তোমাতে বিলীন – পর্ব 19

0
735

#তোমাতে বিলীন🍁
#লেখিকা—আমায়া নাফশিয়াত ☘
#পর্ব—|| ১৯ ||
আশিয়ান বিছানায় বসে ফোন চেক করছে এমনসময় ঊদিতা রুমে এলো।আশিয়ান তাকালো ঊদিতার দিকে।ঊদিতা এসে আশিয়ানকে বললো ফ্রেশ হয়ে আসতে।আশিয়ান শুনলো না গ্যাঁট মেরে বসে রইলো।ঊদিতা ভ্রু কুচকে তাকালো আশিয়ানের দিকে।কিছু একটা ভেবে আবারও রুমের বাইরে গেলো সে।আশিয়ান ঊদিতার যাওয়ার পানে তাকিয়ে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো।প্রায় মিনিট দশেক পর আবারও রুমে ফিরে এলো ঊদিতা বড় এক মগ চা হাতে নিয়ে।সেই ভেষজ সুগন্ধি চা টা আবারও তৈরি করেছে ঊদিতা আশিয়ানের জন্য।
আশিয়ানের কাছে এসে ঊদিতা চায়ের মগটা বাড়িয়ে দিলো।আশিয়ান সুগন্ধি চা টা পেয়ে খুশিমনে হাত বাড়িয়ে নিয়ে আয়েশ করে খেতে লাগলো।ঊদিতা আশিয়ানের দিকে একপলক তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো;
ঊদিতা:-আপনার কী সবসময় এমন মাথা ব্যথা করে?
আশিয়ান চা পান করতে করতে জবাব দিলো;
আশিয়ান:-হুম,,,
ঊদিতা:-এটা কী বলেন!ভালো ডাক্তার দেখান নি?
আশিয়ান:-দেখিয়েছি তো!ডক্টর অনেক ঔষধ প্রেসক্রাইব করেছেন।মাইগ্রেনের প্রবলেম আছে আমার।এজন্য প্রায়সময়ই অনেক মাথাব্যথা করে।আর গরমের দিনে বেশি অসুবিধা হয়।অনেক সময় ব্যথা সহ্য করতে পারি না আমি।খুব কষ্ট লাগে।যন্ত্রণায় মনে হয় মাথাটা যেন ফেটে যাবে।
আশিয়ানের কথা শুনে ঊদিতার ভীষণ খারাপ লাগলো।কেন জানি আশিয়ানের কষ্ট সহ্য করতে পারে না।এই দুদিনে অন্তত এটা বুঝতে পেরেছে সে।এভাবেই হয়তো স্বামীর জন্য পবিত্র ভালোবাসা সৃষ্টি হয় অন্তর থেকে।যা ঊদিতার ক্ষেত্রেও হয়েছে।ঊদিতা আশিয়ানের দিকে আবারও তাকিয়ে বললো;
ঊদিতা:-আচ্ছা আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন,,ডাইনিং রুমে সবাই মিলে সন্ধ্যার নাশতা করবো।
আশিয়ান:-আসছি।
চা খাওয়া শেষে মগ হাতে ধরিয়ে দিতেই ঊদিতা চলে গেল।আশিয়ান ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এলো।তারপর ডাইনিং রুমে চলে এলো সবার সাথে সন্ধ্যার নাশতা করতে।ডাইনিং রুমে ঊদিতার পরিবারের সবাই বসে আছেন।এতক্ষণ আশিয়ানের আসার অপেক্ষা করছিলো সবাই।আশিয়ান সবার সাথে হাসিমুখে কুশলাদি বিনিময়ের পরে চেয়ার টেনে বসে পড়ে নাশতা করতে।হরেক রকমের নাশতা তৈরি করা হয়েছে আশিয়ানের জন্য।পরিবারের ছোট জামাই বলে কথা।আপ্যায়নে কোনো ত্রুটি রাখেন নি ওনারা।মিসেস আনিতা ও উসামা ব্যস্ত হয়ে আশিয়ানের পাতে নাশতা বেড়ে দিতে লাগলেন।
আশিয়ান হাসিমুখে সবার সাথে কথা বলতে লাগলো।ঊদিতার মামাতো ও খালাতো ভাইবোনেরাও আছে এখানে।যার জন্য ঊদিতা ওড়নাকে নেকাবের মতো করে মুখ ঢেকে রেখেছে।আশিয়ান ঊদিতার বাবা ভাই ও দুলাভাইয়ের সাথে ব্যবসায় নিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা বলতে লাগলো।নাশতা করা শেষে ড্রয়িং রুমে বসে একসাথে সবাই আড্ডা দিচ্ছে।ঊদিতা এসব আজাইরা গল্প করা বাদ দিয়ে রাতের ডিনারের বন্দোবস্ত করতে লাগলো।তার ছাদবাগানে লাউয়ের মাচায় দুটো লাউ বড় হয়েছে,, আশিয়ানের জন্য সেগুলো কেটে নিয়ে এলো সে।সাথে লালশাক,টমেটো আর পুইশাকও আনলো।
রাতের জন্য আজ সে টমেটো আর রুই মাছের টক,চিংড়ি দিয়ে লালশাক,ছোট মাছের তরকারী,রুই মাছ ও গলদা চিংড়ি মাছ ভূনা,ডিম দিয়ে পুইশাক,মাছের মাথা দিয়ে লাউ রান্না করবে।সাথে আছে গরুর মাংসের কালাভূনা,কয়েক পদের সবজি,সালাদ,পাতলা করে ডাল ও সুগন্ধি মিনিকেট চালের সাদা ভাত,,,ব্যস।আজ এই পর্যন্তই মেনু।ঊদিতা ব্যস্ত রান্না করতে মিসেস আনিতা ও উসামা হেল্প করছে তাকে।ঊষা বাচ্চাদের খেয়াল রাখছে।দুইটাই যে পরিমাণ দুষ্টু।চোখে চোখে না রাখলে সারা ঘরকে লন্ডভন্ড করে ফেলবে মুহূর্তেই।
আশিয়ানকে তার আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়ার্ল্ডের সহকারী মির্জা ফোন দিয়ে বললো ইমারজেন্সি আজ গোডাউনে তাকে যেতে হবে।আশিয়ান তার পার্সোনাল সেক্রেটারি মাহবুবকে ফোন করে বললো তার গাড়ি নিয়ে আসতে।তারপর ঊদিতাকে বলে বাসা থেকে বেরিয়ে এলো সে।মাহবুব প্রায় মিনিট বিশেক পর গাড়ি নিয়ে এলো।আশিয়ানের হাতে গাড়ি ও চাবি গছিয়ে দিয়ে সে আবারও তার কাজে চলে গেল।আর আশিয়ান গেল তার গন্তব্য অনুযায়ী সেই গোডাউনে।
ঊদিতা রান্না সেড়ে ঊষার রুমে গিয়ে বসেছিলো।অতঃপর তার ফাজিল কাজিনরা এসে তাকে ঘিরে ধরে বসে বাসররাতে কী কী করেছে তাকে আশিয়ান তা নিয়ে তাকে খোঁচাতে লাগলো।তাদের পিন্চ মারা কথা শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে ঊদিতা।তাদেরকে কিছুই বলা যাচ্ছে না।অসভ্য অসভ্য কথা শুনে ঊদিতার কান ঝালাপালা।সব কাজিনগুলো তার থেকে বয়সে বড় আর নয়তো সমবয়সী।কেমনে যে এরা এত পাকা পাকা কথা বলছে আল্লাহ মালুম!ঊদিতার তো অবস্থা এমন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি টাইপ।এত লজ্জা সে জীবনেও পায় নি।এখান থেকে ওঠে বেরিয়েও আসতে পারছে না সে।এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে তাকে উদ্ধার করলো উসামা।ঊদিতা যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো।
নিজের রুমে এসে বসলো ঊদিতা।লজ্জায় গাল দুটো ব্লাশিং হয়ে আছে তার।আশিয়ানের আদর করার কথা মনে পড়ে গেল ঊদিতার।হোক না সেটা সামান্য।কাজিনদের সে বলতে পারে নি যে আশিয়ান তো তাকে একটু হলেও স্পর্শ করেছে।কী করে বলবে!স্বামী স্ত্রীর এসব কথা তো কাউকে বলা যায় না।এসব বলা যে গোনাহ।
আশিয়ানের কাজ সেড়ে ফিরতে ফিরতে রাত প্রায় সাড়ে দশটা বেজে গেছে।এসব কাজ থেকে চাইলেও সকাল সকাল বাসায় ফেরা যায় না।আর আশিয়ান তো মাফিয়া গ্রুপের হেড।আজও একজন পাপী দুনিয়া থেকে বিদায় নিলো।সে একজন পুলিশ হয়েও পাপকাজের সাথে জড়িত ছিল।বেশ কয়েকটা মেয়ের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের ব্যবহার করেছে সে।ক্যাসিনো ব্যবসায়ের সাথেও সে জড়িত ছিলো।কীভাবে যে সে পুলিশ হয়েছে আল্লাহ জানেন।আজ তার সব জারিজুরি খতম।ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেশি উপরে উঠে গেছিলো সে।তাই আজ একদম নিচে নামিয়ে দিলো তাকে আশিয়ান।
বাসার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজাতেই ঊদিতা এসে দরজা খুলে দিলো।যেন আশিয়ানের অপেক্ষাতেই ছিলো সে।আশিয়ান কিছু না বলে বেশ কয়েকটা ব্যাগ ঊদিতার হাতে ধরিয়ে দিয়ে রুমে চলে যায়।ঘেমে গেছে সে গরমের কারণে।আবারও শাওয়ার না নিলে চলছে না।রুমে ঢুকে সোজা গোসল করতে চলে গেল সে।ঊদিতা ব্যাগ খুলে দেখলো অনেক গুলো কাটা মাছ মাংসের প্যাকেট সাথে ফ্রেশ শাক সবজিও আছে।আসার সময় বাজার করে নিয়ে এসেছে সে সুপারশপ থেকে।
রান্নাঘরে মায়ের হাতে ব্যাগগুলো দিয়ে আশিয়ানের পিছন পিছন ঊদিতাও রুমে এলো।লোকটা গরমে যেন পাগল হয়ে গেছে।টাওয়েল টা পর্যন্ত সাথে নেয় নি।ঊদিতা টাওয়েল হাতে নিয়ে ওয়াশরুমের দরজায় নক করে বললো টাওয়েল নিতে।আশিয়ান ওয়াশরুমের দরজা খুলে সামান্য ফাঁক করে টাওয়েল নিয়ে আবারও দরজা লাগিয়ে ফেললো।ঊদিতা ডাইনিং টেবিলে খাবার সাজানো হয়েছে কিনা দেখতে চলে গেল।
দীর্ঘক্ষণ ধরে গোসল শেষ করে ঠান্ডা হয়ে রুমে আসে আশিয়ান।আহ,, এখন শান্তি লাগছে।বরাবরের মতো এখনও মাথা মুছে নি সে।এটা তার বদভ্যাস বলা যায়।ঊদিতা রুমে এসে আশিয়ানকে দেখে লজ্জা পেয়ে গেল।আশিয়ান শুধু টাওয়েল কোমড়ে প্যাচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।খালি লোমশ বুকে পানি লেগে মুক্তোর মতো চিকচিক করছে।চুল থেকে মুখের থুতনি বেয়ে পানি পড়ছে আশিয়ানের।তাকে দেখতে খুবই স্নিগ্ধ লাগছে এখন।ঊদিতা তো মনে মনে টাসকি খেয়ে গেছে তাকে দেখে।ছেলে মানুষ যদি এত সুন্দর হয় মেয়েরা তো পিছে লাইন দিয়ে পড়ে থাকবেই।
ঊদিতা একপা একপা করে এগিয়ে গেলো আশিয়ানের সামনে।বিছানা থেকে আরেকটা টাওয়েল নিয়ে আশিয়ানের চুল মুছে দেয়ার জন্য পা উচু করে আশিয়ানের মাথা নাগাল পাওয়ার বৃথা চেষ্টা করলো।আশিয়ান অনেক লম্বা।তার নাগাল পাওয়া ঊদিতার জন্য দুঃসাধ্য বলা চলে।ঊদিতার বৃথা চেষ্টা দেখে আশিয়ান মনে মনে হেসে তার কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের আরও কাছে টেনে নিয়ে উচুতে তুললো।ঊদিতার মনে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেল।লজ্জায় মাথা নিচু করে আশিয়ানের মাথার ভেজা চুলগুলো যত্ন সহকারে মুছে দিতে লাগলো সে।মাথা মোছা শেষ হতেই আশিয়ান ঊদিতাকে নিচে নামিয়ে দিলো।ঊদিতা লজ্জায় লাল হয়ে আশিয়ানকে বললো ডিনার করতে ডাইনিং রুমে আসতে।আশিয়ান মাথা নেড়ে সায় জানাতেই ঊদিতা রুম থেকে প্রায় পালিয়ে যায়।আশিয়ান ঊদিতার যাওয়ার পানে তাকিয়ে মৃদু হেসে উঠে।
জামাকাপড় পড়ে আশিয়ান সবার সাথে ডাইনিং রুমে চেয়ার টেনে বসে পড়ে রাতের খাবার খেতে।ঊদিতা নিজহাতে আশিয়ানকে খাবার বেড়ে দিলো।আশিয়ান ঊদিতাকে খেতে বসতে বললো না তার কারণ টেবিলে ঊদিতার মামাতো আর খালাতো ভাইয়েরা আছে।আর ওরা অনেক এডাল্ট ও।নিজের বউয়ের পর্দা নষ্ট করতে চায় না সে।সাথে এটাও চায় না যে তার সুন্দরী বউকে সে ছাড়া অন্য কেউ দেখুক।
ডিনার সেড়ে আরও একদফা আড্ডা দিয়ে ঊদিতার রুমে ফিরে এলো আশিয়ান।ঊদিতা আশিয়ানের আগেই এসে নামাজ আদায় করে ওড়না খুলে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে।আশিয়ান রুমে প্রবেশ করতেই ঊদিতাকে এ রূপে দেখলো।আশিয়ান এগিয়ে গিয়ে বিছানার ওপর বসে ঊদিতার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।আশিয়ানের এমন করে তাকানোতে ঊদিতা লজ্জায় পড়ে চিরুনি রেখে চুলগুলো খোঁপা করে ফেললো।খোঁপা করতেই আশিয়ানের চোখ ঊদিতার বিউটিবোনস ওয়ালা গলার ওপর পড়ে।বিউটিবোনসের মধ্যখানে কালো কুচকুচে একটা তিল স্পষ্ট জ্বলজ্বল করছে।ঊদিতা ছোট একটা ওড়না গলায় প্যাঁচিয়ে আশিয়ানকে জিজ্ঞেস করলো;
ঊদিতা:-মায়ের সাথে কথা হয়েছে আপনার?
আশিয়ান ঊদিতার দিকে তাকিয়েই জবাব দিলো;
আশিয়ান:-হুম হয়েছে।
ঊদিতা:-ওহহ,,
ঊদিতা পড়ার টেবিল গোছাতে লাগলো একমনে।আশিয়ান খেয়াল করে দেখলো পড়ার টেবিলে শুধু ক্লাস নাইন টেনের বই আর গাইড বই রাখা।অজান্তেই ভ্রু জোড়া কুঁচকে গেলো তার।জিজ্ঞেস করলো;
আশিয়ান:-তোমার পড়ার টেবিলে নাইন টেনের বই কীসের জন্য বুঝলাম না?তুমি কী ক্লাস নাইন-টেনে পড়ো?
ঊদিতা:-এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি।রেজাল্টের পর আর এই বই রাখবো না এখানে।
আশিয়ান হিসাব মিলাতে ব্যস্ত হয়ে গেল।ঊদিতার তো বয়স আঠারো তাহলে সে এসএসসি পরীক্ষা দিলো কেন?তার তো এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা!ফেইলার নয় তো?আশিয়ান আবারও জিজ্ঞেস করলো;
আশিয়ান:-বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপারে দেখলাম তোমার বয়স আঠারো বছর তাহলে তুমি এবার এসএসসি পরীক্ষা কীভাবে দিলে?তোমার তো এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিলো?
ঊদিতা একটু অবাক হয়ে বললো;
ঊদিতা:-কী বলেন?আমার বয়স আঠারো হতে যাবে কোন দুঃখে?আমি মাত্র ষোলো বছরে পদার্পণ করলাম!আর বয়স অনুযায়ী আমার পড়াশোনাও তো ঠিক আছে?কেন আপনি আমার বয়স জানেন না?
আশিয়ান যারপরনাই বিস্মিত হলো ঊদিতার কথা শুনে।সে বিশ্বাসই করতে পারছে না যে ঊদিতার বয়স মাত্র ষোলো বছর।এটা কীভাবে সম্ভব?এত পিচ্চি একটা মেয়ের সাথে তার বিয়ে হয়েছে সে তা ভাবতেই পারছে না।আগে জানলে তো জীবনেও এই বিয়ে করতো না।ঊদিতা আশিয়ানের থেকে গুনে গুনে দশ বছরের ছোট।কিন্তু যে হারে পর্দা করে তাকে দেখে তো বোঝার কুদরতই নেই যে সে এত পিচ্চি।আশিয়ান বিস্ময় চেপে গম্ভীর কন্ঠে বললো;
আশিয়ান:-তুমি জানো আমি তোমার থেকে গুনে গুনে দশ বছরের বড়?
ঊদিতা:-হ্যা জানি!তো?(ভাবলেশহীন হয়ে)
আশিয়ান:-তো মানে?এখন কী তোমার বিয়ের বয়স হয়েছে যে তুমি আমার মতো বয়স্ক একটা ছেলেকে বিয়ে করেছো?
ঊদিতা:-কই আমার তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না!আর আপনি বয়স্ক কে বললো?আপনার বয়স তো পারফেক্টই আছে!আমার মনে হচ্ছে আমার মতো বয়সে ছোট মেয়ে বিয়ে করায় আপনার প্রবলেম হচ্ছে?তাই না?
আশিয়ান কিছুটা থতমত খেয়ে গেল ঊদিতার কথা শুনে।আমতা আমতা করে বললো;
আশিয়ান:-ঠিক তা নয় আসলে এখন তো তোমার পড়ালেখা করার বয়স।বিয়ের বয়স তো তোমার হয়নি এখনও।এখন আমি তো চাইলেও তোমার সাথে স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবো না।কারণ তুমি এতটাই অবুঝ যে রুমডেট কী তাই জানো না।আর আমি এমন ছেলে নই যে তোমায় ফোর্স করবো এজন্য।কিন্তু তারপরও প্রত্যেকটা প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরই আলাদা চাহিদা রয়েছে যা তার স্ত্রীকে পূরণ করতে হয়।তো আমি কী চাইলেই তুমি আমার চাহিদা পূরণ করতে পারবে বলো?
ঊদিতা:-আমি এতটাই ইমমেচুয়্যার নই।বুঝিয়ে বললে আমি সব বুঝি।জানি না আপনি কোন চাহিদার কথা বলছেন কিন্তু একজন স্ত্রী হিসেবে আপনার সকল কথা শোনা আমার দায়িত্ব।আপনার প্রত্যেকটা আদেশ আমি পালনের চেষ্টা করবো।মনে রাখবেন আমার থেকে আরও কম বয়সী মেয়েদেরও বিয়ে হচ্ছে এবং তারা খুব সুন্দরভাবেই সংসার করছে।তাহলে আমি কেন পারবো না?
আশিয়ান:-মানলাম।কিন্তু এটা জেনে রাখো আমি তোমার ওপর যদি কখনো কন্ট্রোললেস হয়ে যাই তাহলে কিন্তু দোষ দিতে পারবে না।আর মনে হয় না বেশিদিন তোমার থেকে আমি দূরে থাকতে পারবো।আর হ্যা আমার হুটহাট কাছে আসা নিয়ে কিছু বলতে পারবে না।তোমার সাথে আমার যখন যা করতে মন চাইবে তখন তাই করবো।
ঊদিতার অন্তর কেঁপে ওঠে আশিয়ানের কথা শুনে।কিছুটা হলেও বুঝতে পারছে সে আশিয়ানের কথার মর্মার্থ। কিছু বললো না ঊদিতা আশিয়ানের কথার বিপরীতে।শুধু মাথা হালকা নেড়ে সায় জানালো।
আশিয়ান বিছানায় শুয়ে পড়ে।ঊদিতাও রুমের দরজা লাগিয়ে লাইট নিভিয়ে বিছানায় আশিয়ানের পাশে এসে শোয়।ওড়না খুলে বালিশের মাঝখানে রাখলো সে।আশিয়ানের বিছানা থেকে ঊদিতার বিছানা অনেক ছোট।শুধু দুজনেরই জায়গা হবে বিছানায়।
আশিয়ান ঊদিতার কোমড় ধরে নিজের একদম কাছে টেনে আনলো।ঊদিতার শ্বাস আটকে গেল যেন আশিয়ানের এমন হেঁচকা টানে।আশিয়ান ঊদিতার কানের লতিতে ঠোঁট বুলালো।আশিয়ানের স্পর্শে ঊদিতা কেঁপে ওঠে।আশিয়ান ঊদিতার বিউটিবোনসে এবার ঠোঁট বুলিয়ে চুমু খেতে লাগলো।আশিয়ানের চুল আঁকড়ে ধরে ঊদিতা।জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে সে।এটা কেমন অনুভূতি?আশিয়ান কাছে আসলে সে এই অদ্ভুত ধরনের অনুভূতির স্বীকার হয় কেন?বুঝতে পারে না ঊদিতা।
আশিয়ান ঊদিতাকে তার গলায় আদর করতে ব্যস্ত।একটা সময় আশিয়ান আর গভীরে না গিয়ে ঊদিতার বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে।ঊদিতা যেন হাঁপ ছাড়লো।উফফ,,আর একটু দেরী হলে ঊদিতা আজকেই শেষ হয়ে যেত।আশিয়ানের স্পর্শে তার মনে কেমন জানি একপ্রকার মাদকতা কাজ করে।আশিয়ান চোখ বন্ধ করে ঊদিতাকে সাপের মতো প্যাঁচিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখলো।ঊদিতা আশিয়ানের মাথায় আলতো ভাবে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।আশিয়ান পরম আবেশে ঘুমের অতলে হারিয়ে যেতে লাগলো।যেন ঊদিতার বুকে তার সমস্ত সুখ লুকিয়ে আছে।আশিয়ান ঘুমিয়ে গেলে ঊদিতা তার মাথায় চুমু খেয়ে নিজেও ঘুমানোর চেষ্টা করলো।একটাসময় সেও ঘুমিয়ে পড়লাে।
🌻🌻🌻
পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে ঊদিতা তার নিত্যদিনকার কাজে মনোনিবেশ করে।আশিয়ান ঘুমে মগ্ন।ঊদিতা তাকে জাগালো না।ঘুমাক মানুষটা একটু শান্তিতে।সে রান্না ঘরে গিয়ে সকালের নাশতা তৈরি করতে লাগে।
সকাল ৯ টা বাজতেই আশিয়ানের ঘুম ভেঙে যায়।সে কখনো এত লেটে ঘুম থেকে ওঠে না।শ্বশুর বাড়িতে আছে বলে আজ তার রুলসের হেরফের হলো।নয়তো কখনোই এত লেটে উঠার বান্দা সে নয়।ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে সোজা ডাইনিংয়ে চলে গেল সে।গিয়ে দেখলো বেশ কয়েকজন সকালের নাশতা করছে বসে বসে।তাদের সাথে সেও বসে পড়লো।ঊদিতা এগিয়ে এসে তার প্লেটে নাশতা বেড়ে দিয়ে আবারও রান্নাঘরে চলে গেলো।
আশিয়ান নাশতা করে ড্রয়িং রুমে এসে বসে ঊদিতার কাজিনদের সঙ্গে কথা বলতে লাগলো।ঊদিতার ছ্যাছড়া একটা মেয়ে কাজিন আছে নাম লিনা।সে আশিয়ানের সাথে এত হেসে হেসে কথা বলছে যে তাকে দেখে যে কেউ বলবে যে আশিয়ান মনে হয় তারই বয়ফ্রেন্ড।ঊদিতা শান্ত দৃষ্টিতে একবার লিনাকে দেখে আশিয়ানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।আশিয়ান মুখ তুলে ঊদিতাকে দেখলো একবার।লিনা পিন্চ মেরে গা জ্বালানো হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো;
লিনা:-কীরে এভাবে ওনার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লি কেন?হাসবেন্ডকে ছাড়া বুঝি একটা মুহূর্তও কাটে না তোর তাই না?বিয়ে হতে না হতেই স্বামীকে চোখে চোখে রাখা শিখে গেছিস দেখা যায়!
ঊদিতা:-সত্যি বলেছো!আজ যদি তুমি বিয়ে করে নিতে তাহলে ঠিকই বুঝতে পারতে স্বামীকে ছাড়া কেন একমুহূর্ত একা থাকা যায় না।সে যাইহোক আমি ওনাকে বলবো তোমার জন্য খুব শীঘ্রই একটা ছেলে খুঁজে আনতে।সময়ের তালে তালে বয়স তো বাড়ছে তোমার,, পরে দেখা যাবে তোমার আর বিয়েই হলো না!তখন কী হবে?আর তোমার বিয়ের পর আমিও দেখবো স্বামীকে চোখে চোখে রাখাে কী না!
লিনা অবাক হয়ে গেছে ঊদিতার কথা শুনে।
লিনা:-কীরে ঊদিতা?তুই দেখি ভালো কথা শিখে গেছিস?কীরে বিয়ে হতে না হতেই এত পরিবর্তন?হাউ?
ঊদিতা:-সময়ের সাথে মানুষ পাল্টায়।আমিও পাল্টাচ্ছি।এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।যাকগে, আপনি আমার সাথে আসুন।ছাদে যাবো।
আশিয়ান মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দিয়ে বসা থেকে ওঠে পড়লো।ঊদিতা লিনার দিকে তাকিয়ে একবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি হেনে গটগট করে ছাদের দিকে চলে গেল।আশিয়ানও ঊদিতার পিছন পিছন যাচ্ছে।
ছাদে এসে ঊদিতা ড্রাম থেকে পানি নিয়ে তার শখের গাছগুলোতে পানি ছিটিয়ে দিতে লাগলো একমনে।আশিয়ান সব দেখছে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে।ছাদটা এত বড় নয় আবার এত ছোটও নয়।আশেপাশে বড় বড় রংছটা বিল্ডিং দেখা যাচ্ছে।তবে ছাদের পরিবেশটা ভীষণ সুন্দর।ঊদিতার লাগানো গাছ গুলো দেখছে আশিয়ান।ছাদের এককোণে অনেকগুলো আচারের বয়াম রাখা।এগুলো রোদে শুকাতে দেয়া হয়েছে।
কয়েকটা বোম্বে মরিচের গাছের ওপর নজর পড়লো আশিয়ানের।গাছে অনেক মরিচ ধরেছে।ঝাল তার ভীষণ ফেভারিট।বাসায় তার জন্য আগে আগে অনেক বোম্বে মরিচ নিয়ে আসা হতো বাজার থেকে।মাঝখানে সব উলোটপালোট হয়ে গেছিলো।কালো কালো মরিচ দেখে তার পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল।আশিয়ানের ভাবভঙ্গি খেয়াল করলো ঊদিতা।সে জিজ্ঞেস করলো;
ঊদিতা:-নাগামরিচ বুঝি আপনার অনেক পছন্দের?
আশিয়ান ঊদিতার দিকে তাকিয়ে বললো;
আশিয়ান:-হুম।বোম্বে মরিচের আচার খেতে আমার ভীষণ ভালো লাগে।
ঊদিতা:-ওই যে আচারের বয়ামগুলো দেখছেন।ওখানে আমার গাছের মরিচের আচার দুই বয়াম তৈরি করেছি আমি নিজে।বাসায় যাওয়ার সময় আপনার জন্য একবয়াম নিয়ে যাবো নে।আমার গাছের এই মরিচগুলো প্রচুর ঝাল আর ঘ্রানের তেজও অনেক বেশি।যদিও আমি খুব কম খাই।ঝাল বেশি খেতে পারি না আমি।
আশিয়ান:-ওহহ,,আচ্ছা আমার জন্য মনে করে নিয়ো।
ঊদিতা:-ঠিক আছে।তা,,আজ দুপুরে কিছু আলাদা রান্না করি আপনার জন্য।
আশিয়ান:-লাইক–(জানতে চেয়ে)
ঊদিতা:-আপনি তো ঝাল খান।তাহলে আজ আপনার জন্য বেশ কয়েক পদের ভর্তা বানাই?ঝাল দিয়ে?লাইক-শুটকি ভর্তা,আলুভর্তা,ডালভর্তা,বেগুন ভর্তা,টমেটো ভর্তা,শাক দিয়ে মাছের ভর্তা,চিংড়ি দিয়ে কচুশাক, সাথে বড় মাছ ভাজা।এরকম কিছু বানাই?খাবেন আপনি?দুপুরে এরকম খাবার খেতে অনেক ভালো লাগে।
আশিয়ানের জিভে অলরেডি জল চলে এসেছে এত এত ভর্তার আইটেমের নাম শুনে।আশিয়ান অনেকদিন হলো এমনকিছু খায় না।তাদের বাসায় শুধু বিরিয়ানি,মাছ,মাংস,পোলাও,আখনি এসবই বেশিরভাগ রান্না হয়।ডিফারেন্ট কিছু খাওয়ার জন্য মনটা আনচান করে উঠে তার।ঊদিতার কথায় সায় জানিয়ে বলে;
আশিয়ান:-ঠিক আছে বানিও।আমি এসব খাবো।আর হ্যা বোম্বে মরিচের আচার সাথে দিও।
ঊদিতা:-ঠিক আছে।(মৃদু হেসে)
আশিয়ান ও ঊদিতা বেশ কিছুক্ষণ ছাদে একসাথে সময় কাটালো।আশিয়ানের এখন ঊদিতার সাথে সময় কাটাতে অনেক ভালো লাগছে।মায়ের ওপর সে অনেক খুশি এত ভালো কাউকে তার লাইফে এনে দেয়ার জন্য।ঊদিতার সঙ্গ পাওয়ার পর থেকে ইলিয়ানার চিন্তা আর মাথায়ই আসেনি তার।যেন তার জীবনে ইলিয়ানা নামক বিষাক্ত কোনো অতীত ছিলোই না কখনো।
ছাদ থেকে নিচে এসে ঊদিতা কোমড়ে আচল বেঁধে কাজে নেমে পড়ে।আশিয়ানের জন্য হরেক রকমের ভর্তা তৈরিতে মশগুল সে।ঊদিতার মতো অনেক মেয়েই আছে যারা ঘরের কাজকর্মে ভীষণ পটু থাকে।আশিয়ান শাহরিয়ারের সাথে বাইরে গিয়েছে এলাকায় হাঁটতে।
বেলা বারোটা বেজে গেছে এতসব ভর্তা বানাতে গিয়ে।উসামা হেল্প করছে তাকে।বাকি মেয়েরা ওরা তাদের রুমে বসে স্পিকারে গান শুনছে।ঊদিতা এদের বাজে আড্ডায় কখনো যায় না।শাহরিয়ারের নিষেধ আছে।কারণ এদের আড্ডার মুখ্য টপিকই হলো রিলেশন,বিএফ-জিএফ এসব।তারা অনেক আধুনিক টাইপের মেয়ে।যাদের সাথে ঊদিতার যায় না।তাই ঊদিতা সবসময় তাদের থেকে দূরে থাকে।
কাঁটায় কাঁটায় ঘড়িতে একটা বাজতেই শাহরিয়ার আর আশিয়ান বাসায় চলে এলো।আশিয়ান রুমে গিয়ে গোসল সেড়ে আসতেই ঊদিতা তাকে নিয়ে ডাইনিং রুমে এলো।এত এত ভর্তার আইটেম দেখেই আশিয়ান বিনাবাক্যব্যয়ে চেয়ার টেনে বসে পড়ে খেতে লাগে।ঊদিতা তাকে এটা ওটা এগিয়ে দিচ্ছে।আশিয়ান অনেক তৃপ্তি সহকারে খাবার খাচ্ছে বোম্বে মরিচের আচার দিয়ে।প্রায় ৩ প্লেট ভাত খাওয়ার পর আশিয়ান তৃপ্তির ঢেকুর তুলে হাত ধুয়ে এসে ড্রয়িং রুমের সোফায় আরাম করে বসলো।মনে মনে সে ঊদিতার রান্নার প্রশংসা করতে করতে শেষ।আশিয়ান বেশি খাওয়ার ফলে ঠিকমতো নড়তেও পারছে না।আশিয়ানের অবস্থা দেখে ঊদিতা ঠোঁট টিপে হাসলো।
এভাবেই শ্বশুর বাড়িতে সময় বয়ে যেতে লাগলো।কাল সকালেই আশিয়ান ঊদিতাকে সাথে নিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে।আশিয়ান শ্বশুর বাড়ির প্রতিটি মানুষের জন্য প্রচুর কেনাকাটা করেছে।সাথে বাজার তো আছেই।আশিয়ানকে প্রচুর খাতিরযত্ন করা হলো।জামাই আদর কী জিনিস তা হারে হারে টের পেয়েছে আশিয়ান।এত এত খাবার খেয়ে তার মনে হচ্ছে শ্বশুর বাড়িতে এসে ১০ কেজি ওজন বাড়িয়ে তারপর নিজের বাসায় যাচ্ছে সে।
পরদিন সকাল সকাল লাগেজে কাপড় চোপড় ভরে তৈরি হয়ে গেছে ঊদিতা শ্বশুর বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য।আশিয়ান ও রেডি।মিসেস আনিতা অনেক ধরনের পিঠা বানিয়েছেন তাদের সাথে দেয়ার জন্য।সাথে আচারও আছে কয়েক বয়াম।ঊদিতা সব রেডি করে ফেলেছে।এখন শুধু এসব গাড়িতে তোলার পালা।আশিয়ানের সেক্রেটারি মাহবুব এসে লাগেজ আর অন্যান্য ব্যাগপত্র নিয়ে গাড়িতে তুলতে লাগলো।
মিসেস আনিতা ঊদিতাকে জড়িয়ে ধরে একদফা কান্না করলেন।ঊদিতাও নিরবে কান্না করলো।বাকিদের চোখেও জল।আশিয়ান ঊদিতার হাত ধরে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠলো।ঊদিতাও সবার কাছ থেকে ছলছল চোখে বিদায় নিয়েছে।শাহরিয়ার বোনের কপালে চুমু দিয়ে বললো কয়েকদিন পর আবারও তাকে বাসায় নিয়ে আসা হবে।ঊদিতা পরিবারের সবাইকে হাত দিয়ে বিদায় জানালো।মাহবুব গাড়ি স্টার্ট করলো।বিদায়ের সময় মি.আনিসুল সামনে ছিলেন না।তিনি মেয়ের চোখের জল সহ্য করতে পারবেন না।
গাড়ি তার গন্তব্য অনুযায়ী চলছে।আশিয়ান ঊদিতার পাশেই বসে আছে।ঊদিতা উদাস নয়নে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।আশিয়ানের হাতের ভাঁজে ঊদিতার হাত রাখা।আশিয়ান আরচোখে ঠিকই ঊদিতাকে পর্যবেক্ষণ করছে।নীলরঙা খিমারসেটে ঊদিতাকে দারুণ মানিয়েছে।গাড়িতে দুজনের মধ্যে একজনও কথা বলে নি।নিরবে শেষ হয়েছে পথযাত্রা।
প্রায় আধাঘন্টা পর আশিয়ানের বাসার বিশাল গেট ক্রস করে গাড়ি ভেতরে ঢুকলো।বাইরে এনা ও মিসেস ইয়াসমিন দাঁড়িয়ে আছেন তাদের অপেক্ষায়।গাড়ি থেকে নামতেই ওনারা এগিয়ে এলেন।ঊদিতা মিসেস ইয়াসমিনকে সালাম দিয়ে জড়িয়ে ধরে।মিসেস ইয়াসমিন ঊদিতার কপালে চুমু খেয়ে আদুরে কন্ঠে বললেন;
মিসেস ইয়াসমিন:-কেমন আছিস সোনা মা?
ঊদিতা:-জ্বী মা ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন?(হাসিমুখে)
মিসেস ইয়াসমিন:-এই তো মা তোদের দেখে ভালো হয়ে গেছি পুরোপুরি।
এনা মিষ্টি ভাবিইই বলে এক চিৎকার দিয়ে ঊদিতাকে জড়িয়ে ধরলো।ঊদিতাও মুচকি হেসে জড়িয়ে ধরে এনাকে।
এনা:-ওফফ,,অবশেষে তুমি এলে মিষ্টি ভাবী!জানো এই দুদিন তোমায় আমি কত মিস করেছি?
ঊদিতা:-আমিও তো তোমাকে প্রচুর মিস করেছি ছোটআপু।(আন্তরিক কন্ঠে)
আশিয়ান তাদের পিছনে দাঁড়িয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে বললো;
আশিয়ান:-ভেতরে যাওয়া যাক।তারপর তোমরা কথা বলো।
এনা:-হ্যা,,হ্যা,,,।ভাবী তুমি এসো তো।এতদূর জার্নি করে এসেছো নিশ্চয়ই ক্লান্ত হয়ে গেছো তুমি?এসো বাসার ভেতরে যাই।
ঊদিতা:-হুম আপু চলো।
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আমি অনেক অসুস্থ।গরমে নাজেহাল অবস্থা এরমাঝে পিঠে সাংঘাতিক ব্যথা পেয়েছি।বসেও ফোন টিপতে পারছি না।শুয়েও ফোন টিপতে পারছি না।গরমের কারণে চোখও ঝাপসা হয়ে বসে আছে।আজ গল্প দেয়ার ইচ্ছে ছিলো না তাও দিলাম।সবাই গঠনমূলক কমেন্ট করবেন প্লিজ।হ্যাপি রিডিং।🧡)
চলবে…🍃

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here