যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া #আনিশা_সাবিহা পর্ব ৩

0
620

#যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৩

“কী হলো? চুপ করে আছো কেন এখন? কথা বলো!”

সরোয়ার সাহেব কৈফিয়ত চাইলেন। কিন্তু স্বচ্ছ স্থির এবং নীরব। তার মাঝে বাবাকে জবাব দেওয়ার মতো ভাবান্তর দেখা গেল না। শুধু অস্থিরচিত্তে মাথা এপাশ-ওপাশ করছে। সৌমিত্রের উদ্ভব ঘটল সেখানে। স্বচ্ছ একটা শব্দও উচ্চারণ না করে নির্বিঘ্নে উঠে দাঁড়িয়ে বড়ো শ্বাস গ্রহণ করে ড্রয়িংরুম পরিত্যাগ করে বেরিয়ে যায়। পেছন থেকে মিসেস. জেবা বারংবার ডেকেও ছেলের সাড়া পেলেন না। মিসেস. সরোয়ার ক্ষোভ ঝেড়ে বললেন,
“দেখেছ তার ব্যবহার? দিনদিন অধঃপতন হচ্ছে তার। নিজের বাবার কথা সামান্য উত্তর দেওয়ার সময় অবধি তার নেই।”

সৌমিত্র এসে সোফার দিকে হেলে তার বাবার ফোনে চলতে থাকা ভিডিও দেখে ভড়কে গিয়ে বলল,
“বাবা! এটা কোথায় পেলে তুমি?”

“কোথায় আবার! তোমরা কী ভাবো? তোমরা যা ইচ্ছে করবে আর আমার কাছে খবর আসবে না? আমি কাজে ব্যস্ত থাকি জন্য তোমাদের খবর রাখব না? সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে স্পষ্ট ভিডিওটা ভাইরাল হয়েছে। একেকজন একেক কথা ছড়াচ্ছে। বুঝতে পারছি না। কোনদিকে সামাল দেব। শেষমেশ তোমাদের কিনা একটা মেয়ের হাতে থা/প্পড় খেয়ে আসতে হচ্ছে। ছি!”

মনে ভীষণ তিক্ততার সঙ্গে কথাগুলো একনাগাড়ে বললেন সরোয়ার সাহেব। সৌমিত্র বরাবরই ঠান্ডা মাথার ছেলে। তাই সে বাবাকে বোঝানের প্রয়াস চালায়।
“বাবা ওটা একটা মিস্টেক ছিল। মেয়েটা ভুল করে ভাইকে মে/রেছে। না ওখানে ভাইয়ের দোষ ছিল আর না ওই মেয়েটার। মেয়েটা পরে ক্ষমাও চেয়েছে। পুরো বিষয়টা একটা ভুল বোঝাবুঝি। ভাইকে অযথা রাগালে তুমি।”

প্রতিত্তোরে মিসেস. জেবা ব্যাকুল হয়ে বলে ওঠেন,
“ছেলেটা না খেয়ে বেরিয়ে গেল। রাতে কখন ফিরবে কে জানে!”

“আমি যাচ্ছি বাহিরে। ভাইকে নিয়ে ফিরব।”

সরোয়ার সাহেব তখন চুপ করে রইলেন। সৌমিত্র তৎক্ষনাৎ সোফায় পড়ে থাকা জ্যাকেট হাতে তুলে বাহিরে গেল। মিসেস. জেবা অভিমানী হয়ে বললেন,
“না জেনে কতগুলো কথা শোনালে ছেলেটাকে? আমি জানি ও এমন কোনো কাজ করবে না যাতে তোমার সম্মান যায়। শুধু শুধুই…”

নিজ কথা সম্পূর্ণ করার পূর্বে মাঝপথে হাতের ইশারায় সরোয়ার সাহেব থামিয়ে দিলেন স্ত্রীকে। নিজে কিছুটা গভীর ভাবনায় মত্ত হয়ে বললেন,
“আমি নিশ্চিত হতে চাইছিলাম যে স্বচ্ছ কোনো ভুল করেছে না। নিশ্চিত হলাম। সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল করার স্পর্ধা আর আমার ছেলেকে থা;প্পড় মারার দুঃসাহসিক মেয়েটা এরা দুজন জীবনের সবথেকে বড়ো ভুল করে ফেলেছে।”

“সৌমিত্র তো বলল মেয়েটা সরি বলেছে। আর কী করবে? ভুল তো মানুষ মাত্র! এখন এসব ঝামেলা থেকে বেরিয়ে এসো। সারাদিন ব্যস্ত থাকো। একটু শান্তির শ্বাস নাও।”

সরোয়ার সাহেব কঠোর সুরে বললেন,
“শান্তির শ্বাস ফেলতে পারছি কোথায়? তুমি ভালো করে জানো জেবা আমার সম্মান, রেপুটেশন এসবে আমি সামান্য আঁচ আসতে দিই না। সহ্য করতে পারিনা আমার সম্মানে দাগ লাগলে। আমি নিচু হতে পারিনা। তাই আমাকে আমার মতো কাজ করতে দাও।”

মিসেস. জেবা আর কিছুই বলতে পারলেন না। তিনি জানেন, সরোয়ার সাহেবের সম্মান নামক অহম ঠেকাতে কতদূর অবধি যেতে পারেন।

মোহের বাড়িতে খাবার টেবিলে সপরিবারে খেতে বসেছে। ইথানকে জোর করে খাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে মোহ। কিন্তু ইথান খেতে রাজি নয়। মুখ ঘুরিয়ে রেখেছে। জেদ ধরেছে, চকলেট খাবে! চেয়ার থেকে নেমে দৌড়ে মোহের বাবা আজহার সাহেবের আড়ালে এসে দাঁড়াল ইথান। সুন্দর করে আবদার করে বলল,
“ও নানাভাই আমি ভাত খাব না। চকলেট খাব। মাকে জোর করতে বারণ করে দাও।”

আজহার সাহেব মুচকি হেসে নাতিকে টেনে বললেন,
“অবশ্যই ইথান বাবু চকলেট খাবে। কিন্তু খালি পেটে চকলেট খেলে পেট ব্যথা হবে। তাই ইথানকে আগে ভাত খেয়ে নিতে হবে। তারপর ইথানকে তার নানাভাই চকলেট দেবে।”

ইথানের ছোট্ট মুখে হাসি ফুটল। দেখা গেল তার প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ইঁদুরের মতো ছোটো ছোটো দাঁত। মোহ বলল,
“বাবা একদম ওকে চকলেটের লোভ দেখাবে না। ওর দাঁত অলরেডি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিছু খেতে সমস্যা হয়। সিল করতে হয়েছে।”

প্রতিত্তোরে ইথান বলে,
“তাতে কী হয়েছে? নানুমণি তো বলেছে, এই দাঁত পড়ে গিয়ে নতুন করে দাঁত উঠবে। তখন থেকে আর চকলেট খাব না। তাহলেই হবে।”

মোহ ক্লান্তি নিয়ে মায়ের দিকে তাকাল। বহু কষ্টে ইথানকে ভাত খাওয়াতে আরম্ভ করতেই আজহার সাহেব গম্ভীর গলায় বললেন,
“শুনলাম পাত্রপক্ষ এসেছিল তোমায় দেখতে।”

“হ্যাঁ এসেছিল। ইথানের কথা শুনেই তাদের কথা বলার ধরণ পাল্টে গেল।”

মাঝে মিসেস. সুফিয়া মোহের কথায় ফোঁড়ন কেটে বলেন,
“সেটা তো স্বাভাবিক! একটা অবিবাহিত মেয়ের যদি বাচ্চা থাকে তাহলে সবার প্রতিক্রিয়া বদলাবে স্বাভাবিক। তুই একটু ঠিকঠাক কথা বললেই হয়ত উনারা মানতেন। ছেলে তো খারাপ ছিল না। কিন্তু তোর সবসময় সবার মুখের ওপর কথার বলার স্বভাব সব ঘেঁটে দেয়।”

মোহ তিতিবিরক্ত হলো।
“মা আমি ওভাবে কথা বলতে চাইনি। কিন্তু উনাদের কথার ধরণ আমার ভালো লাগেনি। তাই…”

“মোহ! তোর কিন্তু যথেষ্ট বয়স হয়েছে। আমি আর তোর বাবা কি সারাজীবন তোর পাশে থাকব? জীবনে তো একা চলা যায় না তাই না?”

“আমি একা কোথায়? আমার ইথান রয়েছে।”

মিসেস. সুফিয়া এবার মেয়ের প্রতি ক্রুদ্ধ হোন।
“আমি একটা জীবনসঙ্গীর কথা বলছি মোহ। ইথানকে নিয়ে একা কত যু/দ্ধ করবি? আমরা না হয় এখন তোর পাশে আছি। সবসময় কি থাকতে পারব?”

মোহ মিইয়ে গেল এবার। মাথা নুইয়ে গেল। ইথানকে খাওয়ানো বন্ধ করল। নিভে গেল তার উচ্চকণ্ঠ।
“মা আমি আশেপাশের মানুষকে বিশ্বাস করতে ভয় পাই। আমার মনে সেই অনুভূতি আসেই না যেই অনুভূতি দিয়ে আমি কাউকে আপন করতে পারব।”

মিসেস. সুফিয়া কিছু বলার আগেই আজহার সাহেব মুখ খুললেন এবার।
“মেয়েটাকে নিজের মতো একটু থাকতে দাও সুফিয়া। জোর করো না।”

স্নেহের সাথে মোহের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে অশ্রুসিক্ত হয়ে এলো মোহের গোল গোল দুটো আঁখি। ছোট্ট ইথানের মায়া হলো মায়ের প্রতি। চেয়ারে উঠে দাঁড়িয়ে মোহের চোখ মুছে দিয়ে বলল,
“মা, কাঁদছ কেন তুমি? কষ্ট পেয়েছ? আমি আছি তো তোমার!”

শত যাতনার মাঝেও ইথানের এই সুন্দর কথায় চোখ ভর্তি পানি নিয়ে মোহ হেসে দিলো। কিছুটা সময় নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করল। মস্তিষ্কে নাড়া দিলো বিকেলে ঘটে যাওয়া বিরক্তিকর ঘটনাটি। ফট করে বলল,
“বাবা, আজকে বিকেলে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। আমি একটা ভুল করে বসেছি।”

আজহার সাহেব ব্যতিব্যস্ত হয়ে শুধালেন,
“সে কী! কী করেছ?”

মোহ পুরো বিষয়টা খুলে বলল নিজের পরিবারকে। সঙ্গে সঙ্গে ভড়কে গেলেন মিসেস. সুফিয়া।
“এত বড়ো কাণ্ড করে বসেছিস? হায় আল্লাহ! আমি বলেছিলাম! আমি বলেছিলাম তোকে একটু নম্র হতে, চুপচাপ হয়ে চলতে। কিন্তু তুই আমার কথা শুনিস কোথায়? এখন যদি শোধ তুলতে ওরা কিছু করে দেয়? সাধারণ মানুষ হলে তাও কথা ছিল। ক্ষমতাশালী লোকজন!”

মিসেস. সুফিয়ার কথা কানে তুললো না কেউই। আজহার সাহেব তৎপর হয়ে বললেন,
“তুমি ক্ষমা চেয়েছিলে তাই না? তাও কেন চিন্তা করছ?”

“চিন্তা করছি কারণ আমার ক্ষমা চাওয়াতে লোকটা সন্তুষ্ট নন। উনি রীতিমতো আমায় হু/মকি দিয়েছেন। আমি উনাকে তখনি বলেছি উনার যা শা/স্তি দেওয়ার তা যেন তখনি দিতে পারেন। কিন্তু উনি সেটা করলেন না। ক্ষোভ জমা রাখলেন নিজের মনে।”

আজহার সাহেব বুঝলেন নিজের মেয়ের অস্থিরতা। তাকে শান্তনা দিয়ে বললেন,
“ভুল সবার দ্বারা হয়। তুমি ক্ষমা চেয়েছ এটাই বড়ো। বাকিটা ভাগ্যের উপর।”

মিসেস. সুফিয়া মোহকে শক্ত কথা বলার জন্য প্রস্তুতি নিলেন। তবে তৎক্ষনাৎ কলিংবেলের আওয়াজে সকল মনোযোগ দরজার দিকে চলে গেল। মিসেস. সুফিয়া বিড়বিড়িয়ে বললেন,
“এতরাতে আবার কে! দেখি তো!”

বসার ছোটো ঘরের শেষ মাথায় গিয়ে দরজা খুলতেই বাড়িওয়ালা প্রবেশ করলেন ঘরে। তিনি পুরো ঘরের আশপাশটা দেখতেই মিসেস. সুফিয়া বিচলিত কণ্ঠে প্রশ্ন করেন,
“এতরাতে আপনি! কোনো কিছু কি লাগবে?”

“আপনার মেয়ে বাড়ি আছে নাকি নেই?”

বাড়িওয়ালা সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করলেন। মিসেস. সুফিয়া থতমত খেয়ে জবাবে বলেন,
“হ্যাঁ ও তো বাড়িতেই আছে। ও কি কোনো সমস্যা করেছে?”

বাড়িওয়ালা বিস্ময়াপন্ন হলেন।
“আপনি জানেন না আপনার মেয়ে কত বড়ো কাণ্ড ঘটিয়েছে? সেই ফলটা আমাদের ভুগতে হচ্ছে। মন্ত্রীর ছেলেকে চ/ড় মে/রে দুঃসাহসিক কাজকর্ম করে আমাদের বিপদে ফেলার মানে কী?”

বাড়িওয়ালা কথা শোনাতে শোনাতে মোহ আর তার বাবা খাওয়া ছেড়ে উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে শেষ কথাগুলো মোহের কানে এসেছে। মোহ শান্ত ভঙ্গিতে বলল,
“আঙ্কেল আমার জন্য কোনো প্রবলেম হয়েছে আপনার? তাহলে আমি দুঃখিত!”

বাড়িওয়ালা বিলম্ব না করে সঙ্গে সঙ্গে মোহকে কটাক্ষ করে বললেন,
“তোমার দুঃখিত দিয়ে কাজ হবে না। তোমরা আমার বাড়িতে থাকলে আমার বিপদ হবে। তোমরা এখনি বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে।”

আজহার সাহেব চমকে উঠে বলেন,
“আপনি কী বলছেন এসব ভাই? আপনি এটা করতে পারেন না।”

“আমার কিছু করার নেই। বাড়িতে এমন একটা দুঃসাহসিক মেয়ে রাখলে এমন পরিস্থিতিতে পড়তেই হবে। আমার বাড়িতে কিছু ছেলেপেলে ঢুকেছিল। রীতিমতো শাসিয়ে গেছে। যদি রাতের মধ্যে আপনাদের আমার বাড়ি থেকে বের করতে না পারি তাহলে আমার কপালে দুঃখ আছে। আপনাদের আশ্রয় দিয়ে আমি নিজে বিপদ ডেকে আনতে চাই না। যান তো এখন!”

“কিন্তু এতরাতে আমরা কোথায় যাব? আমাদের সমস্যার কথাও তো একটু ভাবুন।”

উদ্বেগ প্রকাশ করে বললেন মিসেস. সুফিয়া।

“আমি কী করে জানব? এই পরিস্থিতিতে পড়ার আগে আপনাদের এটা ভাবা উচিত ছিল।”

“আপনি এমন করলে কিন্তু আমরা পুলিশের কাছে যাব।”

এবার কিছুটা ক্ষেপে গেলেন আজহার সাহেব। তবে লাভের লাভ কিছুই হলো না। শেষমেশ কোনোমতে শুধুমাত্র কাপড়টুকু গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হলো সকলকে।

পাড়ার রাস্তায় অবিন্যস্ত পায়ে হেঁটে চলেছে মোহ। অন্যমনস্ক হয়ে একমনে রাস্তার দিকে চেয়ে একহাতে ইথানের হাত অন্যহাতে ব্যাগ নিয়ে হাঁটছে সে। গন্তব্য মামার বাড়ি যাওয়া। খালি গাড়ির খোঁজ করছে তারা। পেছন পেছন চলতে চলতে মিসেস. সুফিয়া রাগ ঝাড়ছেন।
“বারবার মানা করেছিলাম। সবসময় মাথা নিচু করে চলতে বলেছি। কিন্তু আমার কথা তো কারোর কানেই যায় না। এখন বিপদ সামলাও। আর তুমি সবসময় মেয়েকে লাই দিয়ে মাথায় তুলেছ। তুমিই শিখিয়ে দাও প্রতিবাদ করতে। সেই চক্করে আমরা এখন রাস্তায়।”

এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো আজহার সাহেবের উদ্দেশ্যে বললেন মিসেস. সুফিয়া। আজহার অসহ্য হয়ে বলেন,
“চুপ করো না সুফিয়া! এটা সময় এসব কথা বলার?”

“চুপ করে আর কী হবে? মাথায় উপর থেকে ছাঁদই কেঁড়ে নিলো তোমার মেয়ের কাণ্ড।”

মোহ নীরবে শুনছে। সে ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি যে সামান্য একটা থা/প্পড় মারা শোধ তুলতে এত বড়ো কাণ্ড করে বসবে ওই ঘাড়ত্যাড়া মানবটি। এই ভাবনাগুলো মধ্যখানে কোত্থেকে এসে যেন একটা সাদা বর্ণের গাড়ি ব্রেক কষে মোহের একেবারে সামনে। হকচকিয়ে তাকায় মোহ। ইথানের হাতটা জোরে চেপে ধরে। আতঙ্কিত চোখেমুখে কালো গ্লাসটা বন্ধ দেখতেই রাগ হলো তার।
“কী সমস্যা? দেখে গাড়ি চালাতে পারেন না? আপনার মতো কিছু মানুষজনের জন্য সাধারণ মানুষগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে রাস্তায় হাঁটতে পারেনা।”

গ্লাসটা ধীর গতিতে নেমে গেল নিচে। ল্যাম্পপোস্টের ঘোলাটে আলোতে দৃশ্যমান হলো ডেই চেনা মুখখানা। চোখেমুখে লোকটির অদ্ভুত প্রতিশোধমূলক হাসি।
“মাথার উপরে ছাঁদ নেই অথচ তেজ এখনো যায়নি।”

স্বচ্ছের বিদ্রুপাত্মক কথা শুনে মোহের পা থেকে মাথা অবধি জ্বলে উঠল। কিন্তু সে এই মুহূর্তে আর কিছু বলে আর কোনো বিপদ দাঁড় করাতে চায় না পরিবারের সামনে।
“আপনি একাজ করেছেন?”

“তো আর করবে? আরো কাউকে চ/ড় টড় মে/রেছ নাকি?”

“কেন করছেন? আমি আপনার সম্মানহানি করেছি। তো আপনি উপর প্রতিশোধ নিন। কিন্তু আপনি সেটা করলেন না। আপনি আমার পুরো পরিবারের পেছনে পড়ে গেলেন। কেন?”

স্বচ্ছ মুখে আর কোনো কথা বলল না। রাস্তার সামনে তাকিয়ে রইল একধ্যানে। মোহ আরো বলল,
“আপনাদের মতো ক্ষমতাশালী লোকজনের এই একটাই সমস্যা! আপনাদের বস্তা বস্তা ইগো! এই ইগোর মতো বড়ো পাথরের চাপে কত লোকজনকে পিষে দিয়েছেন ঠিক নেই। এখন পালা আমাদের?”

“দেখো রাগ উঠিয়ো না আর। তুমি যা করছ সেটার ফল পাচ্ছো। ভুগতে থাকো।”

বলেই মাথা থেকে পা অবধি মোহকে পর্যবেক্ষণ করে নিলো স্বচ্ছ। মোহের জামাকাপড় আর বাঁকা করে পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে চুল বাঁধার ধরণ দেখে দেখে মনেই হচ্ছে তারা এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছে। বাঁকা চোখে তাকাল মোহের হাত ধরে থাকা ছোটো বাচ্চা ছেলের দিকে। স্বচ্ছ ফের বলল,
“ইনজয় ইউর নাইট! কিছুক্ষণের মাঝে আবার বৃষ্টি নামবে মনে হচ্ছে। ভালোই জমবে তোমাদের রাত!”

বলেই দ্রুত গাড়ি স্টার্ট দিয়ে মোহের সামনে থেকে চলে এলো স্বচ্ছ।

চলবে…

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক এবং গল্প হয়ত একদিন পরপরই পাবেন। একদিনে সম্পূর্ণ লিখতে পারছি না। আশা করি আমার সমস্যা বুঝবেন।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here