মায়া পরি #পর্বঃ ০৫ #জুনায়েত

0
180

# মায়া পরি
#পর্বঃ ০৫
#জুনায়েত

আমার সমস্ত শরীর নীল হয়ে গেলো। আর সাপের শরীরের মতো আকৃতি হতে থাকলো। আর এই দিকে মা আমার চিৎকার এর আওয়াজ শুনে দৌড়ে আমার রুমের সামনে চলে এলো। আর আমাকে ডাকতে থাকলো বাবা নাহিয়ান কী হয়েছে তোর? তুই এই ভাবে চিৎকার দিয়ে উঠলি কেনো? তুই ঠিক আছিস তো? আমি কোন কথা বলছি না শুধু চুপটি করে আছি। আমি আমার এই শরীর নিয়ে কী করে মায়ের সামনে যাবো? নিজের শরীর দেখে আমার নিজের ই ভয় হতে লাগলো।
!
!
!
আমি খেয়াল করলাম আমার শরীর তো নীল হলোই তার সাথে সাথে আমার শরীরের সব শিরা উপশিরা গুলো মোটা হতে শুরু করলো আমার শরীরের রক্ত চলা চল নিমিষেই বেড়ে গেলো। মা আমাকে আবার ও ডাকলো আর জিজ্ঞেস করলো বাবা নাহিয়ান তুই কী ঠিক আছিস? একটু দরজাটা খুল আমি ভেতরে আসবো। এই রে মা ভেতরে আসলে সব শেষ। কিছু একটা করতেই হবে। আমি মাকে বললাম মা তোমার ভিতরে আসার দরকার নেই। আমি ঠিক আছি। মা আমাকে জিজ্ঞেস করলো তাহলে চিৎকার দিলি কেনো?
!
!
!
আমি মাকে বললো মা আমি ঘুমের ঘরে একটা বাজে সপ্ন দেখেছি তাই ওই ভাবে চিৎকার দিয়ে উঠে ছিলাম। আমি মাকে আরো বললাম অনেক রাত হয়ে গেছে মা তুমি তোমার রুমে গিয়ে শুয়ে পরো। মা বললো ঠিক আছে বাবা তাহলে আমি চলে যাচ্ছি। কোন সমস্যা হলে আমাকে ডাকিস কিন্তু? আমি বললাম হ্যা ঠিক আছে ডাকবো নি। মা তার রুমে চলে গেলো। এখন আমার পুরো শরীর ই নীল। আমি আমার শার্টটা খুললাম। আর দেখলাম আমার তল পেটটা সব চাইতে বেশি নীল।
!
!
!
আমি আরো খেয়াল করলাম আমার সারা শরীরের নীলা বর্ণের উৎপত্তি যেন আমার তল পেট থেকেই হচ্ছে। আমি অনুভব করলাম আমার শরীরে আগের থেকে চার গুণ বেশি শক্তি হয়েছে। হঠাৎ কী এমন হলো আমার যে আমি আমার শরীরে এতো শক্তি অনুভব করছি। যাই হউক সেদিন সারা রাত শরীরের যন্ত্রণায় একটু ও ঘুমাতে পারিনি। সারা রাত দাঁড়িয়ে ছিলাম। ভোরের দিকে একটু ঘুমিয়ে পরেছিলাম। সকাল বেলা উঠে দেখি আমি আগের মতই আছি।
!
!
!
আমার শরীরের সেই নীল বর্ণটা আর নেই। আমি এবার একটু হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। আমি খাওয়া দাওয়া শেষ করে একটু বাইরে বেরুলাম। আর গ্রামের মাঝখান দিয়ে হাটছিলাম আমি খেয়াল করলাম গ্রামের কয়েকজন লোক রাস্তায় পরে থাকা গাছের গুড়ি সারানোর চেষ্টা করছে। তারা পারছিলো না। তাই তারা আমাকেও তাদের সাথে হাত লাগাতে বললো। কিন্তু আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে এই গাছ টা আমি একাই সরাতে পারবো।
!
!
!
মানে নিজের শক্তি এর উপর আমার বিশ্বাস আছে। আমি সবাই কে বললাম আপনারা একটু সাইড হোন তো আমি একবার চেষ্টা করি। উনারা আমাকে নিষেধ করলো বললো আমরা সবাই পারছি না আর তুমি একাই পেরে যাবে? আমি বললাম একবার চেষ্টা তো করি। আমি আমার হাত দিয়ে গুড়ি টা কাঁধে নিমিষেই তুলে নিলাম। এই দৃশ্য দেখে তাঁরা সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আর হয়তো মনে মনে ভাবছে এটা কী করে সম্ভব? আমরা সবাই মিলে যেটা নারাতে পারছিলাম না এটা এই ছেলেটা কাঁধে তুললো কী ভাবে?
!
!
!
আমি নিজে ও খুব অবাক হললাম। কাল রাতের ওই ঘটনার পর থেকে আমার নিজেকে খুব শক্তি শালী মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আস্ত বড় একটা গাছ তুলে আছাড় মারতে পারবো। নিজেকে এমন শক্তি শালী দেখে মনে মনে সুপার ম্যান ভাবতে লাগলাম। কিন্তু পরক্ষণেই মনে পরলো এতো শক্তি কোথা থেকে আসলো? আর কে ই বা দিলো আমাকে? এর রহস্য কী? এই শক্তি গুলো আমার কোন ক্ষতি করবে না তো? নিমিষেই এই প্রশ্নগুলো আমার মাথায় ঘুর পাক খেতে শুরু করলো। আমি আস্তে আস্তে বাড়িতে চলে আসলাম। আর আমার রুমে চলে গেলাম।
!
!
!
আর রুমে যেতেই আমার মনে পরলো সেদিন মাকে ঘরে কে এনেছিলো? আর ওই সাপটা যদি আমার কোন ক্ষতি ই করতে চাইতো তাহলে এতোদিনে কোন ক্ষতি করলো না কেনো? আর আমার মাকে তো একা পেয়েছিলো। তাহলে আমার মায়ের উপর আক্রমণ করলো না কেনো? আমার মাথায় এই কথা গুলোর কিছুই ঢুকছে না। আমার মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কে আমি কী আমার পরিচয়? আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি কাল মাকে জিজ্ঞেস করবো যে তিনি কী আমার আসল মা কিনা?
!
!
!
নাকি আমার আরো অন্য কোন পরিচয় আছে। আমার আরো একটা বিষয় খুব খটকা লাগছে যে আজ প্রায় ৩দিন হলো ওই সাপটা আমার রুমে আসে না। এটা ভেবে ও আমার ভয় হচ্ছে যে আমার জন্য আবার বড় কোন বিপদ লুকিয়ে আছে নাতো?আমি ভয়ের চুটে ঘরের লাইট পর্যন্ত জ্বালিয়ে রেখেছি। যাতে ঘরে কেউ আসলে আমি তাকে সরাসরি দেখতে পারি। আমি আমার বিছানায় শুয়ে পরলাম। আর লাইটটা জ্বলানোই ছিলো।
!
!
!
ঠিক মধ্য রাতে আমি খেয়াল করলাম আমার ঘরে লাইটটা জ্বল ছিলো আর নিভছিলো। আর একটা সময় এসে একে বারে নিভেই গেলো। আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম। আমি দেখলাম সেই সাপটা আমার ঘরে প্রবেশ করলো। সেই মুহুর্তে আমার মনে পরলো আমার শরীরে তো অনেক শক্তি তাহলে আমি ভয় পাচ্ছি কেনো? যে করেই হউক আজ এই সাপের সাথে লড়াই করে ওর পরিচয় টা জানতেই হবে। আমি খুব রেগে গেলাম। আর বিছানা থেকে উঠে ওই সাপটার গলায় আমার দুই হাত ধারা চেপে ধরলাম।
!
!
!
আর কিছুক্ষণ পরেই সাপটা একটা অর্ধ সাপের আকার ধারণ করলো। মানে সাপটা একটা মেয়ে ছিলো। তার নিচের অংশ ছিলো সাপ আর উপরের অংশ ছিলো মানুষ। মেয়েটা দেখতে এতো সোন্দর ছিলো কী বলবো আপনাদের। কিন্তু মেয়েটার সম্পূর্ণ শরীর নীল ছিলো। আমি যখন মেয়েটার গলাটা চেপে ধরে ছিলাম তখন নিজের দিকে খেয়াল ই করিনি। যখন খেয়াল করলাম তখন দেখলাম আমি আর মানুষ নেই আমি সম্পূর্ণ সাপ হয়ে গেছি আর মেয়েটাকে আমার লেজের সাহায্যে চেপে ধরে আছি।
!
!
!
চলবে তো?
!
!
!
কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন। বানান ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর হ্যা আপনারা যদি রেসপন্স না দেন তাহলে কেমনে বুঝবো গল্পটা আপনাদের ভালো লাগতেছে কী না? গল্পটা পড়ে আপনার অনুভূতি কী এই মুহুর্তে তা কমেন্টে জানতে চায়। সবার একটা করে গঠন মূলক মন্তব্য দেখতে চায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here