মায়া পরি # পর্বঃ ০৪ # জুনায়েত

0
266

# মায়া পরি
# পর্বঃ ০৪
# জুনায়েত

এটা কোন সাধারণ চিহ্ন নয়। এই চিহ্ন টা শুধু মাত্র নাগরাজ এর শরীরেই থাকতে পারে। এই কথাটা শুনা মাএই আমার শরীর থর থর করে কাপঁতে থাকলো। আমার খুবই ভয় লাগছিলো। আমি বললাম আপনি কী নিশ্চিত এই চিহ্ন টা সাধারণ কোন চিহ্ন নয়? আর এটা শুধু নাগরাজ এর শরীরেই থাকতে পারে? ওই লোকটা বললো হ্যা আমি ১০০% নিশ্চিত এই চিহ্ন টা সাধারণ কোন চিহ্ন নয়। এটা এক মাত্র নাগরাজ এর শরীরেই থাকতে পারে।
!
!
!
আমি ওখান থেকে চলে আসতে চাইলাম। আমি পিছন ঘুরে হাটতে থাকলাম। আর ওই লোকটা আমাকে পিছন থেকে ডাকলো আর বললো আর একটা কথা শুনে যাও এই চিহ্ন টা যার শরীরে থাকবে সে শুধু নাগরাজ হবে না। সকল সাপ জাতি তাকে রাজা মানবে এবং তাকেই অনুসরণ করবে। আমি ওখান থেকে বেরিয়ে এলাম। জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে হাঁটছিলাম আর মনে মনে ভাবছিলাম আমি কী তাহলে নাগরাজ? ওই লোকটা যা বললো তা কী সত্যি? জঙ্গলের মাঝ খান দিয়ে হাটার সময় আমার খুব ভয় লাগছিলো।
!
!
!
আমার মনে হচ্ছে কেউ একজন আমাকে প্রতিনিয়তো ফলো করছে। জঙ্গলের চার পাশ টা খুব শুনশান ছিলো। গাছ গুলোকে দেখে মনে হচ্ছে ওরা আমাকে গিলে খাবে। যাই হউক আমি আস্তে আস্তে বাড়ি ফিরে এলাম। আর এসেই আমার রুমে চলে গেলাম। মা আমার রুমের সামনে এসে আমাকে ডাকতে থাকলো নাহিয়ান কীরে ঘরের দরজা বন্ধ করলি কেনো? আর কোথায় ছিলি তুই? বাইরে আয় আর খাবার খেয়ে যা। আমি মাকে বললাম মা আমার খিদে নেই। আমাকে বিরক্ত করো না। একটু একা থাকতে দাও।
!
!
!
মা চলে গেলো। আমি আমার বিছানায় শুয়ে পরলাম। পরের দিন সকাল বেলা আমার মনে পরলো রানি নামের মেয়েটার কথা। ও আমাকে কেন বিয়ে করতে মানা করলো সেটা যে করেই হউক আমাকে জানতেই হবে। তাই আমি ওই রানি নামের মেয়েটার বাড়ি চলে গেলাম। আর গিয়ে ওই মেয়েটার বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম ওনার মেয়ে কোথায়? উনি বললো রানি ভিতরেই আছে। আমি উঠানে দাঁড়িয়ে রানিকে ডাক দিলাম। আর রানি বেরিয়ে এলে বললাম একটু আড়ালে এসো তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
!
!
!
আমি রানিকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি আমাকে কোনো বিয়ে করতে মানা করে দিলে? রানি প্রথমে মানা করলেও আমার জোড়াজুড়ি তে সত্যিটা বলতে বাধ্য হলো। ও আমাকে জানালো আমাকে ওর ভালোবাসার কথা জানানোর পর ও সরা সরি বাড়ি চলে আসে। আর মধ্য রাতে ওর ঘরে নাকি একটা কুচকুচে বড় কালো সাপ ঢুকে। আর তার লেজের সাহায্যে ওর গলাটা চেপে ধরে। আর সাপটা নাকি মেয়ের কন্ঠে কথা বলেছে। বলেছে নাহিয়ান কে বিয়ে করার চিন্তা মাথা থেকে দুর করে দে। নয়তো তোকে মরতে হবে। আমি বুঝতে পারলাম এটা ওই সাপটাই যে আমার পিছনে পরে আছে।
!
!
!
রানি আরো বললো তোমার ধারের কাছে নাকি কোন মেয়েকে ও চাপতে দেবে না। আমি রানির কথা শুনে রীতিমতো অবাক। এই মেয়েটা আবার কে? এতো দিন শুধু আমি নিজে কে নিয়ে ভাবতাম। এখন এই মেয়েটা কেও নিয়ে ও ভাবতে হবে! আমার আর কিছু ভালো লাগছে না। আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না। আমার মাথা কাজ করছিলো না আমি কী করবো? আমি মাথাটা নিচু করে রানিদের বাড়ি থেকে চলে আসলাম। আমি বাসায় চলে এলাম। আসতেই মা জিজ্ঞেস করলো কোথায় গিয়েছিলি বাবা? আমি মায়ের দিকে তাকালাম আর মনে মনে ভাবলাম ইনি কী সত্যি আমার মা?
!
!
!
আর এই মুহুর্তে আমি আমার মাকে জিজ্ঞেস করলাম না যে আমি সত্যি কী উনার ছেলে?আর উনি কী আমার আসল মা? হয়তো এই কথা গুলো শুনে উনি কষ্ট পাবে। তাই আমি একটু মৃদু হেসে বললাম কোথাও না মা। এই একটু ঘুরতে বেরিয়ে ছিলাম। মা আর কিছু জিজ্ঞেস ও করলো না। আর কিছু বললো ও না। আমি আমার রুমে চলে আসলাম। পরের দিন সকাল বেলার কথা আমি আমার রুমে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমার রুমে আমার বোন রুহি এলো আর বললো ভাইয়া সাপুড়ে এসেছে সাপ খেলা দেখাবে।
!
!
!
কিছু টাকা দেনা। বোনটাকে খুব ভালোবাসি তাই আর মানা করলাম না। বললাম প্যান্টের পকেটে আছে নিয়ে যা। রুহি প্যান্টের পকেট থেকে টাকা নিয়ে চলে গেলো। আমি শুয়েই ছিলাম। হঠাৎ আমার কানে বীন এর আওয়াজ এলো আর আমার মাথা ঘুরতে থাকলো। ওই বীনের শব্দ যতই জোরে হতে থাকলো আমার মাথার যন্ত্রণার পরিমান বাড়তে থাকলো। এক সময় আমি আর সহ্য করে উঠতে পারছিলাম না। তাই আমি বাইরে বেরিয়ে এলাম।
!
!
!
আর সাপুড়ের হাত থেকে বীনটা কেড়ে নিয়ে ঘরের চালের উপর দিয়ে বাইরে ছুড়ে মারলাম আর বললাম বন্ধ করুন এসব। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আমার কথা শুনে সাপুড়ে সহ আমার বোন আর ওখানে থাকা সবাই খুবই অবাক হলো। সাপুড়ে তো শুধু আমার চার পাশ থেকে ঘুরে ঘুরে আমাকে দেখছিলো। আমি সাপুড়ে কে বললাম আপনি এখান থেকে চলে যান। আর কখনো এসব নিয়ে এই বাড়িতে প্রবেশ করার চেষ্টা করবেন না। সাপুড়ে আমার কথা শুনে খুবই অবাক হলো। আর বললো ঠিক আছে চলে যাচ্ছি।
!
!
!
তার পরের দিন রাতের ঘটনা। আজ অমাবস্যা। আমি আমার রুমে শুয়ে ছিলাম। আর মধ্য রাতে আমার ঘুম ভেঙে গেলো। আর আমি অনুভব করলাম আমার সমস্ত শরীর ব্যাথা করছে। ব্যাথার যন্ত্রনাটা এতোটা কষ্টের ছিলো যে আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই জোরে একটা চিৎকার দিয়ে উঠলাম। আর এবার আমি খেয়াল করলাম আমার সমস্ত শরীর নীল হয়ে গেলো আর আস্তে আস্তে আমার শরীর সাপের শরীরের মতো বর্ণ ধারণ করতে থাকলো।
!
!
!
চলবে।
!
!
কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন। বানান ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আসলে রোজার দিন তাই বড় করে লিখতে পারছি না তার জন্য দুঃখিত। আশা করি আজকের পর্বটা সবার ভালো লাগবে। সবার একটা করে গঠন মূলক মন্তব্য দেখতে চায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here