যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া #আনিশা_সাবিহা পর্ব ৫

0
557

#যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৫

“স্বচ্ছ! সৌমিত্র! কোথায় গেলি তোরা সব?”

বাড়ির সদর দরজা পেরিয়ে এসে বসার ঘরটাতে ধীর পায়ে পা রাখলেন মিসেস. যামিনী। সাথেই সাথেই গলা ছেড়ে ডাকলেন নিজের বোনের দুই ছেলেকে। সৌমিত্র সবেই নিজের সবুজ রঙের টিশার্টের কলারটা ঠিক করতে করতে আসছিল বসারই ঘরের দিকে। ফট করেই নিজের জীবনের সবথেকে ভয়ানক কণ্ঠ শুনে ধড়ফড়িয়ে আড়ালে গেল সে। উঁকি দিয়ে দেখল মিসেস. যামিনীকে। পরক্ষণেই উল্টো দিকে সিঁড়ি দিয়ে দৌড় দিয়ে বলল,
“ইয়া আল্লাহ! বিয়েওয়ালী আন্টি!”

ছুটে এসে নিজের ভাই স্বচ্ছের ঘরে শব্দ করে ঢুকে পড়ল সৌমিত্র। স্বচ্ছ বিভোর হয়ে ঘুমাচ্ছিল। রাতের বৃষ্টিতে ঠান্ডা লেগে যেনতেন অবস্থা। এমন দরজা খুলে যাওয়ার বিকট শব্দে ঘুম ভাঙল তার। চোখমুখ জড়িয়ে তাকাল ছোটো ভাইয়ের দিকে।
“কী সমস্যা? শব্দ করার জন্য কি তোর নিজের ঘর যথেষ্ট নয়?”

সৌমিত্র হাঁপাতে হাঁপাতে জবাবে বলল,
“ভাই! বাড়িতে মারাত্মক মানুষ ঢুকে পড়েছে।”

স্বচ্ছ উঠে বসল এবার। কিছু বলার আগে পরপর দুবার হাঁচি পড়ল। নিজের প্রতি বিরক্তি নিয়ে বলল,
“মানে কী?”

“বিয়েওয়ালী আন্টি এসেছে।”

“মানে? যামিনী আন্টির কথা বলছিস?”

সৌমিত্র তাড়াহুড়ো করে মাথা ঝাঁকায়। আর বলে,
“আমি কিন্তু উনার সামনে যাচ্ছি না, ভাই! গেলেই বারবার বিয়ের কথা বলবে। একবার এই পাত্রীর ফটো দেখাবে আরেকবার ওই পাত্রীর ফটো। এবার নিশ্চয় সাথে করে একশটা মেয়ের বায়োডাটা নিয়ে এসেছে।”

স্বচ্ছ বিছানায় ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। নিজের গা ঝাড়া দিয়ে নির্লিপ্তে বলল,
“না গিয়ে তো উপায় নেই। বাড়িতে এখন কেউ নেই। বাবা বাহিরে, মা শপিং-এ, ফারাহ অফিসে গেল। তাই আমাদেরকেই উনাকে সময় দিতে হবে।”

“তোমার ইচ্ছে করলে তুমি যাও। আমি তো যাচ্ছি না। বলে দিও সৌমিত্র আগেই ভেগে গেছে। আই মিন, বাহিরে গিয়েছে।”

হাই তুলে স্বচ্ছ সৌমিত্রের কাছে এগিয়ে এলো। সৌমিত্রের ঘাড় চেপে ধরে টানতে টানতে তাকে নিয়ে নিচে চলে গেল।

স্বচ্ছ আর সৌমিত্রকে নিচে নামতে দেখতেই খুশিতে অভিভূত হয়ে সর্বপ্রথম মিসেস. যামিনী জড়িয়ে ধরলেন স্বচ্ছকে। স্বচ্ছ ভদ্রতার সহিত সালাম দিলে সৌমিত্রও সালাম দিলো। মিসেস. যামিনী হেসে সালামের উত্তর নিয়ে স্বচ্ছের মুখের পানে তাকিয়ে মন খারাপ করে বললেন,
“কী রে! বাড়িতে আর কেউ নেই?”

“না, আন্টি। সবাই বাহিরে গেছে।”

সৌমিত্র এর মাঝেও ফোঁড়ন কেটে বিড়বিড়িয়ে অন্যদিকে চেয়ে বলল,
“আমার মনে হয় সবাই তোমার আসার খবর পেয়ে আগেই ভেগে গেছে। যদি আবার তাদের জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসো? বলা তো যায় না!”

মিসেস. যামিনী সৌমিত্রকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“কী বললি?”

সৌমিত্র থতমত খেয়ে জবাব দিলো,
“আমি আর কী বলব বিয়েওয়ালী আন্টি! সরি ডিয়ার যামিনী আন্টি! বলছিলাম যে তোমার বাড়ি আসার খবর তো কারোর কাছে ছিল না। যদি আগে খবর দিতে তাহলে বাড়িতে সবাই উপস্থিত থাকত শুধু আমি বাদে।”

“কেন? তুই বাদে কেন?”

স্বচ্ছ বুঝে নিলো সৌমিত্র সহজে নিজের লাগামহীন কথা বন্ধ করবে না। তাই সে প্রসঙ্গ কাটিয়ে বলল,
“আন্টি ওর কথা বাদ দাও। বলো তুমি কেমন আছো? হঠাৎ তোমার পায়ের ধুলো পড়ল আমাদের বাড়িতে? মনে হচ্ছে বিশেষ কোনো কারণ আছে।”

“হ্যদঁ অবশ্যই। ওই বিয়ের কথা…”

মিসেস. যামিনীর কথা শেষ হওয়ার আগেই মাঝে সৌমিত্র কাঁদো কাঁদো ভাব নিয়ে বলল,
“আবার বিয়ে নয় আন্টি প্লিজ! আমি এখন বিয়েশাদি করছি না। ভাইকে বলো তুমি।”

মিসেস. যামিনী আয়েশ করে সোফায় বসে বলেন,
“কিন্তু আমি তো তোদের ভাই রিহানের কথা বলছি!”

সৌমিত্র স্বস্তির শ্বাস ফেলতেই পরক্ষণেই মিসেস. যামিনী বললেন,
“তবে হ্যাঁ, তোদেরও কিন্তু বিয়ে করার বয়স হয়েছে। তোরা বললে ভালো পাত্রী দেখিয়ে দিই?”

“একদম না আন্টি! আপনি রিহান ভাইয়ের জন্যই পাত্রী দেখো। তাছাড়া আমরা তো এখনো বাচ্চা!”

সৌমিত্রের কথায় কপালে সূক্ষ্ণ ভাঁজ পড়ল মিসেস. যামিনীর। সৌমিত্র তৎক্ষনাৎ বলল,
“তবে হ্যাঁ চাইলে স্বচ্ছ ভাইয়ের বিয়ে করাতেই পারো। আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমি এখনো বাচ্চা। কিন্তু স্বচ্ছ ভাইকে বিয়ে না দিলে পাগল হয়ে যাবে আমার মনে হয়।”

স্বচ্ছ চোখ গরম করে তাকাল সৌমিত্রের দিকে। সৌমিত্র দুষ্টু হেসে চোখ টিপল। সে এখন মজার মুডে আছে। মিসেস. যামিনী সৌমিত্রের কথাটাকে সিরিয়াস নিয়ে বলল,
“কী বলিস এসব? পাগল হবে কেন স্বচ্ছ?”

“তুমি জানো না? ভাইয়া কাল রাতে বৃষ্টিতে ভিজে একটা মেয়ের পেছনে ঘুরেছে। শেষমেশ একটা রিজেকশন পেয়ে বেচারা ব্যর্থ হয়ে এসেছে বাড়িতে। কী দুঃখ তার! আমি তো তার ভাই! তার দুঃখ তো সইতে পারছি না।”

মিসেস. যামিনী চিন্তিত হয়ে স্বচ্ছের মুখের দিকে তাকালেন। সৌমিত্র ফের বলল,
“ভালো করে দেখুন! বৃষ্টিতে সামান্য একটা মেয়ের জন্য ভিজে গিয়ে ঠান্ডা লাগিয়ে মুখটা একদম লাল করে ফেলেছে।”

স্বচ্ছের গাল ধরে মনোযোগ দিয়ে তাকে দেখে মিসেস. যামিনী ভারাক্রান্ত হয়ে বলে ওঠেন,
“তাই তো দেখছি। এ কী অবস্থা করেছিস স্বচ্ছ? তোর কি মেয়ের অভাব? আজকেই রিহানের সঙ্গে তোর জন্যও মেয়ে দেখব। তোর এই খালা থাকতে তোর বিয়ে নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই।”

স্বচ্ছ নির্বাক হয়ে বসে রইল। কী বলবে ভেবে পেল না। ঘাড় ঘুরিয়ে সৌমিত্রকে দৃঢ় চাহনি নিক্ষেপ করতেই সৌমিত্র ঠোঁট টিপে হাসতে লাগল।

মাথা নিচু করে পাত্র পক্ষের সামনে বসে আছে তানিয়া। পরনে তার বেগুনি রঙের শাড়ি। মাথা নিচু করে উসখুস করছে সে। সে ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি যে তার বাড়িতে যে পাত্রপক্ষ আসবে তাদের মাঝে স্বচ্ছও থাকবে। স্বচ্ছ তানিয়াকে চিনতে না পারলেও তানিয়া ঠিকই চিনতে পেরেছে তাকে। তাকে একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছেন মিসেস. যামিনী।
“তা পড়ালেখা শেষ করেছ, মা?”

তানিয়া নিরুপায় হয়ে উত্তরে বলল,
“জি আন্টি!”

মিসেস. যামিনী এবার নিজের ছেলে রিহানের দিকে ঝুঁকে ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে,
“কী রে! কেমন লাগল তোর মেয়ে? পছন্দ হয়েছে?”

রিহান আমতা আমতা করে ধীর গলায় বলল,
“তোমার পছন্দ হলে আমারও হয়েছে।”

মিসেস. যামিনী এবার তার অন্যপাশে থাকা স্বচ্ছের দিকে এগিয়ে শুধালেন,
“কী রে! দেখ তো, তোর কেমন লাগছে মেয়েকে? তোর ভাইয়ের সাথে মানাবে?”

“আমি কী বলব? যাকে বিয়ে দেবে তাকে বলো।”

মিসেস. যামিনী কিছু একটা ভেবে তানিয়ার মায়ের উদ্দেশ্যে ফট করে বলে ওঠেন,
“আপনার কি একটাই মেয়ে? বাড়িতে আর কোনো বিবাহযোগ্য মেয়ে নেই?”

আন্টির এমন কথা শুনে চোখ বড়ো বড়ো করে দ্রুত তার হাত চেপে ধরে স্বচ্ছ। চাপা সুরে বলে,
“কী করতে চাইছ তুমি?”

“আরে যদি অন্য মেয়ে থাকে তাহলে তোর জন্য দেখে রাখি। বিয়ের বয়স তো হয়েই গেছে। ক্ষতি কী?”

“না আন্টি! একদম না। ভাইয়ার জন্য মেয়ে দেখো প্লিজ। আমি এখনো কিছু করি না। বিয়ে করে বউকে কী খাওয়াব বলো?”

মিসেস. যামিনী জেদ ধরে বলেন,
“কী করে খাওয়াবি মানে? বাড়িতে বউ গেলে কি না খেয়ে থাকবে? এটাই তো বিয়ের আসল সময়। তুই আমার কথা বুঝতে পারছিস না।”

স্বচ্ছ বেশ বুঝতে পারল এখানে থাকলে তাকেও রিহানের সঙ্গে বলির পাঠা হতে হবে। তার এই মুহূর্তে ইচ্ছে করল সৌমিত্রকে হাতের সামনে পেলে মে/রে তক্তা বানানোর। তবে ইচ্ছে দমিয়ে তাই দ্রুত ফোন কানে ধরার ভঙ্গি করে বলল,
“আন্টি, আন্টি! আমার ইম্পর্ট্যান্ট কল এসেছে। আমি বাহিরেই আছি। তোমরা কথা বলো, ঠিক আছে?”

স্বচ্ছ কোনোরকমে কানে ফোন ধরে গটগট করে হেঁটে বাহিরে এলো। বাহিরে এসেই সে সর্বপ্রথম কল করল সৌমিত্রকে। সৌমিত্র তখন ঘুরে বেড়াতে ব্যস্ত বন্ধুবান্ধবদের সাথে। ভাইয়ের ফোন পেয়ে সে ঠোঁট টিপে হেসে কল রিসিভ করেই বলল,
“তোমারও বিয়ে ঠিক হলো নাকি, ভাই? সুখবর জানাতে কল করেছ?”

“তুই যদি এখন আমার হাতের কাছে থাকতিস তাহলে বিলিভ মি আধমরা করে হসপিটাল পাঠিয়ে দিতাম।”

“সেকারণেই তো আমি তোমার থেকে দূরে আছি। তারপর বলো, কেমন ইনজয় করছ বিয়েওয়ালী আন্টির সাথে রিহান ভাইয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়ে।”

স্বচ্ছ অতিষ্ঠ হয়ে বলল,
“আমি তো বুঝতেই পারছি না। বিয়েটা নিজের ছেলের দিতে চাইছেন নাকি আমার! কী একটা ঝামেলা!”

সৌমিত্র শব্দ করে হেসে দিলো। তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে আনমনেই তানিয়ার বাড়ির বাহিরে থাকা চিকন সিঁড়ি বেয়ে একতলা বাড়ির ছাঁদে উঠে গেল স্বচ্ছ। ভাইয়ের উপর নিজের ক্ষোভ ঝাড়তে মনোযোগ দিলো সে।

হম্বিতম্বি করে অটো থেকে তানিয়ার বাড়ির সামনে নেমে গেল মোহ। ভাড়া মিটিয়ে তানিয়ার বাড়িটা একবার দেখে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল সে। তার উদ্দেশ্য তানিয়ার বিয়ের সম্বন্ধ ভাঙতে হবে। এই নিয়ে তানিয়ার তিন নম্বর বিয়ের সম্বন্ধে ঝামেলা পাকাতে এসেছে সে। তবে সবই তানিয়ার অনুরোধে। বিয়ে ঠিক হলেই মেয়েটা মোহের কানের কাছে এসে ঘ্যানঘ্যান করে। কারণ হলো তানিয়ার এক বেকার প্রেমিক রয়েছে। যার চাকরি পেতে সময় লাগবে।

আর কোনোকিছু না ভেবে ধীর পায়ে বাহিরের সিঁড়ি বেয়ে তানিয়ার বাড়ির ছাঁদে উঠতে লাগল মোহ। তানিয়া বলেছিল পাত্রের সঙ্গে কথা বলতে সে পাত্রকে এখানেই নিয়ে আসবে। তার কথা অনুযায়ী ছাঁদের শেষ সিঁড়িতে পা রাখতেই দেখা মিলল তার জীবনে থাকা সবথেকে বিরক্তিকর মানুষটির। স্বচ্ছকে দেখে মুখের রঙটাই পাল্টে গেল মোহের। ভড়কে গিয়ে নিজের পা সিঁড়ির বিচে নামাতে চাইলে নিজেকে সামলাতে পারল না সে। নিজের ভারসাম্য হারিয়ে সিঁড়ি গড়িয়ে পড়ে যাবার উপক্রম হলো তার। স্বচ্ছ আতঙ্কেই ফোনটা ফেলে দিয়ে প্রথমে মোহের হাত টেনে ধরল। ততক্ষণে মোহ নিজেকে সামলে উঠতে পেরেছে। স্বচ্ছের দিকে কড়া দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সে দ্রুত পায়ে নেমে এলো নিচে। বাড়ির আশপাশটা দেখে নিলো প্রথমে। সে কি ভুল বাড়িতে চলে এলো? নিজের বান্ধবীর বাড়ি চিনতে ভুল করল? তবে আশপাশটা দেখে সে নিশ্চিত হলো না, সে ভুল বাড়িতে আসে নি। এটা তানিয়ারই বাড়ি। মোহ সিঁড়ির দিকে তাকাল আবারও। স্বচ্ছ ভ্রু কুঁচকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মোহ দাঁত কিড়মিড় করে দুহাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে নিলো।
“কোন পাপের শাস্তি হিসেবে বারবার এই জ/ল্লাদের সাথে দেখা হচ্ছে কে জানে!”

স্বচ্ছ জোর কদমে নিচে নেমে আসে মোহের সোজাসুজি দাঁড়াল। মাথা ঝুকিয়ে ক্ষীণ সুরে বলল,
“কী ব্যাপার? নতুন বিয়েশাদি করলে নাকি? নাকি স্বপ্নে আমাকে বিয়ে টিয়ে করে ফেলেছ? নতুন বউয়ের মতো মুখ লুকাচ্ছো কেন?”

মোহ মুখের উপর থেকে হাত নামিয়ে চোখ রাঙিয়ে বলে,
“আমার চয়েস এতটাও বিগড়ে যায়নি যে আপনাকে স্বপ্নে মাঝে বিয়ে করতে যাব। এমন স্বপ্ন আসার থেকে ভালো তো আমি পাহাড় থেকে স্বপ্নে লাফ দিয়ে পড়ে যাই কিংবা আ/গুনে পুড়ে যাই।”

“তুমি তো পড়েই যাচ্ছিলে। আমিই তো হেল্প করলাম। তোমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত এখন। দেখো তোমাকে হেল্প করার চক্করে আমার ফোনের ডিসপ্লে ইন্না-লিল্লাহ হয়ে গিয়েছে।”

মোহ ক্ষিপ্র হয়ে বলল,
“আপনি হেল্প না করলে আমি ম/রে যেতাম না। আমি নিজেকে সামলেই নিয়েছিলাম। জানি না কোন পাপের ফল হিসেবে আমার আপনার সাথে দেখা হয়েছে।”

“আরে আশ্চর্য! আমি নিজের ক্ষতি করে তোমার হেল্প করলাম আর তুমি কথা শোনাচ্ছো?”

“আমি আপনাকে বলেছি হেল্প করতে?”

স্বচ্ছ উদাস হয়ে বলে,
“আসলেই আমারই ভুল। আমার উচিত ছিল তোমায় আরো ধা;ক্কা মে;রে ফেলে দেওয়া। আমি ভুল করেছি। তুমি আমার লাইফে কেন এসেছ বলো তো? একের পর এক ক্ষতিসাধন করার জন্য!”

মোহের আঁখি দুটো আকৃতিতে ছোটো হয়ে আসে। ফোঁস ফোঁস করে বলে,
“সেম টু ইউ!”

স্বচ্ছ হাত মুঠো করে বলল,
“তোমাকে তো আমি সহ্যই করতে পারছি না। কেন আমার সামনাসামনি হও বলো তো?”

“আমিও আপনাকে দেখার জন্য ম/রে যাচ্ছি না। আজকের পর থেকে তো এটাই দোয়া করব যেন আপনার এই মুখটা কখনো না দেখতে হয়।”

রাগে গজগজ করতে করতে পেছন ফিরে হাঁটা ধরল মোহ। কিছুটা দূর যেতেই সে পেছন থেকে শুনতে পেল আবারও সেই পুরুষালি কণ্ঠ।
“কে বলতে পারে? হয়ত তোমাকেই একদিন আমার বিরহে পুড়তে হতে পারে! আমারই তড়ে তোমায় ছটফট করতে হতে পারে! কে বলতে পারে?”

মোহ ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল সেই ধূসর বর্ণের নয়ন দুটির উপর। এ যেন পাপড়ির কপাটে আঁটকে থাকা গভীর সমুদ্রের ন্যায়! মোহ দ্রুত মুখ বাঁকিয়ে বলল,
“বয়েই গেল!”

না চাইতেও মোহের মুখ বাঁকানো দেখে হাসি পেয়ে গেল স্বচ্ছের। হাসতে চাইল তবে কী যেন ভেবে নিজের বিস্তর হাসিখানা চেপে রাখল অভ্যন্তরে।

চলবে…

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here