পতিতা বউ – পর্ব ১৬

0
325

#পতিতা_বউ

১৬তম পর্ব

আফিফ নুহা কে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো। মাঝপথে বাইক টি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলো। নুহার আজকে ঝামেলাই পড়ে বাসাই ফিরতে খুব লেইট হচ্ছিলো।

>>এটা কি হলো? বাইক থামালে কেনো?

>>আরেহ আমি থামাইনি নিজে নিজেই থেমে গিয়েছে

>>তো স্টার্ট দাওনা কেন

>>হবেনা স্টার্ট।

>>কেন স্টার্ট হবেনা। উফফফ এমনিতেই আমার লেইট হচ্ছে। দেখি স্টার্ট করো যেমনে পারো।

>>আরেহ বললাম তো হবেনা।

>>কেন হবেনা আজিব।

>>তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে না বসলে স্টার্ট হবেনা।

হঠাৎ এই কথা টি শুনে নুহা অনেকটা লজ্জা পেলো। আর আফিফ মুচকি মুচকি হাসছে।

>>আফিফ প্লিজ ফাজলামো করোনা। মামুণি খুব বকবে। প্লিজ।

>>উঁহু তুমি জড়িয়ে না ধরা অব্ধি বাইক এখান থেকে এক চুল ও নড়বেনা।

>>বাড়াবাড়ি হচ্ছে কিন্তু। প্লিজ চলোনা আমি বকুনি খাবো তো।

>>এটা তুমিই ডিসাইড করো জড়িয়ে ধরবা নাকি বকুনি খাবা।

নুহা অগত্যা বাধ্য হয়ে আফিফের পেট জড়িয়ে ধরলো। আফিফ খুশিতে গদগদ করতে করতে বলছে,

>>আরো ভালো করে ধরো।

নুহা এবার বিরক্ত হয়ে একদম শক্ত করে চেপে ধরলো।

>>হ্যা এবার ঠিক আছে। লাভ ইউ বউ।

আফিফ বাইক স্টার্ট দিলো। বিকেল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যার কাছাকাছি। আফিফ নুহাকে মোড়ে নামিয়ে দিলো।

>>একেবারে ঘর পর্যন্ত নামিয়ে দেই আসো।

>>না না মামুণি দেখলে কপালে খারাপি আছে। আমার তো প্রেম ভালোবাসার অনুমতি নেই। যদি জানে করছি তবে অনেক সমস্যায় পড়বো।

>>আচ্ছা তা নাহয় বুঝলাম। তাহলে এক কাজ করা যায় আমি রাতে আসবো।

>>মানে?

>>মানে পড়শুর মত।

নুহা এই কথাটি তে একটু বিব্রত বোধ করলো। নিমিষেই তার মুখ কালো হয়ে গেলো। আফিফ নুহার এক হাত নিজের হাতে নিয়ে বললো,

>>আমি জানি তুমি কি ভাবছো তবে আই প্রমিজ নুহা আজকের পর থেকে তোমার আর কোনো অন্য পুরুষের সাথে রাত কাটাতে হবেনা। তোমাকে আর ধর্ষিত হতে হবেনা। আমি সেই ব্যবস্থা করে দেবো। আর তুমি তো সারাদিনই চোখের সামনে থাকবাই। কিন্তু তোমাকে ছাড়া আমার এক মূহুর্ত ও কাটে না। তাই রাতে আসবো আমি রোজ। গল্প গুজব করবো তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাবো এইটুকুই। আর বাদ বাকি যা হওয়ার সেটা বিয়ের পরে উশুল করবো আমি।

>>থ্যাংক ইউ আফিফ। আমার লাইফে আসার জন্য আমাকে এতটা ভালোবাসার জন্য।

>>উঁহু থ্যাংকস টু ইউ। আমাকে আজকে জড়িয়ে ধরার জন্য।

>>উফফ খালি ফাজলামো। আমি গেলাম বাই। আল্লাহ হাফেজ। আর সাবধানে যাবা।

>>ওকে বাই লাভ টেক কেয়ার।

নুহা ঘরে ঢুকতেই দেখলো শবনম বেগম ঘুমিয়ে আছে। সে চুপচাপ উপরে যেতে নিলেই শবনম বেগম বলে উঠলেন,

>>এত দেরী হয়লো কেন আইজকা?

>>ওই.. যে মামু..ণি

>>কি? কাঁপতাসোস কেন?কি হয়লো? দেরী কইরা ফিরলি কেন আইজকা?

>>আরেহ তুমি ধমকাও কেনো বলতে দাও না। নবীন বরণ এর একটা অনুষ্ঠান হবে সেটার কিছু টুকটাক কাজ ছিলো এইজন্যই দেরী হলো।

>>আচ্ছা তা নাহয় বুঝলাম। তুই সকালে খালি পেটে গেসিলি কেন? নাস্তা খাস নাই কেন?

>>আসলে দেরী হয়ে গেছিলো তো তাই।

>>দেখ নুহামা খাওন-দাওন নিয়া অবহেলা একদম করবিনা কইলাম। তুই পড়ালেখা করস কাম করস তোর কত ধকল যাই জানোস তুই? তার উপর কালকে আছিলো জ্বর। একটু নিজের খেয়াল তো রাখ।

নুহা এক ধ্যানে শবনম বেগমের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের কৌণে পানি। হঠাৎ সে শবনম বেগম কে জড়িয়ে ধরলো। শবনম বেগম বুঝতে পারলেন কেন এমন করেছে সে।

>>মামুণি আমাকে বুঝি এত্ত ভালোবাসো তুমি? এত আদর-যত্ন করো। আমার মায়ের চেয়েও বেশি তুমি। আমার খুব ভাগ্য তোমাকে পেয়েছি।

>>তুই তো আমারই মাইয়া। আমার কলিজার টুকরা। তোর খেয়াল আমি না রাখলে কে রাখবো ক তো? এখন যা ছাড় আমাকে। গোসল কইরা আয়। আমি খাওন দিতাছি। নিজের হাতে খাওয়াইয়া দিমু যা।

নুহা চোখ মুছে নিয়ে শবনম বেগমের গালে একটি চুমু দিয়ে চলে গেলো।।

চলবে….

#Razia_Binte_SuLtan

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here