যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া #আনিশা_সাবিহা পর্ব ৬

0
552

#যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৬

স্বচ্ছের মুখোমুখি বেতের চেয়ারে বসে আছে মোহ। তার মুখভঙ্গি বলে দিচ্ছে সে কতটা অনিহা নিয়ে সেখানে বসে আছে। পাশেই তার হাতটা চেপে বসে আছে তানিয়া। সাদা শার্ট ইন করে পরিহিত ভদ্র ভাবসাব নিয়ে বসে রয়েছে রিহান তানিয়ার সামনেই। অনেকক্ষণ নীরবতার পর রিহান স্বচ্ছের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
“কী রে! এই মেয়েটা কে রে? তোর গার্লফ্রেন্ড নাকি? গতকাল অবধি তো এই মেয়েকে তোকে থা;প্পড় মা;রতে দেখলাম। আজকের মধ্যেই গার্লফ্রেন্ড বানিয়ে নিয়েছিস?”

স্বচ্ছ দাঁতে দাঁত চেপে কণ্ঠস্বর কোনোরকমে নিচু করে বলল,
“আমার মনে হয় তোমার চিন্তাধারার ধরণটা যামিনী আন্টির সাথে থেকে থেকে ওমনই হয়ে গেছে। একেবারে হাই লেভেলের থিংকিং পাওয়ার তোমাদের। নয়ত কারোর হাতে থা/প্পড় খেয়ে কে প্রেমে পড়ে সেই মেয়েকেই প্রেমিকা বানিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতে পারে?”

“আরে আজকাল তো এসব হয়। ছেলেপেলেরা তো ঝগড়া থেকেই প্রেমে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তো এমনই হয় দেখি।”

স্বচ্ছ হতাশ কণ্ঠে বলে,
“সবার সঙ্গে আমার তুলনা দিও না ভাই। তুমি আমাকে খুব ভালো করে চেনো। মেয়েটার ভাগ্য ভালো যে ও এখনো সহিসালামত দাঁড়িয়ে থেকে আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে পারছে।”

রিহান মৃদু হেসে শুধায়,
“ওকে সহিসালামত থাকতে কে দিয়েছে? তুই-ই তো?”

“হ্যাঁ আমি কিন্তু…”

কথাটা বলে থেমে যায় স্বচ্ছ। কপালে পরপর তিনটে কিঞ্চিৎ ভাঁজ দৃশ্যমান হয়। রিহানের দেওয়া ইঙ্গিত তার বোধগম্য হয়। তেতে উঠে সে বলে ওঠে,
“আরে ভাই তুমি কী ভাবছ এসব? সত্যিই তুমি দেখি আন্টির চেয়েও বেশি ডেঞ্জারাস! আসলে ব্যাপারটা তেমন কিছুই নয়। আমি তো মেয়েটাকে শা/স্তি দেওয়ার উপায়ই পাচ্ছিলাম না। ছেলে হলে না হয় আধম/রা করে হসপিটালে এক মাসের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া যেত। কিন্তু ও তো একটা মেয়ে!”

“ওটাই তো সমস্যা! একজন মেয়ে একজন ছেলের পুরো দুনিয়া দখল করে বসতে সময় নেয় না।”

এতক্ষণ যাবত মোহ আর তানিয়া সরু চোখে দুই ভাইয়ের ফিসফিসিয়ে বলা কথাবার্তার দিকে নজর রাখছিল। মোহ এবার বেতের গোল টেবিলে থাবা দিয়ে বলল,
“ভাইদের মাঝেই কি কথাবার্তা চলবে? আমার জানামতে এখানে পাত্র পাত্রীর পারসোনাল কথাবার্তা বলতে এসেছে।”

স্বচ্ছ সময় নিলো না পাল্টা প্রশ্ন করতে। বলল,
“পারসোনাল শব্দের মানে ব্যক্তিগত ম্যাডাম! আপনি তাদের পারসোনাল ম্যাটারে কী করছেন জানতে পারি?”

“এটা তো আমিও আপনাকে প্রশ্ন করতে পারি। আপনি তাদের ব্যক্তিগত বিষয়ের মাঝে কী করছেন?”

মোহের প্রশ্নের জবাবে স্বচ্ছ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে উঠল,
“পাত্র আমার ভাই হয়।”

পাল্টা জবাবে মোহও বলল,
“তো পাত্রী আমার বেস্টফ্রেন্ড হয়।”

তানিয়া দুজনের কথোপকথনে বুঝেই গেল এখনি যদি তাদের শান্ত করা না যায় তবে আজকে আবার বড়োসড়ো ঝামেলা বাঁধতে পারে। তাই সে দুজনকে থামিয়ে বলল,
“আসলে আমি এসব বিষয়ে খুব নার্ভাস তাই আমি আমার বান্ধবীকে ডেকেছিলাম। প্লিজ এই নিয়ে কেউ কথা কাটাকাটি করবেন না।”

দুজনে থেমে গেলেও যেন একে অপরের দৃষ্টি দ্বারা নিজের রাগ ঝাড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। অন্তত দুজনের ঝগড়া স্থগিত হওয়ায় রিহান সুযোগ পেল কথা বলতে। সে সোজাসাপটা ভাবে তানিয়াকে বলল,
“মিস তানিয়া! আপনাকে নতুন করে জিজ্ঞেসা করার কিছুই নেই কারণ সবই মা জিজ্ঞেস করে নিয়েছে তাই আমি আপনাকে সোজা ভাষায় বলি আমার আপনাকে পছন্দ হয়েছে।”

তানিয়া অস্বস্তিতে পড়ে গেল। হাসি বজায় রাখতে চাইল নিজের অস্বস্তি ঢাকতে। তবে লাভজনক কিছুই হলো না। বারংবার আঁড়চোখে মোহের দিকে। কিন্তু মোহ তো তখন চোখে চোখে বিবাদ করতে ব্যগ্র। তানিয়াকে চুপ থাকতে দেখে রিহান সন্দিহান হয়ে বলল,
“আচ্ছা যেহেতু বিয়ের কথাবার্তা এগিয়েই যাচ্ছে তখন একটা বিষয় ক্লিয়ার হয়ে নেওয়া প্রয়োজন।”

“জি, বলুন!”

“বিয়ের আগে এখন বেশিরভাগ মানুষেরই প্রেম, ভালোবাসার সম্পর্ক থাকে। আপনার কি এমন কেউ আছে?”

এবার যেন নিজেকে স্থির রাখতে পারল না তানিয়া। ঢল গিলে নড়েচড়ে বসে মোহের দিকে সহায়হীন হয়ে তাকায়। রিহান তখন বিষয়টা বুঝতে পেরে বলে উঠল,
“না ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এমন থাকতেই পারে। কিন্তু আজকাল সময়টা তো একটু খা/রাপ। ভালোবাসার নামে অনেক কিছুই হয়। শারীরিক চাহিদার কথা বলছিলাম। তাই জানতে চাইছিলাম আপনার জীবনে এমন কোনো ঘটনা নেই তো?”

তানিয়া এবার বিষম খেয়ে গেল। স্বচ্ছ ঘাড় ঘুরিয়ে লোচন দুটো বৃহৎ গোল করে দৃষ্টিপাত করল রিহানের দিকে। মোহও আকাশসম বিস্ময়ের সাথে স্তব্ধ রইল খানিক্ষন। নিজ বিস্ময় কাটিয়ে স্বচ্ছ দ্রুততার সাথে রিহানের কানের কাছে গিয়ে বলল,
“ভাই! কী বলছ এসব? এগুলো কেউ এভাবে প্রথম দেখায় প্রশ্ন করে?”

রিহান সরল মনে বলল,
“কিন্তু মা তো সব জেনে নিতে বলে দিয়েছে এখনি। আমার কী দোষ?”

হাতটা কপালে চলে গেল স্বচ্ছের। সামনে দুই নারীর দিকে আর তাকাতে পারছে না সে। এরইমাঝে মোহ আচানক বলে বসল,
“মি. পাত্র আপনি কি ভার্জিন?”

সবার মাঝে তখন নীরবতা বিরাজ করছে। কারোর মুখে কোনো কথা নেই। মোহের প্রশ্নে সকলের হুঁশ উড়ে যাওয়ার উপক্রম। তানিয়া হম্বিতম্বি করে কিছু বলার আগে রিহান কাঁপা গলায় বলে,
“মিস. তানিয়া? আপনার বান্ধবী এসব কী জিজ্ঞেস করছে?”

মোহ স্পষ্টভাবে উত্তরে বলে উঠল,
“কেন? আপনি যদি একটা মেয়েকে এই প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে একটা মেয়ে কেন আপনাকে এই প্রশ্ন করতে পারে না?”

স্বচ্ছ স্পষ্ট বুঝতে পারছে আর কিছুক্ষণ যদি সে এখানে থাকে তাহলে তা মানসম্মান বলতে কোনো কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। অস্থিরতার সঙ্গে হুড়মুড়িয়ে উঠে দাঁড়াল সে।
“আমার কিছু কাজ আছে। আমি আসছি। রিহান ভাই তুমি এখন সামলাও।”

রিহান স্বচ্ছকে ডাকলেও স্বচ্ছ দূরত্ব গতিতে চলে গেল। মোহ কোমড়ে হাত রেখে উঠে দাঁড়িয়ে কড়া সুরে বলল,
“লিসেন মি. পাত্র! প্রথমেই বলে রাখা ভালো তানিয়া আপনাকে জীবনেও বিয়ে করবে না। কারণ ওর বিয়েতে মত নেই। তবুও আপনি যদি ওকে বিয়ে করতে চান তবে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আপনি তানিয়াকে বিয়ে করতেই পারেন। বাট বিয়ের পরেরদিনই আমি তানিয়াকে ভাগিয়ে নিয়ে যেতে একটুও সময় নেব না। ওকে ওর প্রেমিকের সঙ্গে মিলিয়ে দেব। বুঝতে পেরেছেন?”

রিহান নির্বিকার ভঙ্গিতে শুধু চেয়েই রইল। এই মুহূর্তে তার মনে হচ্ছে সে এখন এখানকার ব/লির পা/ঠা। তাকে চুপ থাকতে দেখে মোহ ধমকে বলে উঠল,
“কী? ঘটে কিছু গেছে? নাকি আরো শক্ত করে বোঝাতে হবে? এমনিতেও আমি আপনার সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু আপনার যা মন মানসিকতা এতে মনে হলো আপনি সেটার যোগ্যই নন। অবশ্য হওয়ারও কথা না। কার ভাই সেটা দেখতে হবে তো!”

রিহানের কোনো হেলদোল না দেখে মোহ ফের জোর কণ্ঠে তাড়া দিয়ে বলে,
“আপনি এখনো বসে আছেন? যাওয়ার কি কোনো ইচ্ছে নেই নাকি প্যান্ট ভিজে যাওয়ার অপেক্ষা করছেন?”

মোহের তাড়া দেওয়াতে আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করতে হলো না তাদের। রিহান ঝড়ের বেগে উঠে প্রস্থান করতেই তানিয়া কপাল চাপড়ে আফসোসের সুরে বলল,
“এখন তো তুই আমার কাছে একটাই পথ খোলা রেখেছিস সেটা হচ্ছে আ/ত্মহ/ত্যা। মন তো চাইছে ছাঁদ থেকেই লাফ দিই।”

“তুই কেন লাফ দিবি? দিলে ওই ব/দমাশ পাত্র দেবে। কথাবার্তার মাঝে সামান্যতমও শালীনতা নেই! ছি! যেমন ছেলে তেমনি তার ভাই!”

“তুই তো তোদের ঝগড়া আর ইগো নিয়ে পড়ে আছিস। ওদিকে মাকে যদি ওই ছেলেটা সব বলে দেয় তাহলে আমার কী হবে? মা তো আমার ঘাড় থেকে মা/থায় আলাদা করে দেবে।”

মোহ বরাবরের মতো দায়সারা হয়ে বলে,
“তো কী হয়েছে? প্রেম করতে পারছিস আর প্রেমিকের জন্য এতটুকু করতে পারবি না?”

তানিয়া কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে,
“প্রেম করেছি বিয়ে করার জন্য ইয়ার! প্রাণ দেওয়ার জন্য না।”

“কিছু হবে না। সাহস রাখ। তাছাড়া মোহ আনবীর আছে তো।”

তানিয়া অবসন্ন হয়ে বলে ওঠে,
“সেটাই তো আরো বড়ো সমস্যা!”

মোহ আর তানিয়া সিঁড়ি দিয়ে আয়েশ করে নামতে নামতে দেখল সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসেছে রিহান আর যামিনী বেগম। মোহ প্রথমেই নিজের তীর্যক দৃষ্টি দ্বারা পরিলক্ষিত করে নিলো আশেপাশে স্বচ্ছ নামক মানবটি আছে কিনা! স্বচ্ছকে দেখতে না পেয়েই যেন ঢের স্বস্তি অনুভূত হলো মোহের। মিসেস. যামিনী আশেপাশে তাকিয়ে স্বচ্ছকে না পেয়ে রিহানের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন,
“এই স্বচ্ছ কোথায় গেল? একটা কল করার কথা বলে কোথাও উধাও হয়ে গেল ছেলেটা?”

রিহান মিনমিন করে প্রতিত্তোরে বলল,
“ও তো কী যেন গুরুত্বপূর্ণ কাজে চলে গেল মা।”

তৎক্ষনাৎ মিসেস. যামিনী সিরিয়াস হয়ে বলেন,
“ছেলে এত বড়ো হয়ে গেছে অথচ তার মাঝে কোনো হিতাহিত জ্ঞান নেই? আমি ওকে নিয়ে এসেছিল অথচ আমায় না বলেই চলে গেল? এই জন্যই তো বলি এইসব কিছু সমাধান একমাত্র বিয়ে দেওয়া। বিয়ে দিলে সব জ্ঞান মাথায় এসে যাবে।”

মিসেস. যামিনীর কথা বলা সম্পূর্ণ হতে না হতেই উনার নজরে এলো তানিয়া এবং তার পাশে হেঁটে আসা মোহকে। তিনি প্রথমে তানিয়াকে তো দেখেই ফেলেছেন এবার মোহও বাদ গেল না উনার নজর থেকে। মোহকে মুহূর্তেই পা থেকে মাথা অবধি পর্যবেক্ষণ করে বেশ মুগ্ধ হলেন তিনি। বিলম্ব না করে তানিয়ার মাকে প্রশ্ন করে বসলেন,
“আপনার বাড়িতে আরেকটা মেয়ে আছে আগে বলবেন না ভাবী? বাহ এই মেয়েটাও দেখতে মাশাআল্লাহ কী সুন্দর!”

তানিয়া মা বিনীতভাবে বললেন,
“আসলে ও আমাদের বাড়ির মেয়ে নয়। ও তানিয়ার প্রিয় বান্ধবী মোহ! হঠাৎ করেই এসে পড়েছে। আমিও জানতাম না।”

মিসেস. যামিনী মনে মনে কিছু একটা ভাবলেন। সেটা নিজের অভ্যন্তরে চেপে রাখলেন তখনকার মতো। মোহ তাদের কাছে এসেই প্রথমে রিহানকে চোখ রাঙালো। মিসেস. যামিনী তানিয়ার থুঁতনি ধরে বলেন,
“কী গো মেয়ে? আমার ছেলেকে কেমন লাগল তোমার? আমার ছেলে তো কিছুই বলছে না তোমার সাথে কথা বলার পর থেকে। তাই তোমাকেই জিজ্ঞেস করছি।”

তানিয়া কিছুই না বলে শুধু মাথা নুইয়ে লজ্জা পাওয়ার ভান ধরল। মনে মনে খুশি হলো এই ভেবে যে রিহান কাউকে কিছুই বলেনি। মোহ পরিস্থিতি সামলাতে ফট করে সবিনয়ে বলতে লাগে,
“আন্টি আপনার ছেলে বলতে লজ্জা পায় তাহলে তানিয়া কী করে বলবে বলুন? লজ্জা তো নারীর ভূষণ তাই না?”

মিসেস. যামিনী স্মিত হেসে মোহের গালে হাত রাখলেন।
“ঠিক বলেছ তুমি। দারুণ বুদ্ধিমতী তুমি। নাম কী তোমার?”

“মোহ আনবীর।”

“আরে বাহ! তোমার মতোই তোমার নামটাও চমৎকার। যেন তোমার মুখশ্রীর সঙ্গে নাম মিলিয়ে রাখা।”

মোহ শুধুমাত্র সৌজন্যমূলক হাসি দেয়। আর কিছু কথাবার্তা বলে সেখান থেকে বিদায় নেয় সে।

তিন ভাই একসাথে বসে আছে। সৌমিত্রের চোখেমুখে টানটান উত্তেজনা আর স্বচ্ছ রয়েছে গোমড়া মুখে। আর রিহান কিছুটা হতাশ।
“ও মাই গড! দুজনকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে? তাও রিহান ভাইয়ের কথা বাদই দিলাম। স্বচ্ছ ভাইয়ের কথা তো আমি ভাবতেই পারছি না। সত্যিই মেয়েটার দম আছে বলতে হবে!”

স্বচ্ছ রাগে হিসহিসিয়ে বলে,
“জংলী বিড়াল চিনিস? জংলী বিড়াল? ওই মেয়েটা ঠিক জংলী বিড়াল!”

সৌমিত্র এবার শব্দ করে হেসে উঠল। হাসি বজায় রেখেই বলল,
“এবার সত্যিই আমারও ওই মেয়ে মানুষ রূপি জংলী বিড়ালের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে। ওকে বাহবা দিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে, তুমি একটা জ্বলে থাকা বাঘকে নিভিয়ে দিয়েছ।”

স্বচ্ছও জেদ ধরে বলে,
“তুই ভুল ভাবছিস। আমি এত তাড়াতাড়ি নিভে যাওয়ার মানুষ না। সুযোগ পেলে আমি ওকে ছাড়ব না। বিছুটি পাতার সমস্ত রস নিংড়ে নিয়ে তবেই আহিয়ার স্বচ্ছ দম নেবে।”

দুই ভাইয়ের কথোপকথনের মাঝে রিহান হতাশ কণ্ঠে বলল,
“আরে সৌমিত্র! কী করছিস? আগে তো সিদ্ধান্ত নে তুই ওই জংলী মেয়েটার দলে নাকি তোর ভাইদের দলে?”

সৌমিত্র কিছু বলবার আগেই স্বচ্ছ বড়ো শ্বাস নিয়ে নিজের চেয়ারে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বুঁজে বলল,
“ওকে কিছু বলে লাভ নেই রিহান ভাই। সুন্দরী মেয়েরা যেখানে ও সেখানেই।”

কিছুটা সময় থেমে আবার চোখ খুলে স্বচ্ছ ফের বলল,
“তুমিও কেমন মানুষ বলো তো রিহান ভাই? কোন মেয়েকে ওসব প্রশ্ন করে তাও প্রথম দেখায়? ও তো মেয়ে মানুষ। এটা তো তোমাকে মানতে হবে।”

“আরেহ বিয়ের আগে এসব জেনে নেব না তো বিয়ের পর এসব জানব? তখন লাভ কী হবে জেনে? যদি জানতাম মেয়েটা বিয়ের আগে উল্টাপাল্টা কর্ম করেছে তখন?”

“তুমি আর তোমার মন মানসিকতা দুটোই অদ্ভুত!”

বদ্ধ ঘরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে মোহ। সে কোথায় আছে তাও বোঝার উপায় নেই। কারণ চোখটাও তার বাঁধা। বিদঘুটে গন্ধে দম বন্ধ লাগছে তার। গলা কা/টা মুরগীর ন্যায় ছটফটিয়ে যাচ্ছে সে। গলা শুঁকিয়ে কাঠ হয়ে আসছে। মৃ/ত্যু যেন তার নিকটেই। সে আকুতি করতে লাগল বাঁচার! হঠাৎ সে কর্ণপাত করল কিছু পুরুষের বিশ্রী হাসির আওয়াজ। সর্বাঙ্গ শিউরে উঠল তার।

চলবে…

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here