কাজ ও নেই আপনার গুডনাইট,
!
রাগের মাথায় আমি কি না কি বলেছি?
তুমি সেটা ধরে বসে আছো আজো?
!
ভুল টা আমারি যে আমি আমার ভুল টা সময় মতো বুঝতে পারিনি,
!
মিয়াদ কে মা কে হাই সুন্দরি বলছে বল তো?
!
কে আবার বাবাই?
!
এ্যা?
!
এ্যা না হ্যা,
কারন মায়ের ফেসবুক ফ্রেন্ডস হলো আমাদের ফ্রেন্ডসরা,
!
তারা তো মাকে “হাই সুন্দরি” বলতে যাবেনা তাই না?
!
তার ওপরে বাবার ফেইক আইডি তে তাদের রিসপেশনে তোলা হাতের ছবি দেওয়া হু হু হু হু,
!
ঠিক বলেছিস ভাই,
হা হা হা,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here